ভালো ব্যাংক পরিমাপের সকল প্যারামিটারে ইসলামী ব্যাংক প্রথম

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শরিয়াহ মোতাবেক ব্যাংকিং সেবা প্রদানে ইসলামী ব্যাংকের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৩ সালে। আগামী বছরের ৩০ মার্চ ৪০ বছর উদযাপন করবে দেশের ব্যাংকিং ইতিহাসের অন্যতম গ্রাহক"ফেভারিট"এই ব্যাংক। এটি বর্তমানে ১ কোটি ৯০ লাখ গ্রাহকের ব্যাংক। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৮ কোটি মানুষ ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত।একটি ভালো ব্যাংক পরিমাপের যতগুলো প্যারামিটার দরকার, সবগুলোতেই ইসলামী ব্যাংক ১ নম্বরে।

ইসলামী ব্যাংকিং সেবা প্রদানে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কারণে জনপ্রিয় হয়েছে মানুষের কাছে। ফলে ইসলামী ব্যাংককে অনুসরণ করে গত কয়েক বছরে আরও ৯টি ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন,"আমরা সব সময় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মনীতি ও নির্দেশনা মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এ ছাড়া ঐতিহ্যবাহী ইসলামী রীতিনীতিকেও সমান তালে মেনে চলে ইসলামী ব্যাংক। আমাদের পরিশোধিত মূলধন বেশি হওয়ার কারণে সব খাতে বিনিয়োগ করতে পেরেছি।"

শরিয়ায়ভিত্তিক প্রথম ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক কমপক্ষে ৯০ লাখ পরিবারের কর্মসংস্থান করেছে। দেশের সবচেয়ে বড় ইসলামী ব্যাংক হওয়ার পরেও ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করে ব্যাংকটি। ইসলামী ব্যাংক সব সময় নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ৫ হাজার টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সম্পূর্ণ জামানতবিহীন ঋণ বিতরণ করছে ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটির ১৬ লাখ ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতা আছে। যার মধ্যে গ্রহীতার মধ্যে আবার ৯২ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা বলে জানা যায় ব্যাংকটির নির্ভরযোগ্য সুত্রে।

বর্তমানে ব্যাংকটির সারা দেশে ৩৯৪টি শাখা রয়েছে। ২ হাজার ৭০০টি এজেন্ট ব্যাংকিং পয়েন্ট রয়েছে। ২ হাজার ৪৩০টি উপশাখা রয়েছে। ২ হাজার ৫০০টি এটিএম ও ক্যাশ রিসাইকেলিং (সিআরএম) রয়েছে। মোট ৬ হাজার আউটলেট থেকে দেশের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষকে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিচ্ছে দেশের প্রাচীন এই ব্যাংক।

এমনকিইসলামী ব্যাংকে আমানতের কোনো সংকটও নাই। একজন গ্রাহকও টাকা তুলতে এসে ব্যাংক থেকে খালি হাতে ফেরত যায়নি বলে জানান ব্যাংকটির এমডি। তিনি বলেন, নিয়ম মেনে বিতরণ করায় ইসলামী ব্যাংকের সব ঋণের অর্থই ফেরত আসবে।

এমডি বলেন, সম্প্রতি বিতরণ করা ঋণের টাকা ফেরত আসবে ছয়-সাত মাসের মধ্যে। ঋণগ্রহীতার জাতীয় পরিচয়পত্রসহ সব কাগজপত্র জমা নিয়েই ঋণ দেয় ইসলামী ব্যাংক। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ও কাঁচামাল আমদানির জন্য সব ব্যাংকের চেয়ে বেশি এলসি খুলেছে ইসলামী ব্যাংক।

ইসলামী ব্যাংক নিয়ে সাম্প্রতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত নানা খবরের বিষয়ে প্রশ্ন থাকে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার কাছে। তিনি বলেন, মহামারি করোনার পর দেশে খাদ্যপণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ইসলামী ব্যাংক দেশের বড় বড় আমদানিকারকদের এলসি খুলেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকটের সময় খাদ্যদ্রব্য আমদানির এলসি না খুললে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে যেত। তেল, চিনি ও আটার দাম নিয়ন্ত্রণে দেশের ব্যাংকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

ইসলামী ব্যাংকে রাখা টাকা নিরাপত্তাহীন এমন অনেক গুজব গ্রাহকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে একটা অসাধু চক্র, এমনটা অভিযোগ করেন ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা । তিনি বলেন, "গ্রাহকদের আমানত নিয়ে উৎকণ্ঠার কিছু নেই। সব গ্রাহকের আমানতই নিরাপদ আছে।"

বাংলাদেশের ইকোনোমির অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে রেমিট্যান্স। নির্ভরযোগ্য সুত্রে পাওয়া তথ্যমতেদেশে যে রেমিট্যান্স আসে তার ৩০ ভাগই ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট রেমিট্যান্সের ৫২ শতাংশ সংগ্রহ করে এই জনপ্রিয় ব্যাংকটিবছরে ১২০০ কোটি ডলার যোগ করছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। এ ব্যাপারেএমডি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ কোটি ৩৫ লাখ বাংলাদেশি অবস্থান করছেন। এসব প্রবাসীর প্রতি ১০ জনের আটজনেরই ইসলামী ব্যাংকে অ্যাকউন্ট আছে।

গণমাধ্যমে খবর আসছে ইসলামী ব্যাংক থেকে গ্রাহকরা টাকা তুলে ফেলছে এব্যাপারেইসলামী ব্যাংকের এমডি বলেন,গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর দেখে প্রবাসীরা দেশে তাদের আত্মীয়স্বজনকে টাকা তুলে নিতে বলেছিলেন। প্রবাসীর আত্মীয়রা ব্যাংকে এসে প্রথম দিকে বিভ্রান্ত হয়ে কিছু টাকা তুলে নিলেও কয়েক দিন পরে আবার জমা রেখেছেন। আবার অনেক প্রবাসীর আত্মীয়রা বলেছেন, এই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে কোথায় রাখব। ইসলামী ব্যাংকের সবকিছু ঠিক আছে।

ইসলামী ব্যাংকের এমডিবলেন, ইসলামী ব্যাংকের সব কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদন নিয়মিত বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়। দেশের একটি শক্তিশালী ইসলামী ব্যাংক হওয়ার কারণে একটি মহল হিংসা করছে। একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছ।ইসলামী ব্যাংকের প্রতি বিশ্বাস রাখায় ব্যাংকের গ্রাহকদের প্রতি ধন্যবাদ জানান ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা।

দ্য রিপোর্ট/মাহি/৬ নভেম্বর/২০২২