thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১,  ২ রবিউস সানি 1446

অভিজ্ঞ দেশমের সাথে লড়াই তরুন স্কালোনির

২০২২ ডিসেম্বর ১৮ ১২:০৩:৫৮
অভিজ্ঞ দেশমের সাথে লড়াই তরুন স্কালোনির

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক:ফুটবল খেলা যতটা মাঠের, তার চেয়ে বেশি মাঠের বাইরের। সহজ করে বললে, ফুটবল যতটা শারীরিক খেলা, তার চেয়ে বেশি কৌশলের। হ্যাঁ, মাঠের খেলায় ফল আসলেও, ফুটবল এর আসল কারিগর কোচ। তিনিই ঠিক করেন, কোন কৌশলে, কোন খেলোয়াড়, কোথায় খেলবেন। বিশ্বকাপ ফাইনালে শিরোপা জয়ের কৌশল নির্ধারণ করবেন, ফ্রান্সের দিদিয়ের দেশম ও আর্জেন্টিনার লিওনেল স্কালোনি।

ফুটবল মাঠে খেলেন দুদলের ২২ জন। আর ডাগআউটে খেলেন দুই জন। ফাইনালে মেসি-এমবাপেরা যখন মাঠে দৌড়াবেন জয়ের জন্য, ডাগআউটে তখন কৌশল আওড়াবেন, লিওনেল স্কালোনি ও দিদিয়ের দেশম। যিনি সঠিক সময়ে সঠিক কৌশল আঁটতে পারবেন, সফলতা ধরা দেবে তার হাতেই।

১৯৮৫ সালে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করা দিদিয়ের ক্লদ দেশম, খেলোয়াড় জীবনে ছিলেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। মার্সেই, জুভেন্টাস, চেলসি, ভ্যালেন্সিয়ার মতো নামী ক্লাবে খেলাই বলে দেয়, কতটা সমৃদ্ধ দেশমের খেলোয়াড়ি জীবন। জাতীয় দলের জার্সিতে খেলেছেন, ১০৩টি ম্যাচ। তার অধিনায়কত্বে ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট পড়ে ফ্রান্স। ২০০০ সালে জেতেন ইউরো।

২০০১ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে বুট তুলে, মোনাকোর হয়ে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেন, দ্য ওয়াটার ক্যারিয়ার খ্যাত দেশম। ২০০৩ সালে মোনাকোকে জেতান কুপ দ্য লা লিগ। পরের বছর মোনাকোকে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তুলে হন, লিগ ওয়ানের বর্ষসেরা কোচ। ২০০৯-১০ মৌসুমে তার কোচিংয়ে লিগ ওয়ান জেতে মার্সেই। টানা তিন বছর জেতে, কুপ দ্য লা লিগ শিরোপা।

২০১২ সালের জুলাইতে ফ্রান্স দলের দায়িত্ব নেন দিদিয়ের দেশম। ২০১৪ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ও ২০১৬ তে ইউরোর ফাইনালে তোলেন দলকে। ২০১৮ সালে তার অধীনে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ফ্রান্স। ইতিহাসে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে, অধিনায়ক ও কোচ ভূমিকায় বিশ্বকাপ জেতার কীর্তি গড়েন দেশম।

১০ বছর জাতীয় দল সামলে টানা দ্বিতীয়বারের মত ফ্রান্সকে বিশ্বকাপের ফাইনালে তুলেছেন ৫৪ বছর বয়সী দেশম। পগবা-বেনজামার মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে হারালেও, কার্যকর কৌশল দিয়ে একে একে বৈতরণী পার হয়েছেন এ ট্যাকটিশিয়ান। কাতারের মরুর বুকে শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে পারলে, ইতিহাসে প্রথম অধিনায়ক হিসেবে একটি এবং কোচ হিসেবে দুটি বিশ্বকাপ জয়ের রেকর্ড গড়বেন দেশম।

বিপরীতে বয়স ও অভিজ্ঞতায় ঢের পিছিয়ে আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি। রাইট ব্যাক ও রাইট মিডফিল্ডার ভূমিকায় খেলা লিওনেল সেবাস্তিয়ান স্কালোনির পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু ১৯৯৫ সালে নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজের হয়ে। তবে খেলোয়াড়ি জীবনের বেশিরভাগ অংশ কেটেছে, স্পেনের দেপোর্তিভো লা করুণায়। ইতালির আতালান্তা ও লাৎসিওতে খেলেছেন কয়েক বছর। মাত্র সাত ম্যাচে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন স্কালোনি। ছিলেন ২০০৬ বিশ্বকাপ স্কোয়াডের সদস্য।

২০১৬ সালে সেভিয়াতে হোর্হে সাম্পাওলির সহকারী হিসেবে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু স্কালোনির। ২০১৭ সালে সাম্পাওলি আর্জেন্টিনার দায়িত্ব নিলে সেখানেও সহকারী হন তিনি। রাশিয়ায় ব্যর্থতার জেরে সাম্পাওলির বিদায়ে পাবলো আইমারের সঙ্গে প্রথমে তত্ত্বাবধায়ক, পরে প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন স্কালোনি। ২০১৯ কোপা আমেরিকায় তৃতীয় হলেও ২০২১ সালে কোপা জিতিয়ে লে আলবিসেলেস্তেদের ২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটান স্কালোনি।

মেসি-ডি মারিয়ারা টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকে তার অধীনে। ধাক্কা খেয়ে বিশ্বকাপ শুরু করলেও প্রতিটি ম্যাচে স্কালোনির আলাদা ট্যাকটিকসে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করে ফাইনালের মঞ্চে পা রেখেছে আর্জেন্টিনা। বিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতা ধরতে স্কালোনির মুনশিয়ানা, প্রশংসা কুড়িয়েছে এরই মধ্যে। আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসানে এবারের বিশ্বকাপের সবচে কম বয়সী কোচ স্কালোনির বাধা, ইউরোপীয় শক্তি আর দেশমের অভিজ্ঞতা।

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

খেলা এর সর্বশেষ খবর

খেলা - এর সব খবর