thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ১০ জমাদিউস সানি 1446

বন্ধ হচ্ছে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র, লোডশেডিং তীব্র হবার আশঙ্কা

২০২৩ জুন ০৩ ১৮:০৩:৫৩
বন্ধ হচ্ছে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র, লোডশেডিং তীব্র হবার আশঙ্কা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:টানা চার দিন ধরে বাড়ছে তাপমাত্রা। গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের উৎপাদন সে তুলনায় না বাড়ায় লোডশেডিং ক্রমে বাড়ছে। ঢাকায় লোডশেডিং তেমন না হলেও এখন বিভিন্ন এলাকায় চার-পাঁচবার করে পাঁচ-সাত ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ঢাকার বাইরের শহরে এবং গ্রামাঞ্চলে ভয়াবহ লোডশেডিং হচ্ছে। কোথাও কোথাও ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্যানুযায়ী, চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন না হওয়ায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আজকালের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র। যদিও কয়লা সংকটে কেন্দ্রটির একটি ইউনিট এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। বড় সক্ষমতার এ কেন্দ্র পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে এবং চলমান তাপপ্রবাহে বিদ্যুৎ চাহিদা বাড়তে থাকলে ৩ থেকে ৪ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিদ্যুৎসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত ডলার সংকটে বিদেশ থেকে কয়লা আনা যাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে বাকিতে কয়লা এনে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সচল রাখা হয়েছিল। এতে প্রতিষ্ঠানটির দেনা প্রায় ৩৬ কোটি ডলার। এই বকেয়া পরিশোধ না করলে নতুন করে কয়লা আনা সম্ভব হবে না।

বর্তমানে দৈনিক ১৪ থেকে সাড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি হচ্ছে। বিপিডিবির তথ্য অনুযায়ী, ১ জুন দিনের বেলায় সর্বোচ্চ বিদ্যুতের উৎপাদন ছিল ১২ হাজার ৩৪৯ মেগাওয়াট আর রাতে সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ১৪ হাজার ৩৩৪ মেগাওয়াট। গতকাল বিদ্যুৎ চাহিদার পূর্বাভাসে দেখানো হয় দিনে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট আর রাতে ১৪ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। চাহিদা অনুযায়ী বিপিডিবির এ পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে গিয়ে প্রতিনিয়ত লোডশেডিং করতে হচ্ছে। চাহিদা ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপিডিবির তথ্যে খুব বেশি তারতম্য দেখা যাচ্ছে না। তবে সারা দেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের দায়িত্বে নিয়োজিত রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পিজিসিবি বলছে, বিদ্যুৎ চাহিদা ও উৎপাদনে বর্তমানে দৈনিক দুই থেকে আড়াই হাজার মেগাওয়াট ঘাটতি থাকছে। সংস্থাটি মূলত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোকে সরবরাহ করে।

পিজিসিবির ঘণ্টাপ্রতি বিদ্যুৎ উৎপাদন ও লোডশেডিংয়ের চিত্র থেকে জানা যায়, গতকাল দিবাগত রাত ১টায় লোডশেডিং ছিল আড়াই হাজার মেগাওয়াটের ওপরে। এরপর দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় গড়ে লোডশেডিং হয় প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি। গত ২৯ মের পর থেকে লোডশেডিং দিনে ও রাতে সর্বনিম্ন ১ হাজার থেকে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত হচ্ছে। ক্লসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কয়লা সংকটের কারণে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পটুয়াখালীর পায়রার ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির একটি ইউনিট (৬৬০ মেগাওয়াট) বন্ধ রয়েছে। বাকি ইউনিটটি আজ অথবা কালকের মধ্যে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। দ্বিতীয় ইউনিটটি বন্ধ হলে গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঘাটতি তৈরি হবে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে বিদ্যমান ঘাটতি আরো বেড়ে যাবে।

লোডশেডিং পরিস্থিতির বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিডিবির সদস্য (উৎপাদন) এসএম ওয়াজেদ আলী সরদার বলেন, ‘লোডশেডিং কীভাবে কমানো যায় সে বিষয়টি নিয়ে আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করছি। মনিটরিং কার্যক্রম সার্বক্ষণিক চলমান।’

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর

অর্থ ও বাণিজ্য - এর সব খবর