thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ১ মে 24, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ২২ শাওয়াল 1445

ইরান-ইসরায়েল: সামরিক শক্তিতে এগিয়ে কারা?

২০২৪ এপ্রিল ১৮ ১৪:০৮:৫২
ইরান-ইসরায়েল: সামরিক শক্তিতে এগিয়ে কারা?

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ইরানের পর এবার ইসরাইলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল হিজবুল্লাহ। বুধবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলের দিকে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে দাবি করছেন তারা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ হামলায় কমপক্ষে ১৩ জন আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। আলজাজিরা, দ্য নিউইউয়র্ক টাইমস।

এর আগে শনিবার ইরানের বিপ্লাবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) ইসরাইলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলা চালায় ইসরাইল। এই হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। যার জেরে ইসরাইলের মূল ভূখণ্ডে নজিরবিহীন ওই হামলা চালায় ইরান। সেই হামলারই আবার প্রতিশোধ নিতে রীতিমতো মরিয়া হয়ে উঠেছে ইসরাইল। ইসরাইল-ইরানের হামলা-পালটাহামলা আর হুমকির মধ্যেই এবার ইসরাইলের ওপর আবারও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল হিজবুল্লাহ।গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের হামলাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে মধ্যপ্রাচ্যে। এবার আগের তুলনায় সারা বিশ্ব উত্তেজনার একটা বিপজ্জনক সন্ধিক্ষণে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সবার মনে একটা সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে? ইরান নাকি ইসরায়েল।

দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু বেধে যায় কি না এ নিয়ে চিন্তিত সবাই। কারণ সক্ষমতার দিক থেকে তুলনা করলে দেখা যায় দুটি দেশই সামরিক দিক থেকে বেশ শক্তিশালী। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইরান সামরিক সক্ষমতার দিক থেকে ইসরায়েলের তুলনায় তিন ধাপ এগিয়ে আছে। তবে দুটি দেশই বিশ্বের সামরিক শক্তিধর দেশের শীর্ষ ২০টি দেশের মধ্যে অবস্থান করছে। সামরিক সক্ষমতায় শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে র‍্যাংকিংয়ে ইরানের অবস্থান ১৪তম আর ইসরায়েলের অবস্থান ১৭তম। বলা যাচ্ছে সামরিক শক্তির দিক থেকে খুব কাছাকাছি অবস্থার দুই দেশের মধ্যে চলছে উত্তেজনা। দেখে আসা যাক বিভিন্ন দিক থেকে এগিয়ে কোন দেশ?

সামরিক শক্তি

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাজেট ২৪৪০ কোটি ডলার। অন্যদিকে ইরানের বাজেট ৯৯৫ কোটি ডলার। এই র‍্যাংকিংয়ের ১৪৫ দেশের মধ্যে ইরান ৩৩তম অবস্থানে আর ইসরায়েল ১৯ তম অবস্থানে রয়েছে।

যুদ্ধবিমান

ইরানের মোট সামরিক বিমানের সংখ্যা ৫৫১টি আর ইসরায়েলের আছে ৬১২টি। এর মধ্যে ইরানের যুদ্ধ বিমান আছে ১৮৬টি আর ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান আছে ২৪১টি। ইরানের অ্যাটাকিং বিমান সংখ্যা ২৩টি যেখানে ইসরায়েলের আছে ৩৯টি।

ইরানের পরিবহন বিমান আছে ৮৬টি ইসরায়েলের আছে ১২টি। ইরানের প্রশিক্ষণ বিমান ১০২টি আর ইসরায়েলের আছে ১৫৫টি।

সৈন্য

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার জানাচ্ছে, সৈন্য সংখ্যার হিসেবে ইসরায়েলের চেয়ে এগিয়ে আছে ইরান। ইরানের নিয়মিত সেনা আছে ১১ লাখ ৮০ হাজার যেখানে ইসরায়েলের সৈন্য ৬ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে ইরানের রিজার্ভ সৈন্য সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ আর ইসরায়েলের রিজার্ভ সেনা আছে ৪ লাখ ৬৫ হাজার।

ট্যাংক
সাঁজোয়াযান

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার’র তথ্য অনুযায়ী, ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানের দিক থেকে ইসরায়েলের চাইতে এগিয়ে আছে ইরান। ইসরায়েলের ট্যাংক আছে ১৩৭০টি আর ইরানের ১৯৯৬টি। সাঁজোয়া যান আছে ইরানের ৬৫ হাজার ৭৬৫টি আর ইসরায়েলের আছে ৪৩ হাজার ৪০৩টি।

এ ছাড়া আর্টিলারি সক্ষমতায় এগিয়ে ইরান যেখানে তাদের রকেট আর্টিলারি এমএলআরএস এর সংখ্যা ৭৭৫টি এবং সেলফ প্রপেলড আর্টিলারির সংখ্যা ৫৮০টি। অন্যদিকে ইসরায়েলের এ দিক থেকে সেফল প্রপেলড আর্টিলারির সংখ্যা ৬৫০টি এবং এমএলআরএস বা রকেট আর্টিলারির সংখ্যা ১৫০টি।

হেলিকপ্টার

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইরানের হেলিকপ্টার আছে ১২৯টি আর ইসরায়েলের ১৪৬টি। ৪৮টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার নিয়ে ইরানের চেয়ে শক্তিশালী ইসরায়েল। ইরানের অ্যাটক হেলিকপ্টারের সংখ্যা ১৩টি।

নৌশক্তি

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার বলছে, নৌবাহিনীর শক্তির দিক থেকে এগিয়ে আছে ইরান। দেশটির ১০১টি যুদ্ধজাহাজ রয়েছে যেখানে ৭টি ফ্রিগেট এবং ২১টি টহল জাহাজ আর ইসরায়েলের যুদ্ধজাহাজ সংখ্যা ৬৭টি। এর মধ্যে টহল জাহাজ আছে ৪৫টি এবং ইসরায়েলের কোনো ফ্রিগেট নেই। সাবমেরিনের দিক থেকেও ইরান শক্তিশালী। দেশটির সাবমেরিন আছে ১৯টি যেখানে ইসরায়েলের সাবমেরিন আছে ৫টি।

পারমাণবিক শক্তি

সুইডেন-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)'র সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শুরুতে বিশ্বের ৯টি দেশের কাছে প্রায় ১২ হাজার ৫১২টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। দেশগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া এবং ইসরায়েল।

এই তালিকায় ইরানের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক অস্ত্র কখনোই ছিল না কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার দাবি করেছে যে ইরান তাদের ইউরেনিয়ামের মজুদ দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে। ইরান দাবি করে তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। এদিকে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেনি যে কোন দেশের হাতে কতটি এ ধরনের অস্ত্র রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, পারমাণবিক অস্ত্র ক্ষমতার বিষয়টি তারা তাদের রিপোর্টে বিবেচনায় নেয়নি।

(দ্য রিপোর্ট/আঠারো এপ্রিল দুইহাজার চব্বিশ)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর