খালেদা জিয়া—শেখ হাসিনা : কার ভুলে কে জয়ী

তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু :দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে একটানা শাসন করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। এ ক’বছর ধরেই তার রাজনৈতিক ‘প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও দক্ষতা’ নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। ইতিবাচক আলোচনা করেছেন তার পক্ষের লেখক, বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকসহ সবশ্রেণির আওয়ামী রাজনীতির অনুসারী ব্যক্তি।
বিপরীতে তার শাসনকালের নেতিবাচক দিক নিয়ে আলোচনা করে আসছিলেন বিরোধীপক্ষ। দেশে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি। এর নেত্রী খালেদা জিয়া কী কী ভুল করেছেন তা নিয়েও বিস্তর কথাবার্তা হয়েছে। খালেদা জিয়ার ভুলেই শেখ হাসিনার মসনদে থাকা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছিল—এমন আলোচনা ছিল বেশি।
৫ আগস্ট থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক কালো অধ্যায়ের অবসান হয়েছে-দেশী বিদেশী সংবাদমাধ্যমে এভাবেই বলা হচ্ছে। এদিন রাজধানী ঢাকায় প্রায় এক কোটি মানুষ বিজয়ের আনন্দে রাজপথে নেমে আসে। একইভাবে আনন্দ উদযাপন করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষেরা। হাতে হাতে বহন করতে দেখা যায় দেশের লাল-সবুজ পতাকা।
ইট, কাঠ ও পাথরসহ সব ধরণের আসবাবপত্র, তৈজসপত্রসহ গণভবনের মাছ, হাস, পাখি ফুলগাছসহ সবকিছু লাখ লাখ জনতা নিয়ে যায়।এদের অনেকের মূল উদ্দেশ্য স্বৈরশাসকের স্মৃতি চিহ্ন স্মারক হিসেবে রাখা। আবার অনেকে নিজের ১৫ বছরের বঞ্চনার অত্যচারের প্রতিশোধ নিতে লুটে নেয় এগুলো। গণভবন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ ৩২ নম্বরের সব মালামাল ‘গণিমতের মাল’-এর মতো জনতার দখলে চলে যায়। শেখ হাসিনার বাবার বিশালাকৃতির মূর্তি, মনুমেন্ট, টেরাকোটা, রিলিফওয়ার্ক একে একে ভেঙে গুড়িয়ে দেয় ক্ষুব্ধ লোকজন। এখন অনেকেরই বক্তব্য শেখ হাসিনার ভুল রাজনীতির শিকার—তার পিতা।ভারতের কয়েকটি বিখ্যাত মিডিয়া মন্তব্য করেছে, ১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্ট ব্যক্তি শেখ মুজিব নিহত হয়েছেন, এবার নিহত হলেন নেতা শেখ মুজিব। আর এই কাজটি করেছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা।
হ্যা, যেটা বলছিলাম। শেখ হাসিনা কী কী ভুল করেছিলেন। বা আদৌও কি কোনো ভুল করেছিলেন? সাদা চোখে অনেকেই বলছেন শেখ হাসিনার ভুলের শুরু ১৪ই জুলাই থেকে। সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা যে সময় থেকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে শিক্ষার্থীদের গালি দিয়েছেন। তখনই জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সূচনা। এরপর থেকে তার নেওয়া প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল ভুলে ভরা। পরিণতিতে ৫ই আগস্ট দেশ ছেড়ে পলায়ন। এ সময়ে তার হুকুমে হাজার হাজার শিক্ষার্থী, শিশু, নারী পুরুষের ওপর গুলি চালানো হয়। ঝরে যায় অসংখ্য তাজা প্রাণ। পুলিশসহ ছাত্রলীগের নেতা কর্মীও নিহত হন। এই পলায়নের মধ্যে দিয়ে তিনি নিজের সব ‘অর্জনকে’ বিসর্জন দিলেন। নিজের দলের নেতাকর্মীদের আজীবন ‘পলায়নকারী নেত্রীর কর্মী’ তকমা এটে দিয়ে চলে গেলেন। ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে দেশত্যাগী হলেন।
অনেকেই তার এই ভুলগুলোকে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবকালীন ভুল হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন। কিন্তু এই ভুলের শুরুটা আসলে ২০০৮ সাল থেকে।
হাসিনার ভুলের হিসেবে যাওয়ার আগে আসুন খালেদা জিয়ার কী কী ‘ভুল’ এতো দিন আলোচিত হয়েছে সেটা একটু দেখি।
প্রথমত, যে বিষয়টি প্রধান আলোচনায় রয়েছে তা হলো তিনি তার আপসহীন ইমেজের কাছে আটকে গিয়েছিলেন। সে কারণে ওয়ান ইলেভেন সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে জেনারেল মঈনের পক্ষ থেকে যখন তাকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় এবং বিনিময়ে তাদের (ফখরুদ্দিন–মঈন উদ্দীন) ক্ষমা করে দিতে হবে বলে দাবি করা হয় । খালেদা জিয়া তখন এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।প্রথমত তিনি এটাকে অপরাধ বলে মনে করেছেন। দেশের মানুষের কাছে দেওয়া গণতন্ত্র রক্ষার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বেঈমানী হিসেবে দেখেছেন। খালেদা জিয়া তিন তিন বার এ প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বলে সে সময়ে কানাঘুষা ছিলো। এ তথ্য অবশ্য নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে ঢাকার রাজনৈতিক অঙ্গনে এটা বহুল আলোচিত।
খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় ভুল ২০০৮ সালে ওয়ান ইলেভেন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অংশ নেওয়া। তৃতীয় ভুল ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নেওয়া। চতুর্থ ভুল ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া। পঞ্চম ভুল ২০২৪ সালের ভোটে অংশ না নেওয়া। এভাবে খালেদা জিয়ার নানা ‘ভুল’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে গেল ১৫ বছর ধরে।
তবে তারও আগে নিজের শাসন আমলে খালেদার দুটি ভুল নিয়েও রাজনীতিতে জোর সমালোচনা আছে। ১৯৯১ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বেশ ভালো ভাবেই দেশ চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তণের দাবিতে ৯৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামীর যৌথ আন্দোলনের গতিপথ ও তীব্রতা বুঝতে ব্যর্থ হন তিনি। ফলে আন্দোলনের মুখে ১৯৯৬ সালে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং ১৫ ফেব্রুয়ারী একটি বিতর্কিত নির্বাচন করতে বাধ্য হন।
সেই পার্লামেন্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল উপস্থাপন করে তা আইনে রূপ দেন। অথচ এই দাবি আগেই মেনে নিলে বিতর্কিত ১৫ ফেব্রুয়ারী নির্বাচন করতে হতো না। ঠিক একই ধরণের ভুল করেন ২০০৬ সালে। এ সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন তা নিয়ে আওয়ামী লীগের তীব্র আন্দোলনের মুখে পড়েন। পরিস্থিতির অবনতি হলে বিচারপতি কে এম হাসান তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হতে অস্বীকৃতি জানান। অথচ তাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বানানোর উদ্দেশ্যে বিচারপতিদের চাকুরির বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছিলো। এসময় আরেক বিচারপতি এম এ আজিজকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান করার চেষ্টা করা হয়। আন্দোলনের মুখে সে চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনকে তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব নিতে হয়। আর তখনই ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। ক্ষমতায় আসে সেনা শাসিত মঈন ফখরুদ্দিনের অন্তর্বতীকালীন সরকার। এই দুই বারই মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে না পারা ছিলো খালেদা জিয়ার তথ্যের ঘাটতি যা তাকে ভুল পথে পরিচালিত করেছিলো। শেষবারের ভুলের খেসারত হিসেবে খালেদা জিয়ার হাত থেকে ফসকে যায় ক্ষমতা। দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর বাংলাদেশের মসনদ থেকে দূরে চলে যান তিনি। জেল খাটতে খাটতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসংখ্য নেতা কর্মীর জীবনের নেমে আসে অন্ধকারের অমানিশা। গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ে। বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রন চলে যায় হাসিনার হাত ধরে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের কাছে।
বিপরীত হাসিনার ভুলের দিকে নজর দেওয়া যাক। ২০০৮ সালের পর থেকেই শেখ হাসিনার সব ধরনের ভুলগুলোকে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড হিসেবে বৈধতা দিয়েছেন সহযোগী ও অনুগত বুদ্ধিজীবীরা। ফলে তার ভুলের পাহাড় উচু হতে থাকে। ভুল আর ভুল থাকে না। অপরাধে পর্যবসিত হতে থাকে।
নব্বইয়ের গণআন্দোলনের মাধ্যমে ফিরে আসা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে শুরু করেন শেখ হাসিনা। প্রথমে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করেছেন। পরে ভোটার বিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে তিন তিন বার ক্ষমতায় থেকে গেছেন। জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে গিয়ে বিচারব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করেছেন। পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে রূপান্তর করেছেন। দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। বিদেশে টাকা পাচারের সহায়ক সরকার প্রধান হিসেবে দেশে বিদেশে পরিচিতি পেয়েছেন। বিরোধী রাজনীতিকে দমন করতে গিয়ে হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে গুম ও খুন করেছেন। আয়নাঘরে প্রতিপক্ষকে বিনা বিচারে বছরের পর বছর আটকে রেখেছেন।নিজের দলের রাজনীতিকে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিয়েছেন।দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যহীন বানিয়ে রেখেছেন। কিছু লুটেরাদের টাকা পয়সা বানিয়ে দিতে সহযোগিতা করেছেন। এভাবে তার ভুল গুলো অপরাধে পরিণত হয়েছে। কিন্ত এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে কেউ প্রশ্ন করেনি, করতে পারেনি। যারা প্রশ্ন করেছেন তাদের জেলে পুরেছেন না হলে দেশ ছাড়া করেছেন, নইলে গুম করেছেন। এসব অপরাধকে আড়াল করতে শেখ হাসিনার স্তাবকেরা তাকে আয়রন লেডি বা লৌহমানবী হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। মধ্যযুগীয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ম্যাকিয়াভেলীর শাসকের কৌশল `শিয়ালের মতো ধূর্ত ও সিংহের মতো সাহসী’ হিসেবে হাসিনাকে তুলে ধরেছেন। উন্নয়নের আড়ালে দুর্নীতিকে বৈধ করার কৌশলকে হাসিনাপন্থী বুদ্ধিজীবীরা সমর্থন করে গেছেন। বিপরীতে বিরোধীদের মত দমন করাকে জায়েজ করেছেন। এ সময়ে শেখ হাসিনা কী কী অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড বা অপরাধ করেছেন তা নিয়ে কোনো সমালোচনা তারা করেননি। কিন্তু সেই অনুগতদের কেউ কেউ ক্ষমতাচ্যুতির ১০ দিনের মাথায় তাকে, বখতিয়ার খিলজির অগ্রাভিযানে সেনবংশের নৃপতি লক্ষণ সেনের পলায়নের সাথে তুলনা করে; এই কৌশলকে শুধু ভুল নয় অপরাধ হিসেবে দেখছেন।
আমার মতে শেখ হাসিনার একটাই ভুল। তিনি বিরোধী মত সহ্য করতে পারতেন না। অবশ্য এটা ভুল না তার স্বভাব বলা সঠিক হবে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। দলের সব পর্যায়ের নেতা কর্মী সমর্থক ও বুদ্ধিজীবী এই স্বভাবে আক্রান্ত। এই স্বভাবে আক্রান্ত হাসিনা নিজের ভুল জানার পথ বন্ধ করে দিয়ে পতনের পথ তৈরি করেছেন। হাসিনার আমলে সঠিক তথ্য পাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। গণমাধ্যমের ওপর আস্থাহীন মানুষ বেছে নেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। গুজব আর সত্য তথ্যে একাকার হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
ভারতের একজন সাংবাদিক সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “এখন মোটামুটি সবাই বুঝতে পেরেছে শেখ হাসিনাকে কেন এভাবে সব ছেড়েছুড়ে দেশত্যাগী হতে হলো। কী-কী অপরাধ তিনি করেছেন যার দরুন তাকে এই শাস্তি পেতে হলো। এক-দুই করে তা লিখতে গেলে, প্রথম কারণ হবে– চূড়ান্ত ঔদ্ধত্য। অনেক দিন ধরেই কারও কোনো পরামর্শ তিনি শুনতেন না।নিজের ইচ্ছামতো চলতেন।
দ্বিতীয় কারণ, নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করে গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেকগুলো গেঁথে দেওয়া, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে অন্ধ অনুগত আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত করা।
তৃতীয়, বিচারবিভাগকে নিজের ও দলের সুবিধামতো চালনা করা। চতুর্থ, আইনের শাসনের অবলুপ্তি ঘটানো। পঞ্চম, দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি রোধে চরম ব্যর্থতা, যার দরুণ সর্বত্র হাহাকার সৃষ্টি হওয়া। আর ষষ্ঠতম কারণ হলো–দুর্নীতি।
শেষের এই কারণ, মানে, দুর্নীতির বহর বাংলাদেশে ভয়ঙ্কর। মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো। ছোটবেলায় ‘পুকুর চুরি’র অর্থ জেনেছিলাম। ১২ বছর ধরে বাংলাদেশে যাওয়ার সুবাদে দেখছি, পুকুর চুরি করা সে-দেশে কোনো অপরাধই নয়। তা ছিঁচকে চোরের কাজ। সমাজের মাথা যারা, সেসব রাঘব বোয়াল খালবিল, নদী, সাগর, পাহাড়, জঙ্গল সব হাপিশ করে দিচ্ছে! এক-একজনের চুরির বহর হাজার-হাজার কোটি টাকা। চুরির টাকার বেশিটাই বিদেশে পাচার হয়ে গিয়েছে।” (সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন)। ১৪ জুলাইয়ের ওই সংবাদ সম্মেলনেশেখ হাসিনা বলেছিলেন তার অফিসের পিওনও ৪০০ কোটি টাকার মালিক। মূলত এই কথা থেকেই বোধ হয় সৌম্যবন্দ্যোপাধ্যয় তথ্যপ্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন।
ইতিহাসে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভুলগুলো নিয়েই শুধু আলোচনা হবে না, আলোচনা হবে তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে। তার প্রতিহিংসার রাজনীতি, গণতন্ত্রকে হত্যা, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া, একটি স্বাধীন দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা-আলোচনায় এগুলো সামনে আসবে।
ওয়ান ইলেভেনের সময় মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের উদ্যোগ ভেস্তে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তাকে জোর করে দেশ ছাড়া করতে ব্যর্থ হয়েছিলো মঈন-ফখরুল সরকার। তাই নিজের রাজনীতি বাঁচাতে সে সময় শেখ হাসিনাও দেশে ফিরে এসেছিলেন। খালেদা জিয়া দেশে ছিলেন বলেই গণতন্ত্র ফিরে এসেছিলো। ভোট দিয়ে ওয়ান ইলেভেন সরকার সরে যায়। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের সুফলভোগী হাসিনা ক্ষমতায় বসেই প্রথমের নিজেদের আন্দোলনের ফসল নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন।
দেশের বুদ্ধিজীবীদের দিয়ে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর আর দক্ষিণ কোরিয়ার এক দলীয় শাসনের মাধ্যমে উন্নয়নের মডেল উপস্থাপন করতে থাকেন। তখন গণতন্ত্র নয় উন্নয়নই প্রধান বিষয় হিসেবে সামনে হাজির করে গণমাধ্যমগুলো।
ভোটার বিহীন নির্বাচনের এক বিরল পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। তাতে নিজের মতো আসন বণ্টনের ক্ষমতা ভোগ করার চেষ্টার করেন। এসব নির্বাচনে অংশ নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়ে বিএনপির সিদ্ধান্তগুলো ভুল বা সঠিক ছিলো কি না তা নিয়ে পণ্ডিতবর্গ আলোচনায় মেতে উঠতে থাকেন। সেই সব আলোচনার ফাঁদে পড়ে বিএনপির নেতা কর্মী ও সমর্থক নেতা কর্মীরাও খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠতেন। এমনকি এমন প্রচারণাও মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করে যে লন্ডনে বসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান টাকার বিনিময়ে দলকে ভোটে নামিয়েছেন। মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন। এসব গোয়েবলসীয় প্রচারণায় বিএনপির মাঠের নেতাকর্মীরা কখনো কখনো দারুণ হতাশ হয়েছেন।
মিডিয়াগুলো শুধু বিএনপির আন্দোলনের ব্যর্থতার বয়ান তুলে ধরেছে। বিএনপির ওপর গত ১৫ বছরের চলমান নির্যাতন গুম, খুন, মামলা-হামলা সব কিছুকে অবজ্ঞা করে গেছে এক নাগাড়ে।
তবে হাসিনার এতো নির্যাতনের পরও বিএনপিকে ভেঙে ফেলার পরিকল্পনা সফল হয়নি। ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতা কর্মীরা এখন হয়তো বুঝতে পারছেন খালেদা জিয়ার ভুল ছিল না। তিনি গণতন্ত্রের মোড়কে জেকে বসা এক ভয়াবহ স্বৈরশাসকের কবল থেকে দলকে রক্ষা করতে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে গেছেন।এসময়ে হারিয়েছেন প্রিয় পুত্রকে। আরেক পুত্রের সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত থেকেছেন বছরের পর বছর। সঠিক চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত খালেদা জিয়া জীবনের শেষ সময়েও গণতন্ত্র আর সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে জেগে ছিলেন, এবং আছেন।
বিপরীতে হাসিনাও কোনো ‘ভুল’ করেন নি।তিনি স্বজ্ঞানে করে গেছেন অপরাধ। তিনি দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন। ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশের সার্বভৌমত্বও বিকিয়ে দিচ্ছিলেন।
গত শতাব্দির আশির দশকের শুরুতে দক্ষিন এশিয়ার এই বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই দুই নারীর অভিষেক ঘটে। একজন পিতার রক্ত আরেক জনের স্বামীর রক্তের ওপর ভর করে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। উত্তরাধিকার সুত্রে তারা যখন রাজনীতিতে আসেন তখন দেশের জনসংখ্যা ছিলো প্রায় ১২ কোটি। ২০২৪ সালে জনসংখ্যা বেড়ে যখন প্রায় ২০ কোটির কাছাকাছি তখনও এই দুই নারী এ দেশের রাজনীতিতে সমান প্রাসঙ্গিক।
একজন শেখ হাসিনা। যিনি সবাইকে ফেলে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আরেকজন খালেদা জিয়া, সময়ের বিচারে ভুলগুলোই যার শুদ্ধতায় পরিণত হয়েছে। তিনি এখন মুক্ত। শ্বাস নিচ্ছেন মুক্তবাতাসে।
তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু: সম্পাদক , দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোরডটকম মোবাইল : ০১৭১৬-৬০৬৭৯৯
(টিআইএম/ মা হা/এস এম বি/ এস এফ/ এ কে এম এম)
পাঠকের মতামত:

- কাফনের কাপড় বেঁধে কারিগরি শিক্ষার্থীদের গণমিছিল
- সঠিক সমালোচনা করুন কিন্তু গুজব ছড়াবেন না : ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
- ‘ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে, এ ধরনের ফাজলামি বাদ দেন’
- পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’ : ভারত
- রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বড় বাধা আরাকান আর্মি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- সবজির বাজার স্থিতিশীল, আগের দামেই মাছ-মুরগি
- ‘গাজায় কোনো মানবিক সাহায্য প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না’
- ইসলামী ব্যাংকের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম উদ্বোধন
- রোহিঙ্গাদের জন্য ১ কোটি ২৭ লাখ ডলার দেবে সুইডেন
- ঢাকায় এসে আমি খুশি: আমনা বালুচ
- লন্ডনে কী আলোচনা হলো, জানালেন জামায়াত আমির
- শেষ কার্যদিবসে সূচকের পতন, কমেছে লেনদেন
- গাজায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৩৭
- এবার প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার মডেল মেঘনা আলম
- ১ মে থেকে দেশজুড়ে ডিম-মুরগির খামার বন্ধের ঘোষণা
- বিএনপি সংস্কারেরই দল, বিপক্ষের না: নজরুল ইসলাম
- বিচার বিভাগ সংস্কার শিগগিরই: উপদেষ্টা রিজওয়ানা
- বৈঠকের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা, আন্দোলন চলবে
- গাইবান্ধা-২ আসনের সাবেক এমপি শাহ সারোয়ার কবীর আটক
- এসকিউ ব্রোকারেজের বিরুদ্ধে বিএসইসির তদন্ত কমিটি
- হ্যান্ডবল ও সাঁতারে ১৯ বছর পর কোচ নিয়োগ
- পিএসএলে উড়ছেন রিশাদ, উড়ছে লাহোরও
- দেশের রিজার্ভ বেড়ে ২৬ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার
- লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াত আমির
- জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আজ
- ট্রাম্পের এক কর্মকর্তা ঢাকায়, আরেকজন আসছেন বুধবার
- ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিয়ে বিশ্বে ষষ্ঠ দূষিত শহর ঢাকা
- ধানমন্ডিতে গাড়ি থেকে চাঁদা আদায়, ভাইরাল ভিডিওর সেই যুবক আটক
- গাজায় নিহত আরও ২৩ ফিলিস্তিনি, প্রাণহানি ছাড়াল ৫১ হাজার
- বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বাংলাদেশি জনগণ: যুক্তরাষ্ট্র
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ৪২১তম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত
- ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ফিচারসমৃদ্ধ স্মার্ট প্রযুক্তিপণ্য প্রদর্শন করছে ওয়ালটন
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ব্যবসা পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত
- মার্সেল ফ্রিজ কিনে ১০ লাখ টাকা পেলেন কুষ্টিয়ার মিঠুন
- ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ৪২০তম পর্ষদ সভা
- বিশ্ব পানি দিবসে ওয়ালটন বাজারে আনল অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওয়াটার পিউরিফায়ার
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ৪১৯তম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত
- এবার ওয়ালটন ডিপ ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার হলেন সিলেটের কাওসার আহমেদ
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও লুবানা জেনারেল হাসপাতালের মধ্যে চুক্তি
- ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার ঢাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মর্তুজা
- গণহত্যা মামলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেপ্তার
- গণতান্ত্রিক আকাঙ্খা থেকেই এ অভ্যুত্থান: সালাহউদ্দিন আহমেদ
- হাজারো প্রাণের উচ্ছ্বাসে শেষ হলো বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা
- প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা বার্তায় হঠাৎ কোকিলের গান, রহস্য জানালেন প্রেস সচিব
- ব্যতিক্রমধর্মী ড্রোন শোতে ঝলমলে ঢাকার আকাশ
- "আলোচনা-ঐক্যের মাধ্যমে রোডম্যাপসহ সব সমস্যা সমাধান হবে"
- মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ মামলার চার্জশিট দিল পুলিশ
- সূচকের পতন, কমেছে শেয়ারদর
- যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ দিনের বেশি থাকা বিদেশিদের নিবন্ধন করার নির্দেশ
- শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়ল ৩৩ শতাংশ
- পাঁচ কোটির সম্মেলনে বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে ৩১০০ কোটি টাকার
- আমরা হিংসা-বিদ্বেষহীন দেশ গড়তে চাই: সেনাপ্রধান
- সারা দেশে সব মসজিদে একই সময় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা
- পাসপোর্টে ফিরল ‘এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’
- বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমের আটকাদেশ কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট
- সংস্কার চিরস্থায়ী কোনো বন্দোবস্ত নয়: রিজভী
- বৈচিত্র্য নিয়ে জাতির জীবনে ফিরে আসে পহেলা বৈশাখ: তারেক রহমান
- অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ শেখ হাসিনার বিচার করা
- পয়লা বৈশাখে যান চলাচলে ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা
- ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’ আবারও তৈরি হচ্ছে চারুকলায়
- আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের ১৭ ঘণ্টা পর এক ইউনিট চালু
- আমাদের হৃদয়ে বাস করছে একেকটা গাজা: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজহারী
- সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার
- ঢাকার সমাবেশ ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে: ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত
- মার্চ ফর গাজায় কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসায় প্রস্তুত ঢামেক
- নিম্ন আদালত মনিটরিংয়ে হাইকোর্টের ১৩ বিচারপতি
- ঢাকার বুকে গর্জে উঠবে গাজার মুক্তির আওয়াজ, চলছে জোর প্রস্তুতি
- গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এক দিনে নিহত ২৬
- স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতি অটল সমর্থন অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ
- দেশ থেকে আড়াই-তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে: গভর্নর
- গাজা ‘পৃথিবীর নরকে’ পরিণত হয়েছে: রেড ক্রস
- এক্সিলেন্স ইন ইনভেস্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেল ওয়ালটন হাই-টেক
- কারাগারে অভিনেত্রী মেঘনা আলম
- ‘স্বৈরাচারের প্রতিকৃতি’ আবারও তৈরি হচ্ছে চারুকলায়
- ট্রাম্পের এক কর্মকর্তা ঢাকায়, আরেকজন আসছেন বুধবার
- ঢাকার সমাবেশ ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে: ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত
- এসকিউ ব্রোকারেজের বিরুদ্ধে বিএসইসির তদন্ত কমিটি
- স্বাধীন ফিলিস্তিনের প্রতি অটল সমর্থন অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ
- গাজা ‘পৃথিবীর নরকে’ পরিণত হয়েছে: রেড ক্রস
- পাসপোর্টে ফিরল ‘এক্সসেপ্ট ইসরায়েল’
- মার্চ ফর গাজায় কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসায় প্রস্তুত ঢামেক
- গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এক দিনে নিহত ২৬
- ঢাকার বুকে গর্জে উঠবে গাজার মুক্তির আওয়াজ, চলছে জোর প্রস্তুতি
- আমরা হিংসা-বিদ্বেষহীন দেশ গড়তে চাই: সেনাপ্রধান
- পয়লা বৈশাখে যান চলাচলে ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা
- নিম্ন আদালত মনিটরিংয়ে হাইকোর্টের ১৩ বিচারপতি
- দেশ থেকে আড়াই-তিন লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে: গভর্নর
- সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ প্রধান উপদেষ্টার
- বৈচিত্র্য নিয়ে জাতির জীবনে ফিরে আসে পহেলা বৈশাখ: তারেক রহমান
- অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ শেখ হাসিনার বিচার করা
- বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনা আলমের আটকাদেশ কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট
- আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের ১৭ ঘণ্টা পর এক ইউনিট চালু
- আমাদের হৃদয়ে বাস করছে একেকটা গাজা: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজহারী
- লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জামায়াত আমির
- মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ মামলার চার্জশিট দিল পুলিশ
- শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়ল ৩৩ শতাংশ
- সংস্কার চিরস্থায়ী কোনো বন্দোবস্ত নয়: রিজভী
- যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ দিনের বেশি থাকা বিদেশিদের নিবন্ধন করার নির্দেশ
বিশেষ সংবাদ এর সর্বশেষ খবর
বিশেষ সংবাদ - এর সব খবর
