খালেদা জিয়া—শেখ হাসিনা : কার ভুলে কে জয়ী

তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু :দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে একটানা শাসন করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। এ ক’বছর ধরেই তার রাজনৈতিক ‘প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও দক্ষতা’ নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। ইতিবাচক আলোচনা করেছেন তার পক্ষের লেখক, বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকসহ সবশ্রেণির আওয়ামী রাজনীতির অনুসারী ব্যক্তি।
বিপরীতে তার শাসনকালের নেতিবাচক দিক নিয়ে আলোচনা করে আসছিলেন বিরোধীপক্ষ। দেশে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি। এর নেত্রী খালেদা জিয়া কী কী ভুল করেছেন তা নিয়েও বিস্তর কথাবার্তা হয়েছে। খালেদা জিয়ার ভুলেই শেখ হাসিনার মসনদে থাকা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছিল—এমন আলোচনা ছিল বেশি।
৫ আগস্ট থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক কালো অধ্যায়ের অবসান হয়েছে-দেশী বিদেশী সংবাদমাধ্যমে এভাবেই বলা হচ্ছে। এদিন রাজধানী ঢাকায় প্রায় এক কোটি মানুষ বিজয়ের আনন্দে রাজপথে নেমে আসে। একইভাবে আনন্দ উদযাপন করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষেরা। হাতে হাতে বহন করতে দেখা যায় দেশের লাল-সবুজ পতাকা।
ইট, কাঠ ও পাথরসহ সব ধরণের আসবাবপত্র, তৈজসপত্রসহ গণভবনের মাছ, হাস, পাখি ফুলগাছসহ সবকিছু লাখ লাখ জনতা নিয়ে যায়।এদের অনেকের মূল উদ্দেশ্য স্বৈরশাসকের স্মৃতি চিহ্ন স্মারক হিসেবে রাখা। আবার অনেকে নিজের ১৫ বছরের বঞ্চনার অত্যচারের প্রতিশোধ নিতে লুটে নেয় এগুলো। গণভবন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ ৩২ নম্বরের সব মালামাল ‘গণিমতের মাল’-এর মতো জনতার দখলে চলে যায়। শেখ হাসিনার বাবার বিশালাকৃতির মূর্তি, মনুমেন্ট, টেরাকোটা, রিলিফওয়ার্ক একে একে ভেঙে গুড়িয়ে দেয় ক্ষুব্ধ লোকজন। এখন অনেকেরই বক্তব্য শেখ হাসিনার ভুল রাজনীতির শিকার—তার পিতা।ভারতের কয়েকটি বিখ্যাত মিডিয়া মন্তব্য করেছে, ১৯৭৫-এর ১৫ই আগস্ট ব্যক্তি শেখ মুজিব নিহত হয়েছেন, এবার নিহত হলেন নেতা শেখ মুজিব। আর এই কাজটি করেছেন তার কন্যা শেখ হাসিনা।
হ্যা, যেটা বলছিলাম। শেখ হাসিনা কী কী ভুল করেছিলেন। বা আদৌও কি কোনো ভুল করেছিলেন? সাদা চোখে অনেকেই বলছেন শেখ হাসিনার ভুলের শুরু ১৪ই জুলাই থেকে। সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা যে সময় থেকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে শিক্ষার্থীদের গালি দিয়েছেন। তখনই জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের সূচনা। এরপর থেকে তার নেওয়া প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল ভুলে ভরা। পরিণতিতে ৫ই আগস্ট দেশ ছেড়ে পলায়ন। এ সময়ে তার হুকুমে হাজার হাজার শিক্ষার্থী, শিশু, নারী পুরুষের ওপর গুলি চালানো হয়। ঝরে যায় অসংখ্য তাজা প্রাণ। পুলিশসহ ছাত্রলীগের নেতা কর্মীও নিহত হন। এই পলায়নের মধ্যে দিয়ে তিনি নিজের সব ‘অর্জনকে’ বিসর্জন দিলেন। নিজের দলের নেতাকর্মীদের আজীবন ‘পলায়নকারী নেত্রীর কর্মী’ তকমা এটে দিয়ে চলে গেলেন। ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে দেশত্যাগী হলেন।
অনেকেই তার এই ভুলগুলোকে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবকালীন ভুল হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন। কিন্তু এই ভুলের শুরুটা আসলে ২০০৮ সাল থেকে।
হাসিনার ভুলের হিসেবে যাওয়ার আগে আসুন খালেদা জিয়ার কী কী ‘ভুল’ এতো দিন আলোচিত হয়েছে সেটা একটু দেখি।
প্রথমত, যে বিষয়টি প্রধান আলোচনায় রয়েছে তা হলো তিনি তার আপসহীন ইমেজের কাছে আটকে গিয়েছিলেন। সে কারণে ওয়ান ইলেভেন সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে জেনারেল মঈনের পক্ষ থেকে যখন তাকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় এবং বিনিময়ে তাদের (ফখরুদ্দিন–মঈন উদ্দীন) ক্ষমা করে দিতে হবে বলে দাবি করা হয় । খালেদা জিয়া তখন এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।প্রথমত তিনি এটাকে অপরাধ বলে মনে করেছেন। দেশের মানুষের কাছে দেওয়া গণতন্ত্র রক্ষার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বেঈমানী হিসেবে দেখেছেন। খালেদা জিয়া তিন তিন বার এ প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বলে সে সময়ে কানাঘুষা ছিলো। এ তথ্য অবশ্য নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে ঢাকার রাজনৈতিক অঙ্গনে এটা বহুল আলোচিত।
খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় ভুল ২০০৮ সালে ওয়ান ইলেভেন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অংশ নেওয়া। তৃতীয় ভুল ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নেওয়া। চতুর্থ ভুল ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া। পঞ্চম ভুল ২০২৪ সালের ভোটে অংশ না নেওয়া। এভাবে খালেদা জিয়ার নানা ‘ভুল’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে গেল ১৫ বছর ধরে।
তবে তারও আগে নিজের শাসন আমলে খালেদার দুটি ভুল নিয়েও রাজনীতিতে জোর সমালোচনা আছে। ১৯৯১ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বেশ ভালো ভাবেই দেশ চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তণের দাবিতে ৯৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামীর যৌথ আন্দোলনের গতিপথ ও তীব্রতা বুঝতে ব্যর্থ হন তিনি। ফলে আন্দোলনের মুখে ১৯৯৬ সালে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং ১৫ ফেব্রুয়ারী একটি বিতর্কিত নির্বাচন করতে বাধ্য হন।
সেই পার্লামেন্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল উপস্থাপন করে তা আইনে রূপ দেন। অথচ এই দাবি আগেই মেনে নিলে বিতর্কিত ১৫ ফেব্রুয়ারী নির্বাচন করতে হতো না। ঠিক একই ধরণের ভুল করেন ২০০৬ সালে। এ সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন তা নিয়ে আওয়ামী লীগের তীব্র আন্দোলনের মুখে পড়েন। পরিস্থিতির অবনতি হলে বিচারপতি কে এম হাসান তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হতে অস্বীকৃতি জানান। অথচ তাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বানানোর উদ্দেশ্যে বিচারপতিদের চাকুরির বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছিলো। এসময় আরেক বিচারপতি এম এ আজিজকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান করার চেষ্টা করা হয়। আন্দোলনের মুখে সে চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিনকে তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব নিতে হয়। আর তখনই ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। ক্ষমতায় আসে সেনা শাসিত মঈন ফখরুদ্দিনের অন্তর্বতীকালীন সরকার। এই দুই বারই মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে না পারা ছিলো খালেদা জিয়ার তথ্যের ঘাটতি যা তাকে ভুল পথে পরিচালিত করেছিলো। শেষবারের ভুলের খেসারত হিসেবে খালেদা জিয়ার হাত থেকে ফসকে যায় ক্ষমতা। দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর বাংলাদেশের মসনদ থেকে দূরে চলে যান তিনি। জেল খাটতে খাটতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসংখ্য নেতা কর্মীর জীবনের নেমে আসে অন্ধকারের অমানিশা। গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়ে। বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রন চলে যায় হাসিনার হাত ধরে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের কাছে।
বিপরীত হাসিনার ভুলের দিকে নজর দেওয়া যাক। ২০০৮ সালের পর থেকেই শেখ হাসিনার সব ধরনের ভুলগুলোকে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড হিসেবে বৈধতা দিয়েছেন সহযোগী ও অনুগত বুদ্ধিজীবীরা। ফলে তার ভুলের পাহাড় উচু হতে থাকে। ভুল আর ভুল থাকে না। অপরাধে পর্যবসিত হতে থাকে।
নব্বইয়ের গণআন্দোলনের মাধ্যমে ফিরে আসা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে শুরু করেন শেখ হাসিনা। প্রথমে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করেছেন। পরে ভোটার বিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে তিন তিন বার ক্ষমতায় থেকে গেছেন। জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে গিয়ে বিচারব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করেছেন। পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে রূপান্তর করেছেন। দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। বিদেশে টাকা পাচারের সহায়ক সরকার প্রধান হিসেবে দেশে বিদেশে পরিচিতি পেয়েছেন। বিরোধী রাজনীতিকে দমন করতে গিয়ে হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মীকে গুম ও খুন করেছেন। আয়নাঘরে প্রতিপক্ষকে বিনা বিচারে বছরের পর বছর আটকে রেখেছেন।নিজের দলের রাজনীতিকে ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিয়েছেন।দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যহীন বানিয়ে রেখেছেন। কিছু লুটেরাদের টাকা পয়সা বানিয়ে দিতে সহযোগিতা করেছেন। এভাবে তার ভুল গুলো অপরাধে পরিণত হয়েছে। কিন্ত এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে কেউ প্রশ্ন করেনি, করতে পারেনি। যারা প্রশ্ন করেছেন তাদের জেলে পুরেছেন না হলে দেশ ছাড়া করেছেন, নইলে গুম করেছেন। এসব অপরাধকে আড়াল করতে শেখ হাসিনার স্তাবকেরা তাকে আয়রন লেডি বা লৌহমানবী হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। মধ্যযুগীয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ম্যাকিয়াভেলীর শাসকের কৌশল `শিয়ালের মতো ধূর্ত ও সিংহের মতো সাহসী’ হিসেবে হাসিনাকে তুলে ধরেছেন। উন্নয়নের আড়ালে দুর্নীতিকে বৈধ করার কৌশলকে হাসিনাপন্থী বুদ্ধিজীবীরা সমর্থন করে গেছেন। বিপরীতে বিরোধীদের মত দমন করাকে জায়েজ করেছেন। এ সময়ে শেখ হাসিনা কী কী অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড বা অপরাধ করেছেন তা নিয়ে কোনো সমালোচনা তারা করেননি। কিন্তু সেই অনুগতদের কেউ কেউ ক্ষমতাচ্যুতির ১০ দিনের মাথায় তাকে, বখতিয়ার খিলজির অগ্রাভিযানে সেনবংশের নৃপতি লক্ষণ সেনের পলায়নের সাথে তুলনা করে; এই কৌশলকে শুধু ভুল নয় অপরাধ হিসেবে দেখছেন।
আমার মতে শেখ হাসিনার একটাই ভুল। তিনি বিরোধী মত সহ্য করতে পারতেন না। অবশ্য এটা ভুল না তার স্বভাব বলা সঠিক হবে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। দলের সব পর্যায়ের নেতা কর্মী সমর্থক ও বুদ্ধিজীবী এই স্বভাবে আক্রান্ত। এই স্বভাবে আক্রান্ত হাসিনা নিজের ভুল জানার পথ বন্ধ করে দিয়ে পতনের পথ তৈরি করেছেন। হাসিনার আমলে সঠিক তথ্য পাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। গণমাধ্যমের ওপর আস্থাহীন মানুষ বেছে নেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। গুজব আর সত্য তথ্যে একাকার হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
ভারতের একজন সাংবাদিক সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “এখন মোটামুটি সবাই বুঝতে পেরেছে শেখ হাসিনাকে কেন এভাবে সব ছেড়েছুড়ে দেশত্যাগী হতে হলো। কী-কী অপরাধ তিনি করেছেন যার দরুন তাকে এই শাস্তি পেতে হলো। এক-দুই করে তা লিখতে গেলে, প্রথম কারণ হবে– চূড়ান্ত ঔদ্ধত্য। অনেক দিন ধরেই কারও কোনো পরামর্শ তিনি শুনতেন না।নিজের ইচ্ছামতো চলতেন।
দ্বিতীয় কারণ, নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করে গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেকগুলো গেঁথে দেওয়া, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে অন্ধ অনুগত আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত করা।
তৃতীয়, বিচারবিভাগকে নিজের ও দলের সুবিধামতো চালনা করা। চতুর্থ, আইনের শাসনের অবলুপ্তি ঘটানো। পঞ্চম, দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি রোধে চরম ব্যর্থতা, যার দরুণ সর্বত্র হাহাকার সৃষ্টি হওয়া। আর ষষ্ঠতম কারণ হলো–দুর্নীতি।
শেষের এই কারণ, মানে, দুর্নীতির বহর বাংলাদেশে ভয়ঙ্কর। মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো। ছোটবেলায় ‘পুকুর চুরি’র অর্থ জেনেছিলাম। ১২ বছর ধরে বাংলাদেশে যাওয়ার সুবাদে দেখছি, পুকুর চুরি করা সে-দেশে কোনো অপরাধই নয়। তা ছিঁচকে চোরের কাজ। সমাজের মাথা যারা, সেসব রাঘব বোয়াল খালবিল, নদী, সাগর, পাহাড়, জঙ্গল সব হাপিশ করে দিচ্ছে! এক-একজনের চুরির বহর হাজার-হাজার কোটি টাকা। চুরির টাকার বেশিটাই বিদেশে পাচার হয়ে গিয়েছে।” (সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন)। ১৪ জুলাইয়ের ওই সংবাদ সম্মেলনেশেখ হাসিনা বলেছিলেন তার অফিসের পিওনও ৪০০ কোটি টাকার মালিক। মূলত এই কথা থেকেই বোধ হয় সৌম্যবন্দ্যোপাধ্যয় তথ্যপ্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন।
ইতিহাসে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভুলগুলো নিয়েই শুধু আলোচনা হবে না, আলোচনা হবে তার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে। তার প্রতিহিংসার রাজনীতি, গণতন্ত্রকে হত্যা, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া, একটি স্বাধীন দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা-আলোচনায় এগুলো সামনে আসবে।
ওয়ান ইলেভেনের সময় মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের উদ্যোগ ভেস্তে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তাকে জোর করে দেশ ছাড়া করতে ব্যর্থ হয়েছিলো মঈন-ফখরুল সরকার। তাই নিজের রাজনীতি বাঁচাতে সে সময় শেখ হাসিনাও দেশে ফিরে এসেছিলেন। খালেদা জিয়া দেশে ছিলেন বলেই গণতন্ত্র ফিরে এসেছিলো। ভোট দিয়ে ওয়ান ইলেভেন সরকার সরে যায়। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের সুফলভোগী হাসিনা ক্ষমতায় বসেই প্রথমের নিজেদের আন্দোলনের ফসল নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন।
দেশের বুদ্ধিজীবীদের দিয়ে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর আর দক্ষিণ কোরিয়ার এক দলীয় শাসনের মাধ্যমে উন্নয়নের মডেল উপস্থাপন করতে থাকেন। তখন গণতন্ত্র নয় উন্নয়নই প্রধান বিষয় হিসেবে সামনে হাজির করে গণমাধ্যমগুলো।
ভোটার বিহীন নির্বাচনের এক বিরল পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। তাতে নিজের মতো আসন বণ্টনের ক্ষমতা ভোগ করার চেষ্টার করেন। এসব নির্বাচনে অংশ নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়ে বিএনপির সিদ্ধান্তগুলো ভুল বা সঠিক ছিলো কি না তা নিয়ে পণ্ডিতবর্গ আলোচনায় মেতে উঠতে থাকেন। সেই সব আলোচনার ফাঁদে পড়ে বিএনপির নেতা কর্মী ও সমর্থক নেতা কর্মীরাও খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠতেন। এমনকি এমন প্রচারণাও মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করে যে লন্ডনে বসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান টাকার বিনিময়ে দলকে ভোটে নামিয়েছেন। মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন। এসব গোয়েবলসীয় প্রচারণায় বিএনপির মাঠের নেতাকর্মীরা কখনো কখনো দারুণ হতাশ হয়েছেন।
মিডিয়াগুলো শুধু বিএনপির আন্দোলনের ব্যর্থতার বয়ান তুলে ধরেছে। বিএনপির ওপর গত ১৫ বছরের চলমান নির্যাতন গুম, খুন, মামলা-হামলা সব কিছুকে অবজ্ঞা করে গেছে এক নাগাড়ে।
তবে হাসিনার এতো নির্যাতনের পরও বিএনপিকে ভেঙে ফেলার পরিকল্পনা সফল হয়নি। ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতা কর্মীরা এখন হয়তো বুঝতে পারছেন খালেদা জিয়ার ভুল ছিল না। তিনি গণতন্ত্রের মোড়কে জেকে বসা এক ভয়াবহ স্বৈরশাসকের কবল থেকে দলকে রক্ষা করতে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে গেছেন।এসময়ে হারিয়েছেন প্রিয় পুত্রকে। আরেক পুত্রের সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত থেকেছেন বছরের পর বছর। সঠিক চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত খালেদা জিয়া জীবনের শেষ সময়েও গণতন্ত্র আর সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে জেগে ছিলেন, এবং আছেন।
বিপরীতে হাসিনাও কোনো ‘ভুল’ করেন নি।তিনি স্বজ্ঞানে করে গেছেন অপরাধ। তিনি দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন। ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশের সার্বভৌমত্বও বিকিয়ে দিচ্ছিলেন।
গত শতাব্দির আশির দশকের শুরুতে দক্ষিন এশিয়ার এই বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই দুই নারীর অভিষেক ঘটে। একজন পিতার রক্ত আরেক জনের স্বামীর রক্তের ওপর ভর করে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। উত্তরাধিকার সুত্রে তারা যখন রাজনীতিতে আসেন তখন দেশের জনসংখ্যা ছিলো প্রায় ১২ কোটি। ২০২৪ সালে জনসংখ্যা বেড়ে যখন প্রায় ২০ কোটির কাছাকাছি তখনও এই দুই নারী এ দেশের রাজনীতিতে সমান প্রাসঙ্গিক।
একজন শেখ হাসিনা। যিনি সবাইকে ফেলে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আরেকজন খালেদা জিয়া, সময়ের বিচারে ভুলগুলোই যার শুদ্ধতায় পরিণত হয়েছে। তিনি এখন মুক্ত। শ্বাস নিচ্ছেন মুক্তবাতাসে।
তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু: সম্পাদক , দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোরডটকম মোবাইল : ০১৭১৬-৬০৬৭৯৯
(টিআইএম/ মা হা/এস এম বি/ এস এফ/ এ কে এম এম)
পাঠকের মতামত:

- আইপিওর খসড়া সুপারিশ জমা দিয়েছে পুঁজিবাজার টাস্কফোর্সের
- রিং পরানোর পর তামিমের অবস্থা অনুকূলে
- উত্তাল তুরস্কে পাঁচ দিনে ১১৩৩ মানুষ আটক
- ৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ২৭ জুন
- ব্যান্ডপার্টিসহ শতাধিক গাড়িবহর নিয়ে নিজ জেলায় সারজিস
- "বিদ্যমান সংবিধান ত্রুটিপূর্ণ, এটি সংস্কারে দরকার গণপরিষদ নির্বাচন"
- নির্বাচনী সংস্কারের ৯ সুপারিশের ওপর ইসির কাছে প্রস্তাব চাইলো সরকার
- শহীদ আবু সাঈদের বাবাকে আর্থিক সহায়তা সেনাপ্রধানের
- সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার চেষ্টা হচ্ছে: তারেক রহমান
- জরুরি অবস্থা জারি নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রসচিব
- সিলেটে এনসিপির ইফতার মাহফিলে হাতাহাতি
- শেয়ার কারসাজি: ১৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ১৯০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড
- একসঙ্গে নাচলেন পরে শাহরুখকেই কাঁদালেন কোহলি
- গাজায় ইসরাইলি হামলায় প্রাণ গেল আরও ৩৪ ফিলিস্তিনির
- আজ ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’, স্কোর ১৮২
- ভারতের সঙ্গে হওয়া সব অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে: আনু মুহাম্মদ
- মিডিয়া ছাড়া গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে না : রিজভী
- ড. ইউনূস-মোদি বৈঠক বিবেচনাধীন আছে, বললেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
- বেইজিংয়ের সঙ্গে আরও গভীর অর্থনৈতিক সহযোগিতার দিকে নজর ঢাকার
- পুঁজিবাজার উন্নয়নে গঠিত কমিটির প্রথম সভা
- দুটি নতুন নিয়ম আনছে আইপিএল
- নরসিংদীতে টেঁটাযুদ্ধে নিহত ২
- গাজায় ৭২ ঘণ্টায় নিহত প্রায় ৬০০
- ঢাবিতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ
- "জনগণ সুযোগ দিলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিএনপির কিছু বলার নেই"
- সালাম ফিরিয়েই নারায়ে তাকবির, ফিলিস্তিনে হামলার বিচার দাবিতে মিছিল
- সবজির বাজার স্থিতিশীল, বেড়েছে মুরগির দাম
- আ. লীগ পুনর্বাসনের পরিকল্পনা ফাঁস করলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
- আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না : জামায়াত আমির
- আ. লীগকে ফেরানোর খায়েশ বিপজ্জনক: আসিফ মাহমুদ
- বন্ড মার্কেট ছাড়া বৈচিত্র্যপূর্ণ পুঁজিবাজার সম্ভব : বিএসইসি কমিশনার
- সবাই আফ্রিদি হতে চায়, বলছেন কিংবদন্তি
- জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
- তারেক রহমানের দেশে ফেরায় বাধা কাটল
- তারেক রহমানের দেশে ফেরায় বাধা কাটল
- ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার প্রস্তাবনা জমা দিল জামায়াত
- ঢাকা থেকেই বাংলাদেশিদের ভিসা দেবে অস্ট্রেলিয়া
- এপ্রিলের মাঝামাঝি দেশে ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া
- প্রস্তাব অনুমোদন, ঈদে সরকারি চাকরিজীবীদের টানা ৯ দিনের ছুটি
- সংশোধনী পাস : বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের সাজা ৭ বছর
- পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে শক্তিশালী করতে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন
- গাজায় পূর্ণশক্তি নিয়ে যুদ্ধ শুরু হয়েছে: নেতানিয়াহু
- ইসলামের প্রতি হামজা চৌধুরীর অনুরাগ, বাড়ির পাশেই মাজার ও মাদ্রাসা
- ‘পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করতেই জাফর এক্সপ্রেসে হামলা’
- নির্বাচন বিলস্বিত হতে পারে- এমন সংস্কারে সমর্থন দেবে না বিএনপি
- সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক: প্রধান উপদেষ্টা
- ধর্ষণের অভিযোগে তরুণকে পিটিয়ে হত্যা
- "শিক্ষায় সংকট কাটাতে সংস্কার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হবে সরকার"
- বহিষ্কৃত ১২৮ জনের তালিকা পূর্ণাঙ্গ নয়, অধিকতর তদন্তের সিদ্ধান্ত
- গ্রেনেড হামলা : সব আসামি খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল
- ১৯ দেশের মিশন প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে ইসি
- ট্রেনে ঈদ যাত্রা : ২৭ মার্চের টিকিট মিলছে আজ
- পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক আজ
- কাজে ফিরেছেন স্টাফরা, মেট্রোরেলের কার্যক্রম স্বাভাবিক
- স্বর্ণের দামে রেকর্ড, ভরিতে বাড়ল ২৬১৩ টাকা
- ধর্ষণ শব্দ এড়ানোর মন্তব্যের নিন্দা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের
- "বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে"
- ঈদের আগে চাঙা প্রবাসী আয়, ১৫ দিনে এলো ১৬৫ কোটি ডলার
- সাত কলেজের নতুন নাম ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’
- "চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় সরকার"
- স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ হচ্ছে না: স্বরাষ্ট্র সচিব
- চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের বৈঠক ২৮ মার্চ
- আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা : ২০ আসামিরই মৃত্যুদণ্ড বহাল
- পুলিশের ১২৭ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা
- এখনই নেবেন না অবসর, জানালেন কোহলি
- ম্যাসিডোনিয়ায় নাইটক্লাবে আগুন, নিহত ৫১
- ডিএসইতে সূচক কমলেও সিএসইতে বেড়েছে
- যুদ্ধবিরতির শর্ত দিলেন পুতিন, জেলেনস্কি বললেন চালাকি
- পুঁজিবাজারে বিদয়ী সপ্তাহে সূচক ও লেনদেন বেড়েছে
- ভারত বধে প্রস্তুত বাংলাদেশ দল
- গণঅভ্যুত্থানই গণতন্ত্র, ইউনূসের সরকার নির্বাচিত: ফরহাদ মজহার
- আরো অন্তত পাঁচ-দশ বছর তোমরা আমাদের নেতা থাক: আসিফ নজরুল
- "বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে"
- জাতিসংঘ মহাসচিব সংস্কারের ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি : ফখরুল
- দুটি নতুন নিয়ম আনছে আইপিএল
- ঢাকা থেকেই বাংলাদেশিদের ভিসা দেবে অস্ট্রেলিয়া
- আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না : জামায়াত আমির
- প্রস্তাব অনুমোদন, ঈদে সরকারি চাকরিজীবীদের টানা ৯ দিনের ছুটি
- আ. লীগ পুনর্বাসনের পরিকল্পনা ফাঁস করলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
- সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক: প্রধান উপদেষ্টা
- ‘পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করতেই জাফর এক্সপ্রেসে হামলা’
- তারেক রহমানের দেশে ফেরায় বাধা কাটল
- জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
- ইসলামের প্রতি হামজা চৌধুরীর অনুরাগ, বাড়ির পাশেই মাজার ও মাদ্রাসা
- ধর্ষণের অভিযোগে তরুণকে পিটিয়ে হত্যা
- গাজায় পূর্ণশক্তি নিয়ে যুদ্ধ শুরু হয়েছে: নেতানিয়াহু
- বহিষ্কৃত ১২৮ জনের তালিকা পূর্ণাঙ্গ নয়, অধিকতর তদন্তের সিদ্ধান্ত
- বন্ড মার্কেট ছাড়া বৈচিত্র্যপূর্ণ পুঁজিবাজার সম্ভব : বিএসইসি কমিশনার
- আ. লীগকে ফেরানোর খায়েশ বিপজ্জনক: আসিফ মাহমুদ
- সংশোধনী পাস : বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের সাজা ৭ বছর
- সবাই আফ্রিদি হতে চায়, বলছেন কিংবদন্তি
- গ্রেনেড হামলা : সব আসামি খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল
- নির্বাচন বিলস্বিত হতে পারে- এমন সংস্কারে সমর্থন দেবে না বিএনপি
- সবজির বাজার স্থিতিশীল, বেড়েছে মুরগির দাম
- বেইজিংয়ের সঙ্গে আরও গভীর অর্থনৈতিক সহযোগিতার দিকে নজর ঢাকার
- পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে শক্তিশালী করতে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন
- পুঁজিবাজার উন্নয়নে গঠিত কমিটির প্রথম সভা
- তারেক রহমানের দেশে ফেরায় বাধা কাটল
- একসঙ্গে নাচলেন পরে শাহরুখকেই কাঁদালেন কোহলি
বিশেষ সংবাদ এর সর্বশেষ খবর
বিশেষ সংবাদ - এর সব খবর
