thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১,  ৬ জমাদিউল আউয়াল 1446

লড়াই দীর্ঘ, সময় কম; শত্রু কমান, মিত্র বাড়ান: মাহফুজ আলম

২০২৪ নভেম্বর ০৭ ১৪:০৭:২৫
লড়াই দীর্ঘ, সময় কম; শত্রু কমান, মিত্র বাড়ান: মাহফুজ আলম

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) উদ্দেশে সংবিধান সংস্কার কমিশনের ছাত্রপ্রতিনিধি ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেছেন, সাতই নভেম্বরের উদযাপন ভালো, তার চেয়ে ভালো হবে নূতন বন্দোবস্ত এবং মিত্রশক্তির মধ্যকার বোঝাপড়ার অভাবে কীভাবে সাতই নভেম্বর ব্যর্থ হলো, জিয়াউর রহমান শহিদ হলেন— তার উৎস সন্ধান করে জাতীয় স্বার্থে নিজেদের শুধরে নেওয়া এবং ঐতিহাসিক শত্রু-মিত্রের ভেদ ভুলে এ সুযোগ হেলায় নষ্ট না করা। লড়াই দীর্ঘ, সময় কম; শত্রু কমান, মিত্র বাড়ান।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

পূর্বজদের উদারতা হবে প্রজন্মান্তরকে স্বীকার করে নেওয়া। গণঅভ্যুত্থানের সকল শক্তি আর অংশীজন এ অভ্যুত্থানের চালিকাশক্তি, প্রাণভোমরা। মনে রাখতে হবে, এন্টি-ফ্যাসিস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বিএনপিসহ সকল দলের, শ্রেণির এবং আপামর জনগণের সরকার এটি। ফলে, এ সরকার প্রতিনিধিত্বশীল এবং জনগণ দ্বারা মনোনীত। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সকল শক্তি এই প্রতিনিধিত্ব ও মনোনয়ন মেনে নিয়েছেন।

গণঅভ্যুত্থানে জনগণের দাবি ছিল রাষ্ট্র মেরামতের। আর অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের ঘোষিত লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ এবং নূতন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের। ফলে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ এবং নূতন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ভেতর দিয়ে রাষ্ট্রের আমূল মেরামত/সংস্কারের বাইরে জনগণের কোন আকাঙ্ক্ষা ছিল না। নিছক নির্বাচনের জন্য প্রায় দুহাজার লোক প্রাণ দেয়নি। দিলে গত তিনবার নির্বাচনের আগেই দিত।

মানুষ ব্যক্তি হাসিনার পতন চেয়েছে সত্য, তার চেয়ে বেশি চেয়েছিল নূতন বন্দোবস্ত। এমন এক বন্দোবস্ত, যা অধিকারহীনতাকে আর ফ্যাসিবাদকে ফেরত আনবে না। আর আমরা জানি, মুজিববাদী সংবিধানই ফ্যাসিবাদের মূল উৎস।

জনগণ এক নূতন বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছেন এবং এখনো চাচ্ছেন। এ গণআকাঙ্ক্ষাকে শ্রদ্ধা জানানো গণঅভ্যুত্থানের সকল শক্তির জন্য অপরিহার্য। এ আকাঙ্ক্ষাকে শ্রদ্ধা মূলত শহিদদের শ্রদ্ধা করা। আর এ আকাঙ্ক্ষার বিরোধিতা শহিদ আহত-সহ বাংলাদেশের লড়াকু জনগণের চেতনার সাথে বেইমানি এবং অপরিণামদর্শিতা।

গত তিনমাস পরিকল্পিতভাবে ফ্যাসিস্টদের সাথে আঁতাত করে, অন্তর্ঘাত করে দেশকে স্থবির করে রাখার অপচেষ্টা হয়েছে, ছাত্রদের নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে, ছাত্রদের বিএনপি এবং সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে— এসবের মাধ্যমে শক্তিশালী হয়েছে ফ্যাসিস্ট লীগের হাত।

আমরা দেখতে পাচ্ছি, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা পুনরুৎপাদনের মহড়া জোরেশোরে চলমান। অন্যদিকে নূতন বন্দোবস্তের প্রতি অনীহা এবং বিকর্ষণ কাজ করছে। এটা খুবই হতাশাজনক। ৭ নভেম্বরের পরাজিত শক্তির সাথে আঁতাতের বা ছাড়ের ফল যদি কেউ মনে না রাখে, তাহলে কাউকে নূতন করে কিছু বুঝানোর নেই।

এ ছাড়াও, ষড়যন্ত্র চলমান ছাত্র তরুণদের তথা এ প্রজন্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার। অনেকেই দূরদর্শিতার অভাবে কিংবা কারো প্রেসক্রিপশনে এ যুদ্ধে জড়িয়ে গণঅভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে ফাটল ধরাচ্ছেন। প্রজন্মান্তরকে অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। কিন্তু সমাগত সত্যকে মেনে নিতে হবে। ইতিহাসের গতিপথ নির্ধারিত হয়ে গেছে।

গণঅভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে অনৈক্য, গণ-অভ্যুত্থানে মনোনীত সরকারের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত ও সে লক্ষ্যে ফ্যাসিস্টদের সাথে আঁতাত, বৃহত্তর আদর্শিক লড়াই বাদ দিয়ে প্রেস্ক্রিপ্টেড কালো পতাকা-গেরুয়ার লড়াই, বিবিধ ভাবাদর্শিক গোষ্ঠীর অধরা বিপ্লবের খোয়াব পূরণের ব্যর্থ কোশেশ— ইত্যাকার নানা বিপদ ও বিকারের মূলে আছে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার প্রতি অসংবেদনশীলতা, মিত্রশক্তির মধ্যকার বোঝাপড়ার অভাব, তদুপরি প্রজন্মান্তরকে স্বীকৃতি দিয়ে সবুর না করা।

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর