thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২ জমাদিউস সানি 1446

ভয়েস অব আমেরিকা বাংলার প্রতিবেদন

অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপকে স্বাগত জানায় যুক্তরাষ্ট্র

২০২৪ ডিসেম্বর ০৪ ১৩:৫৫:০০
অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপকে স্বাগত জানায় যুক্তরাষ্ট্র

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:বাংলাদেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া অব্যাহত পদক্ষেপগুলোকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র এ কথা জানান।

ভয়েস অব আমেরিকা বাংলার করা এক প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে পাঠানো এক ই-মেইলে এ কথা জানানো হয়।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের কথিত ‘নিষ্ক্রিয়তা’র অভিযোগের ব্যাপারটি যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে দেখছে প্রশ্নে মুখপাত্র জানান, ‘আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর সহিংসতা ও তাদের প্রতি অসহিষ্ণুতার যেকোনো ঘটনার নিন্দা জানাই এবং বাংলাদেশের সব নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া অব্যাহত পদক্ষেপগুলোকে স্বাগত জানাই। ’

স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে জানানো হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সংগঠন করার স্বাধীনতাকে মৌলিক স্বাধীনতা হিসেবে সমর্থন করে। আমরা নিয়মিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারসহ আমাদের সকল অংশীদারদের কাছে সেই সমর্থনের কথা জানাই। ’

বাংলাদেশে ইসকনকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন না পাওয়া প্রসঙ্গে আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র জানান, ‘বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ও সংবিধানে (নাগরিকদের) যে অধিকারগুলোর নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে তার আলোকে এ ইস্যুগুলো সমাধান করার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের। আমরা বাংলাদেশসহ সকল দেশকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সংগঠন করার স্বাধীনতা এবং ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার জন্য আহ্বান জানাই।

বিশেষ করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা তৈরি হওয়ার আলোকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রোমোটে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে প্রশ্ন করা হলে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র জানান, ‘আমরা বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ককে গভীরভাবে মূল্য দিই। তাদের একে অপরের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপারটি আমরা বাংলাদেশ ও ভারতের সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।

ওদিকে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানিতে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ২ জানুয়ারি নির্ধারণ করেছে আদালত।

২৬ নভেম্বর করা রাষ্ট্রদ্রোহের এ মামলায় জামিন নাকচ করে চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেনআদালত।

এ ঘটনায় আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন চিন্ময়ের অনুসারীরা।

টানা কয়েক ঘণ্টার বিক্ষোভ ও পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার এক পর্যায়ে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ চিন্ময় দাসকে কারাগারে নিয়ে যায়।

সংঘর্ষের সময় সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। আহত আরও ৭-৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন বুধবার হাইকোর্টে তুলে ধরা হয়।

এ ঘটনায় করা মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয় - আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ইন্ধনে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়েছে। মামলায় ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ইসকনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয় ২৭ নভেম্বর।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েন

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের পর ভারত সরকার বাংলাদেশের হিন্দুসহ সকল সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতের আহ্বান জানায়।

প্রত্যুত্তরে বাংলাদেশ সরকারের বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয় যে, দিল্লির বক্তব্যে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টাকে সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করা হয়েছে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা সংক্রান্ত ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অতিরঞ্জিত বলে দাবি করে আসছে বাংলাদেশ সরকার।

এমন আবহে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের আহ্বানে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যের উত্তর আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ভাঙচুর করে এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলা হয়।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারত সরকার সোমবার একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং সারা দেশে অন্যান্য উপ বা সহকারী হাইকমিশনগুলোর জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে। ’

বাংলাদেশের ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত থেকে বাংলাদেশের ভারতীয় দূতাবাসে স্বাভাবিকের তুলনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। ভারতীয় দূতাবাসের সামনে ও এর আশপাশে বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়ন করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর