thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১০ মে 25, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২,  ১২ জিলকদ  1446

"সরকার হয়তো স্বৈরাচারের সহযোগীদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রও তৈরি করতে চাচ্ছে"

২০২৫ মে ০৯ ২৩:৫৯:২০

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের নামে স্বৈরাচার ও তাদের দোসরদের নিরাপদে দেশত্যাগের সুযোগ করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে যেভাবে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন, সেভাবেই সাবেক রাষ্ট্রপতি পালিয়েছেন।

যেভাবে চলে গেছেন সেটিকে যদি আমরা মেলাই, তাহলে দেখব ৫ আগস্ট আরেকজন দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। বলা হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার নাকি এই দেশত্যাগের (আবদুল হামিদের) ব্যাপারে কিছুই জানে না। যত মানুষের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, প্রত্যেকে প্রশ্ন তুলেছে, তাহলে অন্তর্বর্তী সরকার জানে টা কী?

শুক্রবার (৯ মে) রাজধানীর ফার্মগেটে এক পুনর্মিলনী ও শুভেচ্ছা বিনিময়ে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ মন্তব্য করেন তারেক রহমান। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরাম।

তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারছে কি না—তা নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। সঙ্গে এই অভিযোগও তুলছে, সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করে অন্তর্বর্তী সরকার একদিকে পলাতক স্বৈরাচার ও তাদের দোসরদের নিরাপদে দেশত্যাগের সুযোগ করে দিচ্ছে, অপরদিকে অত্যন্ত সুকৌশলে নানা ইস্যু সৃষ্টি করে স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদবিরোধী যেসব রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে ছিল, সেই দলগুলোর ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরানোর একটা ছিদ্র হয়তো তৈরি করতে চাচ্ছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে সরকার সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। পলাতক স্বৈরাচারের সহযোগীদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রও হয়তো তৈরি করতে চাচ্ছে। এই বিষয়গুলো ঘুরেফিরে মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি করছে।

জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিএনপির সমর্থন রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, ‘দেশ কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। দেশটা আমার, আপনার আমাদের সবার। ফ্যাসিবাদের পতনের পর দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক অপার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গণতান্ত্রিক ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে হবে। ’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে যে কি নির্মম পরিণতি ভোগ করতে হয়, গত দেড় দশকে ফ্যাসিবাদী শাসন এর বড় উদাহরণ। ভবিষ্যতে আর কোনো ষড়যন্ত্র যাতে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের যাত্রাপথ থেকে বিচ্যুত করতে না পারে, সেজন্য আসুন আমরা যে যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখি। ’

সংবিধান সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সংবিধানকে দলীয় সংবিধানে পরিণত করেছিল। তাই সংবিধান সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই। ফ্যাসিবাদ পালানোর পর দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা তৈরির সুযোগ হয়েছে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ ষড়যন্ত্র করতে না পারে। আমাদেরকে যে যার জায়গা থেকে ভূমিকা রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। ’

অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘প্রতিটি ধর্ম মানুষকে ভালো হতে শিখায়। ধর্ম দিয়ে বিভাজন করা ঠিক নয়। ভোটের মাধ্যমে মানুষ তার প্রতিনিধি নির্বাচন করবে আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই। ঐক্য ও ভালোবাসা দিয়েই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা চাই, যেখানে সবাই সবার কথা বলতে পারবে, সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে। গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা লড়াই করেছি। এর উদ্দেশ্য একটি, গণতন্ত্রের রাষ্ট্র চাই। সেখানে যে যার ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। বিভাজন নয়, ঐক্যের মাধ্যমে আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে। ’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিজন কান্তি সরকার, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, এমরান সালেহ প্রিন্স, গাজীপুর জেলার বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুল হক মিলন, খিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগুরু বিজয় এন্ডি ক্রুজ প্রমুখ।

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর