thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ১৮ জমাদিউল আউয়াল 1446

বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রসঙ্গে

২০১৩ নভেম্বর ১৪ ১০:৩৫:৩৮

দেশে দশ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ব্যাপারে তার সরকারের সাফল্যের বর্ণনা তিনি দিয়েছেন। দিয়েছেন তার সরকারের গত ৫ বছরের অন্যান্য সাফল্যের বর্ণনাও।

কে না বোঝে আধুনিক যান্ত্রিক সভ্যতায় বিদ্যুতের অবশ্যম্ভাব্যতার কথা। সেই বিদ্যুতের উৎপাদন যদি বাড়ে এবং তা যদি আমাদের চাহিদা পূরণের কাছাকাছি যায় তাহলে এই সাফল্যের যারা দাবিদার তারা অবশ্যই ধন্যবাদ পাবেন, পাবেন প্রতিদানও। কিন্তু এই উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন ও প্রকৃত উৎপাদনের মধ্যে যদি ফারাক থাকে এবং তার জন্য মানুষ যদি তার চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ না পায় তাহলে অর্জিত সাফল্যকেও মানুষ ভাল চোখে দেখবে না। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত সম্পর্কে যারা খবর রাখেন তাদের মতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাকে ১০ হাজার মেগাওয়াট বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা ৭ হাজার মেগাওয়াটের মত। এই সব জানা বোঝা লোকদের মতে প্রকৃত বিদ্যুৎ উৎপাদন ৭ হাজার মেগাওয়াট হলেও উৎপাদন খরচ দেখিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ গ্রাহকের কাছ থেকে অনুৎপাদিত ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের দাম নিয়ে নিচ্ছে। যে কারণে গ্রাহককে বিদ্যুতের অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হচ্ছে। বর্তমান সরকারের সময় বিদ্যুৎ উৎপাদনে কুইক রেন্টাল কেনা হয়েছে, ভারত থেকে বিদ্যুৎ আনা হচ্ছে, বিদ্যুতের আরো আরো উৎপাদন ক্ষেত্র যোগ হয়েছে। সর্বশেষ রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র উদ্বোধন শেষ হয়েছে। বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের এই ব্যাপক কর্মযজ্ঞের মধ্যে যদি কোনো ফাঁক থেকে থাকে সাধারণ মানুষের তা বোঝার কথা নয়। তাছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবসা করে যারা অতি মুনাফা পাচ্ছেন মিডিয়ায় তাদের দাপটের কারণে মানুষের কাছে অনেক তথ্যই অজানা থেকে যেতে পারে। সাধারণ মানুষ তাহলে কিভাবে বুঝবে? তাদের বোঝার সহজ উপায় তারা কতটুকু বিদ্যুৎ পাচ্ছে আর তা কিনছে কত মূল্যে। এ কথা অস্বীকার করা যাবে না যে, বিদ্যুৎ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নগরবাসী অনেকটা ভাল রয়েছে। কিন্তু মাস শেষে বিদ্যুৎ বিল গুনতে পুরো দেশবাসীর উপর পড়ছে অতিরিক্ত চাপ। একদিকে বিদ্যুৎ এর বর্ধিত মূল্যের প্রভাব পড়ছে পণ্য উৎপাদনে। অন্যদিকে প্রান্তিক ভোক্তাকে পণ্য কিনতে হচ্ছে অতিরিক্ত দামে। আবার মাস শেষে বিদ্যুৎ বিলে যোগ হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। সামগ্রিকভাবে বিদ্যুৎ এখন হয়ে পড়েছে সমগ্র দেশবাসীর মাথাব্যথার কারণ। এ থেকে উদ্ধারের উপায় বের করবেন বিশেষজ্ঞরা। তবে আমরা মনে করি কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ আমাদের প্রচলিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে যদি সক্ষমতার সবটুকু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় তাহলে আপাতত গ্রাহকরা বাড়তি চাপ মুক্ত হতে পারে। পাশাপাশি রেন্টাল কেন্দ্রগুলোর হাত থেকে বিদ্যুৎ খাতকে দ্রুত মুক্ত করতে পারলে এক ধরনের স্বস্তিকর অবস্থা ফিরে আসবে, সর্বোপরি আমাদের বিদ্যুৎ খাতে অতি আধুনিক প্লান্ট সংযোজনের উদ্যোগ নিতে হবে। এ ব্যাপারে দ্রুতই নতুন বন্ধু তালাশ করা দরকার।

পাঠকের মতামত:

SMS Alert