thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১,  ২৫ জমাদিউস সানি 1446

বেদের আলোকে বর্ণাশ্রম

২০১৩ অক্টোবর ২১ ১২:৩১:২৭ ০০০০ 00 ০০ ০০:০০:০০
বেদের আলোকে বর্ণাশ্রম
দিরিপোর্ট২৪ ডেস্ক : বর্ণাশ্রম বলতে হিন্দু ধর্মের পেশাকেন্দ্রিক চারটি বিভাজনকে বুঝানো হয়। যার প্রেক্ষিতে সমাজেও বিভাজন লক্ষ্যনীয়। হিন্দু ধর্মের অন্যতম গ্রন্থ বেদ অনুসারে বৈদিক চারটি প্রধান বর্ণ হল- ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র। বর্ণ নিয়ে বিভিন্ন ধরণের ব্যাখ্যা রয়েছে।

বিশেষ করে বলা হয়ে থাকে বর্ণাশ্রম আর বর্ণপ্রথা এক নয়। বর্ণ এসেছে পেশা বা কাজের ভিত্তিতে।

বর্ণাশ্রমের বর্ণ শব্দটি এসেছে 'V' মূল থেকে, যার অর্থ 'To choose ’ বা পছন্দ করা। কেউ কেউ বলেন এর অর্থ হল পছন্দ অনুযায়ী আশ্রম বা পেশা নির্ধারণ। অনেক সময়ই বেদের পুরুষ সূক্তকে হাজির করা হয় জন্মের ভিত্তিতে বর্ণপ্রথার প্রমাণ হিসাবে। সেখানে বলা হয়েছে- ‘ব্রাহ্মণের উৎপত্তি ঈশ্বরের মুখ থেকে, ক্ষত্রিয়ের হাত থেকে, বৈশ্যের ঊরু থেকে আর শূদ্রের পা থেকে’| তবে এই সুক্তের ভিন্ন ধরণের ব্যাখ্যা হয়েছে। বেদ থেকে বর্ণাশ্রম বিষয়ক কয়েকটি বাণী নিচে দেয়া হলো-


‘একজন জ্ঞানের উচ্চ পথে (ব্রাহ্মণ),
অপরজন বীরত্বের গৌরবে (ক্ষত্রিয়),
একজন তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে (পেশাভিত্তিক),

আরেকজন সেবা এর পরিশ্রম এ(শূদ্র)।
সকলেই তার ইচ্ছামাফিক পেশায়, সকলের জন্যই ঈশ্বর জাগ্রত’। (ঋগবেদ ১.১১৩.৬)

‘একেকজনের কর্মক্ষমতা ও আধ্যাত্মিকতা একেক রকম আর সে অনুসারে কেউ ব্রাহ্মণ কেউ ক্ষত্রিয় কেউ বৈশ্য কেউ শূদ্র’। (ঋগবেদ ৯.১১২.১)

ব্রাহ্মণ কে?
‘যে ঈশ্বরের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত, অহিংস, সৎ, নিষ্ঠবান, সুশৃঙ্খল, বেদ প্রচারকারী, বেদ জ্ঞানী সে ব্রাহ্মণ’। (ঋগবেদ ৭.১০৩.৮)

ক্ষত্রিয় কে?
দৃঢ়ভাবে আচার পালনকারী, সৎকর্মের দ্বারা শুদ্ধ, রাজনৈতিক জ্ঞান সম্পন্ন, অহিংস, ঈশ্বর সাধক, সত্যের ধারক ন্যায়পরায়ণ, বিদ্বেষমুক্ত ধর্মযোদ্ধা, অসৎ‍ বিনাশকারী সে ক্ষত্রিয়। (ঋগবেদ ১০.৬৬.৮)

বৈশ্য কে?
দক্ষ ব্যবসায়ী, দানশীল, চাকুরিরত এবং চাকুরিপ্রদানকারী (অথর্ববেদ ৩.১৫.১)

শূদ্র কে?
যে অদম্য, পরিশ্রমী, অক্লান্ত- জরা যাকে সহজে গ্রাস করতে পারে না, লোভমুক্ত কষ্টসহিষ্ণু সেই শূদ্র (ঋগবেদ ১০.৯৪.১১)

কর্ম ও গুণ ভেদে কেউ ব্রাহ্মণ, কেউ ক্ষত্রিয়, কেউ বৈশ্য, কেউ শূদ্র। এদের সবার জন্য ঈশ্বরের সমান ভালোবাসা। (ঋগবেদ ৫.৬০.৫)

বর্ণের এ ধরণের বিভাজন সম্পর্কে জানা যায়, যদিও চার বর্ণ চার ধরনের কাজ নির্দেশ করে। কিন্তু একজন ব্যক্তি জীবনের নানা সময়ে এই চার ধরনের বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করেন । এর অর্থ হল প্রত্যেক ব্যক্তিই চার বর্ণের অধিকারী। তবে তার প্রধান পেশাই তার বর্ণ নির্দেশ করে। এই জন্যই প্রত্যেক মানুষেরই সর্বোচ্চ চেষ্টা করা উচিত চারটি বর্ণেরই গুণ ধারণ করা ।
হিন্দুধর্মের বিশিষ্ট কিছু চরিত্র বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র, অঙ্গিরা, গৌতম, বামদেব, কানভ্য - এঁরা সবাই চার বর্ণেরই গুণাবলী ধারণ করেছেন। তাঁরা বৈদিক মন্ত্রের অর্থ বের করেছেন, দস্যু বিনাশ করেছেন, সাংসারিক কার্যাদি করেছেন , সমাজের উন্নতির জন্য সম্পদের ব্যবহার করেছেন ।

(দিরিপোর্ট২৪/ডব্লিউএস/এমডি/অক্টোবর ২১, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

ধর্ম এর সর্বশেষ খবর

ধর্ম - এর সব খবর