thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১,  ২০ জমাদিউস সানি 1446

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন

২০১৩ ডিসেম্বর ০৯ ১১:১৯:২৭
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩২ সালের একই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি বেগম রোকেয়া নামে অধিক পরিচিত। রোকেয়ার জন্ম রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে। তার বাবা জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের সম্ভ্রান্ত ভূস্বামী ছিলেন। তার মা রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী।

তৎকালীন মুসলিম সমাজব্যবস্থা অনুসারে রোকেয়া ও তার বোনদের বাইরে পড়াশোনা করতে পাঠানো হয়নি, তাদেরকে ঘরে আরবি ও উর্দু শেখানো হয়। তার বড় ভাই ইব্রাহীম সাবের রোকেয়া ও অপর বোন করিমুননেসাকে বাংলা ও ইংরেজি শেখান।

১৮৯৬ সালে ১৬ বছর বয়সে রোকেয়ার বিয়ে হয় ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে। বিয়ের পর তিনি ‘বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন’ নামে পরিচিত হন। স্বামীর সহযোগিতায় তিনি ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় দক্ষ হয়ে ওঠেন। সমাজমনস্ক রোকেয়ার স্বামী সবসময় নারীশিক্ষার কথা বলতেন। নারীদের শিক্ষার উন্নতির জন্য তিনি স্ত্রীকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন এবং স্ত্রী রোকেয়াকে তার সম্পত্তির ট্রাস্টি করে যান। ১৯০২ সালে পিপাসা নামে একটি বাংলা গল্পের মধ্য দিয়ে তিনি সাহিত্যজগতে পদার্পণ করেন।

মাত্র ২৯ বছর বয়সে ১৯০৯ সালে রোকেয়া বিধবা হন। প্রয়াত স্বামীর প্রতি যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শনের জন্য, সেই সঙ্গে নারীশিক্ষার প্রসারে আন্তরিক ইচ্ছায় স্বামীর মৃত্যুর ৫ মাস পর ভাগলপুরে মুসলিম মেয়েদের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। কিন্তু ১৯১০ সালে সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলার ফলে স্কুল বন্ধ করে তিনি কলকাতায় চলে যান। এখানে ১৯১১ সালের ১৫ই মার্চ তিনি সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল পুনরায় চালু করেন। প্রাথমিক অবস্থায় ছাত্রী ছিল ৮ জন। চার বছরের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৪-তে। ১৯৩০ সালের মাঝে এটি হাই স্কুলে পরিণত হয়।

স্কুল পরিচালনা ও সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রোকেয়া নিজেকে সাংগঠনিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত রাখেন। ১৯১৬ সালে তিনি মুসলিম বাঙালি নারীদের সংগঠন আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। বিভিন্ন সভায় তাঁর বক্তব্য তুলে ধরেন। ১৯২৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলার নারী শিক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন।

তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রচনা Sultana’s Dream। যার অনূদিত রূপের নাম সুলতানার স্বপ্ন। এটিকে বিশ্বের নারীবাদী সাহিত্যে একটি মাইলফলক ধরা হয়। এছাড়া তার উল্লেখযোগ্য বই হলো- পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী, মতিচুর। তার প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাসের মধ্য দিয়ে তিনি নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা আর লিঙ্গসমতার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন। এছাড়া তার লেখা প্রবন্ধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘বোরকা’।

১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া মৃত্যুবরণ করেন। সেসময় তিনি ‘নারীর অধিকার’ নামে একটি প্রবন্ধ লিখছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/ডব্লিউএস/শাহ/জেএম/ডিসেম্বর ০৯, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

এই দিনে এর সর্বশেষ খবর

এই দিনে - এর সব খবর