thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ১৮ জমাদিউল আউয়াল 1446

প্রেক্ষিত এগারো ডিসেম্বর

২০১৩ ডিসেম্বর ১১ ২৩:০৩:৪০

১১ ডিসেম্বর তারিখটি বাংলাদেশের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। দিনের সূচনায় রাত ১২টা ০১ মিনিটে একাত্তর সালের মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার দায়ে আদালতে ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত কাদের মোল্লার রায় কার্যকর হওয়ার কথা ছিলো। শেষ মুহূর্তে চেম্বার জজ এটি এইদিন সকাল ১০টা ৩০মিনিট পর্যন্ত স্থগিত রাখেন।

এদিন সকাল ৭টার দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করে কাদের মোল্লার ফাঁসি এবং চলমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানান।

সকাল ১০টা ৩০মিনিট এর মধ্যে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে দেওয়া রায়ের রিভিউ আবেদন দাখিল করা হয়। শুনানি শেষে সুপ্রিমকোর্টের ফুল বেঞ্চ চেম্বার জজের আদেশটি আমলে নিয়ে শুনানি বৃহষ্পতিবার পর্যন্ত মুলতবি রাখেন।

দুপুরে বারিধারার একটি বাড়িতে সফররত জাতিসংঘের প্রতিনিধি অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর মধ্যস্ততায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে দুই ঘণ্টাব্যাপী এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তিনি ঢাকার একটি বাড়িতে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হন।

বিকেলে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করে ধন্যবাদ জানান তার প্রতিনিধি তারানকোকে সহযোগিতা করার জন্য। এই টেলিফোনে তিনি সব দলের অংশগ্রহণে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং কাদের মোল্লার ফাঁসির আদেশ সম্পর্কে জাতিসংঘের দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানান।

সন্ধ্যায় ৬ দিনের সফর শেষে জাতিসংঘের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো হোটেল সোনারগাঁওয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার সফরের ইতি টানেন।

রাতে গুলশানে বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বাসভবনে তার সঙ্গে দেখা করেন দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক চীনা পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত সমন্বয়ে গঠিত পাঁচ সদস্যের একটি টিম। তাদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়।

তবে, অনেক অনির্ধারিত ঘটনা এদিন ঘটলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতিসংঘ দূত তারানকোর পূর্বনির্ধারিত ফিরতি বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়নি।

দিনভর ঘটে যাওয়া ঘটনাসমূহ বাংলাদেশের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। চলমান রাজনৈতিক সংকটে প্রতিটি ঘটনাই গুরুত্বপূর্ণভাবে বিবেচনার দাবি রাখে। সংকট মীমাংসায় এই ঘটনাবলী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ফলাফল না দিলেও ভবিষ্যতের জন্য তা তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। চলমান সংকট থেকে শান্তিপূর্ণভাবে উত্তরণ ঘটাতে না পারলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক রাজনীতির জন্য হয়ে উঠতে পারে অগ্নিগর্ভ; এগারো ডিসেম্বরের প্রতিটি ঘটনা সে ইঙ্গিত বহন করছে।

পাঠকের মতামত:

SMS Alert