thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৬ জমাদিউল আউয়াল 1446

লক্ষ্মীপুরে র‌্যাবের গুলিতে নিহত ৪, অজ্ঞাতনামাকে পিটিয়ে হত্যা

২০১৩ ডিসেম্বর ১২ ১৪:৪৩:৪৩
লক্ষ্মীপুরে র‌্যাবের গুলিতে নিহত ৪, অজ্ঞাতনামাকে পিটিয়ে হত্যা

লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা : জেলায় র‌্যাবের গুলিতে বিএনপি-জামায়াত জোটের চার নেতাকর্মী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। এ ঘটনায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবুসহ ৬০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া এনএসআই সদস্য সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয় একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

এদিকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ঘটনাস্থল ও এর আশপাশের এলাকায় র‌্যাবের একটি হেলিকপ্টার টহল দেয়। বিকেল ৩টা থেকে প্রায় ৩ ঘণ্টা টহল শেষে সন্ধ্যায় হেলিকপ্টারটি ঢাকায় ফিরে যায়।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে জেলা বিএনপি এক বিবৃতিতে শনিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করেছে।

হেলিকপ্টার টহল শেষে এয়ার উইং এর পরিচালক লে. কর্নেল আরিফ মোহাম্মদ বলেন, বর্তমানে জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

তিনি আরও জানান, সকালে অবরোধকারীদের সঙ্গে সংঘষের্র জের ধরে পরিস্থিতি সামাল দিতে সদর দফতর থেকে ব্যাকআপ দিতেই হেলিকপ্টার আনা হয়। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসায় টহল বন্ধ করে হেলিকপ্টারটি ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে।

নিহতরা হলেন- জেলা যুবদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ জুয়েল, লাহারকান্দি ইউনিয়ন ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহবুব, শিবিরকর্মী মাহমুদ শিহাব, জামায়াতের কর্মী বেলাল ও অজ্ঞাতপরিচয় একজন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে দাবি করেছে ১৮ দলীয় জোট।

১৮ দলের নেতাকর্মীরা এনএসআই সদস্য সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয় একজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। রাত সাড়ে ৭টার দিকে লাশটি জকসিন সড়ক থেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়েছে পুলিশ। দুপুর থেকে লাশটি সেখানে পড়ে থাকে।

সদর থানার এ এস আই মো. শাহজাহান জানান, লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সে র‌্যাবের বহনকারী ট্রাকের হেলপার। র‌্যাবের সোর্স সন্দেহে তাকে হত্যা করা হতে পারে।

এছাড়া নিহত যুবদল নেতা জুয়েল শহরের সমসেরাবাদ এলাকার হাসপাতাল সড়কের নূরুল ইসলামের ছেলে, শিহাব শহরের বাঞ্চানগর গ্রামে মোল্লাবাড়ির হুমায়নের ছেলে। এছাড়া মাহবুব ও বেলালের বাড়ি লাহারকান্দি ও হাজিরহাটে।

গুলিবিদ্ধরা হলেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবু, যুবদলকর্মী মাসুম (২৮), ফিরোজ (৩০), মুরাদ (২৬), রুবেল (২৫), ছাত্রদলকর্মী নেছার আহম্মদ, মো. পরান, শিবিরকর্মী মো. টিপু, আমির হোসেন, রাশেদ আলম, পথচারী ফারুক (৩০), রাকিব হোসেন (২০), শিমুল (২৫), মামুন হোসেন (২৫), মানিক (২৬), আরিফ (২৫)-সহ ৬০ জন। এদের মধ্যে আটজনের আবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মানারাত, আধুনিক ও উপশম হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সোয়া ৬টার দিকে র‌্যাব সদস্যরা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবুর বাসভবনের গেট ভেঙে তাকে গ্রেফতার করতে গেলে পরিবারের সদস্যরা তাদের বাধা দেন। এ সময় র‌্যাব সদস্যরা সাবুর পায়ে গুলি করে তাকে ও তার ছোট ভাই আজিজুল করিম বাচ্চুকে আটক করে নিয়ে যায়। এ সময় সাবুর ব্যবহৃত তিনটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

পরে শহরের চকবাজার এলাকায় বিএনপির একটি মিছিলে গুলি চালায় র‌্যাব সদস্যরা। এ সময় জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ জুয়েলসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। এতে ঘটনাস্থলেই ইকবাল মাহমুদ জুয়েল নিহত হন বলে দলীয় সূত্র দাবি করে। তবে সদর থানার ওসি ইকবাল হোসেন ঘটনাটি এড়িয়ে যান।

এ খবর ছড়িলে পড়লে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। এ সময় শহরের সোনালী ব্যাংকে অগ্নিসংযোগের চেষ্টাসহ সড়কে আগুন জ্বালিয়ে ২০-২৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় তারা।

এর কিছুক্ষণ পর শহরের বাগবাড়ী, ঝুমুর সিনেমা ও এলজিইডির সামনে র‌্যাবের সঙ্গে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে মাহবুবুর রহমান ও শিহাব নামের ১৮ দলীয় জোটের দুইকর্মী নিহত হন বলে নিশ্চিত করেছেন সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফয়েজ আহম্মদ ভূঞা। পরে লক্ষ্মীপুর বনবিভাগের সামনে উত্তেজিত জনতা র‌্যাবের সোর্স সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর থেকে জেলা শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

(দ্য রিপোর্ট/জেই/শাহ/এএস/ডিসেম্বর ১২, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর