thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ১৮ জমাদিউল আউয়াল 1446

দেবযানী ইস্যু ভারতের ‘ইজ্জতকা সওয়াল’!

২০১৩ ডিসেম্বর ২০ ০৮:৩৫:০৪

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত ভারতের নারী কূটনীতিক দেবযানীকে একটি মামলায় দেহতল্লাশি এবং হাজতে পাঠানোর ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস এবং ক্ষমতা প্রত্যাশী বিজেপি জোট যেন পরস্পরকে হারানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে। যদিও দেবযানী প্রশ্নে আমেরিকান কর্তৃপক্ষ কড়া কোনো ভূমিকা নেয়নি। বরং অবস্থা সামাল দিতে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং ভারতকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে যে, দেবযানীর সঙ্গে কোনো অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়নি।

দেবযানীর ঘটনা এবার ভারত যেভাবে ‘ইজ্জতকা সওয়াল’ হিসেবে গ্রহণ করেছে অতীতে তার নজির গরহাজির। ভারতের প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আবুল কালাম আজাদ, সাবেক ডাকসাইটে মন্ত্রী জর্জ ফার্নান্দেস, হারদিপ পুরি, মীরা শঙ্কর, প্রফুল্ল প্যাটেল ও বলিউড সুপারস্টার কিং খান খ্যাত শাহরুখ খানও আমেরিকায় গিয়ে তল্লাশির নামে নাজেহাল হয়েছিলেন, পত্র-পত্রিকায় খবর এসেছিল। কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এসব ঘটনায় তেমন কোনো প্রতিবাদী ভূমিকা দেখা যায়নি। উল্লেখিতদের চেয়ে অনেক কম প্রোফাইলের একজন কথিত কূটনীতিকের বিরুদ্ধে আমেরিকান আইনে গৃহপরিচারিকার ‘শ্রমের মূল্য’ ফাঁকি দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নেয়া ব্যবস্থায় কেন ভারত এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাল সেটা অবশ্যই পর্যালোচনার দাবি রাখে।

ভারতীয় নেতৃত্বের দায়িত্বশীল কেউ কেউ অবশ্য দেবযানীর বিরুদ্ধে মার্কিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার এই হয়রানির জন্য সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রশ্নে ভারত-আমেরিকার মতপার্থক্যকে দায়ী করছেন। তবে পুরনো ঘটনাগুলোর আলোকে যদি দেখা যায় তাহলে মনে হতে পারে দেবযানীর ঘটনাটিকে ভারতই ইস্যু বানাতে চেয়েছে।

বাংলাদেশ প্রশ্নে ভারতীয়দের অবস্থান মার্কিনরা সমর্থন না করায় ভারতীয় নেতৃত্ব দেবযানী ইস্যুতে স্বদেশে একটি জাতীয়তাবাদী ক্রেজ দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছে। যেহেতু আর অল্প কয়েক মাসের মধ্যে ভারতের লোকসভা নির্বাচন। এজন্য ক্ষমতাসীন কংগ্রেস এবং ক্ষমতা প্রত্যাশী বিজেপি জোট দেবযানী ইস্যুটিকে কাজে লাগিয়ে জনমত পক্ষে আনার প্রতিযোগিতায়ও নেমেছে। দেবযানী প্রশ্নে ভারত-মার্কিন সম্পর্কের অবনতির দায় এড়াতে আমেরিকা অবশ্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। আপাতঃদৃষ্টিতে এটিকে আমেরিকার পিছু হটা মনে হলেও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে মার্কিন-ভারত অবস্থানের যে নতুন মেরুকরুণ চলছে তার কোনো ব্যত্যয় ঘটবে কিনা এটা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে এটাও নির্ভর করছে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের গতি প্রকৃতির ওপর ।

পাঠকের মতামত:

SMS Alert