‘সেক্যুলার’ ভারতের ‘গুজরাট মডেল’

আলতাফ পারভেজ
ভারতে আরেক দফা জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। ৩১ মে সেখানে লোকসভা নামে পরিচিত বর্তমান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের মেয়াদ শেষ হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বিশাল ও সক্রিয় উপস্থিতির কারণে দেশটির যে কোনো বড় রাজনৈতিক ঘটনাই বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও মনোযোগ আকর্ষণী। সে কারণে আসন্ন নির্বাচনে দেশটিতে কী ঘটছে, সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি।
ভারতে এবারের নির্বাচনে প্রধান আলোচিত চরিত্র নরেন্দ্র দমোদর দাস মোদি- ভক্তরা যাকে আদর করে ডাকে NaMo। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি)পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে তাকেই প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে এবং নির্বাচনপূর্ব জরিপগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে NaMo-ই ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন- যদিও দেশে-বিদেশে তাকে নিয়ে রয়েছে তীব্র বিতর্ক।
বর্তমানে মোদি পশ্চিম ভারতের গুজরাট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। প্রদেশটিতে চতুর্থবারের মতো তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন। গুজরাট শাসনের এই ‘সফলতা’ কেন্দ্রীয় প্রধানমন্ত্রিত্বে তার দাবিকে শক্তি জুগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পদের মনোনয়নে বিজেপিতে এলকে আদভানীসহ সিনিয়র অন্যদের মোদি ডিঙ্গিয়ে যেতে পেরেছেন; তার পেছনে রয়েছে মুসলমানবিদ্বেষী রাজনীতিতে তার লাগাতার সাফল্য- বিশেষ করে গুজরাটে মুসলমানদের নিপীড়নের ক্ষেত্রে সফল নেতৃত্ব।
আপাতদৃষ্টিতে মোদি নিজেকে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরলেও- কার্যত তার পেছনে রয়েছে বিজেপির আদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ- বিশ্বজুড়ে যারা আরএসএস নামে পরিচিত। রাজনীতিতে মোদির মূল শক্তি ও ভিত আরএসএস; এর মাধ্যমেই মোদির রাজনৈতিক জীবনের শুরু ও বিকাশ। ভারতজুড়ে ‘হিন্দুত্ব’ প্রতিষ্ঠাই আরএসএসের ঘোষিত রাজনীতি ও দর্শন। অভিযোগ রয়েছে, ২০০২ সালে গুজরাট রাজ্যে মুসলমানদের ওপর ব্যাপক গণহত্যায় নেতৃত্ব দিয়ে মোদি আরএসএসের কাছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জন্য নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেন। তবে গুজরাটের ‘অর্থনৈতিক সাফল্য’-এর মিথও রাজনৈতিক প্রচারণাযুদ্ধে তার এক বড় হাতিয়ার।
মোদির জন্ম ১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর গুজরাটের ভাদনগরে। ছাত্র হিসেবে তিনি ছিলেন গড়পড়তা, তবে তার্কিক হিসেবে ছিলেন নজরকাড়া। এই যোগ্যতাকে ব্যবহার করেই তিনি আরএসএসের পূর্ণকালীন ‘প্রচারকের’ কাজ নেন। সংঘ পরিবারের হয়ে গোপনে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাপূর্ণ লিফলেট বিতরণই ছিল ‘প্রচারক’ হিসেবে তার দায়িত্ব।
ভারতের রাজনীতিতে ‘সংঘ পরিবার’-এর পূর্ণকালীন কর্মী হিসেবে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে কোন দায়িত্ব পাওয়ার দুই বছর পর তাকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হয়। মোদিও রাজনীতির তৃতীয় বছরে মহারাষ্ট্রের শীতকালীন রাজধানী নাগপুরে আরএসএসের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণের পর মোদির দায়িত্ব পড়ে আরএসএসের ছাত্র সংগঠন ‘অখিল ভারত বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি)’ গুজরাট শাখায় কাজ করার।
১৯৮৭ সালে আরএসএস মোদিকে সরাসরি গুজরাট বিজেপিতে ঠেলে দেয় কাজের জন্য। ১৯৯৫ সালে গুজরাট বিধানসভার নির্বাচনে মোদির প্রণীত কৌশল দলের জন্য বিশেষ কার্যকর প্রমাণিত হয়। ১৯৯৮ সালে মোদি বিজেপির ন্যাশনাল সেক্রেটারি হন। ২০০১ সালে তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিজেপির মনোনয়ন পান।
মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মোদি কর্পোরেটদের প্রেসক্রিপশন মতো প্রাইভেটাইজেশন শুরু করেন ও সরকারের আয়তন কমানোর উদ্যোগ নেন, যা ছিল আপাতদৃষ্টিতে আরএসএসের অর্থনৈতিক দর্শনের বিরোধী। আরএসএস সাধারণভাবে প্রাইভেটাইজেশন ও বিশ্বায়নে উৎসাহী নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও আরএসএস ও বিজেপি মোদির ভাবমূর্তি নির্মাণে জ্বালানি সরবরাহ করে গেছে প্রধানত ২০০২ সালের গুজরাট ‘দাঙ্গা’য় মোদির অতিদক্ষিণপন্থী ভূমিকার কারণে। উল্লেখ্য, প্রদেশটিতে হিন্দুদের সংখ্যা ৮৯ শতাংশ, মুসলমান রয়েছে মাত্র ৯ শতাংশ।
আগেই বলা হয়েছে, আরএসএসের আরেক নাম ‘সংঘ পরিবার’। আরএসএস হলো এই পরিবারের ভিত্তি সংগঠন। এখান থেকেই তারা একের পর এক নানান ধরনের সংগঠনের জন্ম দিয়ে যাচ্ছে। ১৯৬০ সাল থেকে মূলত এই প্রবণতার শুরু। সংঘ পরিবারের প্রত্যেকটি সংগঠনের ব্যবস্থাপনা স্বতন্ত্র হলেও সকলেরই আদর্শ সরাসরি ‘হিন্দুত্ব’ কায়েম; সকলেই তারা Hindutva মুভমেন্টের কর্মী। এরূপ সংগঠনের সংখ্যা অগণিত এবং কেবল রাজনীতির পরিমণ্ডলেই তা সীমাবদ্ধ নেই।
আরএসএসের প্রথম রাজনৈতিক শাখা ছিল জনসংঘ; বিজেপির পূর্বসূরি বলা যায় একে। ১৯৫১ সালের ২১ অক্টোবর এর জন্ম। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আর বলরাজ মোদক ছিলেন সম্পাদক; নির্বাচনী প্রতীক ছিল আরএসএসের প্রতীক- ‘মঙ্গল প্রদীপ’। ভাবাদর্শের ক্ষেত্রেও জনসংঘ ছিল আরএসএসের মতোই হিন্দুত্বের প্রচারক।
১৯৬৭ সালে এই দলের ধর্মীয় শাখা ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ’-এর গোড়াপত্তন হয় এবং সেক্ষেত্রেও উদ্যোগী ভূমিকায় ছিল আরএসএস। ১৯৭৭ সালে জনসংঘ লোকদলসহ ছোট ছোট আরও কয়েকটি দল নিয়ে গঠন করে জনতা পার্টি এবং কেন্দ্রে প্রথম অ-কংগ্রেসী সরকার গঠন করেছিল তারা। বাজপায়ী ও আদভানী প্রমুখ তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন। ১৯৮০ সালে এই দল ভেঙ্গে যায় এবং মূল অংশ বিজেপি গঠন করে।
আরএসএসের অঙ্গসংগঠন হিসেবে ‘হিন্দুত্ব’-এর প্রচার ও প্রতিষ্ঠাই বিজেপির রাজনীতিরও মূল বিষয়। দারিদ্র্য-পীড়িত ভারতে বিপুল শোষণ-বঞ্চনা থাকলেও সেসব নিয়ে বিজেপি কথা বলে কমই। বিশ্বব্যাংক বর্তমানে দারিদ্র্যের যে মানদণ্ড অনুসরণ করে (অর্থাৎ দৈনিক ১.২৫ ডলারের নিচে যাদের আয়)- সে অনুযায়ী ভারতের জনসংখ্যার ৩২.৭ শতাংশই দরিদ্র। সেখানকার ৯৬.৯ শতাংশ মানুষের দৈনিক আয় ৫ ডলারের নিচে। দারিদ্র্য ও ধনী-দরিদ্রের এইরূপ বৈষম্য থেকে মানুষের দৃষ্টি আড়াল করে হিন্দুত্ব কায়েমকে রাজনীতির প্রধান এজেন্ডা হিসেবে ধরে রাখতে বিজেপি মূলত মুসলমানদের ছদ্ম প্রতিপক্ষ বানিয়ে প্রতিনিয়ত ‘বিজয় উদযাপন’ করে চলেছে। তাদের এইরূপ রাজনীতিরই আদুরে নাম হলো ‘শাইনিং ইন্ডিয়া’- যা একই সাথে ভারতীয় কর্পোরেটদের প্রধান প্রচার-পণ্যও বটে।
বিজেপি সাধারণভাবে নির্বাচন এলেই সকল সহযোগী সংগঠনকে নিয়ে পুরো দেশে, এমনকি দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ইসলামবিরোধী চূড়ান্ত এক মনোবিকার সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়। এবারও তাই হচ্ছে। পাশাপাশি গুজরাট মডেলকেও তারা বিশেষভাবে প্রচারণায় এনেছে এবার। ইসলাম বিদ্বেষের মতো সেখানেও মূলত গুচ্ছ গুচ্ছ মিথ্যাচারই বিজেপির প্রচার-পণ্য হয়ে উঠেছে।
গুজরাটে মোদির অর্থনৈতিক সাফল্যের মিথ
এটা সত্য যে, মোদির জমানায় বেশ অর্থনৈতিক অগ্রগতি ঘটেছে প্রদেশটিতে। অর্থনীতিতে বাৎসরিক গড় প্রবৃদ্ধির হার সেখানে ১০ শতাংশের বেশি। ভারতের শিল্পপণ্যের ১৬ ভাগ এখন জোগান দেয় গুজরাট। এমনকি মোদি দাবি করে থাকেন, তার আমলে কৃষি খাতেও ১০-১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। পুরো প্রদেশজুড়ে প্রায় ৫৫টি ‘স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ খোলা হয়েছে। বহু ধরনের সাবসিডির মাধ্যমে এসব জোনে প্রাইভেট বিনিয়োগ আকর্ষণ করছেন মোদি এবং তার জন্য বিজনেস ফ্রেন্ডলি রেগুলেটরি রিফর্মও করা হয়েছে ব্যাপকভাবে।
এর সবই সত্য। প্রশ্ন হলো, অর্থনৈতিক এসব সাফল্যের মূল সুবিধাভোগী কারা? সমাজের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সবাই কি এ থেকে লাভবান হচ্ছে? এসব প্রশ্নের পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যেহেতু পুরো অর্থনৈতিক কার্যক্রম সেখানে পরিচালনা করা হচ্ছে চূড়ান্ত প্রাইভেটাইজেশনের মাধ্যমে, ফলে এর সুফল সমাজের সবাই পায়নি বা পাচ্ছে না। স্রেফ পুঁজির স্ফীতি ও ব্যবসাই মুখ্য হয়ে উঠেছে।
যেমন- গুজরাটে কৃষিক্ষেত্রে যখন ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি হচ্ছে সেই একই সময় (২০০১-১১) প্রদেশজুড়ে কৃষিমজুরের সংখ্যা বেড়েছে ১৭ লাখ। এই কৃষিমজুররা আসলে আর কেউ নয়- সদ্য জমি হারানো খুদে চাষীর দল। পদ্ধতিগতভাবে সেখানে খুদে চাষীদের জমি নিয়ে তা তুলে দেওয়া হচ্ছে শিল্প বিনিয়োগকারীদের হাতে। যার কারণে তথাকথিত ‘ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি’র মাঝেই গ্রাম থেকে শহরে শ্রমজীবীদের অভিবাসন ব্যাপক বেড়ে গেছে।
এভাবে অন্যান্য খাতের কথাও বলা যায়। যেমন- গুজরাটে এ মুহূর্তে কর্পোরেট হাসপাতালগুলোর ব্যাপক বিনিয়োগ চলছে। বিখ্যাত সব হাসপাতালের উঁচু উঁচু অট্টালিকা উঠছে। কিন্তু গুজরাট হলো ভারতের সেই প্রদেশগুলোর একটি যেখানে জন্মকালীন শিশুমৃত্যু হার বেশ উঁচু; হাজারে ৪৪ জন (বাংলাদেশে যা ৪৭)।
একই ধরনের বৈপরীত্য দেখা যায় বিদ্যুতের ক্ষেত্রে। গুজরাটকে বলা হয় ভারতের একমাত্র বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত প্রদেশ। নিয়মিত পাশের প্রদেশগুলোতে প্রায় ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিক্রি করে। কিন্তু প্রদেশটির গ্রামে লোডশেডিং নিয়মিত এক অভিজ্ঞতা। শহর-গ্রাম লোডশেডিংয়ের হার ১:৬। ভারতের যেসব প্রদেশে বিদ্যুতের দাম সর্বাধিক তাদের মধ্যেও রয়েছে গুজরাট।
কৃষি, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ইত্যাদি সেক্টরের উপরোক্ত অভিজ্ঞতার কারণ মোদির অধীনে এই প্রদেশে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা পুরোপুরি বেসরকারি খাতের কর্তৃত্বাধীন- বিনিয়োগকারীদের মোদি যে কোন উপায়ে কেবল মুনাফা করারই সুযোগ দিয়েছেন। সেজন্যই কর্পোরেটরা মোদিকে নিয়ে উল্লসিত- এমনকি তার অতি কুৎসিত মানবাধিকার রেকর্ড সত্ত্বেও।
‘গুজরাট মডেল’-এর এই অর্থনৈতিক অভিজ্ঞতা শিক্ষা হিসেবে এই ইঙ্গিতও স্পষ্ট করেছে, সংঘ পরিবারের ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদ’-এর রাজনীতি প্রকৃতপক্ষে কাদের হাতে পুঁজির পুঞ্জিভবনকে উৎসাহ দেয়; অর্থাৎ ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ পুঁজির প্রশ্নকে কিভাবে মোকাবেলা করে; মানুষের কর্মসংস্থানের মানে তাদের কাছে কী; প্রবৃদ্ধির গল্পের আড়ালে ফ্যাসিবাদের অর্থনীতি হাজার হাজার একর কৃষি জমির অধিগ্রহণ ও লাখ লাখ মানুষের উদ্বাস্তু হওয়াকে কিভাবে গোপন করে- সর্বোপরি শ্রম অধিকারকে তারা কিভাবে দেখে?
মোদির শাসনামলে গুজরাটে অনেকবার বেশ ঘটা করে রোজগার মেলার আয়োজন করা হয়। বিশেষত ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক সপ্তাহজুড়ে সমগ্র গুজরাটে এরকম মেলা হয় ৪৮৯টি এবং মোদির প্রশাসনের তরফ থেকে দাবি করা হয়, এসব মেলায় ৬৫ হাজার তরুণের চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে। এই প্রচারণার সত্যাসত্য জানতে তথ্যাধিকার আইনে গবেষক রোহিত প্রজাপতি ও ত্রুপতি শাহ গুজরাট প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আবেদন জানান। এ থেকে দেখা যায়, প্রশাসন মাত্র ৩২,৩৭২ জনের নাম দিতে পেরেছে। আরও দেখা যায়, যাদের ‘চাকরি’ দেয়া হয়েছে বলা হচ্ছে- তাদেরও কোন ‘এ্যাপয়নমেন্ট লেটার’ নয়- দেয়া হয়েছে ‘এমপ্লয়মেন্ট লেটার’। অথচ উপরোক্ত রোজগার মেলার আয়োজন করতে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগের খরচ হয়েছে প্রায় ২ কোটি রুপি। জেলাভিত্তিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, আহমেদাবাদ জেলায় নিয়োগ পাওয়া ৪,৩৭০ জনের সবাই ‘এমপ্লয়মেন্ট লেটার’ পেয়েছেন শিক্ষানবিস হিসেবে- যাদের বেতন কাঠামো ১৪০০-১৯০০ রুপির মধ্যে। এভাবেই রাজ্য সরকার নিজের টাকায় মেলার আয়োজন করে কর্পোরেটদের সস্তা শ্রমিক সরবরাহ করছে।
গুজরাটে বিজেপির অর্থনৈতিক দর্শনের আরেকটি মৌলিক দিক হলো পরিবেশ প্রশ্নকে অগ্রাহ্য করা। বিনিয়োগ-আগ্রহী কর্পোরেটদের এটাও খুবই পছন্দ হয়েছে। প্রদেশটিতে এ মুহূর্তে প্রায় ৩০ হাজার ফ্যাক্টরি রয়েছে- যার মধ্যে ১৫ শতাংশের অধিক (hazardous chemical factories) এমন বর্জ্য নির্গমন করে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সারা ভারতে এইরূপ যত কারখানা রয়েছে গুজরাটেই আছে তার ৩০ ভাগ। বস্তুত এসবেরই ফসল হলো কথিত ‘গুজরাট মডেল’।
উল্লেখ্য, মোদি ব্রিগেডের তরফ থেকে নির্বাচনী প্রচারণা যুদ্ধে গুজরাটের অর্থনৈতিক কাহিনীকে প্রাধান্যে আনার চেষ্টা থাকলেও ঘুরেফিরে বারবারই সেখানে মোদির গণহত্যাকেন্দ্রিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়গুলো চলে আসছে।
যেগ ণহত্যার কোনো বিচার হয়নি
অনেকেরই হয়তো স্মৃতিতে আছে, গুজরাট গণহত্যার শুরু একটা ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডকে কেন্দ্র করে। ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোদরাহ নামক জায়গায় উল্লিখিত ট্রেন পুড়ে ৫৮ জন হিন্দু তীর্থযাত্রী মারা যায়। এ সময় কৌশলে এই মিথ্যা প্রচারণা ছড়িয়ে দেয়া হয়, মুসলমানরাই অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে। এর পরপরই সমগ্র গুজরাটজুড়ে মুসলমানদের হত্যালীলা শুরু হয়। দুই হাজারের অধিক মানুষ মারা যায় এতে। হাজার হাজার আহত হয় এবং পুরো প্রদেশজুড়ে মুসলমানদের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেয়া হয়।
গুজরাটে ট্রেনে আগুন লাগা এবং মুসলমানদের পদ্ধতিগতভাবে হত্যার সময় মোদি ছিলেন প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী। সেসময় বহু আবেদন নিবেদন সত্ত্বেও মোদি প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে হত্যালীলা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি। ঘটনার দীর্ঘ সাত বছর পর ২০০৯ সালের এপ্রিলে ভারতের সুপ্রীম কোর্ট গুজরাট হত্যালীলার তদন্তে একটি বিশেষ অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয় এবং সেই অনুসন্ধান শেষে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে মোদিকে নির্দোষ বলে অভিহিত করা হয় তদন্ত দলের পক্ষ থেকে। তবে ভারতে আজও সুপ্রিমকোর্টের উল্লিখিত তদন্তের নিরপেক্ষতা ও যথার্থতা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক চলছে।
উল্লেখ্য, সাধারণভাবে ভারতে মুসলমান সমাজে দারিদ্র্য, অশিক্ষা ইত্যাদি বহুমাত্রিক বিপন্নতা বিদ্যমান। তবে এর মধ্যে গুজরাটের মুসলমানরা ছিল তুলনামূকভাবে ভালো অবস্থায়। ফলে ভারতজুড়ে নিজ সমাজের উন্নয়নধর্মী অভ্যন্তরীণ নানান উদ্যোগে গুজরাটের মুসলমানরা অর্থনৈতিকভাবে নেতৃত্ব দিতেন। ২০০২ সালের হামলার সময় এটাও দেখা যায়, হাতে মুদ্রিত তালিকা ধরে ধরে আক্রমণকারীরা রাজ্যে মুসলমানদের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আক্রমণ করছে। এর পেছনে যে বিশেষ আর্থ-সামাজিক বিবেচনা কাজ করেছে সেটা সহজেই অনুমেয়।
এই অভিজ্ঞতা থেকেই মোদির আসন্ন বিজয়কে ঘিরে পুরো ভারতে মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীগুলোর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে এখন। আরএসএস ও বিজেপির অধীনে হিন্দুত্ববাদী শাসনে বাড়তি বঞ্চনা ও লাঞ্চনার আশঙ্কা করছেন শ্রমিক জনগোষ্ঠীও। ধর্মভিত্তিক ও কর্পোরেটমুখী রাজনীতির এই ঢেউ বহুবর্ণ ও বহুধর্মের দক্ষিণ এশিয়ার জন্য কী পরিণতি ডেকে আনছে সেটা ভেবে উদ্বিগ্ন আশপাশের দেশগুলোর মানুষও।
আলতাফ পারভেজ : লেখক ও গবেষক
পাঠকের মতামত:

- আইসিসির হস্তক্ষেপের আশায় আছেন ফারুক
- নতুন কাউন্সিলর বুলবুল, অনুমোদন দিল বিসিবি
- ইসরাইলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে গাজায় যাচ্ছেন গ্রেটা থুনবার্গ
- ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখার নির্দেশ
- জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের ৬ সমঝোতা স্মারক সই
- দুর্বল হয়েছে গভীর নিম্নচাপ
- জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ফুলেল শ্রদ্ধা
- জিয়াউর রহমানের আজ ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী
- নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই করতে হবে: মির্জা আব্বাস
- দাম বেড়েছে সবজির, মুরগিতে স্বস্তি
- বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে: ড. আনিসুজ্জামান
- সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
- সিনহা হত্যা: হাইকোর্টের রায় ২ জুন
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা ও তেল আমদানি বাড়াতে চায় বাংলাদেশ
- উপকূলীয় ১৬ জেলায় ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা
- ইশরাকের বিষয়ে আদালতের রায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি
- ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন হওয়া সম্ভব : তারেক রহমান
- "খুব শিগগিরই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত দেখতে পাব, এই হোক অঙ্গীকার"
- বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে ড. আনিসুজ্জামানের বৈঠক আজ
- সচিবালয়ে সপ্তাহে দুই দিন দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
- ঢাকাসহ ৯ অঞ্চলে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস
- এই সরকার স্টারলিংক এনেছেন আরাকান আর্মির জন্য: মির্জা আব্বাস
- চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র
- আবারো বিসিবি সভাপতি বদলের জোর গুঞ্জন
- অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এশিয়ার দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান
- বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
- সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘণীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত
- ঢাকায় ঝুম বৃষ্টি, চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের শঙ্কা
- দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত করার আগে নিয়ন্ত্রণে নেবে সরকার: গভর্নর
- এবার ঢাবিতে মশাল মিছিলে উত্তেজনা, শিক্ষার্থীদের ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি
- গভীর রাতে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ঢাকা
- শিবির ছাত্ররাজনীতির পরিবেশকে ‘বিষাক্ত’ করে তুলেছে: উমামা ফাতেমা
- জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
- নির্বাচনের রোডম্যাপ না পেয়ে ‘হতাশ’ বিএনপি
- পুতিন ‘আগুন’ নিয়ে খেলছেন: ট্রাম্প
- সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার, বিজিবি মোতায়েন
- সৌদি পৌঁছেছেন ৬৫ হাজার ৯৪৩ হজযাত্রী
- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা, বিকেলে সংবাদ সম্মেলন
- ইশরাকের শপথ: সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় স্থানীয় সরকার বিভাগ
- ঈদযাত্রার শেষ দিনের টিকিট বিক্রি আজ
- রাতে জাপান যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
- আপিল মঞ্জুর, জামায়াত নেতা আজহার খালাস
- বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ম্যাচ: সাইবার হামলার ধাক্কা সামলে অনলাইনে ফিরছে টিকিট বিক্রি
- ইউক্রেনের বিপদ বাড়ান জেলেনস্কি, দাবি ট্রাম্পের
- সচিবালয়ে মঙ্গলবার দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ
- আগামী জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি হবে: আলী রীয়াজ
- অধ্যাদেশ নিয়ে আলোচনা করে সমস্যাটা সমাধান করে নেবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- "সরকার বিনিয়োগ শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দিচ্ছে"
- ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কলম বিরতি শুরু মঙ্গলবার
- সরকারের সঙ্গে টানাপোড়েন নেই, জানাল সেনাবাহিনী
- গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে: তারেক রহমান
- সরকার প্রতিটি নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর: প্রধান উপদেষ্টা
- টানা ৩ কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে পতন, বেড়েছে লেনদেন
- ওয়ালটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন জয়া আহসান
- রানার অটোমোবাইলস নিয়ে এলো ‘ইয়াদিয়া’র ইলেকট্রিক স্কুটার
- ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে দেয়া যাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের কিস্তি
- ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা
- বাংলাদেশ- ইউএই ক্রিকেট সিরিজের টাইটেল স্পন্সর ওয়ালটন
- বাংলাদেশ- ইউএই ক্রিকেট সিরিজের টাইটেল স্পন্সর ওয়ালটন
- বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্মাননা পেলেন আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের নারী উদ্যোক্তা
- কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দিলো সরকার
- আগামী বছরের ৩০ জুনের পর দায়িত্বে থাকবেন না ড. ইউনূস : প্রেস সচিব
- সর্বোচ্চ ছক্কা হজমে রশিদের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড
- পাকিস্তানে ভারত-সমর্থিত ৯ সন্ত্রাসী নিহত
- দাবির সঙ্গে একমত সরকার, এনবিআরে কর্মবিরতি স্থগিত
- প্রধান উপদেষ্টা ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চান না: মান্না
- নাগরিক সমাজ ছাড়া সংস্কার সম্ভব নয়: অধ্যাপক আলী রীয়াজ
- "আ.লীগকে নিষিদ্ধ করার পর আরেকটা যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে"
- সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ জারি
- ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান
- গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাকের ভিড়ে হামলা, নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ছুঁইছুঁই
- এনবিআর ভাগ করায় রাজস্ব কমলেও পরিবেশ উন্নত হবে
- পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের প্রধান উৎস করতে হবে: আমির খসরু
- শাপলা চত্বরের ঘটনায় হেফাজতের ৭ দাবি-কর্মসূচি ঘোষণা
- দেশের রাজনীতিতে ১/১১-এর আভাস লক্ষ্য করছি: আখতার
- সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ জারি
- সচিবালয়ে মঙ্গলবার দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ
- সংস্কারের আগে নির্বাচন হলে জনগণের আশা পূরণ হবে না: জামায়াত আমির
- সব দল প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে: প্রেস সচিব
- গভীর রাতে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ঢাকা
- কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দিলো সরকার
- এনবিআর ভাগ করায় রাজস্ব কমলেও পরিবেশ উন্নত হবে
- নাগরিক সমাজ ছাড়া সংস্কার সম্ভব নয়: অধ্যাপক আলী রীয়াজ
- ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে দেয়া যাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের কিস্তি
- বাংলাদেশ- ইউএই ক্রিকেট সিরিজের টাইটেল স্পন্সর ওয়ালটন
- আগামী বছরের ৩০ জুনের পর দায়িত্বে থাকবেন না ড. ইউনূস : প্রেস সচিব
- পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের প্রধান উৎস করতে হবে: আমির খসরু
- সরকারের কাছে পাঁচ দাবি জানিয়েছে এনসিপি
- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা, বিকেলে সংবাদ সম্মেলন
- সরকারের সঙ্গে টানাপোড়েন নেই, জানাল সেনাবাহিনী
- গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে: তারেক রহমান
- ঢাকায় ঝুম বৃষ্টি, চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের শঙ্কা
- দেশের রাজনীতিতে ১/১১-এর আভাস লক্ষ্য করছি: আখতার
- ইউক্রেনের বিপদ বাড়ান জেলেনস্কি, দাবি ট্রাম্পের
- ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান
- সর্বোচ্চ ছক্কা হজমে রশিদের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড
- ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা
- ২ ছাত্র উপদেষ্টাসহ তিনজনের পদত্যাগ দাবি বিএনপির
- সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার, বিজিবি মোতায়েন
- আপিল মঞ্জুর, জামায়াত নেতা আজহার খালাস
মুক্তমত এর সর্বশেষ খবর
মুক্তমত - এর সব খবর
