‘সেক্যুলার’ ভারতের ‘গুজরাট মডেল’
আলতাফ পারভেজ
ভারতে আরেক দফা জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। ৩১ মে সেখানে লোকসভা নামে পরিচিত বর্তমান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের মেয়াদ শেষ হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বিশাল ও সক্রিয় উপস্থিতির কারণে দেশটির যে কোনো বড় রাজনৈতিক ঘটনাই বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও মনোযোগ আকর্ষণী। সে কারণে আসন্ন নির্বাচনে দেশটিতে কী ঘটছে, সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি।
ভারতে এবারের নির্বাচনে প্রধান আলোচিত চরিত্র নরেন্দ্র দমোদর দাস মোদি- ভক্তরা যাকে আদর করে ডাকে NaMo। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি)পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে তাকেই প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে এবং নির্বাচনপূর্ব জরিপগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে NaMo-ই ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন- যদিও দেশে-বিদেশে তাকে নিয়ে রয়েছে তীব্র বিতর্ক।
বর্তমানে মোদি পশ্চিম ভারতের গুজরাট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। প্রদেশটিতে চতুর্থবারের মতো তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন। গুজরাট শাসনের এই ‘সফলতা’ কেন্দ্রীয় প্রধানমন্ত্রিত্বে তার দাবিকে শক্তি জুগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পদের মনোনয়নে বিজেপিতে এলকে আদভানীসহ সিনিয়র অন্যদের মোদি ডিঙ্গিয়ে যেতে পেরেছেন; তার পেছনে রয়েছে মুসলমানবিদ্বেষী রাজনীতিতে তার লাগাতার সাফল্য- বিশেষ করে গুজরাটে মুসলমানদের নিপীড়নের ক্ষেত্রে সফল নেতৃত্ব।
আপাতদৃষ্টিতে মোদি নিজেকে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরলেও- কার্যত তার পেছনে রয়েছে বিজেপির আদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ- বিশ্বজুড়ে যারা আরএসএস নামে পরিচিত। রাজনীতিতে মোদির মূল শক্তি ও ভিত আরএসএস; এর মাধ্যমেই মোদির রাজনৈতিক জীবনের শুরু ও বিকাশ। ভারতজুড়ে ‘হিন্দুত্ব’ প্রতিষ্ঠাই আরএসএসের ঘোষিত রাজনীতি ও দর্শন। অভিযোগ রয়েছে, ২০০২ সালে গুজরাট রাজ্যে মুসলমানদের ওপর ব্যাপক গণহত্যায় নেতৃত্ব দিয়ে মোদি আরএসএসের কাছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জন্য নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেন। তবে গুজরাটের ‘অর্থনৈতিক সাফল্য’-এর মিথও রাজনৈতিক প্রচারণাযুদ্ধে তার এক বড় হাতিয়ার।
মোদির জন্ম ১৯৫০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর গুজরাটের ভাদনগরে। ছাত্র হিসেবে তিনি ছিলেন গড়পড়তা, তবে তার্কিক হিসেবে ছিলেন নজরকাড়া। এই যোগ্যতাকে ব্যবহার করেই তিনি আরএসএসের পূর্ণকালীন ‘প্রচারকের’ কাজ নেন। সংঘ পরিবারের হয়ে গোপনে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাপূর্ণ লিফলেট বিতরণই ছিল ‘প্রচারক’ হিসেবে তার দায়িত্ব।
ভারতের রাজনীতিতে ‘সংঘ পরিবার’-এর পূর্ণকালীন কর্মী হিসেবে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে কোন দায়িত্ব পাওয়ার দুই বছর পর তাকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হয়। মোদিও রাজনীতির তৃতীয় বছরে মহারাষ্ট্রের শীতকালীন রাজধানী নাগপুরে আরএসএসের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণের পর মোদির দায়িত্ব পড়ে আরএসএসের ছাত্র সংগঠন ‘অখিল ভারত বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি)’ গুজরাট শাখায় কাজ করার।
১৯৮৭ সালে আরএসএস মোদিকে সরাসরি গুজরাট বিজেপিতে ঠেলে দেয় কাজের জন্য। ১৯৯৫ সালে গুজরাট বিধানসভার নির্বাচনে মোদির প্রণীত কৌশল দলের জন্য বিশেষ কার্যকর প্রমাণিত হয়। ১৯৯৮ সালে মোদি বিজেপির ন্যাশনাল সেক্রেটারি হন। ২০০১ সালে তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিজেপির মনোনয়ন পান।
মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মোদি কর্পোরেটদের প্রেসক্রিপশন মতো প্রাইভেটাইজেশন শুরু করেন ও সরকারের আয়তন কমানোর উদ্যোগ নেন, যা ছিল আপাতদৃষ্টিতে আরএসএসের অর্থনৈতিক দর্শনের বিরোধী। আরএসএস সাধারণভাবে প্রাইভেটাইজেশন ও বিশ্বায়নে উৎসাহী নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও আরএসএস ও বিজেপি মোদির ভাবমূর্তি নির্মাণে জ্বালানি সরবরাহ করে গেছে প্রধানত ২০০২ সালের গুজরাট ‘দাঙ্গা’য় মোদির অতিদক্ষিণপন্থী ভূমিকার কারণে। উল্লেখ্য, প্রদেশটিতে হিন্দুদের সংখ্যা ৮৯ শতাংশ, মুসলমান রয়েছে মাত্র ৯ শতাংশ।
আগেই বলা হয়েছে, আরএসএসের আরেক নাম ‘সংঘ পরিবার’। আরএসএস হলো এই পরিবারের ভিত্তি সংগঠন। এখান থেকেই তারা একের পর এক নানান ধরনের সংগঠনের জন্ম দিয়ে যাচ্ছে। ১৯৬০ সাল থেকে মূলত এই প্রবণতার শুরু। সংঘ পরিবারের প্রত্যেকটি সংগঠনের ব্যবস্থাপনা স্বতন্ত্র হলেও সকলেরই আদর্শ সরাসরি ‘হিন্দুত্ব’ কায়েম; সকলেই তারা Hindutva মুভমেন্টের কর্মী। এরূপ সংগঠনের সংখ্যা অগণিত এবং কেবল রাজনীতির পরিমণ্ডলেই তা সীমাবদ্ধ নেই।
আরএসএসের প্রথম রাজনৈতিক শাখা ছিল জনসংঘ; বিজেপির পূর্বসূরি বলা যায় একে। ১৯৫১ সালের ২১ অক্টোবর এর জন্ম। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আর বলরাজ মোদক ছিলেন সম্পাদক; নির্বাচনী প্রতীক ছিল আরএসএসের প্রতীক- ‘মঙ্গল প্রদীপ’। ভাবাদর্শের ক্ষেত্রেও জনসংঘ ছিল আরএসএসের মতোই হিন্দুত্বের প্রচারক।
১৯৬৭ সালে এই দলের ধর্মীয় শাখা ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ’-এর গোড়াপত্তন হয় এবং সেক্ষেত্রেও উদ্যোগী ভূমিকায় ছিল আরএসএস। ১৯৭৭ সালে জনসংঘ লোকদলসহ ছোট ছোট আরও কয়েকটি দল নিয়ে গঠন করে জনতা পার্টি এবং কেন্দ্রে প্রথম অ-কংগ্রেসী সরকার গঠন করেছিল তারা। বাজপায়ী ও আদভানী প্রমুখ তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন। ১৯৮০ সালে এই দল ভেঙ্গে যায় এবং মূল অংশ বিজেপি গঠন করে।
আরএসএসের অঙ্গসংগঠন হিসেবে ‘হিন্দুত্ব’-এর প্রচার ও প্রতিষ্ঠাই বিজেপির রাজনীতিরও মূল বিষয়। দারিদ্র্য-পীড়িত ভারতে বিপুল শোষণ-বঞ্চনা থাকলেও সেসব নিয়ে বিজেপি কথা বলে কমই। বিশ্বব্যাংক বর্তমানে দারিদ্র্যের যে মানদণ্ড অনুসরণ করে (অর্থাৎ দৈনিক ১.২৫ ডলারের নিচে যাদের আয়)- সে অনুযায়ী ভারতের জনসংখ্যার ৩২.৭ শতাংশই দরিদ্র। সেখানকার ৯৬.৯ শতাংশ মানুষের দৈনিক আয় ৫ ডলারের নিচে। দারিদ্র্য ও ধনী-দরিদ্রের এইরূপ বৈষম্য থেকে মানুষের দৃষ্টি আড়াল করে হিন্দুত্ব কায়েমকে রাজনীতির প্রধান এজেন্ডা হিসেবে ধরে রাখতে বিজেপি মূলত মুসলমানদের ছদ্ম প্রতিপক্ষ বানিয়ে প্রতিনিয়ত ‘বিজয় উদযাপন’ করে চলেছে। তাদের এইরূপ রাজনীতিরই আদুরে নাম হলো ‘শাইনিং ইন্ডিয়া’- যা একই সাথে ভারতীয় কর্পোরেটদের প্রধান প্রচার-পণ্যও বটে।
বিজেপি সাধারণভাবে নির্বাচন এলেই সকল সহযোগী সংগঠনকে নিয়ে পুরো দেশে, এমনকি দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ইসলামবিরোধী চূড়ান্ত এক মনোবিকার সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়। এবারও তাই হচ্ছে। পাশাপাশি গুজরাট মডেলকেও তারা বিশেষভাবে প্রচারণায় এনেছে এবার। ইসলাম বিদ্বেষের মতো সেখানেও মূলত গুচ্ছ গুচ্ছ মিথ্যাচারই বিজেপির প্রচার-পণ্য হয়ে উঠেছে।
গুজরাটে মোদির অর্থনৈতিক সাফল্যের মিথ
এটা সত্য যে, মোদির জমানায় বেশ অর্থনৈতিক অগ্রগতি ঘটেছে প্রদেশটিতে। অর্থনীতিতে বাৎসরিক গড় প্রবৃদ্ধির হার সেখানে ১০ শতাংশের বেশি। ভারতের শিল্পপণ্যের ১৬ ভাগ এখন জোগান দেয় গুজরাট। এমনকি মোদি দাবি করে থাকেন, তার আমলে কৃষি খাতেও ১০-১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। পুরো প্রদেশজুড়ে প্রায় ৫৫টি ‘স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ খোলা হয়েছে। বহু ধরনের সাবসিডির মাধ্যমে এসব জোনে প্রাইভেট বিনিয়োগ আকর্ষণ করছেন মোদি এবং তার জন্য বিজনেস ফ্রেন্ডলি রেগুলেটরি রিফর্মও করা হয়েছে ব্যাপকভাবে।
এর সবই সত্য। প্রশ্ন হলো, অর্থনৈতিক এসব সাফল্যের মূল সুবিধাভোগী কারা? সমাজের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ সবাই কি এ থেকে লাভবান হচ্ছে? এসব প্রশ্নের পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যেহেতু পুরো অর্থনৈতিক কার্যক্রম সেখানে পরিচালনা করা হচ্ছে চূড়ান্ত প্রাইভেটাইজেশনের মাধ্যমে, ফলে এর সুফল সমাজের সবাই পায়নি বা পাচ্ছে না। স্রেফ পুঁজির স্ফীতি ও ব্যবসাই মুখ্য হয়ে উঠেছে।
যেমন- গুজরাটে কৃষিক্ষেত্রে যখন ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি হচ্ছে সেই একই সময় (২০০১-১১) প্রদেশজুড়ে কৃষিমজুরের সংখ্যা বেড়েছে ১৭ লাখ। এই কৃষিমজুররা আসলে আর কেউ নয়- সদ্য জমি হারানো খুদে চাষীর দল। পদ্ধতিগতভাবে সেখানে খুদে চাষীদের জমি নিয়ে তা তুলে দেওয়া হচ্ছে শিল্প বিনিয়োগকারীদের হাতে। যার কারণে তথাকথিত ‘ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি’র মাঝেই গ্রাম থেকে শহরে শ্রমজীবীদের অভিবাসন ব্যাপক বেড়ে গেছে।
এভাবে অন্যান্য খাতের কথাও বলা যায়। যেমন- গুজরাটে এ মুহূর্তে কর্পোরেট হাসপাতালগুলোর ব্যাপক বিনিয়োগ চলছে। বিখ্যাত সব হাসপাতালের উঁচু উঁচু অট্টালিকা উঠছে। কিন্তু গুজরাট হলো ভারতের সেই প্রদেশগুলোর একটি যেখানে জন্মকালীন শিশুমৃত্যু হার বেশ উঁচু; হাজারে ৪৪ জন (বাংলাদেশে যা ৪৭)।
একই ধরনের বৈপরীত্য দেখা যায় বিদ্যুতের ক্ষেত্রে। গুজরাটকে বলা হয় ভারতের একমাত্র বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত প্রদেশ। নিয়মিত পাশের প্রদেশগুলোতে প্রায় ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিক্রি করে। কিন্তু প্রদেশটির গ্রামে লোডশেডিং নিয়মিত এক অভিজ্ঞতা। শহর-গ্রাম লোডশেডিংয়ের হার ১:৬। ভারতের যেসব প্রদেশে বিদ্যুতের দাম সর্বাধিক তাদের মধ্যেও রয়েছে গুজরাট।
কৃষি, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ইত্যাদি সেক্টরের উপরোক্ত অভিজ্ঞতার কারণ মোদির অধীনে এই প্রদেশে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা পুরোপুরি বেসরকারি খাতের কর্তৃত্বাধীন- বিনিয়োগকারীদের মোদি যে কোন উপায়ে কেবল মুনাফা করারই সুযোগ দিয়েছেন। সেজন্যই কর্পোরেটরা মোদিকে নিয়ে উল্লসিত- এমনকি তার অতি কুৎসিত মানবাধিকার রেকর্ড সত্ত্বেও।
‘গুজরাট মডেল’-এর এই অর্থনৈতিক অভিজ্ঞতা শিক্ষা হিসেবে এই ইঙ্গিতও স্পষ্ট করেছে, সংঘ পরিবারের ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদ’-এর রাজনীতি প্রকৃতপক্ষে কাদের হাতে পুঁজির পুঞ্জিভবনকে উৎসাহ দেয়; অর্থাৎ ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ পুঁজির প্রশ্নকে কিভাবে মোকাবেলা করে; মানুষের কর্মসংস্থানের মানে তাদের কাছে কী; প্রবৃদ্ধির গল্পের আড়ালে ফ্যাসিবাদের অর্থনীতি হাজার হাজার একর কৃষি জমির অধিগ্রহণ ও লাখ লাখ মানুষের উদ্বাস্তু হওয়াকে কিভাবে গোপন করে- সর্বোপরি শ্রম অধিকারকে তারা কিভাবে দেখে?
মোদির শাসনামলে গুজরাটে অনেকবার বেশ ঘটা করে রোজগার মেলার আয়োজন করা হয়। বিশেষত ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক সপ্তাহজুড়ে সমগ্র গুজরাটে এরকম মেলা হয় ৪৮৯টি এবং মোদির প্রশাসনের তরফ থেকে দাবি করা হয়, এসব মেলায় ৬৫ হাজার তরুণের চাকরির ব্যবস্থা হয়েছে। এই প্রচারণার সত্যাসত্য জানতে তথ্যাধিকার আইনে গবেষক রোহিত প্রজাপতি ও ত্রুপতি শাহ গুজরাট প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আবেদন জানান। এ থেকে দেখা যায়, প্রশাসন মাত্র ৩২,৩৭২ জনের নাম দিতে পেরেছে। আরও দেখা যায়, যাদের ‘চাকরি’ দেয়া হয়েছে বলা হচ্ছে- তাদেরও কোন ‘এ্যাপয়নমেন্ট লেটার’ নয়- দেয়া হয়েছে ‘এমপ্লয়মেন্ট লেটার’। অথচ উপরোক্ত রোজগার মেলার আয়োজন করতে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগের খরচ হয়েছে প্রায় ২ কোটি রুপি। জেলাভিত্তিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, আহমেদাবাদ জেলায় নিয়োগ পাওয়া ৪,৩৭০ জনের সবাই ‘এমপ্লয়মেন্ট লেটার’ পেয়েছেন শিক্ষানবিস হিসেবে- যাদের বেতন কাঠামো ১৪০০-১৯০০ রুপির মধ্যে। এভাবেই রাজ্য সরকার নিজের টাকায় মেলার আয়োজন করে কর্পোরেটদের সস্তা শ্রমিক সরবরাহ করছে।
গুজরাটে বিজেপির অর্থনৈতিক দর্শনের আরেকটি মৌলিক দিক হলো পরিবেশ প্রশ্নকে অগ্রাহ্য করা। বিনিয়োগ-আগ্রহী কর্পোরেটদের এটাও খুবই পছন্দ হয়েছে। প্রদেশটিতে এ মুহূর্তে প্রায় ৩০ হাজার ফ্যাক্টরি রয়েছে- যার মধ্যে ১৫ শতাংশের অধিক (hazardous chemical factories) এমন বর্জ্য নির্গমন করে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। সারা ভারতে এইরূপ যত কারখানা রয়েছে গুজরাটেই আছে তার ৩০ ভাগ। বস্তুত এসবেরই ফসল হলো কথিত ‘গুজরাট মডেল’।
উল্লেখ্য, মোদি ব্রিগেডের তরফ থেকে নির্বাচনী প্রচারণা যুদ্ধে গুজরাটের অর্থনৈতিক কাহিনীকে প্রাধান্যে আনার চেষ্টা থাকলেও ঘুরেফিরে বারবারই সেখানে মোদির গণহত্যাকেন্দ্রিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়গুলো চলে আসছে।
যেগ ণহত্যার কোনো বিচার হয়নি
অনেকেরই হয়তো স্মৃতিতে আছে, গুজরাট গণহত্যার শুরু একটা ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডকে কেন্দ্র করে। ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোদরাহ নামক জায়গায় উল্লিখিত ট্রেন পুড়ে ৫৮ জন হিন্দু তীর্থযাত্রী মারা যায়। এ সময় কৌশলে এই মিথ্যা প্রচারণা ছড়িয়ে দেয়া হয়, মুসলমানরাই অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে। এর পরপরই সমগ্র গুজরাটজুড়ে মুসলমানদের হত্যালীলা শুরু হয়। দুই হাজারের অধিক মানুষ মারা যায় এতে। হাজার হাজার আহত হয় এবং পুরো প্রদেশজুড়ে মুসলমানদের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেয়া হয়।
গুজরাটে ট্রেনে আগুন লাগা এবং মুসলমানদের পদ্ধতিগতভাবে হত্যার সময় মোদি ছিলেন প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী। সেসময় বহু আবেদন নিবেদন সত্ত্বেও মোদি প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে হত্যালীলা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি। ঘটনার দীর্ঘ সাত বছর পর ২০০৯ সালের এপ্রিলে ভারতের সুপ্রীম কোর্ট গুজরাট হত্যালীলার তদন্তে একটি বিশেষ অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয় এবং সেই অনুসন্ধান শেষে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে মোদিকে নির্দোষ বলে অভিহিত করা হয় তদন্ত দলের পক্ষ থেকে। তবে ভারতে আজও সুপ্রিমকোর্টের উল্লিখিত তদন্তের নিরপেক্ষতা ও যথার্থতা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক চলছে।
উল্লেখ্য, সাধারণভাবে ভারতে মুসলমান সমাজে দারিদ্র্য, অশিক্ষা ইত্যাদি বহুমাত্রিক বিপন্নতা বিদ্যমান। তবে এর মধ্যে গুজরাটের মুসলমানরা ছিল তুলনামূকভাবে ভালো অবস্থায়। ফলে ভারতজুড়ে নিজ সমাজের উন্নয়নধর্মী অভ্যন্তরীণ নানান উদ্যোগে গুজরাটের মুসলমানরা অর্থনৈতিকভাবে নেতৃত্ব দিতেন। ২০০২ সালের হামলার সময় এটাও দেখা যায়, হাতে মুদ্রিত তালিকা ধরে ধরে আক্রমণকারীরা রাজ্যে মুসলমানদের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আক্রমণ করছে। এর পেছনে যে বিশেষ আর্থ-সামাজিক বিবেচনা কাজ করেছে সেটা সহজেই অনুমেয়।
এই অভিজ্ঞতা থেকেই মোদির আসন্ন বিজয়কে ঘিরে পুরো ভারতে মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীগুলোর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে এখন। আরএসএস ও বিজেপির অধীনে হিন্দুত্ববাদী শাসনে বাড়তি বঞ্চনা ও লাঞ্চনার আশঙ্কা করছেন শ্রমিক জনগোষ্ঠীও। ধর্মভিত্তিক ও কর্পোরেটমুখী রাজনীতির এই ঢেউ বহুবর্ণ ও বহুধর্মের দক্ষিণ এশিয়ার জন্য কী পরিণতি ডেকে আনছে সেটা ভেবে উদ্বিগ্ন আশপাশের দেশগুলোর মানুষও।
আলতাফ পারভেজ : লেখক ও গবেষক
পাঠকের মতামত:
- ‘‘বেস্ট ব্যাংকিং সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড’’ পেল ইসলামী ব্যাংক
- ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন করলেন ঢাকা ক্যাপিটালস টিমের সদস্যরা
- ইসলামী ব্যাংকের সিলেট জোনের এজেন্ট ব্যাংকিং সম্মেলন অনুষ্ঠিত
- চট্টগ্রামে আ.লীগ-ছাত্রলীগের ৪৬ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
- সৌদি আরবের জ্বালানি বহির্ভূত খাতে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি
- চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ঢাকায় ফিরছেন মুশতাক
- বাংলাদেশ ব্যাংকে গোপন ৩০০ লকারের সন্ধান, যে কোনো সময় অভিযান
- যুক্তরাজ্যের আদলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ার রূপরেখা দিলো বিএনপি
- ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা করা প্রয়োজন’
- পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন থাকছে না
- পাচার সম্পদ পুনরুদ্ধারে কানাডার সহযোগিতা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
- "৮ ফেব্রুয়ারি সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব প্রকাশ করা হবে"
- বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত গ্রেপ্তার
- ছয় মাসে লোকসানে ৬ কোম্পানি
- সরস্বতী পূজা আজ
- আসন্ন রমজানে দ্রব্যমূল্য বাড়বে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
- ঢাকা ছাড়ছেন রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটাররা
- যুক্তরাষ্ট্রে ৯ দিনে ৭ হাজারের বেশি অবৈধ অভিবাসী গ্রেপ্তার
- ভোটার তালিকা হালনাগাদ: বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ শেষ আজ
- "দাবির মুখে সরকার কোনো বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করবে না সরকার"
- আহতদের সুচিকিৎসা দিতে না পারা সরকারের ব্যর্থতা: হাসনাত আব্দুল্লাহ
- তিতুমীর কলেজ ‘শাটডাউন’ ঘোষণা, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
- দাবি পূরণের আশ্বাসে যমুনার সামনে থেকে চলে গেলেন আহতরা
- সংস্কারের আলোচনা দীর্ঘ হলে স্বৈরাচার সুযোগ পাবে: তারেক রহমান
- শীতেও ডেঙ্গুর প্রকোপ, এখন থেকেই নিয়ন্ত্রণের তাগিদ
- ব্যাংক লুটের টাকা পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনে
- সূচকের উত্থানে লেনদেন ৩৫৬ কোটি টাকা
- পাকিস্তানে অতর্কিত হামলায় ১৮ সেনা নিহত
- পারিশ্রমিক না পাওয়ায় হোটেল ছাড়েননি রাজশাহীর ক্রিকেটাররা
- নির্বাচকের দায়িত্ব ছাড়লেন হান্নান
- কারা অধিদপ্তরের লোগো পরিবর্তন, সরে গেলো নৌকা
- বর্ষার আগে ঢাকার ১৯ খালে প্রবাহ ফেরাতে পারব: উপদেষ্টা রিজওয়ানা
- নিবন্ধনকেন্দ্রে নিরাপত্তা দিতে আইজিপিকে ইসির নির্দেশ
- ‘আমিন, আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হলো টঙ্গীর তুরাগ তীর
- ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্ট’ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন ফখরুল-খসরু
- মহাখালীতে সড়ক অবরোধ, ‘ব্লকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি শিথিল
- দাবি পূরণে ৪টা পর্যন্ত সময় দিলেন আহতরা
- সান্তোসে ‘রাজপুত্র’ বেশে প্রত্যাবর্তন নেইমারের, পরবেন ‘রাজা’র জার্সি
- হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, জরুরি তদন্তের নির্দেশ
- যৌথবাহিনীর অভিযানে যুবদল নেতার মৃত্যু: উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন
- পুঁজিবাজারে মূলধন বেড়েছে ৪ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা
- ফিক্সিংয়ের অভিযোগ, বিজয়ের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
- যুক্তরাষ্ট্রে জনবহুল এলাকায় বিমান বিধ্বস্ত, হতাহতের শঙ্কা
- পুলিশ কর্মকর্তাদের শঙ্কা, এভাবে চললে মৃত্যু ঘটবে জুলাই বিপ্লবের
- শুরু হচ্ছে একুশে বইমেলা, উদ্বোধন করবেন ড. ইউনূস
- আজ থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ
- ঘন কুয়াশা: রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে দুর্ঘটনার কবলে ৬ গাড়ি
- রমজানে সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ
- সুপ্রিম কোর্টে সচিবালয় স্থাপনের বিকল্প নেই: প্রধান বিচারপতি
- এমবিবিএস ভর্তি: প্রমাণ নিয়ে আসেননি মুক্তিযোদ্ধা কোটার ৪৯ শিক্ষার্থী
- বিপিএলে পারিশ্রমিক ইস্যুতে তদন্ত কমিটি
- ঋণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমিটি
- বোনের বাসা থেকে সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান গ্রেপ্তার
- আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় ট্রাইব্যুনালের অসন্তোষ
- চুক্তি সই করল এআইবি পিএলসি ও দি ইবনে সিনা ট্রাস্ট
- উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা: ‘মনে হয় না আর কেউ বেঁচে আছেন’
- ২১ কোম্পানির অর্ধবার্ষিকে মুনাফা বেড়েছে
- কোচ বাটলারকে চান না সাবিনারা
- ধর্মের ভিত্তিতে নয়, দেশ পরিচালিত হবে যোগ্যতার ভিত্তিতে: জামায়াতের আমির
- সৌদিতে বাংলাদেশি বন্দিদের ক্ষমা করতে আসিফ নজরুলের অনুরোধ
- কোটা নিয়ে ৩ সিদ্ধান্ত উপদেষ্টা পরিষদের
- নির্বাচন কমিশন নির্বাহী বিভাগের আজ্ঞাবহ: বদিউল আলম মজুমদার
- আসিফ ও আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিইনি: নাহিদ
- "নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হতেই হবে, এর কোনো বিকল্প নেই"
- ছাত্ররা নিজেরাই দল গঠন করবে: ড. ইউনূস
- ওয়াশিংটনে মাঝ আকাশে হেলিকপ্টারের সঙ্গে যাত্রীবাহী বিমানের সংঘর্ষ
- এক গণমাধ্যমে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড সর্বোচ্চ ১৫ জন
- বিএসইসির শিবলী রুবাইয়াতসহ ৯ জনের পাসপোর্ট বাতিল
- আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করবে বৈষম্যবিরোধীদের লিগ্যাল সেল
- বিতর্কিত প্রবন্ধ প্রত্যাহার, ‘ছাত্র সংবাদ’ এর দুঃখ প্রকাশ
- যারাই ক্ষমতায় আসুক দেশ চালানো চ্যালেঞ্জিং হবে: তারেক রহমান
- তিন জন বাদ, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন ৭ জন
- দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে ওয়ালটনের মুনাফা ৩০৪ কোটি টাকা
- বিশেষ তহবিলের আকার ও সময় বাড়ানোর সুপারিশ ডিবিএর
- ডেঙ্গু নিয়ে ২৩ জন হাসপাতালে ভর্তি
- পাকিস্তানে অতর্কিত হামলায় ১৮ সেনা নিহত
- তিন জন বাদ, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন ৭ জন
- আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করবে বৈষম্যবিরোধীদের লিগ্যাল সেল
- ছাত্ররা নিজেরাই দল গঠন করবে: ড. ইউনূস
- কোটা নিয়ে ৩ সিদ্ধান্ত উপদেষ্টা পরিষদের
- আসিফ ও আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিইনি: নাহিদ
- ওয়াশিংটনে মাঝ আকাশে হেলিকপ্টারের সঙ্গে যাত্রীবাহী বিমানের সংঘর্ষ
- কোচ বাটলারকে চান না সাবিনারা
- যারাই ক্ষমতায় আসুক দেশ চালানো চ্যালেঞ্জিং হবে: তারেক রহমান
- সৌদিতে বাংলাদেশি বন্দিদের ক্ষমা করতে আসিফ নজরুলের অনুরোধ
- ঋণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমিটি
- নির্বাচন কমিশন নির্বাহী বিভাগের আজ্ঞাবহ: বদিউল আলম মজুমদার
- এক গণমাধ্যমে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড সর্বোচ্চ ১৫ জন
- বিপিএলে পারিশ্রমিক ইস্যুতে তদন্ত কমিটি
- ধর্মের ভিত্তিতে নয়, দেশ পরিচালিত হবে যোগ্যতার ভিত্তিতে: জামায়াতের আমির
- দাবি পূরণে ৪টা পর্যন্ত সময় দিলেন আহতরা
- বিএসইসির শিবলী রুবাইয়াতসহ ৯ জনের পাসপোর্ট বাতিল
- বিতর্কিত প্রবন্ধ প্রত্যাহার, ‘ছাত্র সংবাদ’ এর দুঃখ প্রকাশ
- উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা: ‘মনে হয় না আর কেউ বেঁচে আছেন’
- আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় ট্রাইব্যুনালের অসন্তোষ
- বোনের বাসা থেকে সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান গ্রেপ্তার
- ২১ কোম্পানির অর্ধবার্ষিকে মুনাফা বেড়েছে
- "নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হতেই হবে, এর কোনো বিকল্প নেই"
- ব্যাংক লুটের টাকা পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনে
- পুলিশ কর্মকর্তাদের শঙ্কা, এভাবে চললে মৃত্যু ঘটবে জুলাই বিপ্লবের