thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১,  ২০ জমাদিউস সানি 1446

শাহরিয়ার কবীরের বক্তব্যকে আমলে নিতে হবে

২০১৩ ডিসেম্বর ৩০ ০০:০১:৫১

রক্ত হিম হয়ে যাওয়ার মতো তথ্য দিলেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শীর্ষ নেতা শাহরিয়ার কবীর। রবিবার রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ৭১-এ ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ শীর্ষক টক শো’র আলোচনায় তিনি জানান, খালেদা জিয়া জামায়াত-শিবিরের হিট লিস্টে রয়েছেন। সমাবেশে গেলে তিনি জামায়াত-শিবিরের স্নাইপারদের গুলিতে আক্রান্ত হতে পারতেন। তিনি মারা গেলে দেশে গৃহযুদ্ধ বেধে যেত। এ ক্ষেত্রে তিনি যুক্তি দিয়েছেন জামায়াত-শিবির তো অনেক আগেই ঘোষণা দিয়েছে, তাদের নেতাদের ফাঁসি হলে দেশে গৃহযুদ্ধ বাধবে। তার ভাষায়, এ অবস্থা এড়াতেই সরকার খালেদা জিয়ার ডাকা মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচির সমাবেশ করতে এবং তাকে বাড়ি থেকে বের হতে দেয়নি।

টক শোতে দেওয়া শাহরিয়ার কবীরের এই তথ্যের আগে সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমাবেশ না করতে দেওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো যুক্তি দেখানো হয়নি। তাই বলা যায়, শাহরিয়ার কবীর নিশ্চয়ই আরও কোনো দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এ তথ্যটি পেয়ে থাকবেন।

দেশবাসী কোনো গৃহযুদ্ধ চায় না। সরকার বা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনো শক্তি চায় না গৃহযুদ্ধের দিকে দেশ এগিয়ে যায়। সে কারণে শাহরিয়ার কবীরের উল্লিখিত বক্তব্যকে যথাযথ গুরুত্বের সাথে আমলে আনা দরকার। আমরা জানি বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২১ আগস্টের জনসভায় গ্রেনেড হামলার কথা। সেই ঘটনায় দেশে কোনো গৃহযুদ্ধ না বাধলেও তা জাতির ইতিহাসে একটি গভীর ক্ষত হিসেবে বিরাজমান।

দেশে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা থাকা সত্ত্বেও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার আগে তারা তথ্য দিতে পারেনি। এমন কি পিলখানা ট্রাজেডিখ্যাত বিডিআর বিদ্রোহের মতো মারাত্মক ঘটনায়ও তারা আগাম তথ্য দিতে পারেনি। এ সব নজির থাকার কারণে শাহরিয়ার কবীরের বক্তব্যকে কোনোভাবে খাটো করে দেখা যায় না।

এখানে বলা যেতে পারে, শাহরিয়ার কবীর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির হয়ে রাজধানীর শাপলা চত্বরের ৫ মে’র ঘটনায় তদন্ত করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করেন। সেখানে নিহতের সংখ্যা নিয়ে সরকারের দেওয়া তথ্যের সাথে বিস্তর ফারাক থাকলেও সরকার কোনো প্রতিবাদ করেনি। শাহরিয়ার কবীর একজন বর্ষীয়ান সাংবাদিক, এ দেশের বুদ্ধিজীবীদের তালিকায়ও তিনি শীর্ষস্থানীয় এবং একটি বিশেষ সামাজিক আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। ফলে তাঁর উল্লিখিত বক্তব্যকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখাই শ্রেয়।

নিশ্চয়ই তিনি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তার কাছে থাকা তথ্য দিয়ে সরকারি সংস্থাকে সাহায্য করবেন। আর একজন সামাজিক আন্দোলনের নেতা ওপ্রবীণ সাংবাদিক হিসেবে এই বক্তব্যের পেছনে থাকা তথ্য-উপাত্ত জাতির সামনে হাজির করার দায় তাঁর ওপরে বর্তায়। আর তা না হলে এই বক্তব্যটি একটি রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

পাঠকের মতামত:

SMS Alert