thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউল আউয়াল 1446

রাজধানীর অধিকাংশ বিপণিবিতান বন্ধ

২০১৩ অক্টোবর ২৮ ১১:০৭:৪৩
রাজধানীর অধিকাংশ বিপণিবিতান বন্ধ

আমানউল্লাহ আমান ও মৌমিতা মাশিয়াত দিরিপোর্ট২৪ : বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালে বন্ধ রয়েছে রাজধানীর অধিকাংশ বিপণিবিতান। সোমবার ভোর থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে।

রাজধানীর জিপিও সংলগ্ন জিরোপয়েন্টে শহীদ নূর হোসেন চত্বরের পাশে খদ্দর বাজার শপিং কমপ্লেক্স, পীর ইয়ামেনি মার্কেট, স্টেডিয়াম মার্কেটসহ আশপাশের এলাকার সকল বিপণিবিতান বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে গুলিস্তান, বঙ্গবাজার, সচিবালয়, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মুখ সড়ক, পল্টন, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, বায়তুল মোকাররম এলাকায় স্বল্প সংখ্যক ফলের দোকান ও চা দোকান খোলা রয়েছে। সড়কের পাশের ফুটপাতে হকারদের ছোটছোট দোকানগুলোর অধিকাংশই বন্ধ করে রাখা হয়েছে। অথচ এসব এলাকায় অন্যান্য কর্মদিবসে ফুটপাতে হকারদের তৎপরতায় হাঁটা যায় না। সোমবার এসব এলাকার ফুটপাতে কোথাও কোথাও দু’একজন হকার দোকান খুললেও তাদের সামনে ক্রেতা নেই।

এদিকে ফার্মগেট এলাকার ফার্মভিউ সুপার মার্কেট থেকে সেজান পয়েন্টের সামনের ফুটপাতেও হকারদের দোকান বন্ধ দেখা গেছে।

গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজারের সামনে ফলের দোকানদার সাইদুল বলেন, ‘দোকানতো খুলতেই চাই নাই। কিন্তু ব্যবসা না করলে খামু কী? আইজকা অনেক দেরিতে দোকান খুলছি। কিন্তু মানুষজন নাই। সবাইতো ভয়ে আছে।’ তার পাশে বসে থাকা এক হকার বলেন, ‘দুই ঘণ্টা ধইরা বইসা রইছি। মার্কেটে কোন মানুষই আসে না।’

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের সামনে মফিজ মিয়া নামের এক চা দোকানদার বলেন, ‘হরতাল হলেই কী আর না হলেই কী, আমাদেরতো কাজ করে খেতে হয়। তাই হরতালের দিন আর এমনে দিন সবই আমাদের কাছে এক রকম।’

ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বিএনপির ডাকা টানা ৩ দিনের হরতালে হতাশ হয়ে পড়েছেন তারা। ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটের বেশির ভাগ দোকানেই ঝুলছে তালা। মার্কেটের মালিক সমিতির অফিসও বন্ধ। তবে এদের মধ্যে যে সকল মালিক সমিতির অফিস খোলা, সেই অফিসেও পিয়ন ছাড়া কেউ আসেননি।

বায়তুল মোকাররম মার্কেটের উর্মি জুয়েলার্সের মালিক নজরুল ইসলাম দিরিপোর্ট২৪কে জানান, কেনাবেচা একেবারেই নেই। দোকানপাটও প্রায় সবই বন্ধ। তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আজকে দোকান খুলেছি। কিন্তু মালপত্র বের করিনি। কেননা আমাদের দেশে কোন নিরাপত্তা নেই। হেফাজতের সময় যে ক্ষতি হয়েছিল ,এখনও তা পূরণ হয়নি।এ অবস্থায় আবারও যদি কোনো অঘটন ঘটে তবে আর সামলাতে পারবো না। সরকার যদি মার্কেট খোলা রাখার নিরাপত্তা দেয় তবেই আমরা মার্কেট খুলতে পারবো।

গুলিস্তানের পীর ইয়ামেনি মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মী রাশেদ জানান, প্রতিদিন সকাল ১০টার মধ্যে মার্কেটের সকল দোকানপাট খুলে যায়। কিন্তু হরতালে সরকার কখনও মার্কেট বন্ধ রাখার নির্দেশ না দিলেও নিরাপত্তার স্বার্থে হরতালের দিন কেউ দোকান খুলে না।

এদিকে নিউমার্কেটে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘আজকে আমার সাপ্তাহিক বন্ধ, তাই ভাবলাম প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরে নেব। কিন্তু এসে দেখি মার্কেট বন্ধ। দেশে যা শুরু হয়েছে, বুঝতে পারছি না দেশ কোন দিকে যাচ্ছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি দিনদিন খারাপই হয়ে যাচ্ছে। আমরা দেশে শান্তি চায়। এই মারামারি-হানাহানি বন্ধ হওয়া দরকার।’

এদিকে গাউসিয়া, চাঁদনীচক, ধানমন্ডি হর্কারস মার্কেটও তালাবদ্ধ। তবে কিছুকিছু জায়গায় ফুটপাতের ওপর পসরা সাজিয়ে বসেছে ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিনের মতো সোমবারও তারা শুরু করেছে হকারি। কিন্তু ক্রেতাদের উপস্থিতি একেবারেই নেই। তাই দিনশেষে বিক্রিবাট্টা কেমন হবে তা নিয়ে তারা শঙ্কিত।

মতিঝিলের শাপলা চত্বরের সামনে সোনালী ব্যাংক সংলগ্ন ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম দিরিপোর্টকে বলেন, ‘হরতাল হইছে তো কি হইছে। আমাদের তো পেটে ভাত দেওনের ব্যবস্থা করতে হইবো। তাই আসছি, কিন্তু একটা ক্রেতাও নাই। দেশে এমন অবস্থা চলতে থাকলে না খাইয়া মরণ লাগবো।’

(দিরিপোর্ট২৪ /আমান/মৌমিতা/এইচএসএম/অক্টোবর ২৮, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর