thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১,  ২৪ জমাদিউস সানি 1446

আইন লঙ্ঘন করে শেয়ার বাজেয়াপ্ত

সিটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে বিএসইসির তদন্ত কমিটি

২০১৪ জানুয়ারি ০২ ১৭:২৮:৩৯
সিটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে বিএসইসির তদন্ত কমিটি

এক বিনিয়োগকারীর বন্ধক দেওয়া প্রাইম ব্যাংকের পাঁচ লাখ শেয়ার আইন লঙ্ঘন করে বিক্রি করেছে সিটি ব্যাংক। এ বিষয়ে ডিএসইর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বন্ধকী শেয়ার লেনদেনের ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘিত হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।

গত ৩ নভেম্বর ডিএসইর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্বপন কুমার বালা’র পাঠানো চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ ডিসেম্বর পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম ও উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের সমন্বয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিএসইসি। গঠিত কমিটিকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৯৬ এর ২১ ধারা, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ১৭ক এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (সুবিধাভোগী ব্যবসা নিষিদ্ধকরণ) বিধিমালা ১৯৯৫ এর বিধি ৬ অনুসারে বিষয়টি তদন্তপূর্বক পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ১ জানুয়ারি সিটি ব্রোকারেজ হাউজকে চিঠি দেয় তদন্ত কমিটি। চিঠিতে আগামী ৬ জানুয়ারির মধ্যে আবুল কাশেমের বন্ধক রাখা প্রাইম ব্যাংকের পাঁচ লাখ উদ্যোক্তা শেয়ার সম্পর্কিত সকল তথ্য বিএসইসিতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, মেসার্স আবরার স্টিলের সত্ত্বাধিকারী আবুল কাশেম ২০১১ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের ৫ লাখ উদ্যোক্তা শেয়ার সিটি ব্যাংকের কাছে বন্ধক রেখে ১৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ঋণ নেন। কিন্তু ব্যাংক ঋণ সম্পূর্ণ পরিশোধ না করেই তিনি ২০১২ সালের ২৭ জুন মারা যান।

এ প্রেক্ষাপটে গত ৭ নভেম্বর ডিপি (ডিপোজিটরী পার্টিসিপেন্ট) একাউন্টে থাকা ওই ৫ লাখ শেয়ার সিডিবিএলের মাধ্যেমে সিটি ব্রোকারেজ লিমিটেডের ১২০৪৫০০০০০৮০৩৬৮৩ নম্বর বিওতে স্থানান্তর করা হয়। পরে প্রতিটি শেয়ার ৩৩ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি করা হয়। কিন্তু বন্ধকী শেয়ার লেনদেনের জন্য ডিএসইর লিস্টিং রেগুলেশন অনুযায়ী বিএসইসির অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন থাকলেও সিটি ব্যাংক তা উপেক্ষা করেছে।

তবে গত ১৩ নভেম্বর চিঠির মাধ্যমে বিএসইসি ও ডিএসইকে বিষয়টি অবহিত করে সিটি ব্যাংক। চিঠিতে জীবদ্দশায় আবুল কাশেমকে কয়েকবার ঋণ পরিশোধের তাগিদ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু তিনি নিয়মিত ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হন এবং পরে তিনি ঋণগ্রস্ত অবস্থায় মারা যান। পরবর্তী সময়ে আবুল কাশেমের পরিবারকে ঋণ পরিশোধের অনুরোধ জানানো হলেও পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়নি। এ প্রেক্ষাপটে বন্ধকী ৫ লাখ শেয়ার ১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয় বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ নভেম্বর ডিএসইর ডিজিএম নিজাম উদ্দিন আহমেদ সিটি ব্যাংককে উদ্যোক্তার শেয়ার ডিপি থেকে বাজেয়াপ্ত করে বিক্রি করার ক্ষেত্রে বিএসইসির অনুমতি নেওয়ার বিধান রয়েছে বলে জানান। সিটি ব্যাংক বিএসইসির অনুমতি না নেওয়ায় ডিএসইর লিস্টিং রেগুলেশন ৪২ লঙ্ঘিত হয়েছে এবং এ কারণে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা ৫৩এম অনুসারে সিটি ব্যাংককে কর দিতে হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন।

একই তারিখে সিটি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ডিএসইকে আরেকটি চিঠি দেওয়া হয়। সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে মাহমুদ সাত্তার স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) ক্রয় সংক্রান্ত আইনের (Bye-Laws) ধারা ১১.১১ অনুসারে মরহুম আবুল কাশেমের শেয়ার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সিডিবিএল বাই-লজ ও ডিএসইর লিস্টিং রেগুলেশন ৪২(২)(বি) অনুযায়ী আমাদের মনে হয়েছে, বিএসইসির অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নাই। এটা আমাদের অনিচ্ছকৃত ভুল। এজন্য আমরা ক্ষমা চাচ্ছি। আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করছি যে, ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট আইন যথাযথভাবে পরিপালন করব। আমাদের এই অনিচ্ছকৃত ভুল বলে বিচেনা করবেন। এ ভুলের জন্য আমরা সরাসরি সার্ভিস চার্জ দাখিল করব।

বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় বিএসইসির কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এইচকে/জানুয়ারি ২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর