thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১,  ১৩ জমাদিউল আউয়াল 1446

কাজী কাদের নেওয়াজ

২০১৪ জানুয়ারি ০৩ ০১:০৫:১৯
কাজী কাদের নেওয়াজ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : কবি কাজী কাদের নেওয়াজ ১৯৮৩ সালের ৩ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি মাতৃভক্তি ও শিক্ষকভক্তি নিয়ে লিখিত কবিতার জন্য বিখ্যাত।

কাজী কাদের নেওয়াজ ১৯০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ বাড়ি যশোর জেলার (বর্তমান মাগুরা) শ্রীপুরের মুজদিয়া গ্রামে। বাবা কাজী আলস্নাহ নেওয়াজ ও মা ফাতেমুন্নেছা।

১৯১৮ সালে তিনি বর্ধমান জেলার মাথরম্নন উচ্চ ইংরেজী স্কুলে ভর্তি হন। কবি কাজী নজরুল ইসলামও এক সময় ওই স্কুলের ছাত্র ছিলেন। ১৯২৩ সালে তিনি এখান থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯২৯ সালে বহরমপুর থেকে বিএ পাস করেন। পরবর্তীতে বিটি ও ইংরেজী সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি নেন।

১৯৩৩ সালে স্কুল সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে তার কর্মজীবনের সূচনা। পরে দীর্ঘদিন কলকাতা আলীয়া মাদ্রাসার ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দেশ বিভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন এবং প্রথমে ঢাকায় নবকুমার ইনস্টিটিউটে (বর্তমানে নওয়াবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়) যোগ দেন। ১৯৫১ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দিনাজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগ দেন। ১৯৬৬ সালে অবসরগ্রহণ করে গ্রামের বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন এবং শ্রীপুর মহেষচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন।

তার পরিবার সাহিত্য চর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিল। চাচা নেওয়াজ খোদা বিখ্যাত লেখক ও ফার্সি ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন। বাবা আলস্নাহ নেওয়াজ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বহুভাষী এবং মা ফাতেমুন্নেসার মধ্যেও কবি প্রতিভা লক্ষ্য করা যায়।

১৯২১ সালে শিক্ষক দ্বিজবাবুর উৎসাহে স্বদেশ প্রীতি’ নামে ‘বিকাশ’ পত্রিকায় তার প্রথম কবিতাটি প্রকাশিত হয়। ১৯২৩ সালে ছোটদের বিখ্যাত পত্রিকা মাসিক ‘শিশু সাথী’- তে ‘ঘুমপড়ানীয়া গান’ কবিতাটি ছাপা হলে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া মাতৃভক্তির পরিচয় পাওয়া যায় তার অনেক কবিতায়। শিক্ষা ও শিক্ষকদের মর্যাদার উচ্চ আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত করার দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে তিনি লিখেছেন ‘ওস্তাদের কদর’ নামক বিখ্যাত কবিতাটি। বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত আরবি, ফার্সি ভাষাতেই তার ছিল পাণ্ডিত্য।

১৯৩৪ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘মরাল’ কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়। ১৯৬০ সালে ‘নীল কুমুদী’ কাব্যগ্রন্থটি দিনাজপুর থেকে প্রকাশিত হয়। ১৯৪৭ সালে ছোটদের জন্যে লেখা ‘দাদুর বৈঠক’ ও ‘দস্যু লাল মোহন’ প্রকাশিত হয়। তার প্রকাশিত উপন্যাস ‘উতলা সন্ধ্যা’ ও ১৯৭৩ সালে ঢাকা থেকে ‘দুটি পাখি দুটি তীরে’ প্রকাশিত হয়। এ ছাড়াও তার অপ্রকাশিত কিছু পাণ্ডুলিপি রয়েছে। তার অনেক কবিতা স্কুল পর্যায়ে পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।

তার কবিতার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিলেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাকে উৎসাহিত করে শান্তি নিকেতনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। শিশু সাহিত্যে অবদানের জন্যে ১৯৬৩ সালে পেয়েছেন ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার’। পাকিস্তান সরকার কর্তৃক তিনি ‘প্রেসিডেন্ট পুরস্কার’ প্রাপ্ত হন। পরবর্তীকালে তিনি ‘মাদার বক্স’ সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন।

(দ্য রিপোর্ট/ওএস/ডব্লিউএস/এমসি/জানুয়ারি ০৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

এই দিনে এর সর্বশেষ খবর

এই দিনে - এর সব খবর