thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল 24, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ২১ শাওয়াল 1445

ইয়াহিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় দফা বৈঠক

২০১৬ মার্চ ১৭ ০০:১৫:০৯
ইয়াহিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় দফা বৈঠক

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : অসহযোগ আন্দোলনের ষষ্ঠদশ এই দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ৫২তম জন্মদিন। ভোর রাত থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সমাজের সর্বস্তরের মানুষ মিছিল করে বঙ্গবন্ধু বাসভবনে গিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

সকাল দশটায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে মিলিত হন। স্থান প্রেসিডেন্ট ভবন। কড়া সামরিক প্রহরা। আড়াই ঘণ্টা ‍রুদ্ধদ্ধার বৈঠক। কোনো সাহায্যকারী সঙ্গে ছিলেন না।

বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট ভবনের প্রধান ফটকের সামনে উপস্থিত দেশি-বিদেশি সংবাদদাতাদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, আলোচনার পরবর্তী সময়ও ঠিক হয়নি। আলোচনা এখনো চলছে। লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এর বেশি আপাতত কিছু বলার নেই।

৫২তম জন্মদিন উপলক্ষে ৩২নং বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে ঘরোয়া আলোচনায় বঙ্গবন্ধু বলেন, আমার জন্মদিন কি আর মৃত্যুদিন কি। আমার জনগণের জন্যই আমার জীবন ও মৃত্যু। আপনারা আমার জনগণের অবস্থা জানেন। অন্যের খেয়ালে যে কোনো মুহূর্তে তাদের মৃত্যু হতে পারে।

চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সাথে আলোচনাকালে মওলানা ভাসানী বলেন, পূর্ববাংলা এখন স্বাধীন। সাড়ে সাত কোটি বাঙালি এখন স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ। তিনি মুজিবের কাছে এক তারবার্তায় চট্টগ্রামের সামরিক গণহত্যা তদন্তের দাবি জানান এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের চট্টগ্রাম পাঠাতে বলেন।

ন্যাপ (ওয়ালী) নেতা খান আব্দুল ওয়ালী খান বিকেলে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন- বর্তমান শাসনতান্ত্রিক সংকট নিরসনের জন্য জাতীয় পরিষদ যোগ্য স্থান। তিনি আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ মুজিবর রহমানের ৪ দফা পূর্বশর্ত পূর্ণ সমর্থন করেন।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া পিপিপি নেতা জেড এ ভুট্টো ও প্রধান বিচারপতি হামুদুর রহমানকে ঢাকায় আসার আমন্ত্রণ জানান। সামরিক কর্তৃপক্ষ মার্চের প্রথম সপ্তাহে সামরিক বাহিনীর গুলিবর্ষণ সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গঠন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী রাইফেল চালানোর প্রশিক্ষণ শুরু করেন।

স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আগামী ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসকে প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ওই দিন সরকারি ও বেসরকারি ভবনে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হবে।

বঙ্গবন্ধু চট্টগ্রাম গণহত্যার তদন্তের জন্য ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, খোন্দকার মোশতাক আহমেদ ও আবিদুর রেজা খানকে সদস্য করে চট্টগ্রাম তদন্ত কমিশন গঠন করেন।

সামরিক আইন কর্তৃপক্ষ এক ঘোষণায় ২-৯ মার্চ বেসামরিক কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করার জন্য কোন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী তলব করা হয়েছিল তা তদন্ত করে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিশন গঠনের সংবাদ সাজানো হয়। এই তদন্ত কমিটিতে হাইকোর্ট মনোনীত বিচারপতি চেয়ারম্যান আর চারজন সদস্য হলেন একজন ব্রিগেডিয়ার, একজন সিএসপি, একজন পুলিশ কর্মকর্তা ও ইপিআর থেকে কর্নেল র‌্যাঙ্কের অফিসার। শেখ মুজিব এই কমিশনের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে বলেন, সামরিক আদেশ বলে এর গঠন এবং সামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে এর রিপোর্ট পেশের ব্যবস্থা দুটোই অত্যন্ত আপত্তিকর। বাংলাদেশের মানুষ এই জাতীয় কমিশনের সঙ্গে কোনো সহযোগিতা করবে না। মার্চের শুরুতে দেশে সেনাবাহিনী তলব প্রসঙ্গে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এমএস/এপি/এইচ/মার্চ ১৬, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর