thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মে 24, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ১৩ জিলকদ  1445

‘রোহিঙ্গাদের জন্য লাগবে সাত হাজার কোটি টাকা’

২০১৭ নভেম্বর ১১ ২১:৫৬:৫৫
‘রোহিঙ্গাদের জন্য লাগবে সাত হাজার কোটি টাকা’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য চলতি অর্থবছরের (২০১৭-১৮) সেপ্টেম্বর থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের প্রয়োজন পড়বে প্রায় সাত হাজার ১২৬ কোটি টাকা। সেই হিসেবে প্রতিজন রোহিঙ্গার পিছনে উল্লেখিত সময়ে বাংলাদেশের খরচ হবে পাঁচ হাজার ৯৩৯ টাকা করে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। রাজধানীর একাটি হোটেলে শনিবার (১১ নভেম্বর)‘রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের করণীয়’শীর্ষক সেমিনারে এই তথ্য তুলে ধরেছেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড ফাহমিদা খাতুন।

তিনি বলছেন, ‘আন্তর্জাতিক সাহায্য যেন আগামি অর্থ-বছরে অব্যাহত থাকে তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে চেষ্টা চালাতে হবে। তা না হলে নিজস্ব সম্পদ থেকে এই বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার খাদ্য-বাসস্থান নিশ্চিত করতে গেলে বাজেটের ওপর বড় চাপ পড়বে।’

সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক, সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন, ঢাকায় যুক্তরাজ্যের ডেপুটি হাইকমিশনার ডেবিট এসলে, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) শাখাওয়াত হোসেন, বিশ্ব বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি ড. সুকমল বড়ুয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ প্রমুখ। মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ড. ফাহমিদা খাতুন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে তাদের জন্য চলতি বছরের মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৬ মাসে সরকারের কমপক্ষে এক হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। যা বাজেটের দশমিক ৪ শতাংশ। আর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) দশমিক ১ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বর থেকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৬ মাসে আরও দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে।

সিপিডি ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ আগস্ট থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৮ লাখ ২১ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশ বহুমাত্রিক সমস্যায় পড়েছে। রোহিঙ্গা সংকটের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে অর্থনীতি, সমাজ ও পরিবেশের ওপর। এই তিন খাতে বাংলাদেশ নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ায় জীবনযাপনের ব্যয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সংকট তৈরি হয়েছে।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘কক্সবাজারে মোট বনভূমির পরিমাণ ২০ লাখ ৯২ হাজার ১৬ একর। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে এরইমধ্যে তিন হাজার ৫০০ একর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী অধ্যুষিত এলাকায় বায়ু দূষণ, ভূমিধসের মতো ঘটনা ঘটছে।’

এ সংকট নিরসনে সিপিডির পক্ষ থেকে কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরে ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তৃতীয় কোনও দেশ বা পক্ষ কাজ করার আগ্রহ দেখায়নি। দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে হবে। চীনকে রাজি করানো না গেলে সমাধান ব্যর্থ হতে পারে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে শিগগিরই বাংলাদেশ-মিয়ানমারের দ্বিপক্ষীয় একটি চুক্তি হতে যাচ্ছে। ২৩ নভেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার সফরে যাবেন। এ সময় এই চুক্তি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/নভেম্বর ১১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর