নজরুল-সাহিত্য : বিশ্ববোধ (১ম কিস্তি)
ড. মো. মনজুর রহমান
কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯ খ্রি.-১৯৭৬ খ্রি.) বিশ শতকের বাংলা সাহিত্যে এক বিস্ময়কর প্রতিভা। বাংলা ও বাঙালির নিবেদিত-প্রাণ নজরুল আমাদের প্রাণের কবি, অবহেলিত মানবাত্মার দুর্জয়-নিনাদ। স্বদেশের প্রতি তাঁর গভীর টান। নজরুল মনেপ্রাণে পরশাসন থেকে স্বজাতি ও স্বদেশকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। তাঁর এ স্বদেশ-অন্বেষণের অনুষঙ্গে যুক্ত হয়েছে মুক্ত সমাজ-অন্বেষণ। সমাজজীবনের ব্যাপক অভিজ্ঞতা এবং তার সঙ্গে বিপুল প্রাণপ্রবাহ যুক্ত করে লাঞ্ছিত-বঞ্চিত মানুষের প্রতিবাদী চেতনা নিয়ে নজরুল স্বদেশকেই নতুনভাবে দেখতে চেয়েছিলেন। অবশ্য এর জন্য তাঁকে নিজস্ব সৃষ্টিভূমিতে বিদ্রোহের অগ্নিবীজ ছড়াতে হয়েছিল। দেশ ও সমাজ-অন্বেষণে নজরুল কাব্য-কবিতায় যে মানবপ্রত্যয়, সাম্যবাদ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন, তার মধ্য দিয়েই কবির বিশ্ববোধ তথা বিশ্বমানস স্পষ্ট হয়েছে। এরই সঙ্গে তিনি হয়েছেন আন্তর্জাতিক এবং তাঁর সাহিত্যকর্মগুলোও যুগের গণ্ডি অতিক্রম করতে পেরেছে। এ প্রসঙ্গগুলো নজরুল-সাহিত্যে বিশ্ববোধের আলোচনায় মানদ- হিসেবে বিবেচিত হবে। আর এ বিবেচনার স্বরূপ উদ্ঘাটনই আলোচ্য প্রবন্ধে মূল উদ্দীষ্ট।
নজরুল-সাহিত্য : বিশ্ববোধ
বিশ্বসাহিত্য বলতে বিদগ্ধমহল এ বিশ্বের ক্ল্যাসিক সাহিত্যকেই মনে করেন। হোমার, বাল্মিকী, ব্যাস, শেক্সপিয়র, গ্যেটে, তলস্তয়, রবীন্দ্রনাথের রচনাকে বিশ্বসাহিত্যে শ্রেষ্ঠ অবদান বলে বিবেচনা করেন। তাঁদের মনে করার অন্যতম কারণ হলো, তাঁদের সৃষ্ট সাহিত্যকর্ম কালের অমোঘ প্রবাহ অতিক্রম করে মানবজীবনে স্বমহিমায় চিরভাস্বর। এর অন্যতম কারণ, তাতে মানবজীনের চিরন্তন রূপ প্রতিফলিত হয়েছে। হোমার বা বাল্মীকি অঙ্কিত চরিত্রের প্রত্যেকটি এক একটি প্রতীক এবং তারা মানবজীবনে এক একটি বিশিষ্ট দিকের প্রতিনিধি। হোমারের অঙ্কিত ট্রয়ের রাজকুমার দুঃসাহসী যুবক প্রায়াম বাসনা চরিতার্থের উদ্দেশে হেলেনকে জোর করে অপহরণ করায় সে মানব-মানসে ক্রিয়াশীল দুষ্প্রবৃত্তির প্রতিনিধি। রামায়ণ’র রাম মানবজীবনে অপর এক বৃত্তির প্রতিনিধি। রাম পিতৃসত্য পালনের জন্য চতুর্দশ বৎসর বনবাসক্লেশ সহ্য করেছে। সে গণমানুষের সন্তোষের জন্য পতিব্রতা সীতাকেও ত্যাগ করতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেনি। শেক্সপিয়র অঙ্কিত চরিত্রগুলোও সেরূপ প্রতীকী চরিত্র হয়েছে। হ্যামলেট আপনার চাচা কর্তৃক নিহত পিতার সংশ্রবে আসার কোনো সুযোগ পায়নি। উচ্চাকাঙ্ক্ষা দ্বারা পরিচালিত ম্যাকবেথ এক উজ্জ্বল চরিত্র। আরব্য উপন্যাসে সিন্দাবাদ নাবিকের জীবনে অর্থলিপ্সার বাসনা প্রকাশ পেয়েছে এবং তা লাভ করার জন্য সে সাত সাগর পাড়ি জমিয়েছে। আবার সে ধন অতি সহজে লাভ করার প্রতীক হিসাবে দেখা দিয়েছে আলীবাবা। গ্যেটে তাঁর বিখ্যাত মহাকাব্য ফাউস্ট-এর মধ্যে একদিকে ফাউস্ট অপরদিকে মেফিস্টোফেলিসের চিত্র অঙ্কিত করে মানবজীবনের আদর্শিক দ্বন্দ্বের সত্যই প্রচার করেছেন। লেভ তলস্তয়ের আনা কারেনিনা এক হতভাগ্য মহিলার জীবনের করুণ কাহিনি। সে তার এক প্রেমিকের দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে গর্ভবতী হয়েছে। অথচ সে অবস্থায়ও তার উদার হৃদয় স্বামীকে ক্ষমা করতে প্রস্তুত। তবে সামাজিক জীবনে তার স্থান নীচ পর্যায়ে অধিষ্ঠিত হবে ভেবে সে আত্মহত্যা করেছে। রেজারেকশন-এ তলস্তয় তার নায়িকা ক্যাটেরিনা ম্যাসলোভাকে অতিশয় পতিত জীবনের মধ্যেও মানবতার এক জ্বলন্ত প্রতীক হিসাবে চিত্রিত করেছেন। রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী’র নন্দিনী মানব-মানসের এক সার্বজনীন আকাক্সক্ষার রূপ নিয়ে বিশ্বসাহিত্যে স্থান পেয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নজরুলের একটি বক্তব্য স্মতর্ব্য বলে মনে করছি। যুগবাণী’র ‘বাঙলা সাহিত্যে মুসলমান’ নিবন্ধে নজরুলের বক্তব্য-
যার প্রাণ যত উদার, যত উন্মুক্ত, তিনি তত বড় সাহিত্যিক। কারণ সাহিত্য হইতেছে বিশ্বের, ইহা একজনের হইতে পারে না। সাহিত্যিক নিজের কথা নিজের ব্যথা দিয়া বিশ্বের কথা বলিবেন, বিশ্বের ব্যথার ছোঁয়া দিবেন। সাহিত্যিক যতই কোনো সূক্ষ্মতত্ত্বের আলোচনা করুন না কেন, তাহা দেখিয়াই যেন বিশ্বের যে কোনো লোক বলিতে পারে, ইহা তাঁহারই অন্তরের অন্তরতম কথা। [ বাঙলা সাহিত্যে মুসলমান : যুগবাণী ]
উপর্যুক্ত উদ্ধৃতি থেকে আমরা নজরুলের বিশ্ববোধের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য অনুধাবন করতে পারছি। নজরুলের বিশ্ববোধ তথা বিশ্বসাহিত্যের প্রেক্ষাপটে তাঁর ভূমিকার বিষয়টিকে আমরা তিনটি দিক থেকে দেখতে পারি। প্রথমত, নজরুলের জন্মপ্রতিবেশ, দ্বিতীয়ত, সমসাময়িক কিছু আন্তর্জাতিক ঘটনা যা নজরুলের সাহিত্য-মানস ও রচনাদির উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল এবং তৃতীয়ত, বিদেশি কবি ও সাহিত্যিকারদের প্রভাব। এই তিনটি দিকের সঠিক মেলবন্ধনে আমরা খুঁজে পাবো নজরুলের বিশ্ববোধ তথা বিশ্বমানস।
নজরুলের জন্ম হয়েছে অত্যন্ত দরিদ্র কিন্তু অভিজাত পরিবারে। পরিবারের মধ্যে ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি-চর্চা থাকলেও দারিদ্র্যের কঠোর নিষ্পেষণে তাঁকে লেটো দলে বা রুটির দোকানের চাকরি গ্রহণ করতে হয়েছে। যে সমাজে তিনি জন্ম নিয়েছিলেন, সে সমাজের মুসলিমের অবস্থান অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। বঙ্গবাসী মুসলিম সমাজ তখন ইংরেজ সরকারের অত্যাচারে অত্যন্ত দুরবস্থায় অধঃপতিত হয়। দেশের সর্বত্র বিরাজ করে অন্যায়-অত্যাচরের দূষিত প্রবাহ। ধনী কর্তৃক নির্ধনকে শোষণ রেওয়াজে পরিণত হয়। আশরাফ-আতরাফের ভেদ ধর্মের বিধান বলে গৃহীত হয়। হিন্দু অথবা ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে সতত বিবাদ-বিসংবাদ দেখা যায়। তথাকথিত পুরোহিত বা মোল্লা সমাজের লোকেরা এই বিবাদকে ধর্মীয় প্রেরণাজাত বলে প্রচার করে। সত্যিকার দেশপ্রেমিক লোকের সমাজে কোনো স্থান হয় না। বাংলায় অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের কঠোর হস্তে দমন করা হয়। এরূপ পরিবেশে জন্মগ্রহণ করে মানুষ মানবিক জীবনযাপন করতে পারে না। তার কাছে একমাত্র বিদ্রোহ ব্যতিত অন্য কোনো পথ খোলা থাকে না। এ কারণে নজরুল তাঁর কাব্যজীবনের সূচনাতেই প্রচণ্ড বিদ্রোহে গর্জন করে উঠেছিলেন।
সমকালীন কিছু আন্তর্জাতিক ঘটনা নজরুলের বিশ্ববোধের ধারণাকে প্রগাঢ় করতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছিল। নজরুল যখন সাহিত্যচর্চা শুরু করেছেন, তখন অবশ্য জাগতিক চিন্তা মুখ্যপ্রায় সবার কাছে। কেননা, ১৯১৪ সালের প্রথম মহাযুদ্ধ এবং তারপর তাবৎ পৃথিবীতে মারণাস্ত্র নিয়ে উৎকণ্ঠা। এই উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা গ্রাস করে বিশ্বের চেতনাসম্পন্ন মানুষকে। ১৯১৯ সালে ভার্সাইয়ে প্রথম মহাযুদ্ধের সন্ধিপত্র স্বাক্ষরিত হয়ে মানুষ খানিকটা স্বস্তি পায়। এর আগেই ১৯১৭ সালে সংঘটিত হয় লেনিনের নেতৃত্বে রুশবিপ্লব, ১৯১৮ সালে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বিশ্বযুদ্ধের মিত্রপক্ষের সাময়িক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীকালে তুরস্কে জাতীয়তাবাদী নেতা হিসাবে কামাল আতাতুর্কের প্রতিষ্ঠা সুনিশ্চিত হয়। মাও-সে-তুঙের নেতৃত্বে চীনবিপ্লব সংঘটিত হয়। এসব কিছুই একজন সচেতন মানুষ হিসাবে নজরুল ইসলামকে আলোড়িত করে, শিল্পী হিসাবে তো বটেই। ১৯১৭ সালে নজরুল সেনাবাহিনীতে নাম লিখিয়েছেন এবং সে সূত্রে কবি গিয়েছিলেন করাচিতে। তাঁর মনের মধ্যে বিশ্বচেতনার উন্মেষ এ সময় থেকেই।
এ সময় নজরুল পাঞ্জাবি মৌলবি সাহেবের কাছ থেকে পাঠ নিয়েছিলেন দিওয়ান-ই-হাফিজ, মসনব-ই-রুমি’র পারসি কবিতার। কয়েক বছর আগে গ্রামে নজরুল নিজে ছিলেন মাজারের খাদেম, মক্তবের শিক্ষক, মসজিদের ঈমাম। হাফিজ, খৈয়াম নজরুলকে ডাক দিলেন বিশ্বপথে। কিছুদিন পর কবি কলকাতায় ফিরে এসেও সেই পথেরই পথিক হয়ে থাকলেন। পরে এই পথে নজরুল সাক্ষাত পেলেন বহু মনীষীর। অন্যদিকে, নজরুলের জীবন ও সাহিত্য সৃষ্টিতে আরবি-ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের ব্যাপক প্রভাব ছিল। তিনি অনুবাদ করেছিলেন রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম, রুবাইয়াৎ-ই-হাফিজ, কাব্য আমপারা। নজরুলের উপর আলো এসে পড়েছিল বহু দিগন্ত থেকে। একদিকে রবীন্দ্রনাথ, নোগুচি, ইয়েট্স, পুশকিন, গোর্কি, তলস্টয়, দস্তভয়স্কি, চেকভ, যোহান, শেলি, কীটস, বোয়ার, কিপলিক, বার্নাড শ, বেনেভাঁতে, আনাতোল, এমিল জোলা, ফ্রয়েড, কার্ল মার্কস, হুইটম্যান; অন্যদিকে ইকবাল, ওমর খৈয়াম, রুমি, জামি ও হাফিজ। বিশ্বসাহিত্যের প্রায় সমস্ত বিখ্যাত লেখকদের লেখাই তিনি পাঠ করেছিলেন। এসব কাব্য পাঠের ফলেই নজরুলের মধ্যে বৃহত্তর, ব্যাপকতর ও উদারতর মানসিকতা গড়ে ওঠে। এসব কিছুই নজরুল ইসলামকে বিশ্বমানবতা শিখিয়েছিল এবং তাঁর বিশ্বদৃষ্টি খুলে দিয়েছিল। তাঁকে সমস্ত নীচতা, ক্ষুদ্রতা, স্বার্থপরতা, কুসংস্কারাচ্ছন্নতা, অসুন্দরতা, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, ধর্মীয় গোঁড়ামি, সীমাবদ্ধতা এবং জাতীয়তাবাদের ঊর্ধ্বে উঠতে সহায়তা করেছিল।
অগ্নি-বীণা, বিষের বাঁশী, সাম্যবাদী, ভাঙার গান কাব্যের প্রায় প্রতিটি কবিতায় সমকালীন চেতনার সঙ্গে সঙ্গে দেশ-কাল নিরপেক্ষ একটি সত্য-সুন্দর জীবনের আকুতি প্রকাশ পেয়েছে। অগ্নি-বীণা কাব্যের প্রথম কবিতা ‘প্রলয়োল্লাস’-এ যে চেতনা কবিকে উদ্দীপ্ত করেছে, তা বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের ক্রোধবহ্নিজাত পরাধীন বেদনা। এ কাব্যের ‘মোহররম’ কবিতায় একটি ধর্মীয় আবহ আছে, ‘কোরবনী’ কবিতাতেও তেমনি। ‘সাত-ইল-আরব’ কবিতায়ও ধর্মের প্রতি আবেগ প্রকটিত। কিন্তু ফোরাত নদীর তীরে যে ঘটনাটি ঘটেছিল, গঙ্গার তীরে সেই উদ্দীপনা যদি জাগে দেশমাতৃকার স্বাধীনতা অর্জনের জন্য কিংবা দেশ উদ্ধারের জন্য ‘শ্রেষ্ঠ পুত্রধন’ বলি দেবার আহ্বান যদি আসেই ‘কোরবানী’র আনুষ্ঠানিকতায়, তাহলে কেন সেটা স্থানিক গণ্ডি অতিক্রম করবে না। দজলা ও ফোরাত নদীর মিলনে যদি মানব-মিলনের গান শোনা যায়, তাহলে কেন উপেক্ষিত হবে সেটা। অগ্নি-বীণার ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মধ্যে আমরা যৌবনকে প্রত্যক্ষ করি। যাবতীয় দাসত্বকে কবি দুপায়ে মাড়িয়ে যান। তিনি বিধির বিধান ভেঙেছেন এবং তাঁর ‘চরণের তলে মরণের মার খেয়ে মরে ভগবান।’ অর্থাৎ কোনো প্রকার দাসত্ব-বন্ধনই তিনি স্বীকার করেন না। ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় তিনি শুধু ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ প্রাকশ করেননি; শুধু বাঙালি, ভারতবাসী বা মুসলমানের দুঃখ-দুর্দশা মোচনার্থেও বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন না, তিনি প্রতিশ্রুত হলেন নিখিলের নির্যাতিত মানুষের কাছে। নজরুল বললেন-
মহা বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত,
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না। [বিদ্রোহী : অগ্নি-বীণা]
বিশ্বভাবনা তথা বিশ্বমানবের প্রতি উৎসর্গীকৃতপ্রাণ কবির বিদ্রোহী সত্তার গভীরে নিহিত আছে। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার মধ্যে তিনি এক স্থানে লিখেছেন-‘আমি বিশ্ব-তোরণে বৈজয়ন্তী মানব-বিজয় কেতন।’ আবার কবিতার সমাপ্তিতে লিখেছেন-
আমি চির-বিদ্রোহী বীর
আমি বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির। [বিদ্রোহী : অগ্নি-বীণা]
বিশ্বের জনগণের স্বাধীনতা তথা বন্ধনদশা থেকে মুক্তির জন্য যেখানে বা যে কোনো দেশেই সংগ্রাম চলেছে, নজরুল তার সপক্ষে আত্মসমর্থন ঘোষণা করেছেন এবং নিপীড়িত জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের দুর্দশা থেকে মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন। ‘অন্তর-ন্যাশনাল-সঙ্গীত’-এ তাঁর উক্তি-
জাগো-
জাগো অনশন-বন্দী, ওঠরে যত
জগতের লাঞ্ছিত ভাগ্যহত। [ অন্তর-ন্যাশনাল-সঙ্গীত ]
নজরুল এক দিকে সহমর্মিতা, সহানুভূতি ও সমবেদনার বীণাবাদক; অন্যদিকে তিনি সত্য সুন্দর এবং সীমাহীন মানবপ্রেমের উপাসক। তিনি বন্ধনমুক্তি অন্যায় নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এবং সাম্য শন্তির পথপ্রদর্শক। নজরুল যা বলেছেন তা জগতের সব মানুষেরই প্রাণের কথা হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে তাঁর প্রধান যে এলাকা বিদ্রোহ, সেই এলাকায় আজও তিনি জগতে দুঃখী বঞ্চিত মানুষের প্রেরণাদাতা। ‘ফরিয়াদ’ কবিতায় নজরুলের উক্তি-
প্রার্থনা কর-যারা কেড়ে খায় ৩৩ কোটি মানুষের গ্রাস
যেন লেখা হয় আমার রক্ত লেখায় তাদের সর্বনাশ।
এই কবিতার মাধ্যমে কবি ব্যক্তির ফরিয়াদকে সকল বঞ্চিত মানুষের ফরিয়াদে রূপান্তরিত করে তুলতে পেরেছিলেন। কবিতাটি ৭ অশ্বিন ১৩২২ সালে প্রকাশিত। শতবর্ষ পার হয়ে গেল। কবিতাটি পড়লে এখনো মনে হয়, বঞ্চিত মানুষের আজকের হাহাকারে সঙ্গে কবিতাটি গ্রথিত। এই বঞ্চনা দেশকালের উর্ধ্বে। ইংরেজ শাসনকে প্রতিপক্ষ জেনে কবিতাটি লিখেছিলেন নজরুল। কিন্তু প্রতিপক্ষ তো শুধু ইংরেজ নয়। ইংরেজ চলে গেছে, কিন্তু সমস্যা তো আজও সমাধান হয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে উন্নয়নশীল বিশ্বের নানা দেশ থেকে ঔপনিবেশিক প্রভুরা বিদায় নিয়েছেন। তাতে একটি বাধা অপসারিত হয়েছে। কিন্তু অনেক দেশেই পুরনো প্রভুর জায়গায় নতুন প্রভুরা চলে এসেছেন। তাদের বিরুদ্ধেও চলছে বঞ্চিত মানুষের সংগ্রাম। ফলে নজরুল যখন তাঁর বিদ্রোহীভাবাপন্ন কবিতার স্বাধীন সমাজ, নতুন জীবনস্বপ্নের কথা বলেন, সেটা ইংরেজ শাসনাধীন ভারতবর্ষেই সীমাবদ্ধ থাকে না, তা শতবর্ষ পরবর্তী সমাজের জন্য প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়ায়। (চলবে)
লেখক : অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/আগস্ট ২৭,২০১৮)
পাঠকের মতামত:
- নটর ডেম কলেজে ভর্তির আবেদন শুরু ২৫শে মে
- সুমাত্রায় ভয়ঙ্কর বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭ জন
- ভারতের প্রধান কোচ হবার প্রস্তাব পেলেন গম্ভীর
- এবার মেজর লিগে খেলবেন সাকিব
- ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে
- "শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন মানে গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন"
- ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে ১৩টি দেশ
- ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস, ২ নম্বর হুশিয়ারি সংকেত
- গাজা থেকে তিন জিম্মির মরদেহ উদ্ধার
- অবশেষে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি
- মদিনায় চলতি বছরে প্রথম বাংলাদেশী হজযাত্রীর মৃত্যু
- ইআরডিএফবির আয়োজনে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
- ইসরাইলের সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে হিজবুল্লাহর ড্রোন
- রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের মুরগির দাম কমেছে
- বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র
- রাফায় হামলা বন্ধে ইসরায়েলকে নির্দেশ দিতে আইসিজের প্রতি আহবান
- বিএনপির সময় ঋণ খেলাপির তালিকা সবচেয়ে বড় ছিল: আইনমন্ত্রী
- "প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টার ফলে টেলিযোগাযোগ সেবা সবার হাতের মুঠোয়"
- বাজেট ৬ জুন দিবো ও বাস্তবায়নও করব: প্রধানমন্ত্রী
- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫
- যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছে না: স্টেট ডিপার্টমেন্ট
- "আ.লীগ সরকার তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছে"
- আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
- "যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে, তাদের মুখোশ খুলে দেওয়ার সময় এসেছে"
- বিশ্বকাপ খেলতে দেশ ছেড়েছেন সাকিব-শান্তরা
- হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরায়েল, রাফায় বাস্তুচ্যুত ৬ লাখ মানুষ
- শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আ.লীগের কর্মসূচি
- উপজেলা নির্বাচন: ৫২ জনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি
- ৪৮ ঘণ্টার তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি
- সৌদি পৌঁছেছেন ২১ হাজার ৬৩ জন হজযাত্রী
- ঢাকা ছাড়লেন ডোনাল্ড লু
- নর্থ সাউথ সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাবের আয়োজনে বৈশাখী মেলা ১৪৩১ অনুষ্ঠিত
- দেশের ৫৮ জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে তাপপ্রবাহ
- প্রস্তুতি আমার মনে হয় ভালো হয়েছে: হাথুরুসিংহে
- কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি ব্যাংক রিপোর্টারদের
- "নিজস্ব গতিতে চলতে না দিলে পুঁজিবাজারের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন সম্ভব নয়"
- নির্বাচন ইস্যু পেছনে ফেলে যুক্তরাষ্ট্র সামনের দিকে তাকাতে চায়: লু
- প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকের দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ
- বাংলাদেশ প্রসঙ্গে পশ্চিমা বিশ্ব তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেনি: মির্জা ফখরুল
- ডেঙ্গুতে দেশে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ২১ জন
- "বাংলাদেশ ব্যাংকের থলের বিড়াল বের হতে শুরু করছে"
- বিশ্বে বাংলাদেশকে এগিতে নিতেই আলোচনা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- বিমানের সাবেক এমডিসহ ১৬ কর্মকর্তার নামে চার্জশিট, অব্যাহতি ১৪
- মেঘনা ইন্স্যুরেন্সের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- মিডল্যান্ড ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- এনআরবিসি ব্যাংকের পরিচালকের শেয়ার কেনার সিদ্ধান্ত
- লাগাতার দরপতনে শেয়ারবাজার, প্রথম ঘণ্টাতেই নেই ৬৬ পয়েন্ট
- "বাংলাদেশের সাথে আস্থার সম্পর্ক আরও গভীর করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র"
- সৌদি পৌঁছেছেন ১৮ হাজার ৬৫১ জন হজযাত্রী
- "সবার জন্য গ্রহণযোগ্য করতে শ্রম আইনের সংশোধন করা হচ্ছে"
- চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে নিপুণের রিট
- গাজায় নিহতের অর্ধেকের বেশি বেসামরিক নারী ও শিশু: জাতিসংঘ
- কোহলিকে অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চান সাবেক তারকারা
- সাকিবের রেকর্ড, রিয়াদের আক্ষেপ
- আগামী ২৪ ঘণ্টায় তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
- "জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে থাকবে"
- নো হেলমেট, নো ফুয়েল: সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
- "বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে সব কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়"
- পাঁচটি ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস কোম্পানির মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
- মেট্রোরেল শুক্রবার চালানোর প্রস্তুতি
- নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ষড়যন্ত্র সফল হয়নি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- বিশ্বকাপ দল ঘোষণা, সহ-অধিনায়ক তাসকিন
- সরকার স্যাংশন বা ভিসানীতির কেয়ার করে না: কাদের
- অস্বাভাবিক শেয়ারদর বৃদ্ধির কারণ জানে না এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ
- ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৪ জন নিহত
- অপরিপক্ব লিচুতে বাজার সয়লাব
- মিরাজকে নিয়ে চমক দিতে পারে বিসিবি!
- কোচ ফাহিমকে নিয়ে সাকিবের একাকী অনুশীলন
- ঢাকার হোটেল-রেস্টুরেন্টে ডিসকাউন্ট পাবেন পুলিশ সদস্যরা
- আট জেলার ওপর দিয়ে দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে
- ঝিনাইদহ-১ আসনে উপনির্বাচন ৫ জুন
- লুর বাংলাদেশ সফর গুরুত্বপূর্ণ নয়: বিএনপি
- সৌদি পৌঁছেছেন ১৫ হাজার ৫১৫ হজযাত্রী
- ঢাকায় এসেছেন ডোনাল্ড লু
- মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের কনডেম সেল নিয়ে রায়: আপিল করবে সরকার
- কঠিন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন পুতিন
- এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী
- সরকার স্যাংশন বা ভিসানীতির কেয়ার করে না: কাদের
- বিশ্বকাপ দল ঘোষণা, সহ-অধিনায়ক তাসকিন
- ইসলামী ব্যাংকের বরিশাল জোনের কর্মকর্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত
- সাকিবের রেকর্ড, রিয়াদের আক্ষেপ
- জি এম কাদেরের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্বে ফিরতে বাঁধা নেই
- নাগরিকত্ব ত্যাগ করে অন্য কোনো দেশের নাগরিক হলে এনআইডি বাতিল
- শিক্ষায় ছেলেরা পিছিয়ে কেন, কারন খুঁজতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
- আবারও সিআইপি হলেন এম এ রাজ্জাক খান রাজ
- বিমানের সাবেক এমডিসহ ১৬ কর্মকর্তার নামে চার্জশিট, অব্যাহতি ১৪
- দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশে: মির্জা ফখরুল
- পাঁচটি ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস কোম্পানির মালিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
- সৈয়দপুরে বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালু, আটকেপড়া যাত্রীদের স্বস্তি
- আজ কুতুবদিয়া পৌঁছাবে এমভি আবদুল্লাহ
- সহযোগী অধ্যাপক হলেন ৯০ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
- ইউএস ট্রেড শো- ২০২৪ এ ইসলামী ব্যাংকের স্টল উদ্বোধন
- নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ষড়যন্ত্র সফল হয়নি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- ঝিনাইদহ-১ আসনে উপনির্বাচন ৫ জুন
- ইতালির ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহবান প্রধানমন্ত্রীর
- রাফা ছেড়ে পালিয়েছেন ৩ লাখ মানুষ: জাতিসংঘ
- কোহলিকে অধিনায়ক হিসেবে দেখতে চান সাবেক তারকারা
- পোশাক শিল্পে এখনই ৩ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা জরুরি
- ঢাকায় এসেছেন ডোনাল্ড লু
- চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফল বাতিল চেয়ে নিপুণের রিট