thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মে 24, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১,  ২ জিলকদ  1445

নির্বাচন আর কান্দালভি বিতর্ক

 পেছাল বিশ্ব ইজতেমা

২০১৮ নভেম্বর ১৭ ০০:৩৮:১৪
 পেছাল বিশ্ব ইজতেমা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের মধ্যে বিভক্তির কারণে এবার বিশ্ব ইজতেমা নির্ধারিত সময়ে হচ্ছে না। হজের পর বিশ্বের মুসলমানদের এই দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জমায়েত জানুয়ারির ১১ তারিখ থেকে শুরুর কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে যাচ্ছে, এবং নতুন তারিখও এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বিভক্তি মেটাতে বাংলাদেশের সরকার দুই পক্ষের প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি করে দিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের কারণে এবং তাবলীগ জামাতের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ব ইজতেমা পিছানো হয়েছে। খবর বিবিসির।

তাবলীগ জামাতের নেতা ভারতীয় মোহাম্মদ সাদ কান্দালভিকে নিয়ে বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতের ভেতরে দু'টি গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। এই অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই ঢাকার টঙ্গীতে এবার বিশ্ব ইজতেমা করার বিষয়টি সংকটে পড়ে। একটি গ্রুপ ১১ই জানুয়ারি থেকে ইজতেমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বৃহস্পতিবার তাবলীগ জামাতের দুই গ্রুপকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে এই সময়ে ইজতেমা না করার সিদ্ধান্ত হয়।

মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, তাবলীগ জামাতের কোন্দল মেটাতে দুই পক্ষের ছয়জন প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। এই কমিটি ভারতে গিয়ে তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে আলোচনা করে সমাধান করবে বলে মি: খান আশা প্রকাশ করেছেন।

"সবচেয়ে বড় কথা হলো, এই তাবলীগ জামাত দুই ভাগে ভাগ হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমার উদ্যোক্তাদের বেশিরভাগই এই ভাগাভাগির মধ্যে পড়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি, তাদের একসাথে করে তাবরীগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা পূর্বের ন্যায় করার জন্য। সেজন্য ছয় সদস্যের একটা টিম করা হয়েছে। এরা ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসায় যাবে, সেখানে আলেম ওলামা এবং তাবলীগের নেতাদের সাথে আলোচনা করবে এবং বিতর্কের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে সমাধানে আসবে। এরপর ঐকমত্যের ভিত্তিতে তারা ইজতেমা করবে" - বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ সাদ কান্দালভির মতবাদ নিয়ে তাবলীগ জামাতের দু'টি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের প্রভাব গত বছরের ইজতেমাতেও পড়েছিল।

মি. কান্দালভি তাবলীগ জামাতে কিছু সংস্কারের কথা বলছেন যা এই আন্দোলনে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে। তিনি বলছেন, 'ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় প্রচারণা অর্থের বিনিময়ে করা উচিত নয়। এছাড়া মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষকদের মাদ্রাসার ভেতরে নামাজ না পড়ে মসজিদে এসে নামাজ পড়া উচিত - যাতে মানুষের সাথে যোগাযোগ বাড়ে।'

কিন্তু তার বিরোধীরা বলছেন, সাদ কান্দালভি যা বলছেন তা তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা নেতাদের নির্দেশিত পন্থার বিরোধী, এবং আহলে সুন্নাত ওয়া'ল জামাতের বিশ্বাস ও আকিদার বাইরে।

গত বছর মি. কান্দালভি বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে ঢাকায় এসেছিলেন। কিন্তু তাঁর বিরোধী পক্ষের প্রতিবাদের মুখে তিনি ঢাকায় তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় কাকরাইল মসজিদ অবস্থান করে সেখান থেকেই দিল্লী ফেরত যান।

তার পক্ষের অংশ ১১ই জানুয়ারি থেকে টঙ্গীতে ইজতেমার তারিখ ঠিক করেছিল। আর বিরোধী অংশ ১৮ই জানুয়ারি থেকে সময় নির্ধারণ করেছিল।

মোহাম্মদ সাদ কান্দালভির বিরোধী অংশের ওমর ফারুক বলছেন, ১৮ই জানুয়ারি থেকে ইজতেমা করার প্রস্তুতি তারা নিয়ে রেখেছেন। মোহাম্মদ সাদ কান্দালভির পক্ষের অংশের নেতারা বলেছেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে তারা ইজতেমার তারিখ ঠিক করার চেষ্টা করবেন। তবে ৩০ শে ডিসেম্বর যে জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে, সেটিও ইজতেমা পিছানোর অন্যতম কারণ বলে উল্লেখ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেছেন, "ইজতেমা স্থগিত করা হয়নি। সময়টা পিছানো হয়েছে। নির্বাচনে ছয় লাখ নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করবে।ফলে এই সময়ে নির্বাচন কমিশন নিরাপত্তা বাহিনীর অন্য কোন কাজের জন্য আমাদের ক্লিয়ারেন্স দিতে পারবে না। ফলে কমিশন ক্লিয়ারেন্স দিলে এবং সকলের ঐকমত্যে ভিত্তিতে ইজতেমা করা হবে।"

মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, এখন দু'পক্ষ সমঝোতার ভিত্তিতে ইজতেমার সময় নির্ধারণ করবে। তবে তাবরীগ জামাতের দুই পক্ষই জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে থেকে ইজতেমা শুরু করতে চায়।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/নভেম্বর ১৭,২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর