thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২২ জমাদিউল আউয়াল 1446

সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ২ প্রকল্প একনেকে উঠছে রবিবার

২০১৪ জানুয়ারি ১৮ ১৬:৫৯:০০
সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ২ প্রকল্প একনেকে উঠছে রবিবার

জোসনা জামান, দ্য রিপোর্ট : অবশেষে একনেকে উঠছে ৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকার বিশ্বব্যাংকের দুই আলোচিত প্রকল্প। প্রকল্প দু’টি হচ্ছে হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট (এইচইকিউইপি) ও মিউনিসিপ্যালগভার্ন্যান্স এ্যান্ড সার্ভিসেস।

জাতীয় নির্বাচনের কারণে একনেক বন্ধ থাকায় এ প্রকল্প দু’টির সহজ শর্তের এই ঋণ কিছুটা ঝুঁকির মুখে পড়ে। রবিবার এই সরকারের প্রথম একনেক বৈঠকে প্রকল্প অনুমোদনের মধ্যদিয়ে এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিকল্পনা সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম। তা ছাড়া পরিকল্পনা বিভাগের একনেক অধিশাখার উপ-প্রধান ইয়াসমিন পারভীন স্বাক্ষরিত নোটিসে এ প্রকল্প দু’টি অর্ন্তভুক্ত রয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, মিউনিসিপ্যাল গভার্ন্যান্স এ্যান্ড সার্ভিসেস নামের প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৪৭০ কোটি ৯৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে ১ হাজার ৯৫৩ কোটি ৬৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, বাকি ৫১৭ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।

এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব আরাস্তু খান বলেন, বর্তমান এটি বিশ্বব্যাংকের বোর্ডে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এরপরই সরকারের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর হবে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহাবুব জানান, বিশ্বব্যাংকের বোর্ড সভার কার্য তালিকায় এ প্রকল্পটি রয়েছে। শিগগিরই অনুমোদন দেবে বিশ্বব্যাংক বোর্ড।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্র জানায়, এর আগে বিশ্বব্যাংক শহর এলাকার মৌলিক নাগরিক সুবিধা প্রদান ও পৌর প্রতিষ্ঠানের দক্ষতাবৃদ্ধির জন্য মিউনিসিপ্যাল সার্ভিসেস প্রকল্পের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করেছিল। যা ২০১২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হয়েছে। এ প্রকল্পে রাজশাহী ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন এবং ১৭টি পৌরসভা অর্ন্তভুক্ত ছিল। পাশাপাশি প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় ৪টি বন্যা পরবর্তী পুর্নবাসনের আওতায় ১৫০টি পৌরসভায় সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল। এ ছাড়া দেশব্যাপী সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাগুলোর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এলজিইডিতে মিউনিসিপ্যাল সাপোর্ট ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল। এ সময় বিএমডিএফ নামে একটি ননব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়, যা স্থানীয় পর্যায়ে পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনগুলোকে অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ঋণ দিয়ে সাহায্য করছে। ওই প্রকল্পের সফলতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আবারও একটি প্রকল্প নেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হলে বিশ্বব্যাংক এতে সাড়া দেয়। পরবর্তীকালে মিউনিসিপ্যালগভার্ন্যান্স সার্ভিসেস প্রকল্পে অর্থায়নের সম্মতি দিয়েছে।

অন্যদিকে, এডুকেশন কোয়ালিটি এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট (এইচইকিউইপি) নামের এ প্রকল্পটিতে শুরু থেকেই বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করে আসছে। এটির সফল বাস্তবায়নের জন্য অতিরিক্ত প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা (১২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নেগোসিয়েশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

সহজ শর্তের এ ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ৪০ বছর। এক্ষেত্রে বার্ষিক সার্ভিস চার্জ শতকরা শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ এবং কমিটমেন্ট ফি শতকরা দশমিক পাঁচ শূন্য শতাংশ।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় মূল প্রকল্পটি মোট ৬৮১ কোটি ৪ লাখ টাকা (এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৮২ কোটি ৫৬ লাখ এবং বিশ্বব্যাংকের ৫৯৮ কোটি ৪৮ লাখ) ব্যয় ধরা হয়েছিল। বাস্তবায়নের সময় ছিল ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

প্রকল্পটি ২০০৮ সালের ২৩ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রথম অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর জনবলের সংখ্যা পরিবর্তন ও কয়েকটি নতুন অঙ্গ যোগ হওয়ায় ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে প্রকল্পটি প্রথম দফায় সংশোধন করা হয়। এ প্রস্তাব ২০১১ সালের ৫ জানুয়ারি একনেকে অনুমোদন লাভ করে। পরবর্তীকালে ডলার বিনিময় হারের পরিবর্তনের কারণে প্রকল্প ব্যয় ও বাস্তবায়ন মেয়াদ বৃদ্ধি করে এটির দ্বিতীয় সংশোধনী করা হয়। এ সময় ব্যয় বেড়ে ৭৫২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা করা হয় এবং মেয়াদ ২ বছর বাড়ানো হয়। চলতি বছরের ৭ মে এটির দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব একনেকে অনুমোদন লাভ করে। এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ঋণ ছিল ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। বর্তমানে বিশ্বব্যাংক ১২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার অর্থায়নে আগ্রহ দেখায় প্রকল্পটির তৃতীয় সংশোধনীর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটির ব্যয় বাড়িয়ে মোট ২ হাজার ৬৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা এবং মেয়াদ ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ধরে তৃতীয় সংশোধনী প্রস্তাব করা হয় পরিকল্পনা কমিশনে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একনেকে উপস্থাপনের যাবতীয় প্রস্তুতিও সম্পন্ন করে পরিকল্পনা কমিশন।

(দ্য রিপোর্ট/জেজে/এসবি/সা/জানুয়ারি ১৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর

অর্থ ও বাণিজ্য - এর সব খবর