thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউস সানি 1446

এ বছরেই বাণিজ্যিকভাবে মহাকাশ ভ্রমণ

২০১৪ জানুয়ারি ১৮ ২১:৩৮:২০
এ বছরেই বাণিজ্যিকভাবে মহাকাশ ভ্রমণ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : আপনার ব্যাকপ্যাক তৈরি। কাঁধে ঝুলিয়ে নেওয়ার অপেক্ষা। পকেটে টিকেট আর লঞ্চপ্যাডে আপনার অপেক্ষায় আছে রকেট শিপ। এটা কিন্তু কল্পবিজ্ঞান মুভির কোনো দৃশ্য নয়। সে দৃশ্য অনেক আগে পুরনো হয়ে গেছে। বরং মন দিয়ে শুনুন- অচিরেই আসছে বাণিজ্যিক মহাকাশ ভ্রমণ। বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলোর মতে, সেটা হতে যাচ্ছে ২০১৪ সালেই।

যদিও এই নিয়ে জল্পনা-কল্পনা আজকের নয়। এই তো জানুয়ারির ১০ তারিখে ভার্জিন গ্যালাকটিক কোম্পানির সুপারসনিক স্পেসশিপ টু তৃতীয়বারের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করল। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই বছরেই বাণিজ্যিকভাবে ভ্রমণ চালু হবে।

কিন্তু নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী নিলস বোরের কথা মাথায় রাখলে বিষয়টি অনিশ্চিতই। তিনি একবার বলেছিলেন, ‘অনুমান করা খুবই কঠিন কাজ। বিশেষ করে এটি যদি হয় ভবিষ্যত নিয়ে।’

বাণিজ্যিকভাবে মহাকাশ ভ্রমণের পরিকল্পনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হল ভার্জিন গ্যালাকটিক। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি তাদের স্পেসশিপটু-র মাধ্যমে সাবঅরবিটাল স্পেসে ভ্রমণ ইচ্ছুক ৬ শ’র বেশি ব্যক্তিকে পেয়ে গেছে। এর প্রতিটি সিটের জন্য ভাড়া হিসেবে গুণতে হবে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

প্রতিষ্ঠানটির সিইও জর্জ হোয়াইটসাইড বলেন, আমরা ২০১৪ সালে মহাশূন্যে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি এবং এটি বাণিজ্যিকভাবেই চালু হবে। আমরা মনে করি এটি মানুষের সঙ্গে মহাশূন্যের সম্পর্কে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে।

তিনি এ জন্য সরকারের সাহায্য চেয়ে জানান, এটি শুধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, সঙ্গে সঙ্গে সাবঅরবিটাল স্পেসফ্লাইট সেক্টরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।

এদিকে নিউ মেক্সিকোতে মহাকাশযানের জন্য পৃথিবীর প্রথম বাণিজ্যিক বন্দর চালু করা হয়েছে। এর নাম রাখা হয়েছে স্পেসপোর্ট আমেরিকা। এখানেই ভার্জিন গ্যালাকটিকের প্রধান সদর।

অন্যদিকে আরেকটি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স তাদের কাজ গুছিয়ে নিয়ে এসেছে। তাদের ফ্যালকন নাইনআর (এফনাইনআর) পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেট বানানো হয়েছে ভবিষ্যতের মহাকাশ ভ্রমণের পরিকল্পনাকে সামনে রেখে। গত বছর তারা স্পেসপোর্টের সঙ্গে তিন বছর মেয়াদি লিজের চুক্তি করেছে।

নিউ মেক্সিকো স্পেসপোর্ট অথোরিটি (এনএমএসএ)-র নিবার্হী পরিচালক ক্রিস্টাইন অ্যান্ডাসন নিশ্চিত করেন, তারা ভার্জিন গ্যালাকটিক ও স্পেসএক্সের সঙ্গে কাজ করতে তৈরি আছেন। তারা সময়মতো ২০টি উড্ডয়নের জন্য প্রস্তুত।

নতুন এই বাণিজ্য নিয়ে এর সঙ্গে যুক্ত সবাই খুবই আশাবাদী। স্পেস এক্সেস সোসাইটির (এসএএস) প্রধান হেনরি ভান্ডারবিল্ট একে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ উল্লেখ করে বলেন, ‘আশাবাদ হলো এই শিল্পের সবচেয়ে বড় জ্বালানি। অন্যথা এটি শিল্প হিসেবে দাঁড়াবে না।’ এসএএস বাণিজ্যিক মহাকাশ ভ্রমণের প্রয়োগযোগ্যতা ও খরচ কমানো নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি মনে করেন, ২৫ বছর ব্যবহার উপযোগী মহাকাশযান পাওয়া গেলে খরচ অনেক কম পড়বে।

সম্প্রতি পুনরায় ব্যবহারযোগ্য মনুষ্যবহনকারী মহাকাশ যান ফ্যালকন নাইনআরের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন করেছে স্পেসএক্স। আর ভার্জিন গ্যালাকটিকের স্পেসশিপটু-র কথা তো আগেই বলা হয়েছে। এ ছাড়া আরও কিছু প্রতিষ্ঠান এই শিল্পে এগিয়ে আসছে।

অনলাইন ম্যাগাজিন ‘দ্য স্পেস রিভিউ’-র সম্পাদক জেফ ফাউস্ট মনে করেন, মহাশূন্য পর্যটনের জন্য ২০১৪ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। যদিও এখনও অনেকগুলো সমস্যা রয়ে গেছে। অচিরে এসব সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যাবে।

দেখা যাক সকলের আশাবাদ শেষ পর্যন্ত একটি কল্পনাকে সত্যি করতে পারে কিনা।

(দ্য রিপোর্ট/ডব্লিউএস/এইচএসএম/জানুয়ারি ১৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

ফিচার এর সর্বশেষ খবর

ফিচার - এর সব খবর