জিন্নাহর সঙ্গে এক ষোড়শীর অজানা প্রেমকাহিনী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : মুম্বাইয়ের সবথেকে বড় ধনীদের মধ্যে একজন স্যার দিনশা পেটিট সকালের জলখাবার খেতে বসেছিলেন। খাবার টেবিলে বসেই হাতে তুলে নিয়েছিলেন নিজের প্রিয় খবরের কাগজ 'বম্বে ক্রনিক্যাল'।
খবরের কাগজে আটের পাতায় পৌঁছে একটা খবরে চোখ যেতেই কাগজটা তাঁর হাত থেকে পড়ে গিয়েছিল।
তারিখটা ছিল ২০শে এপ্রিল, ১৯১৮।
সংবাদটা ছিল স্যার দিনশার কন্যা লেডি রতিকে আগের দিন সন্ধ্যায় বিয়ে করেছেন মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
লেডি রতির পুরো নাম ছিল রতনবাই পেটিট।
ঘটনার শুরুটা হয়েছিল আরও বছর দুয়েক আগে।
স্যার দিনশা নিজের বন্ধু আর ব্যারিস্টার মুহম্মদ আলী জিন্নাহকে দার্জিলিংয়ে বেড়াতে আসার জন্য নিমন্ত্রণ করেছিলেন।
সেখানে দিনশার ১৬ বছরের কন্যা লেডি রতিও ছিলেন। সেই সময়ের মুম্বাইয়ে মিস রতির সৌন্দর্য রীতিমতো চর্চার বিষয় ছিল। আর মি: জিন্নাহ তখন ভারতীয় রাজনীতির শিখরের খুব কাছাকাছি পৌঁছেও গিয়েছিলেন।
মি: জিন্নাহর বয়স তখন প্রায় ৪০।
কিন্তু দার্জিলিংয়ের বরফে ঢাকা পাহাড় চূড়া আর নৈ:শব্দ এমনই যাদু দেখালো যে লেডি রতি ও মি: জিন্নাহ একে অন্যের প্রেমে পড়ে গেলেন।
দার্জিলিং ভ্রমণের সময়েই মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ স্যার দিনশা পেটিটের কাছে তাঁর কন্যার পাণি প্রার্থনা করেন, প্রস্তাব দেন তাঁর মেয়েকে বিয়ে করার।
'মিস্টার এন্ড মিসেস জিন্নাহ - দা ম্যারেজ দ্যাট শুক ইন্ডিয়া' [মি: ও মিসেস জিন্নাহ - যে বিবাহ ভারত কাঁপিয়ে দিয়েছিল] বইটির লেখিকা শীলা রেড্ডির কথায়, "দার্জিলিংয়েই একদিন নৈশাহারের সময়ে মি: জিন্নাহ প্রশ্ন করেছিলেন দুই ধর্মের মধ্যে বিবাহ নিয়ে স্যার দিনশার কী মতামত।"
সঙ্গে সঙ্গেই মিস রতি'র বাবা উত্তর দিয়েছিলেন যে দুই ধর্মের মধ্যে বিবাহসূত্রে মেলবন্ধন হলে জাতীয় ঐক্য দৃঢ় করতে সুবিধাই হবে।
এর থেকে পছন্দের উত্তর স্বয়ং মুহাম্মদ আলী জিন্নাহও বোধহয় দিতে পারতেন না।
তাই মুহুর্তের মধ্যে মি: জিন্নাহ ফের মুখ খুললেন, স্যার দিনশাকে জানালেন যে তিনি তাঁর মেয়েকে বিয়ে করতে চান।
তবে এই প্রস্তাবে সাংঘাতিক উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন স্যার দিনশা। উত্তেজনা এতটাই ছিল যে অতিথিকে সেই মুহুর্তে নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন তিনি।
মি: জিন্নাহ অনেক চেষ্টা করেও স্যার দিনশার মত বদলাতে পারেননি।
দুই ধর্মের মধ্যে বিবাহ বন্ধন হলে যে বন্ধুত্ব আর ঐক্য দৃঢ় হবে, স্যার দিনশার ওই তত্ত্ব প্রথম পরীক্ষাতেই ব্যর্থ হয়ে গেল।
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে কথা বলেননি স্যার দিনশা। আর মেয়ে লেডি রতির ওপরেও নির্দেশ জারি হলো- যতদিন তিনি দিনশার বাড়িতে আছেন, ততদিন জিন্নাহর সঙ্গে কোনোভাবে দেখা করতে পারবেন না।
সেখানেই শেষ নয়। কোর্ট থেকেও আদেশ বের করালেন স্যার দিনশা যেন লেডি রতি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মি: জিন্নাহ যাতে তার মেয়ের সঙ্গে দেখা না করতে পারেন।
এত কিছু করেও রতি আর জিন্নাহর লুকিয়ে দেখা করা বা একে অন্যকে চিঠি লেখা থামাতে পারেননি স্যার দিনশা পেটিট।
শীলা রেড্ডি তাঁর বইয়ে বলছেন, "একবার রতিকে একটি চিঠি পড়তে দেখে ফেলেন দিনশা। চিৎকার করে ওঠেন তিনি, এটা নিশ্চয়ই জিন্নাহর চিঠি। রতিকে ধরার জন্য খাবার টেবিলের চারদিকে দৌড়াতে থাকেন স্যার দিনশা, যাতে হাতেনাতে ধরে ফেলা যায় জিন্নাহর চিঠিটা। কিন্তু মেয়েকে ধরতে পারেননি তিনি।"
স্যার দিনশা অসম্ভব জেদি ছিলেন, কিন্তু অসমবয়সী এই প্রেমিক যুগলের জেদ যে আরও বেশী, সেটা দিনে দিনে বেশ বুঝা যেতে লাগল।
তবে দুই পক্ষই কিছুটা মাথা ঠান্ডা রেখে চুপচাপ রতির ১৮ বছর বয়স পার হওয়া অবধি অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলো।
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর আরেক জীবনীকার অধ্যাপক শারিফ আল মুজাহিদ বলছেন, "১৯১৮ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি লেডি রতি ১৮-তে পা দিলেন। আর সেদিনই একটা ছাতা আর এক জোড়া পোষাক নিয়ে পিতৃগৃহ ত্যাগ করলেন তিনি।"
রতিকে জামিয়া মসজিদে নিয়ে গেলেন জিন্নাহ। ইসলাম ধর্মান্তরিত করে পরের দিন, ১৮ই এপ্রিল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ আর লেডি রতির নিকাহ সম্পন্ন হলো।
মিস রতি ও মি: জিন্নাহ-কে নিয়ে একটি বইয়ের লেখক খওয়াজা রাজি হায়দার বলছেন, "জিন্নাহ তখন ইম্পিরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করছেন। যদি তিনি সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী বিয়ে করতেন, তাহলে সম্ভবত তাঁকে কাউন্সিল থেকে পদত্যাগ করতে হতো। সেজন্যই তিনি ইসলামী মতে বিয়ে করেছিলেন আর রতিও রাজি হয়েছিলেন এতে।"
নিকাহনামায় ১০০১ টাকা মোহরের উল্লেখ ছিল, কিন্তু জিন্নাহ রতিকে উপহার দিলেন এক লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকা। সেসময়ে সেটা বিশাল অঙ্কের টাকা।
২৪ বছরের ছোট একটি মেয়ের সঙ্গে জিন্নাহর বিবাহ সেই সময়ে ভারতীয় সমাজের এক নম্বর গসিপে পরিণত হয়েছিল। সামাজিক আলোড়নও ফেলেছিল সেই ঘটনা।
জওহরলাল নেহরুর বোন, বিজয়লক্ষী পন্ডিত তাঁর আত্মকথা, 'দা স্কোপ অফ হ্যাপিনেস' বইতে লিখছেন, "পার্শি সম্প্রদায়ের বিরাট ধনী ব্যক্তি স্যার দিনশার মেয়ের সাথে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ'র বিয়ের ঘটনা গোটা দেশেই আন্দোলিত হয়েছিল।"
"আমি আর রতি মোটামুটিভাবে একই বয়সী। কিন্তু আমাদের দুজনের বড় হয়ে ওঠা ভিন্ন ঘরানায়। জিন্নাহ তখনকার নামী উকিল আর উঠতি নেতা। এসবকিছুই হয়তো রতির ভাল লেগে গিয়েছিল। সম্ভবত সেই জন্যই পার্শি সম্প্রদায় আর নিজের বাবার প্রবল বিরোধিতা স্বত্ত্বেও জিন্নাহকে তিনি বিয়ে করেছিলেন।"
সরোজিনী নাইডুও ড: সৈয়দ মাহমুদকে পাঠানো একটি চিঠিতে জিন্নাহর বিয়ে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লিখেছিলেন, "শেষ পর্যন্ত জিন্নাহ নিজের বাসনার নীল গোলাপটা তাহলে তুলেই নিলো। আমার মনে হয় মেয়েটি যে কত বড় আত্মত্যাগ করেছে, তা বোধহয় সে কল্পনাও করতে পারছে না। কিন্তু জিন্নাহর এটা কৃতিত্ব, সে রতিকে খুবই ভালবাসে। আত্মকেন্দ্রিক আর চাপা স্বভাবের জিন্নাহর এটা একটা মানবিক চেহারা।"
খওয়াজা রাজি হায়দার বলছেন জিন্নাহর যারা প্রশংসা করে তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সরোজিনী নাইডু। ১৯১৬ সালের কংগ্রেস অধিবেশন চলাকালীন তিনি জিন্নাহকে নিয়ে একটি কবিতাও লিখেছিলেন।
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর আরেক জীবনীকার হেক্টর বোলিথো তাঁর বইতে এক বৃদ্ধা পার্শি মহিলার কথা উল্লেখ করেছেন, যাঁর ধারণা ছিল যে সরোজিনী নাইডুরও জিন্নাহর প্রতি দুর্বলতা ছিল। কিন্তু জিন্নাহ সেটাকে পাত্তাই দেননি। বরং কিছুটা শৈতল্যই দেখিয়েছিলেন সরোজিনীর প্রতি।
যদিও সরোজিনী নাইডু তৎকালীন বম্বের নাইটিঙ্গেল বলেই মনে করা হতো, দারুণ সুরেলা গলা ছিল তাঁর। কিন্তু সেই সুরেলা গলা জিন্নাহর মনে কোনো গান ধরাতে পারেনি।
তবে শীলা রেড্ডি সরাসরিই বলেছেন যে সরোজিনী জিন্নাহর প্রেমে পড়েননি, কিন্তু উনি জিন্নাহকে খুবই শ্রদ্ধা করতেন।
মি: জিন্নাহর আরেক জীবনী লেখক আজিজ বেগ অবশ্য নিজের বইতে লেডি রতি আর সরোজিনী নাইডু - এই দুজনেরই জিন্নাহর প্রতি প্রেম নিয়ে একটা আলাদা পরিচ্ছেদই লিখেছেন। নাম 'টু উইনসাম উইমেন'।
আজিজ বেগ একটি ফরাসী প্রবাদ উল্লেখ করে লিখেছেন, "একজন পুরুষের জন্যই দুই নারী একে অন্যকে অপছন্দ করতে শুরু করেন। কিন্তু সরোজিনীর মনে রতির প্রতি কোনোরকম ঈর্ষা দেখা যেত না। বাস্তব এটাই যে জিন্নাহ আর রতির বিয়েতে তিনি সাহায্যও করেছিলেন।"
১৯১৮সালের সেই বসন্তে জিন্নাহ আর রতির উচ্ছল, খুশীতে ভরপুর চেহারা দেখেই মনে হতো যে এরা একে অন্যের জন্যই যেন তৈরি হয়েছেন, হিন্দিতে যাকে বলে 'এক দুসরে কে লিয়ে হি বনে'!
রতির অপূর্ব সুন্দর শরীরে ঝলমল করতো নীল বা গোলাপি রঙের পোষাক, কখনও তাতে থাকতো সোনালী কারুকাজ।
রূপা আর মার্বেল পাথরের তৈরি সিগারেট হোল্ডারে গোঁজা বিদেশী সিগারেটের ধোঁয়া যখন ছাড়তেন রতি, তখন তাঁর ব্যক্তিত্ব আলাদা মাত্রা পেত।
তাঁর চলাফেরা, আদবকায়দা তো চোখে পড়ার মতোই ছিল, কিন্তু চারপাশের মানুষের কাছে সবথেকে আকর্ষণীয় হয়ে উঠত তাঁর হাসি।
খওয়াজা রাজি হায়দার লিখেছেন, "মেহমুদাবাদের রাজা আমীর আহমদ খাঁয়ের বয়স তখন সাড়ে চার বছরের মতো হবে। যখন জিন্নাহ আর রতি মধুচন্দ্রিমা করতে লখনৌতে খাঁ সাহেবের বাবার প্রাসাদে গিয়েছিলেন।
রতির পড়নে ছিল সাদা শাড়ি, তাতে সোনালী আর কালো রঙের পাড়। যেন ঠিক একটা পরীর মতো লাগছিল তাকে। রাজা আমির খাঁ তারপরে রতিকে দেখেন ১৯২৩ সালে, জিন্নাহ আর রতি সেসময়ে দিল্লির মেন্ডেস হোটেলে ছিলেন।
খেলনা কেনার জন্য আমির খাঁকে পাঁচশো টাকা দিয়েছিলেন তাঁরা।"
রতি আর জিন্নাহর বন্ধু কাঞ্জি দ্বারকা দাসও তাঁর বইতে লিখেছেন, "তাঁর দিক থেকে চোখ ফেরানো যেত না। যতক্ষণ না তিনি আমার নজর দেওয়াটা ধরে ফেলছেন, ততক্ষণ সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতাম।"
খওয়াজা রাজি হায়দার লেডি রতি ও মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর ব্যাপারে একটা মজাদার ঘটনা লিখে গেছেন।
"একবার বম্বের গর্ভনর উইলিংডন জিন্নাহ দম্পতিকে খেতে ডেকেছেন। রতি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন একটা লো-কাট পোষাক পড়ে। খাবার টেবিলে যখন সবাই বসেছেন, তখন লেডি উইলিংডন নিজের সহচরকে বলেন যে রতি জিন্নাহকে একটা শাল এনে দিতে, সম্ভবত তাঁর শীত করছে।"
"এটা শুনেই মি: জিন্নাহ উঠে দাঁড়িয়ে বলেন যদি আমার স্ত্রীর শীত লাগে তাহলে তিনি নিজেই শাল চেয়ে নেবেন।"
স্ত্রীকে নিয়ে ডাইনিং হল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন জিন্নাহ। উইলিংডন গর্ভনর থাকাকালীন আর গর্ভনমেন্ট হাউসে যাননি তিনি।
রতির কথাবার্তা বেশ চাঁছাছোলা ছিল, স্পষ্টবাদী ছিলেন তিনি।
শীলা রেড্ডি লিখেছেন, "১৯১৮ সালে লর্ড চেমসফোর্ড দুজনকে সিমলার ভাইসরয় লজে খেতে ডেকেছেন। হাতজোড় করে ভারতীয় কায়দায় ভাইসরয়কে অভিবাদন জানিয়েছিলেন রতি। ভোজনের শেষে চেমসফোর্ড রতিকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে তিনি যদি চান যে স্বামীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আরও ফুলে ফেঁপে উঠুক, তাহলে সেরকমই করা উচিত যেমনটা রোমে থাকলে রোমের বাসিন্দারা করে থাকেন।"
"রতি সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দিয়েছিলেন, 'এক্সেলেন্সি, আমি তো ঠিক সেটাই করলাম, যেটা আপনি বলছেন! ভারতে আছি, তাই ভারতীয় কায়দায় আপনাকে অভিবাদন জানালাম'!"
আরেকটি মজাদার ঘটনা উল্লেখ করেছেন রাজি হায়দার।
কোনও এক ভোজসভায় ভাইসরয় লর্ড রিডিংয়ের পাশে বসেছিলেন লেডি রতি।
জার্মানির কথা উঠেছিল। লর্ড রিডিং বলছিলেন যে তিনি জার্মানি যেতে চান, কিন্তু যুদ্ধের পরে জার্মানরা ব্রিটেনের লোকদের পছন্দ করবে না, তাই সেখানে যাওয়া যাবে না।
রতি মুখের ওপরেই বলে দিয়েছিলেন, "তো আপনি ভারতে কী করতে এসেছেন?"
ইঙ্গিতটা স্পষ্ট - ভারতীয়রাওতো আপনাদের পছন্দ করে না, তাহলে এদেশে কেন এসেছেন?
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর ব্যস্ততা আর স্ত্রীর সঙ্গে বয়সের ফারাক জিন্নাহ আর রতির মধ্যে ধীরে ধীরে কিছুটা দূরত্ব তৈরি করে দিল। তখন অল্পবয়সী স্ত্রী আর দুধের শিশুকন্যার জন্য দেওয়ার মতো সময় তাঁর হাতে বিশেষ ছিল না।
জিন্নাহর একসময়কার সচিব এম সি চাগলা, যিনি পরে ভারতের বিদেশ মন্ত্রী হয়েছিলেন, তিনি স্মৃতিকথায় লিখেছেন, "আমি আর মি. জিন্নাহ যখন কোনো আইনী বিষয়ে আলোচনা করতাম, তখন কয়েক সময়ে রতি একটু বেশিই সাজগোজ করে চলে আসতেন আর জিন্নাহর টেবিলের ওপরে উঠে বসে পা দোলাতেন। মনে হতো যেন কখন জিন্নাহ কথাবার্তা শেষ করে তাঁকে নিয়ে বাইরে বের হবেন।"
"মি. জিন্নাহর মুখ দিয়ে অবশ্য একটা শব্দও বের হতো না। কোনোরকম বিরক্তি প্রকাশ না করেই তিনি নিজের মতো কাজ করে যেতেন। যেন লেডি রতি যে সেখানে আছে, সেটা তিনি দেখতেই পাননি"- নিজের আত্মকথা 'রোজেজ ইন ডিসেম্বর'-এ লিখেছেন মি. চাগলা।
রাজি হায়দার অবশ্য মনে করেন যে দুজনের মধ্যে একটা হাল্কা দূরত্ব তৈরি হওয়ার কারণটা ছিল রাজনৈতিক।
১৯২৬ সাল নাগাদ ভারতের রাজনীতিতে জিন্নাহর যে অবস্থান ছিল, সেটা ১৯১৬সালে তাঁদের বিয়ের সময়ের থেকে অনেক উঁচুতে। আর এই কতগুলো বছরে মি: জিন্নাহ সাম্প্রদায়িক রাজনীতি শুরু করেছেন। অন্যদিকে লেডি রতিও মাঝেমাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়তেন।
একবার অসুস্থতার পরে ফ্রান্স থেকে এম এস রাজপুতানা নামের জাহাজে চেপে দেশে ফেরার সময়ে স্বামীকে একটা চিঠি লিখেছিলেন রতি।
"আমার জন্য তুমি যা করেছ, তার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমি তোমাকে যতটা চেয়েছিলাম, আর কোনো পুরুষমানুষকেই কোনো নারী বোধহয় অতটা চায় নি কখনও। তুমি আমাকে ওই ফুলটার মতো করেই মনে রেখ যেটা ছিঁড়ে এনেছিলে। যে ফুলটাকে তুমি পা দিয়ে মাড়িয়ে দিয়েছ, সেটাকে মনে রাখার দরকার নেই," লিখেছিলেন রতি জিন্নাহ।
১৯২৯ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারী, মাত্র ২৯ বছর বয়সে রতি জিন্নাহ মারা যান।
শেষ সময়টায় তাঁর সঙ্গী ছিলেন কাঞ্জি দ্বারকা দাস।
শীলা রেড্ডি লিখছেন, "কাঞ্চিই জানিয়েছিলেন যে শেষ দিনগুলোয় রতি খুব মনমরা হয়ে থাকতেন। একবার কাঞ্জি রতিকে বলেছিলেন তাঁর আসতে একটু দেরী হবে। শুকনো মুখে রতি জবাব দিয়েছিলেন, 'ততক্ষণ অবধি যদি বেঁচে থাকি'। পরে কাঞ্জিই এক পাকিস্তানি সাংবাদিককে বলেছিলেন অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন রতি।"
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ সেদিন দিল্লিতে ওয়েস্টার্ন কোর্ট ভবনে ছিলেন। তখনই একটা ট্রাঙ্ক কল আসে তাঁর কাছে। ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন শ্বশুর দিনশা পেটিট।
দশ বছরের মধ্যে সেই প্রথমবার দুজনের কথা হয়।
মেয়ে যে খুব অসুস্থ, সেই খবরটা জিন্নাহকে জানিয়েছিলেন মি: দিনশা।
সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ট্রেনে করে মুম্বাইয়ের দিকে রওনা হন।
পথেই ভাইসরয় আর অন্যান্য মান্যগণ্যদের টেলিগ্রাম আসতে থাকে, শোকজ্ঞাপন করা টেলিগ্রাম।
জিন্নাহ বুঝতে পারেন যে রতি আর এই পৃথিবীতে নেই।
স্টেশন থেকে সোজা কবরস্থানে গিয়েছিলেন জিন্নাহ। সেখানে তাঁর জন্যই সকলে অপেক্ষা করছিল।
সবচেয়ে কাছের আত্মীয় হিসেবে যখন জিন্নাহকে অনুরোধ করা হয়েছিল কবরে মাটি দিতে, তখন ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠেছিলেন জিন্নাহ।
সেই প্রথম, আর সেই শেষবার মুহাম্মদ আলী জিন্নাহকে জনসমক্ষে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল।
বিবিসি বাংলার সৌজন্যে
(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭)
পাঠকের মতামত:

- সন্ধ্যার মধ্যে সাত অঞ্চলে ঝড়ের আভাস
- ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা শুরু
- সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে
- গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নিয়ে রিভিউর রায় ৬ আগস্ট
- ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, ভোট ৯ সেপ্টেম্বর
- বৃহস্পতিবার নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা
- নেতানিয়াহুর দাবি গাজায় কেউ না খেয়ে নেই, ট্রাম্পের ভিন্নমত
- বিচার সংস্কার নির্বাচন সমান্তরালভাবে এগিয়ে নিতে হবে: জামায়াত আমির
- ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের সময় অগ্নিকাণ্ডের প্রমাণ মেলেনি
- অভ্যুত্থানের শক্তি সক্রিয় থাকা পর্যন্ত মুজিববাদীরা দাঁড়াতে পারবে না: নাহিদ
- জুলাই সনদের খসড়া নিয়ে আপত্তি এনসিপি-জামায়াতে ইসলামীর
- টেকসই উন্নয়নের শর্ত-স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান: আমীর খসরু
- জুলাই সনদের খসড়া বিষয়ে বিএনপি ইতিবাচক: সালাহউদ্দিন
- দেশে গভীর পরিবর্তন না হলে স্বৈরাচার গিয়ে স্বৈরাচার আসবে: প্রধান উপদেষ্টা
- সেপ্টেম্বরে শুরু এশিয়া কাপ, এক গ্রুপেই ভারত-পাকিস্তান
- পুঁজিবাজারে মূলধন বেড়েছে ৩৭ হাজার ৭৩ কোটি টাকা
- হচ্ছে না সাময়িক যুদ্ধবিরতি, হামাসকে ধ্বংসের হুমকি ট্রাম্পের
- কিশোরগঞ্জের মানুষ রাষ্ট্রপতি পেয়েছে কিন্তু উন্নয়ন পায়নি : নাহিদ ইসলাম
- রোববার খুলছে না মাইলস্টোন, কলেজ খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত সোমবার
- পুরনো পদ্ধতিতে আর নির্বাচন চলবে না: মজিবুর রহমান
- নির্বাচনের আগে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- দগ্ধদের দেখতে বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ্টা
- গুলশানে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, গ্রেপ্তার ৫
- "কয়েকদিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা"
- যখনই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি, তখনই ষড়যন্ত্র আসছে: প্রধান উপদেষ্টা
- প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত
- সারা বছর মৃত ভোটার বাদ দেওয়ার ক্ষমতা চান ইসি কর্মকর্তারা
- ফেনী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত, আহত ১
- গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫৯ হাজার ৫০০ ছাড়ালো
- দাম কমলো স্বর্ণের
- দু-চারটা হলেও শীর্ষ অপরাধীর বিচার দেখতে চাই: জামায়াত আমির
- বিমানবন্দর থেকে ১২৩ বাংলাদেশিসহ ১৯৮ জনকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া
- কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে আইডি কার্ড দেখাতে হবে: আইন উপদেষ্টা
- বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধদের চিকিৎসা দিতে চীনা মেডিকেল টিম ঢাকায়
- হাসিনার গুলি চালানোর নির্দেশ নিয়ে আল জাজিরার ‘বিস্ফোরক’ প্রতিবেদন
- টানা ৮ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান
- বাংলাদেশকে ধসিয়ে ধবলধোলাই এড়াল পাকিস্তান
- ভারত ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি সই
- বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৩০ বিলিয়ন
- নতুন বাংলাদেশ গড়ার লড়াই শেষ হয়নি: নাহিদ
- জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় আমাদের স্বার্থে হয়েছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- মানুষের মধ্যে ভয়-আতঙ্ক তৈরি করেছে মব কালচার: রুহুল কবির রিজভী
- হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক কারাগারে
- দগ্ধদের জন্য রক্ত ও স্কিনের প্রয়োজন নেই : বার্নের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক
- ১৫ বছরে আওয়ামী সন্ত্রাসে নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ
- নাটোরে মাইক্রোবাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৬
- পাকিস্তানকে উড়িয়ে র্যাঙ্কিংয়ে জোড়া সুখবর পেল বাংলাদেশ
- ইসলামী ব্যাংকের ক্যাশ ওয়াক্ফ অ্যাকাউন্ট: মানবতার সেবায় স্থায়ী দান
- ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শেষ হয়নি: ইসরাইলি সেনাপ্রধান
- দুদকের পক্ষে এতো দুর্নীতির শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব না : বিচারক
- মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় তদন্তের দাবি জামায়াতের নায়েবে আমিরের
- নিহতের সংখ্যা কম দেখানোর কোনো কারণ নেই: প্রেস সচিব
- ফ্যাসিস্ট শক্তি উত্থানের শঙ্কায় মতবিনিময় করেছেন প্রধান উপদেষ্টা: মির্জা ফখরুল
- শক্তিশালী পাসপোর্টের র্যাংকিংয়ে তিন ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ
- সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধিদল বার্ন ইনস্টিটিউটে
- সরকার যেতে বললে চলে যাব: শিক্ষা উপদেষ্টা
- মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১
- চোখের জলে শেষবিদায়, চিরনিদ্রায় শায়িত পাইলট তৌকির
- পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
- সামরিক খাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী চীন: রাষ্ট্রদূত
- ৯ ঘণ্টা আটকে থাকার পর মাইলস্টোন ছাড়লেন দুই উপদেষ্টা
- সরকার দায়িত্বশীল আচরণ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেত না: নাহিদ
- গণতন্ত্রপন্থি সহযোদ্ধাদের শান্ত-সংহত থাকার আহ্বান তারেক রহমানের
- "এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান না থাকার পক্ষে নয় বিএনপি"
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে চারটি রাজনৈতিক দলের নেতারা
- সরকারকে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে দলগুলো: আসিফ নজরুল
- মাইলস্টোন স্কুলে বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনায় ইআবি ভিসির শোক
- উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে ২০, চিকিৎসাধীন ১৭১
- ৭ শিশু এতটাই পুড়েছে যে শনাক্তই করা যায়নি
- মরদেহের পরিচয় শনাক্তে লাগবে ডিএনএ পরীক্ষা
- আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উত্তরার বিমান দুর্ঘটনার খবর
- মাইলস্টোনে হতাহত পরিবারের পাশে থাকার আহ্বান বেগম খালেদা জিয়ার
- তাদের মা-বাবাদের কী জবাব দেব: প্রধান উপদেষ্টা
- উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: শেষ হলো উদ্ধার অভিযান
- প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে সূচকের বড় উত্থান
- বাংলাদেশকে ধসিয়ে ধবলধোলাই এড়াল পাকিস্তান
- নতুন বাংলাদেশ গড়ার লড়াই শেষ হয়নি: নাহিদ
- জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় আমাদের স্বার্থে হয়েছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- হাসিনার গুলি চালানোর নির্দেশ নিয়ে আল জাজিরার ‘বিস্ফোরক’ প্রতিবেদন
- বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৩০ বিলিয়ন
- ভারত ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি সই
- ১৫ বছরে আওয়ামী সন্ত্রাসে নিহতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ
- মানুষের মধ্যে ভয়-আতঙ্ক তৈরি করেছে মব কালচার: রুহুল কবির রিজভী
- ফেনী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত, আহত ১
- হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক কারাগারে
- বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধদের চিকিৎসা দিতে চীনা মেডিকেল টিম ঢাকায়
- কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে আইডি কার্ড দেখাতে হবে: আইন উপদেষ্টা
- সারা বছর মৃত ভোটার বাদ দেওয়ার ক্ষমতা চান ইসি কর্মকর্তারা
- গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫৯ হাজার ৫০০ ছাড়ালো
- দু-চারটা হলেও শীর্ষ অপরাধীর বিচার দেখতে চাই: জামায়াত আমির
- দগ্ধদের জন্য রক্ত ও স্কিনের প্রয়োজন নেই : বার্নের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক
- দাম কমলো স্বর্ণের
- টানা ৮ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান
- বিমানবন্দর থেকে ১২৩ বাংলাদেশিসহ ১৯৮ জনকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া
- প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নির্বাচিত
- নির্বাচনের আগে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- গুলশানে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, গ্রেপ্তার ৫
- দগ্ধদের দেখতে বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ্টা
- কিশোরগঞ্জের মানুষ রাষ্ট্রপতি পেয়েছে কিন্তু উন্নয়ন পায়নি : নাহিদ ইসলাম
- পুরনো পদ্ধতিতে আর নির্বাচন চলবে না: মজিবুর রহমান
ফিচার এর সর্বশেষ খবর
ফিচার - এর সব খবর
