thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২০ জমাদিউল আউয়াল 1446

শিশুর শরীরে আটকা পড়েছে ১৯ বছর

২০১৪ জানুয়ারি ২৯ ১৪:৪৯:৩৮
শিশুর শরীরে আটকা পড়েছে ১৯ বছর

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : প্রথম দর্শনে আজিফা খাতুনকে দেখে যে কারো মনে হবে দুই বছরের ছোট এক শিশু ভাইবোনদের সঙ্গে ছোটাছুটি করে খেলছে। কিছুক্ষণ পর পর মাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরছে।

তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে দুই বছরের এই শিশুর শরীরে আটকা পড়ে আছে ১৯ বছরের তরুণী আজিফা খাতুন।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মিরাপাড়ে ১৯৯৪ সালে জন্ম নেওয়া আজিফার শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি তার দ্বিতীয় জন্মদিনের পর থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে।

সাড়ে সাত কেজির একটু বেশি ওজনের আজিফাকে তার মা আপিলা (৪২) সবসময় কোলে নিয়েই ঘুরেন। এমনকি তাকে চামচে করে খাইয়ে দিয়ে হয়।

জন্মের সময় সুস্থই ছিল আজিফা। দুই বছর পর্যন্ত তার স্বাভাবিক বৃদ্ধিও অব্যাহত ছিল। তবে দুই বছর পর তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে গেলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন আজিফার মা-বাবা। আজিফা আবার স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠবে বলে আশ্বাসও দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।

তবে আজিফা আগের মতোই থাকায় চিকিৎসকরা তার এই অবস্থার জন্য প্রথমে হরমোন ডিসঅর্ডার ও পরে ক্যান্সারকে দায়ী করেন। তবে আফিকার এই অবস্থার কারণ নিয়ে এখনও অন্ধকারেই রয়ে গেছে তার পরিবার।

আজিফার ছোট বোন রিনি (১৭), রাবেয়া (১৪) ও ভাই দানেশ (৮) তার চেয়ে লম্বা। আজিফা শুধু মা, বাবা আর দিদি ছাড়া অন্য শব্দ বলতে পারে না।

স্থানীয় শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করেই সময় কাটে আজিফার। তবে কোনো সাহায্য ছাড়া খুব বেশি চলাফেরা করতে পারে না সে।

আজিফার মা দ্য সান পত্রিকাকে জানিয়েছেন, ‘আজিফা হাসিখুশি। সবসময় তার মুখে হাসি লেগে আছে। তবে সে এই জীবনে আটকা পড়ে আছে দেখলে হৃদয় ভেঙে যায়।’

আজিফার বাবা শেখ (৫২) জানান, তার ‘সুন্দর’ মেয়ে সবসময় হাসিখুশি। সে খুব বেশি কথা বলতে না পারলেও চারপাশে কী হচ্ছে বুঝতে পারে।

আজিফার ব্যাপারে চাইন্ড গ্রোথ ফাউন্ডেশনে কর্মরত ট্যাম ফ্রাই দ্য সানকে বলেন, ‘জীবনের অধিকাংশ সময়ই হয়ত আজিফার শিশুসুলভ বৈশিষ্ট্য বজায় থাকবে।’

আজিফা ‘সম্ভবত’ বিরল জেনেটিক রোগ ল্যারন সিনড্রোমে ভুগছে বলেও জানান তিনি।

এই রোগে সারা বিশ্বের মাত্র তিন শ’ জন আক্রান্ত বলে ধারণা করা হয়। এই রোগে আক্রান্তদের এক-তৃতীয়াংশ ইকুয়েডরের লজা প্রদেশের এক দুর্গম গ্রামে বাস করেন।

ল্যারন সিনড্রোমে আক্রান্তরা এক্সটর ওয়ান কিংবা আইজিএফ-ওয়ান হরমোনের অভাবে ভোগেন। ইনসুলিনের মতো হরমোনগুলো শরীরের নতুন কোষ উৎপন্ন ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করেন।

এই হরমোন বেড়ে গেলে কম বয়সে স্তন, প্রস্টেট কিংবা অন্ত্রের ক্যান্সার হতে পারে। তবে এই হরমোন কম থাকলে অর্থাৎ ল্যারন সিনড্রোমে আক্রান্তদের কখনোই ক্যান্সার কিংবা ডায়বেটিকস হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

আজিফার রোগের সঙ্গে মিল ছিল ব্রুক গ্রিনবার্জ নামে এক মার্কিন নারীর। গত বছরের অক্টোবরে চিকিৎসকদের ধাঁধায় রেখে মাত্র ২০ বছর বয়সে মারা যান তিনি। (সূত্র: ডেইলি মেইল)

(দ্য রিপোর্ট/কেএন/এমডি/সা/জানুয়ারি ২৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

ফিচার এর সর্বশেষ খবর

ফিচার - এর সব খবর