thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১ জুন ২০২৪, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ২৪ জিলকদ  ১৪৪৫

ফু-ওয়াং ফুড

প্রকৃত আর্থিক হিসাব থেকে বঞ্চিত শেয়ারহোল্ডাররা

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ০২ ০০:০৯:০৫
প্রকৃত আর্থিক হিসাব থেকে বঞ্চিত শেয়ারহোল্ডাররা

আগের বছরের মতো ২০১২-১৩ অর্থবছরে সমন্বিত (কনসোলিডেটেড) আর্থিক প্রতিবেদন না করায় আপত্তিকর মন্তব্য করেছে ফু-ওয়াংয়ের নিরীক্ষক। যেখানে অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের লাভ-লোকসান যোগ না হওয়ায় প্রকৃত আর্থিক হিসাব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শেয়ারহোল্ডাররা।

এ ছাড়া গত দুই বছর ধরে ফু-ওয়াং ফুডের আয় নিম্নমুখী ধারায় রয়েছে। এর সঙ্গে কমেছে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেওয়ার হার।

বাংলাদেশ অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (বিএএস)-২৭ ও ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী সমন্বিত আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি না করায় নিরীক্ষক রহমান মোস্তফা আলম অ্যান্ড কোং আপত্তিকর মন্তব্য (কোয়ালিফাইড অপিনিয়ন) দিয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের বিষয়ে। এতে ফু-ওয়াং বেভারেজের ৯৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক হওয়া সত্ত্বেও ফু-ওয়াং ফুডের ২০১২-১৩ অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে সমন্বিত হিসাব প্রকাশ না করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

বিএএস-১২ এর প্যারা ১৫ অনুযায়ী, অ্যাকাউন্টিং বেসিস ও ট্যাক্স বেসিসে স্বল্প মেয়াদী পার্থক্যের ওপর ২০১৩ সালে ডেফার্ড ট্যাক্স গণনা করেছে ফু-ওয়াং কর্তৃপক্ষ। তবে আগের বছর ডেফার্ড ট্যাক্স গণনা করা হয়নি। এ নিয়ে ওই সময় নিরীক্ষক আপত্তিকর মন্তব্য করেন।

‘বিএএস-১৬’ অনুযায়ী পুনর্মূল্যায়নের পর সম্পদ বাড়লে অতিরিক্ত সম্পদকে নিজস্ব শিরোনামে রাখতে হয়। সে হিসাসেবে অতিরিক্ত সম্পদকে পুনর্মূল্যায়ন উদ্বৃত্তের (রিভ্যালুয়েশন সারপ্লাস) পরিবর্তে সংরক্ষিত মূলধন (ক্যাপিটাল রিজার্ভ) হিসাব নামে রেখে বিএএস পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

বিএএস-১ ও ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইনের ধারা-১৮৫, প্যারা-১ এর সিডিউল-১১ অনুযায়ী ফু-ওয়াং ফুডের সাবসিডিয়ারি ফু-ওয়াং বেভারেজের আর্থিক হিসাব তৈরি করা হয়নি। আর্থিক প্রতিবেদনে অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের মূলধন, দায়, আয়, ব্যয় ও মূলধন পরিবর্তনের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু বিএএস ও কোম্পানি আইন অনুযায়ী উল্লিখিত বিষয়ের ওপর বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী সম্পদে বিগত বছরের তথ্য প্রকাশ না করে বিএএস-১ এর ৩৮ পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ।

এদিকে গত দুই বছর ধরে ফু-ওয়াং ফুডের আয় ক্রমাগত কমছে। এর সঙ্গে কমেছে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেওয়ার হার। আর কোম্পানিটি গত কয়েক বছরে উল্লেখ করার মতো কোনো ফলাফল বয়ে আনতে পারেনি।

এ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১১ সালে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১.৯২ টাকা, ২০১২ সালে ১.৪১ টাকা ও ২০১৩ সালে হয়েছে ১.০৩ টাকা। ফু-ওয়াং ফুড ২০১১ সালে বিনিয়োগকারীদের ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিলেও পরের দুই বছরে ক্রমান্বয়ে ১২ শতাংশ ও ১০ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেয়।

অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ও মূল প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বছরে মিল না থাকায় সমন্বিত প্রতিবেদন তৈরি করা যায়নি বলে জানান ফু-ওয়াংয়ের কোম্পানি সচিব হালিম ঠাকুর। আর হিসাবমান অনুযায়ী ২০১২ সালে ডেফার্ড ট্যাক্স প্রযোজ্য হলেও তা ধরা হয়নি। তবে ২০১৩ সাল থেকে ডেফার্ড ট্যাক্স গণণা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এ ছাড়া এনেক্সার ‘এ’তে রিভ্যালুয়েশন হিসাবে আর আর্থিক অবস্থার বিবরণীতে ক্যাপিটাল রিজার্ভের আওতায় অতিরিক্ত সম্পদ দেখানো হয়েছে বলে জানান হালিম ঠাকুর।

এদিকে আয় কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বোনাস শেয়ার ইস্যু, কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি, শ্রমের মূল্য বৃদ্ধি, পণ্য স্থানান্তর ব্যয় বৃদ্ধি, পুনর্মূল্যায়নকৃত স্থায়ী সম্পদের ওপর অপচয় ধরা ও প্রশাসনিক ব্যয় বৃদ্ধিকে উল্লেখ করেন হালিম ঠাকুর। একই সঙ্গে ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুযায়ী সাবসিডিয়ারি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/আরএ/ডব্লিউএন/এনআই/এএল/ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশেষ সংবাদ এর সর্বশেষ খবর

বিশেষ সংবাদ - এর সব খবর