thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২২ জমাদিউল আউয়াল 1446

আপিল বিভাগে সাঈদীর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ০২ ২০:৩২:৫৯
আপিল বিভাগে সাঈদীর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে চতুর্থ দিনের মতো আপিল বিভাগে যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন করা হয়েছে।

ট্রাইব্যুনালে সাঈদীকে যে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তার একটি হল ইব্রাহিম কুট্টি হত্যা মামলা।

এ অভিযোগের বিষয়ে রবিবার আদালতে সাক্ষীর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যুক্তি উপস্থাপন করেন সাঈদীর আইনজীবী।

প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চে সোমবারও এ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

চতুর্থ দিন সাঈদীর পক্ষে ৮নং অভিযোগের বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী এসএম শাহজাহান।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান ও প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার। আসামিপক্ষে সাঈদীর ছেলে মাসুদ বিন সাঈদী, আইনজীবী সাইফুর রহমান, তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমিন, তারিকুল ইসলাম, আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ইব্রাহীম কুট্টি হত্যার বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের ৬নং সাক্ষীর সাক্ষ্যের বিষয়ে শাহজাহান বলেন, ‘৬নং সাক্ষী মানিক পসারী বলেছেন, তাদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি তিনি বাড়ির পূর্ব পাশের জঙ্গলে থেকে লুকিয়ে দেখেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের ১০নং সাক্ষী বলেছেন, মানিক পসারীর বাড়িতে আগুন দেওয়ার আগেই বাড়ির লোকজন বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। এ ছাড়া মানিক পসারী এ মামলায় সাক্ষী হওয়ার বিনিময়ে একটি খামার ও বাড়িসহ নানা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন। যা জেরায় বের হয়ে এসেছে।’

এডভোকেট এসএম শাহজাহান বলেন, ‘ইব্রাহীম কুট্টি হত্যা ঘটনার সঙ্গে মফিজ উদ্দিন পসারীর ওপর নির্যাতনের ঘটনাও জড়িত। ইব্রাহীম কুট্টি ও মফিজ উদ্দিনকে মানিক পসারীর বাড়ি থেকে একই দড়িতে বেঁধে পাড়েরহাট বাজারে নিয়ে যাওয়া হয় মর্মে সাক্ষীরা বলেছেন। তাদের দাবি পাড়েরহাট বাজারে ইব্রাহীম কুট্টিকে হত্যা করা হয় এবং মফিজ উদ্দিনকে আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে নির্যাতন করা হয়। কিন্তু এক পর্যায়ে তিনি রাতের অন্ধকারে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন।’

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা মানিক পসারীও তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু মানিক পসারী ২০০৯ সালের ১২ আগস্ট মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে পিরোজপুর তার বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় যে মামলা করেছে তাতে ইব্রাহীম কুট্টিকে হত্যার ঘটনার বিবরণ থাকলেও মফিজ উদ্দিনকে নির্যাতনের বিষয়ে একটি কথাও উল্লেখ নেই।’

শাহজাহান বলেন, ‘অথচ দুজনই তাদের বাড়িতে কাজ করত এবং তাদের একই দড়িতে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মর্মে ট্রাইব্যুনালে দাবি করা হয়েছে। উপরন্তু মানিক পসারী ট্রাইব্যুনালে জেরায় এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ইব্রাহীম কুট্টির পিতার নাম গফুর শেখ। অপরদিকে পিরোজপুরে তিনি যে মামলা করেছেন তাতে তিনি ইব্রাহীম কুট্টির পিতার নাম লিখেছেন সইজুদ্দিন হালদার।’

আইনজীবী আরও বলেন, ‘এ ছাড়া মানিক পসারীর অভিযোগে উল্লেখ আছে, তিনি জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে থেকে তাদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা দেখেছেন। কিন্তু পিরোজপুরে তিনি ২০০৯ সালে যে মামলা করেন তাতে জঙ্গলে লুকিয়ে দেখার ঘটনার কথা উল্লেখ নেই। সেখানে শুধু পালিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ আছে।’

মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে ৬নং সাক্ষীর দেওয়া জবানবন্দি ও লিখিত অভিযোগের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এরপর ৮নং অভিযোগে রাষ্ট্রপক্ষের ৭নং সাক্ষী মফিজ উদ্দিনের সাক্ষীর বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন শুরুর কিছুক্ষণ পর আজকের মতো আদালতের কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। সোমবার আবারও এই বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে।

সাঈদীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে ২০টি অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়েছিল। অভিযোগগুলোর মধ্যে ১২টি ট্রাইব্যুনালে প্রমাণিত হয়নি। বাকি ৮টি অভিযোগের মধ্যে দুটিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে ট্রাইব্যুনাল-১। গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি তাকে এ সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করে ট্রাইব্যুনাল।

(দ্য রিপোর্ট/এসএ/এসকে/সা/ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর