thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২২ জমাদিউল আউয়াল 1446

‘মীর কাশেমের নির্দেশে আমার ওপর নির্যাতন হয়’

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ০২ ২১:৩৬:৩৬
‘মীর কাশেমের নির্দেশে আমার ওপর নির্যাতন হয়’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রসিকিউশনের তৃতীয় সাক্ষী নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চট্টগ্রামের ডালিম হোটেলে মীর কাশেম আলীর নির্দেশে আলবদর সদস্যরা আমাকে নির্যাতন করে রক্তাক্ত করেছিল।’

চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ রবিবার সাক্ষ্য পেশকালে এ কথা বলেন তিনি।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম তাকে জেরা শুরু করেন। জেরা অসমাপ্ত রেখে মামলার কার্যক্রম সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।

চট্টগ্রামের পটিয়া থানার হুলাইন গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন চৌধুরী (৬০) সাক্ষ্যে বলেন, ‘৭১ সালের নভেম্বর মাসের শেষ দিকে এক গভীর রাতে আলবদরের সদস্যরা আমাকে চোখ বেঁধে মারতে মারতে ডালিম হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে একটি অন্ধকার কক্ষে ঢুকিয়ে আমাকে তারা নির্যাতন করে। আমার কাছ থেকে কিছু না পেয়ে তারা চোখের বাঁধন খুলে দিয়ে চলে যায়।’

সাক্ষী বলেন, ‘কিছুক্ষণ পর আলবদরদের সঙ্গে নিয়ে মীর কাশেম আলী ওই কক্ষে প্রবেশ করে জানতে চায়, ওর কাছ থেকে কিছু আদায় করতে পারনি? ওকে আরও পেটাও। এরপর আলবদররা আমাকে লাঠি, লোহার রড, ইলেকট্রিক তার দিয়ে ইচ্ছেমতো পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ে মীর কাশেম আলীও আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কিছুই আদায় করতে না পেরে আলবদরদের নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায় এবং আমাকে পেটাতে পেটাতে রক্তাক্ত করে এক পর্যায়ে তারা বের হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘হোটেলের ওই কক্ষে থাকা অবস্থায় অন্য কক্ষ থেকে আরও মানুষের আর্তনাত গোঙ্গানীর শব্দ আমি শুনতে পেয়েছি। ওই সব মানুষকে সেখানে নির্যাতন করা হতো। আমাকেও হোটেলের এক রুম থেকে অন্য রুমে নিয়ে প্রায়ই নির্যাতন করা হতো।’

সাক্ষী বলেন, ‘সহবন্দিদের কাছ থেকে জানতে পারি মীর কাশেম আলীর নির্দেশে ও তার উপস্থিতিতে অনেক বন্দিকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের লাশ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।’

মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আলবদরের একজন ছেলে সম্ভবত তার নাম পংকজ বা স্বপন। সে জানায়, হাজারী গলির টুনটু সেন, রণজিত দাশ ও সন্দীপের মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে ডালিম হোটেলের ছাদে নিয়ে মীর কাশেম আলীর নির্দেশে এবং উপস্থিতিতে হত্যার পর তাদের লাশ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের দেওয়ানহাট এলাকার দেওয়ান হোটেল এবং চাক্তাই এলাকার চামড়ার গুদামে টর্চার সেলটিও মীর কাশেম আলীর নির্দেশে পরিচালিত হতো।’

(দ্য রিপোর্ট/এসএ/এনডিএস/এএল/ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর