thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৩ জমাদিউল আউয়াল 1446

‘‘...চেতনার বইমেলা হয়ে যাবে ‘প্রাণ’-এর বইমেলা’’

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ০৪ ২১:৩৯:২৮
‘‘...চেতনার বইমেলা হয়ে যাবে ‘প্রাণ’-এর বইমেলা’’

শিবু কুমার শীল

শিবু কুমার শীল প্রচ্ছদশিল্পী হিসেবে অধিক পরিচিত। এ ছাড়াও পেশাগত জীবনে নাটক, ডকুমেন্টারি ফিল্ম নির্মাণের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত। দ্য রিপোর্টের পক্ষ থেকে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন খেয়া মেজবা

কতগুলো বইয়ের প্রচ্ছদ করলেন এবারগুরুত্বপূর্ণ কিছু বইয়ের কথা বলুন।

এখনও হিসাব করি নাই কতগুলো প্রচ্ছদ করেছি। মেলার শেষদিন পর্যন্ত কভার করতে হয় আমাদের। ফলে এটা বলা মুশকিল।

প্রচ্ছদ করার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো বইকে গুরুত্ব দিয়েছেন কি?

না, প্রচ্ছদ করার ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ কোথাও নজর দেওয়ার সুযোগ অন্তত এই বইমেলায় থাকে না। কারণ এই মাসে সারা বছরের বই একসঙ্গে বের হয়। বই পাবলিশড হয়তো এক মাসে করা সম্ভব কিন্তু প্রি-প্রেস থেকে পোস্ট পর্যন্ত যদি চিন্তা করি তবে এটা একটা অলৌকিক ব্যাপার মনে হয়! কি করে এতগুলো বই এক মাসে আমরা প্রডিউস করি। এই ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো চিন্তার সুযোগ নাই।

বর্তমান প্রচ্ছদ শিল্পের অবস্থা নিয়ে কিছু বলুন

বর্তমান প্রচ্ছদ শিল্পের অবস্থা বেহাল। কারণ এটা গুগল নির্ভর। শুধু প্রচ্ছদ নয়। আমাদের সকল ডিজাইন সেক্টরই এখন গুগল নির্ভর। এখানে সৃষ্টিশীলতার কোনোই সুযোগ নাই। তার চেয়ে বড় কথা এখানে গত কুড়ি বছর ধরে যে সমস্ত কভার হচ্ছে (ইনক্লুডিং মি) সবই কপি অফ আদার ওয়ার্ক। তবে এ ক্ষেত্রে দু একজন ব্যাতিক্রম। এই কপি এন্ড রিপ্রডিউসমেন্ট এর খপ্পর থেকে বের না হলে সৃষ্টিশীল কভার সম্ভব না। তাছাড়া একটা কভার করার ক্ষেত্রে যে পরিমাণ হাদিয়া শিল্পী পেয়ে থাকেন তা দিয়ে বিপন্ন জীবনযাপনও সম্ভব না। আর অপেশাদারিত্বের কথা বলে শেষ করা যাবে না। মেলায় এমন অফারও পাওয়া যায় বই এর নাম ঠিক হয়নি কিন্তু কভারটা কোনোভাবে করে দিতে হবে। এই হল অবস্থা। এই অবস্থায় এর চেয়ে ভাল কিছু হবার কথা নয়। তবে কাইয়ুম চৌধুরী, ধ্রুব এষ, সব্যসাচী হাজরা এরা যেভাবে দিনের পর দিন নিঃসঙ্গ কান্ডারির মত এই শিল্পের হাল ধরে রেখেছেন তার জন্য ক্রিয়েটিভ বুক ইন্ডাস্ট্রির তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। হাদিয়া আর পেশাগত দিক ঠিক না হলে এই শিল্প এমনই ধুকে ধুকেই সারভাইভ করবে।

এবারের মেলায় বই কেনার পরিকল্পনা আছে?

বইমেলা থেকে নতুন বই কেনার তেমন কোনো উত্তেজনা আমার আর নেই। আগে ছিল। এখন আমি এইসব বই এর ম্যাকানিজমগুলো কাছ থেকে দেখি এবং চূড়ান্ত হতাশ হই। কোনো ধরনের সম্পাদনা ছাড়া হাজার হাজার বই কীভাবে বের হয় সে এক অপার রহস্য। তারপরেও এবার জাহানারা ইমারের একটি অনুবাদ বইমেলায় আসবে বলে শুনেছি। সেটাই হয়তো কিনব।

বইমেলার স্থান সম্প্রসারণের বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

বইমেলার স্থান সম্প্রসারণ এর চিন্তাটা সুন্দর যুগোপযোগী। তবে এরকম আনপ্লান্ড ওয়েতে নয়। তারচেয়ে বড় কথা আপনি মুখে এত চেতনার কথা বলেন অথচ একটা কোম্পানির লোগো আর প্রোডাক্ট দিয়ে পুরো মেলা সয়লাব হয়ে গেল! এই জাতীয় চিন্তা বুমেরাং হবে আমাদের জন্য। পৃথিবীর সকল মেলা বা ফেস্টিভ্যালেই হয়তো স্পন্সরশিপ থাকে। এটা হয়তো বাস্তবতা কিন্তু তাই বলে কোনো নীতিমালা থাকবে না? ঝাল মুড়ির মোড়ক আর বিশেষ পানীয়র বোতলে সাইনবোর্ড একাকার হয়ে যাবে তাতো হয় না। যাইহোক, স্থান সম্প্রসারণ যেমন জরুরি তেমনি তার একটা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনাও জরুরি। নয়তো আমাদের চেতনার বইমেলা হয়ে যাবে ‘প্রাণ’ এর বইমেলা।

ছবি : সৈয়দ লতিফ হোসাইন

(দ্য রিপোর্ট/কেএম/এইচএসএম/ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

অমর একুশে গ্রন্থমেলা এর সর্বশেষ খবর

অমর একুশে গ্রন্থমেলা - এর সব খবর