thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ১ মে 24, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১,  ২২ শাওয়াল 1445

আদালতে চার জেএমবি সদস্যের স্বীকারোক্তি

২০১৬ অক্টোবর ২৫ ২৩:২০:৪৩
আদালতে চার জেএমবি সদস্যের স্বীকারোক্তি

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের কচুয়ায় গ্রেফতার হওয়া সন্দেহভাজন চার জেএমবি সদস্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর সোয়া ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাগেরহাটের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আসিফ আকরামের আদালতে গ্রেফতারকৃতরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

জবানবন্দি শেষে আকাশ, হাবিবুল্লাহ, মিজান ও কবীরুল নামের ওই চার জনকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বাগেরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আদালত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃতরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জেএমবির সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার বাদী গাজী ইকবাল হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃতরা অপর চার-পাঁচ সহযোগীসহ রাতের ঐ গোপন বৈঠকে বাগেরহাটে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে যা তদন্তের স্বার্থে বর্তমানে প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

গ্রেফতারকৃতরা পুরনো নাকি নব্য জেএমবির নেতৃত্বে পরিচালিত, সে বিষয়ে পুলিশের কাছ থেকে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের জেএমবি সদস্য বলে দাবি করে বলেন, এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

গাজী ইকবাল হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত আকাশ মোল্লা ওরফে বাবু (১৯) কচুয়া ডিগ্রী কলেজ থেকে এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে। প্রায় দুই বছর আগে নিজ বাড়িতে বোমা তৈরির সময় তা বিস্ফোরণে আকাশ আহত হয়েছিল। পারিবারিকভাবে সে আহলে হাদিস মতাদর্শী।

অপর গ্রেফতারকৃত হাবিবুল্লাহ শেখ (১৮) পিরোজপুরের কেয়ামুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেবে। মিজানুর রহমান হাওলাদার (২৬) পিরোজপুরের দুর্গাপুর আলিয়া মাদ্রাসা থেকে এ বছর দাখিল পাস করেছে। কবিরুল ফরাজী (২৯) পেশায় আইনজীবীর সহকারী (মহুরি)। সেও চার বছরেরও বেশি সময় ধরে জেএমবির সাথে সম্পৃক্ত। অন্যরা এক থেকে দুই বছর ধরে জেএমবির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে।

গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে এসব তথ্য জানিয়েছে বলে জানান গাজী ইকবাল হোসেন।

তিনি আরও জানান, উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকগুলো স্থানীয়ভাবে তৈরি। উচ্চ ক্ষমতার এই বোমাগুলো সকেট বোমা নামেও পরিচিত। এ বছরের প্রথম দিকে তারা বাগেরহাট শহর সংলগ্ন দড়াটানা সেতুর পূর্ব প্রান্তে সেতুর নিচে এ ধরনের একটি বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর জেলাসহ পাঁচটি জেলা নিয়ে জেএমবির একটি সাংগঠনিক এলাকা রয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা এই সাংগঠনিক এলাকার আওতাভুক্ত। তারা বাগেরহাটে বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক ছাড়াও কিছু জেহাদী বই এবং জব্দ করা কম্পিউটার থেকে জেএমবির জিহাদী কার্যক্রম বিষয়ক বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, সোমবার (২৪ অক্টোবর) গভীর রাতে বাগেরহাটের কচুয়ায় জেএমবির আস্তানায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ চার জেএমবি সদস্যকে অস্ত্র ও হাতবোমাসহ গ্রেফতার করে। এ সময় জেএমবি সদস্যদের ছোড়া বোমায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। সেখান থেকে একটি রিভলবার, দুটি গুলি ও পাঁচটি হাতবোমা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাগেরহাটের কচুয়া থানায় গ্রেফতারকৃত জেএমবি সদস্যদের বিরুদ্ধে পৃথক চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/জেডটি/এনআই/অক্টোবর ২৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর