thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১,  ২০ জমাদিউস সানি 1446

গ্রিক মূর্তি অপসারণে তালবাহানা দেশবাসী মেনে নেবে না : বাবুনগরী

২০১৭ এপ্রিল ১৭ ১৮:৪৫:০৯
গ্রিক মূর্তি অপসারণে তালবাহানা দেশবাসী মেনে নেবে না : বাবুনগরী

চট্টগ্রাম অফিস : হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, গতকাল (১৭ এপ্রিল) গভীর রাতে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, ‘সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গনে গ্রিক দেবী থেমিস থাকছে’। ওই খবরে দুই জন মন্ত্রীর বরাতে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বলে সরকারের দুই জন মন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য না সরিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে শনিবার (১৫ এপ্রিল) একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি বিকল্প সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সে অনুযায়ী দুই ঈদের নামাযের সময় গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি ঢেকে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

সোমবার (১৭ এপ্রিল) বেলা ২টায় সংবাদপত্রে প্রেরিত এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলামের পক্ষে সংগঠনটির মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এ কথা বলেন।

হেফাজত ইসলামের মহাসচিব বলেন, আমরা এই সংবাদে হতবাক, বিস্মিত এবং ক্ষুব্ধ। ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের শীর্ষ আলেমদের সামনে ভাস্কর্য অপসারণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। যেটা বাংলাদেশের সকল মিডিয়া ও বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক বহু গণমাধ্যমেও প্রচারিত হয়েছে। ভাস্কর্য অপসারণের আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী সেদিন বলেছিলেন, ‘প্রধান বিচারপতির সঙ্গে খুব শিগগিরই বসব। আপনারা ধৈর্য ধরেন, ভরসা রাখেন। এজন্য যা যা করা দরকার আমরা তা করব।’

প্রধানমন্ত্রী সে দিন আরও বলেছিলেন, ‘আমি নিজেও এটা পছন্দ করিনি। বলা হচ্ছে, এটা নাকি গ্রিক মূর্তি। আমাদের এখানে গ্রিক মূর্তি আসবে কেন? আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা এখানে থাকা উচিত না। এটা কেন করা হল? কারা করল? কীভাবে, জানি না’। সে সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘গ্রিকদের পোশাক ছিল এক রকম। এখানে আবার দেখি শাড়ি পরিয়ে দিয়েছে। এটাও হাস্যকর হয়েছে।’

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আরও বলেন, বাংলা ট্রিবিউন এই খবরে বিভ্রান্তিকর একটা তথ্যও জুড়ে দিয়ে লিখেছে, ‘সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে এ ভাস্কর্যের পাশেই জাতীয় ঈদগাহ মাঠ। সেখানে ঈদের নামায অনুষ্ঠিত হয়। গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য পাশে রেখে ঈদের নামায আদায়ের ইস্যুটিকে সামনে এনে হেফাজতের নেতারা ‘মূর্তি’ সরানোর দাবি জানান। ‘মূর্তি’ সরানো না হলে তারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনেরও ঘোষণা করেন।’

তিনি বলেন, বাংলা ট্রিবিউনের এই বক্তব্যটাও একদম উদ্দেশ্যমূলক।

জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, আমরা স্পষ্টভাবেই বলেছি, ইসলামে ইনসাফ বা ন্যায়ের ধারণা একটি কেন্দ্রীয় ধারণা এবং ন্যায়ের কোন প্রতীকায়ন যদি গ্রিক ঐতিহ্য থেকে ধার করা হয়, তবে প্রকারান্তরে এটাই ধরে নেওয়া হয় যে, আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যে ও ধর্মে ন্যায়ের কোন ধারণা ছিল না। এটা ঐপনিবেশিক ভাবাদর্শ। আমরা আমাদের ঈমান ও আক্বিদার জমিনে দাঁড়িয়ে এই ঐপনিবেশিক ভাবাদর্শের বিরুদ্ধে বলেছি।

আমরা বিশ্বাস করতে চাই, শত শত আলেমের সামনে দেওয়া এবং লাইভ টিভিতে বিশ্বব্যাপী প্রচারিত প্রধানমন্ত্রী তার আশ্বাসের যথাযথ মূল্য দিয়ে অবিলম্বে গ্রিক দেবি থেমিস অপসারণ করে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের ইচ্ছাকে সম্মান জানাবেন।

তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে গ্রিক দেবি অপসারণের দাবিতে জনমত ঐক্যবদ্ধ। সুতরাং ঈমান-আক্বিদা, জাতীয় মর্যাদা ও ঐতিহ্য বিরোধী এই ভাস্কর্য অপসারণে কোন ধরণের তালবাহানা ও অজুহাত তৈরির চেষ্টা দেশবাসী কখনোই মেনে নেবে না। দেশবাসীকে সাথে নিয়েই হেফাজত ন্যায্য দাবি আদায়ে প্রয়োজনে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচএ/এপ্রিল ১৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর