জিন্নাহর সঙ্গে এক ষোড়শীর অজানা প্রেমকাহিনী
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : মুম্বাইয়ের সবথেকে বড় ধনীদের মধ্যে একজন স্যার দিনশা পেটিট সকালের জলখাবার খেতে বসেছিলেন। খাবার টেবিলে বসেই হাতে তুলে নিয়েছিলেন নিজের প্রিয় খবরের কাগজ 'বম্বে ক্রনিক্যাল'।
খবরের কাগজে আটের পাতায় পৌঁছে একটা খবরে চোখ যেতেই কাগজটা তাঁর হাত থেকে পড়ে গিয়েছিল।
তারিখটা ছিল ২০শে এপ্রিল, ১৯১৮।
সংবাদটা ছিল স্যার দিনশার কন্যা লেডি রতিকে আগের দিন সন্ধ্যায় বিয়ে করেছেন মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
লেডি রতির পুরো নাম ছিল রতনবাই পেটিট।
ঘটনার শুরুটা হয়েছিল আরও বছর দুয়েক আগে।
স্যার দিনশা নিজের বন্ধু আর ব্যারিস্টার মুহম্মদ আলী জিন্নাহকে দার্জিলিংয়ে বেড়াতে আসার জন্য নিমন্ত্রণ করেছিলেন।
সেখানে দিনশার ১৬ বছরের কন্যা লেডি রতিও ছিলেন। সেই সময়ের মুম্বাইয়ে মিস রতির সৌন্দর্য রীতিমতো চর্চার বিষয় ছিল। আর মি: জিন্নাহ তখন ভারতীয় রাজনীতির শিখরের খুব কাছাকাছি পৌঁছেও গিয়েছিলেন।
মি: জিন্নাহর বয়স তখন প্রায় ৪০।
কিন্তু দার্জিলিংয়ের বরফে ঢাকা পাহাড় চূড়া আর নৈ:শব্দ এমনই যাদু দেখালো যে লেডি রতি ও মি: জিন্নাহ একে অন্যের প্রেমে পড়ে গেলেন।
দার্জিলিং ভ্রমণের সময়েই মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ স্যার দিনশা পেটিটের কাছে তাঁর কন্যার পাণি প্রার্থনা করেন, প্রস্তাব দেন তাঁর মেয়েকে বিয়ে করার।
'মিস্টার এন্ড মিসেস জিন্নাহ - দা ম্যারেজ দ্যাট শুক ইন্ডিয়া' [মি: ও মিসেস জিন্নাহ - যে বিবাহ ভারত কাঁপিয়ে দিয়েছিল] বইটির লেখিকা শীলা রেড্ডির কথায়, "দার্জিলিংয়েই একদিন নৈশাহারের সময়ে মি: জিন্নাহ প্রশ্ন করেছিলেন দুই ধর্মের মধ্যে বিবাহ নিয়ে স্যার দিনশার কী মতামত।"
সঙ্গে সঙ্গেই মিস রতি'র বাবা উত্তর দিয়েছিলেন যে দুই ধর্মের মধ্যে বিবাহসূত্রে মেলবন্ধন হলে জাতীয় ঐক্য দৃঢ় করতে সুবিধাই হবে।
এর থেকে পছন্দের উত্তর স্বয়ং মুহাম্মদ আলী জিন্নাহও বোধহয় দিতে পারতেন না।
তাই মুহুর্তের মধ্যে মি: জিন্নাহ ফের মুখ খুললেন, স্যার দিনশাকে জানালেন যে তিনি তাঁর মেয়েকে বিয়ে করতে চান।
তবে এই প্রস্তাবে সাংঘাতিক উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন স্যার দিনশা। উত্তেজনা এতটাই ছিল যে অতিথিকে সেই মুহুর্তে নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন তিনি।
মি: জিন্নাহ অনেক চেষ্টা করেও স্যার দিনশার মত বদলাতে পারেননি।
দুই ধর্মের মধ্যে বিবাহ বন্ধন হলে যে বন্ধুত্ব আর ঐক্য দৃঢ় হবে, স্যার দিনশার ওই তত্ত্ব প্রথম পরীক্ষাতেই ব্যর্থ হয়ে গেল।
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে কথা বলেননি স্যার দিনশা। আর মেয়ে লেডি রতির ওপরেও নির্দেশ জারি হলো- যতদিন তিনি দিনশার বাড়িতে আছেন, ততদিন জিন্নাহর সঙ্গে কোনোভাবে দেখা করতে পারবেন না।
সেখানেই শেষ নয়। কোর্ট থেকেও আদেশ বের করালেন স্যার দিনশা যেন লেডি রতি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মি: জিন্নাহ যাতে তার মেয়ের সঙ্গে দেখা না করতে পারেন।
এত কিছু করেও রতি আর জিন্নাহর লুকিয়ে দেখা করা বা একে অন্যকে চিঠি লেখা থামাতে পারেননি স্যার দিনশা পেটিট।
শীলা রেড্ডি তাঁর বইয়ে বলছেন, "একবার রতিকে একটি চিঠি পড়তে দেখে ফেলেন দিনশা। চিৎকার করে ওঠেন তিনি, এটা নিশ্চয়ই জিন্নাহর চিঠি। রতিকে ধরার জন্য খাবার টেবিলের চারদিকে দৌড়াতে থাকেন স্যার দিনশা, যাতে হাতেনাতে ধরে ফেলা যায় জিন্নাহর চিঠিটা। কিন্তু মেয়েকে ধরতে পারেননি তিনি।"
স্যার দিনশা অসম্ভব জেদি ছিলেন, কিন্তু অসমবয়সী এই প্রেমিক যুগলের জেদ যে আরও বেশী, সেটা দিনে দিনে বেশ বুঝা যেতে লাগল।
তবে দুই পক্ষই কিছুটা মাথা ঠান্ডা রেখে চুপচাপ রতির ১৮ বছর বয়স পার হওয়া অবধি অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলো।
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর আরেক জীবনীকার অধ্যাপক শারিফ আল মুজাহিদ বলছেন, "১৯১৮ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি লেডি রতি ১৮-তে পা দিলেন। আর সেদিনই একটা ছাতা আর এক জোড়া পোষাক নিয়ে পিতৃগৃহ ত্যাগ করলেন তিনি।"
রতিকে জামিয়া মসজিদে নিয়ে গেলেন জিন্নাহ। ইসলাম ধর্মান্তরিত করে পরের দিন, ১৮ই এপ্রিল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ আর লেডি রতির নিকাহ সম্পন্ন হলো।
মিস রতি ও মি: জিন্নাহ-কে নিয়ে একটি বইয়ের লেখক খওয়াজা রাজি হায়দার বলছেন, "জিন্নাহ তখন ইম্পিরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করছেন। যদি তিনি সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী বিয়ে করতেন, তাহলে সম্ভবত তাঁকে কাউন্সিল থেকে পদত্যাগ করতে হতো। সেজন্যই তিনি ইসলামী মতে বিয়ে করেছিলেন আর রতিও রাজি হয়েছিলেন এতে।"
নিকাহনামায় ১০০১ টাকা মোহরের উল্লেখ ছিল, কিন্তু জিন্নাহ রতিকে উপহার দিলেন এক লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকা। সেসময়ে সেটা বিশাল অঙ্কের টাকা।
২৪ বছরের ছোট একটি মেয়ের সঙ্গে জিন্নাহর বিবাহ সেই সময়ে ভারতীয় সমাজের এক নম্বর গসিপে পরিণত হয়েছিল। সামাজিক আলোড়নও ফেলেছিল সেই ঘটনা।
জওহরলাল নেহরুর বোন, বিজয়লক্ষী পন্ডিত তাঁর আত্মকথা, 'দা স্কোপ অফ হ্যাপিনেস' বইতে লিখছেন, "পার্শি সম্প্রদায়ের বিরাট ধনী ব্যক্তি স্যার দিনশার মেয়ের সাথে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ'র বিয়ের ঘটনা গোটা দেশেই আন্দোলিত হয়েছিল।"
"আমি আর রতি মোটামুটিভাবে একই বয়সী। কিন্তু আমাদের দুজনের বড় হয়ে ওঠা ভিন্ন ঘরানায়। জিন্নাহ তখনকার নামী উকিল আর উঠতি নেতা। এসবকিছুই হয়তো রতির ভাল লেগে গিয়েছিল। সম্ভবত সেই জন্যই পার্শি সম্প্রদায় আর নিজের বাবার প্রবল বিরোধিতা স্বত্ত্বেও জিন্নাহকে তিনি বিয়ে করেছিলেন।"
সরোজিনী নাইডুও ড: সৈয়দ মাহমুদকে পাঠানো একটি চিঠিতে জিন্নাহর বিয়ে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লিখেছিলেন, "শেষ পর্যন্ত জিন্নাহ নিজের বাসনার নীল গোলাপটা তাহলে তুলেই নিলো। আমার মনে হয় মেয়েটি যে কত বড় আত্মত্যাগ করেছে, তা বোধহয় সে কল্পনাও করতে পারছে না। কিন্তু জিন্নাহর এটা কৃতিত্ব, সে রতিকে খুবই ভালবাসে। আত্মকেন্দ্রিক আর চাপা স্বভাবের জিন্নাহর এটা একটা মানবিক চেহারা।"
খওয়াজা রাজি হায়দার বলছেন জিন্নাহর যারা প্রশংসা করে তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সরোজিনী নাইডু। ১৯১৬ সালের কংগ্রেস অধিবেশন চলাকালীন তিনি জিন্নাহকে নিয়ে একটি কবিতাও লিখেছিলেন।
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর আরেক জীবনীকার হেক্টর বোলিথো তাঁর বইতে এক বৃদ্ধা পার্শি মহিলার কথা উল্লেখ করেছেন, যাঁর ধারণা ছিল যে সরোজিনী নাইডুরও জিন্নাহর প্রতি দুর্বলতা ছিল। কিন্তু জিন্নাহ সেটাকে পাত্তাই দেননি। বরং কিছুটা শৈতল্যই দেখিয়েছিলেন সরোজিনীর প্রতি।
যদিও সরোজিনী নাইডু তৎকালীন বম্বের নাইটিঙ্গেল বলেই মনে করা হতো, দারুণ সুরেলা গলা ছিল তাঁর। কিন্তু সেই সুরেলা গলা জিন্নাহর মনে কোনো গান ধরাতে পারেনি।
তবে শীলা রেড্ডি সরাসরিই বলেছেন যে সরোজিনী জিন্নাহর প্রেমে পড়েননি, কিন্তু উনি জিন্নাহকে খুবই শ্রদ্ধা করতেন।
মি: জিন্নাহর আরেক জীবনী লেখক আজিজ বেগ অবশ্য নিজের বইতে লেডি রতি আর সরোজিনী নাইডু - এই দুজনেরই জিন্নাহর প্রতি প্রেম নিয়ে একটা আলাদা পরিচ্ছেদই লিখেছেন। নাম 'টু উইনসাম উইমেন'।
আজিজ বেগ একটি ফরাসী প্রবাদ উল্লেখ করে লিখেছেন, "একজন পুরুষের জন্যই দুই নারী একে অন্যকে অপছন্দ করতে শুরু করেন। কিন্তু সরোজিনীর মনে রতির প্রতি কোনোরকম ঈর্ষা দেখা যেত না। বাস্তব এটাই যে জিন্নাহ আর রতির বিয়েতে তিনি সাহায্যও করেছিলেন।"
১৯১৮সালের সেই বসন্তে জিন্নাহ আর রতির উচ্ছল, খুশীতে ভরপুর চেহারা দেখেই মনে হতো যে এরা একে অন্যের জন্যই যেন তৈরি হয়েছেন, হিন্দিতে যাকে বলে 'এক দুসরে কে লিয়ে হি বনে'!
রতির অপূর্ব সুন্দর শরীরে ঝলমল করতো নীল বা গোলাপি রঙের পোষাক, কখনও তাতে থাকতো সোনালী কারুকাজ।
রূপা আর মার্বেল পাথরের তৈরি সিগারেট হোল্ডারে গোঁজা বিদেশী সিগারেটের ধোঁয়া যখন ছাড়তেন রতি, তখন তাঁর ব্যক্তিত্ব আলাদা মাত্রা পেত।
তাঁর চলাফেরা, আদবকায়দা তো চোখে পড়ার মতোই ছিল, কিন্তু চারপাশের মানুষের কাছে সবথেকে আকর্ষণীয় হয়ে উঠত তাঁর হাসি।
খওয়াজা রাজি হায়দার লিখেছেন, "মেহমুদাবাদের রাজা আমীর আহমদ খাঁয়ের বয়স তখন সাড়ে চার বছরের মতো হবে। যখন জিন্নাহ আর রতি মধুচন্দ্রিমা করতে লখনৌতে খাঁ সাহেবের বাবার প্রাসাদে গিয়েছিলেন।
রতির পড়নে ছিল সাদা শাড়ি, তাতে সোনালী আর কালো রঙের পাড়। যেন ঠিক একটা পরীর মতো লাগছিল তাকে। রাজা আমির খাঁ তারপরে রতিকে দেখেন ১৯২৩ সালে, জিন্নাহ আর রতি সেসময়ে দিল্লির মেন্ডেস হোটেলে ছিলেন।
খেলনা কেনার জন্য আমির খাঁকে পাঁচশো টাকা দিয়েছিলেন তাঁরা।"
রতি আর জিন্নাহর বন্ধু কাঞ্জি দ্বারকা দাসও তাঁর বইতে লিখেছেন, "তাঁর দিক থেকে চোখ ফেরানো যেত না। যতক্ষণ না তিনি আমার নজর দেওয়াটা ধরে ফেলছেন, ততক্ষণ সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতাম।"
খওয়াজা রাজি হায়দার লেডি রতি ও মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর ব্যাপারে একটা মজাদার ঘটনা লিখে গেছেন।
"একবার বম্বের গর্ভনর উইলিংডন জিন্নাহ দম্পতিকে খেতে ডেকেছেন। রতি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন একটা লো-কাট পোষাক পড়ে। খাবার টেবিলে যখন সবাই বসেছেন, তখন লেডি উইলিংডন নিজের সহচরকে বলেন যে রতি জিন্নাহকে একটা শাল এনে দিতে, সম্ভবত তাঁর শীত করছে।"
"এটা শুনেই মি: জিন্নাহ উঠে দাঁড়িয়ে বলেন যদি আমার স্ত্রীর শীত লাগে তাহলে তিনি নিজেই শাল চেয়ে নেবেন।"
স্ত্রীকে নিয়ে ডাইনিং হল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন জিন্নাহ। উইলিংডন গর্ভনর থাকাকালীন আর গর্ভনমেন্ট হাউসে যাননি তিনি।
রতির কথাবার্তা বেশ চাঁছাছোলা ছিল, স্পষ্টবাদী ছিলেন তিনি।
শীলা রেড্ডি লিখেছেন, "১৯১৮ সালে লর্ড চেমসফোর্ড দুজনকে সিমলার ভাইসরয় লজে খেতে ডেকেছেন। হাতজোড় করে ভারতীয় কায়দায় ভাইসরয়কে অভিবাদন জানিয়েছিলেন রতি। ভোজনের শেষে চেমসফোর্ড রতিকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে তিনি যদি চান যে স্বামীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আরও ফুলে ফেঁপে উঠুক, তাহলে সেরকমই করা উচিত যেমনটা রোমে থাকলে রোমের বাসিন্দারা করে থাকেন।"
"রতি সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দিয়েছিলেন, 'এক্সেলেন্সি, আমি তো ঠিক সেটাই করলাম, যেটা আপনি বলছেন! ভারতে আছি, তাই ভারতীয় কায়দায় আপনাকে অভিবাদন জানালাম'!"
আরেকটি মজাদার ঘটনা উল্লেখ করেছেন রাজি হায়দার।
কোনও এক ভোজসভায় ভাইসরয় লর্ড রিডিংয়ের পাশে বসেছিলেন লেডি রতি।
জার্মানির কথা উঠেছিল। লর্ড রিডিং বলছিলেন যে তিনি জার্মানি যেতে চান, কিন্তু যুদ্ধের পরে জার্মানরা ব্রিটেনের লোকদের পছন্দ করবে না, তাই সেখানে যাওয়া যাবে না।
রতি মুখের ওপরেই বলে দিয়েছিলেন, "তো আপনি ভারতে কী করতে এসেছেন?"
ইঙ্গিতটা স্পষ্ট - ভারতীয়রাওতো আপনাদের পছন্দ করে না, তাহলে এদেশে কেন এসেছেন?
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর ব্যস্ততা আর স্ত্রীর সঙ্গে বয়সের ফারাক জিন্নাহ আর রতির মধ্যে ধীরে ধীরে কিছুটা দূরত্ব তৈরি করে দিল। তখন অল্পবয়সী স্ত্রী আর দুধের শিশুকন্যার জন্য দেওয়ার মতো সময় তাঁর হাতে বিশেষ ছিল না।
জিন্নাহর একসময়কার সচিব এম সি চাগলা, যিনি পরে ভারতের বিদেশ মন্ত্রী হয়েছিলেন, তিনি স্মৃতিকথায় লিখেছেন, "আমি আর মি. জিন্নাহ যখন কোনো আইনী বিষয়ে আলোচনা করতাম, তখন কয়েক সময়ে রতি একটু বেশিই সাজগোজ করে চলে আসতেন আর জিন্নাহর টেবিলের ওপরে উঠে বসে পা দোলাতেন। মনে হতো যেন কখন জিন্নাহ কথাবার্তা শেষ করে তাঁকে নিয়ে বাইরে বের হবেন।"
"মি. জিন্নাহর মুখ দিয়ে অবশ্য একটা শব্দও বের হতো না। কোনোরকম বিরক্তি প্রকাশ না করেই তিনি নিজের মতো কাজ করে যেতেন। যেন লেডি রতি যে সেখানে আছে, সেটা তিনি দেখতেই পাননি"- নিজের আত্মকথা 'রোজেজ ইন ডিসেম্বর'-এ লিখেছেন মি. চাগলা।
রাজি হায়দার অবশ্য মনে করেন যে দুজনের মধ্যে একটা হাল্কা দূরত্ব তৈরি হওয়ার কারণটা ছিল রাজনৈতিক।
১৯২৬ সাল নাগাদ ভারতের রাজনীতিতে জিন্নাহর যে অবস্থান ছিল, সেটা ১৯১৬সালে তাঁদের বিয়ের সময়ের থেকে অনেক উঁচুতে। আর এই কতগুলো বছরে মি: জিন্নাহ সাম্প্রদায়িক রাজনীতি শুরু করেছেন। অন্যদিকে লেডি রতিও মাঝেমাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়তেন।
একবার অসুস্থতার পরে ফ্রান্স থেকে এম এস রাজপুতানা নামের জাহাজে চেপে দেশে ফেরার সময়ে স্বামীকে একটা চিঠি লিখেছিলেন রতি।
"আমার জন্য তুমি যা করেছ, তার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমি তোমাকে যতটা চেয়েছিলাম, আর কোনো পুরুষমানুষকেই কোনো নারী বোধহয় অতটা চায় নি কখনও। তুমি আমাকে ওই ফুলটার মতো করেই মনে রেখ যেটা ছিঁড়ে এনেছিলে। যে ফুলটাকে তুমি পা দিয়ে মাড়িয়ে দিয়েছ, সেটাকে মনে রাখার দরকার নেই," লিখেছিলেন রতি জিন্নাহ।
১৯২৯ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারী, মাত্র ২৯ বছর বয়সে রতি জিন্নাহ মারা যান।
শেষ সময়টায় তাঁর সঙ্গী ছিলেন কাঞ্জি দ্বারকা দাস।
শীলা রেড্ডি লিখছেন, "কাঞ্চিই জানিয়েছিলেন যে শেষ দিনগুলোয় রতি খুব মনমরা হয়ে থাকতেন। একবার কাঞ্জি রতিকে বলেছিলেন তাঁর আসতে একটু দেরী হবে। শুকনো মুখে রতি জবাব দিয়েছিলেন, 'ততক্ষণ অবধি যদি বেঁচে থাকি'। পরে কাঞ্জিই এক পাকিস্তানি সাংবাদিককে বলেছিলেন অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন রতি।"
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ সেদিন দিল্লিতে ওয়েস্টার্ন কোর্ট ভবনে ছিলেন। তখনই একটা ট্রাঙ্ক কল আসে তাঁর কাছে। ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন শ্বশুর দিনশা পেটিট।
দশ বছরের মধ্যে সেই প্রথমবার দুজনের কথা হয়।
মেয়ে যে খুব অসুস্থ, সেই খবরটা জিন্নাহকে জানিয়েছিলেন মি: দিনশা।
সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ট্রেনে করে মুম্বাইয়ের দিকে রওনা হন।
পথেই ভাইসরয় আর অন্যান্য মান্যগণ্যদের টেলিগ্রাম আসতে থাকে, শোকজ্ঞাপন করা টেলিগ্রাম।
জিন্নাহ বুঝতে পারেন যে রতি আর এই পৃথিবীতে নেই।
স্টেশন থেকে সোজা কবরস্থানে গিয়েছিলেন জিন্নাহ। সেখানে তাঁর জন্যই সকলে অপেক্ষা করছিল।
সবচেয়ে কাছের আত্মীয় হিসেবে যখন জিন্নাহকে অনুরোধ করা হয়েছিল কবরে মাটি দিতে, তখন ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠেছিলেন জিন্নাহ।
সেই প্রথম, আর সেই শেষবার মুহাম্মদ আলী জিন্নাহকে জনসমক্ষে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল।
বিবিসি বাংলার সৌজন্যে
(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭)
পাঠকের মতামত:
- কাঁচামালের অভাবে বন্ধ দেশবন্ধু গ্রুপের সুগার রিফাইনারি মিল
- বিশ্বখ্যাত ১ নম্বার ইলেকট্রিক স্কুটার প্রস্তুতকারী ব্র্যান্ড Yadea এখন পঞ্চগড়ে
- ২০ কোম্পানির পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা
- যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর গাজায় মিলল শতাধিক লাশ
- বড় জয়ে ‘সরাসরি’ বিশ্বকাপে খেলার আশা টিকিয়ে রাখল বাংলাদেশ
- সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ফের রিমান্ডে
- চাঁদাবাজি ও ঘুস বন্ধে ‘গুন্ডা প্রতিরোধ স্কোয়াড’ গঠনের সুপারিশ
- টাকা দিয়েও মালয়েশিয়া যেতে না পারায় মন্ত্রণালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের বৈঠক
- জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ছাড়লেন সারজিস আলম
- বোমা হামলার হুমকি পাওয়া সেই বিমানে তল্লাশি চলছে
- হাসিনার গোপন কারাগারে আটক থাকত শিশুরাও, দেওয়া হতো না মায়ের দুধ
- তাপমাত্রা বাড়ার পূর্বাভাস
- নাঈম নৈপুণ্যে রাজশাহীকে হারাল চিটাগং
- আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সমস্যার সমাধান করা উচিত: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
- হাসপাতালে গিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের ভোটার করবে ইসি
- ২৪৬ স্কোর নিয়ে ঢাকার বাতাস আজ ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’
- ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিলেন ট্রাম্প
- ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় জড়িত ১৫০০ জনকে ক্ষমা করলেন ট্রাম্প
- মেডিকেলে কোটায় উত্তীর্ণ ১৯৩ জনের ফল স্থগিত
- ছয় সংস্কার কমিশনের মেয়াদ বাড়ল
- সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত স্বাভাবিক, কৃষি কাজে ব্যস্ত কৃষকেরা
- বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ‘হিটম্যাপ’ প্রকাশ করল বিডা
- পালমাসকে উড়িয়ে চূড়ায় রিয়াল মাদ্রিদ
- বেস্ট হোল্ডিংসের ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়
- বিজয়ের সেঞ্চুরি ম্লান করে হাসানের দারুণ বোলিংয়ে খুলনার জয়
- ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আজ
- মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা : জাতীয় মেধা তালিকায় শীর্ষে যারা
- ঢাবিতে আবার ‘কোটা না মেধা’ স্লোগান, বিক্ষোভ
- চার শিক্ষা বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান
- শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন, পদ পেলেন যারা
- পুরোনো ভাবাদর্শিক বন্দোবস্ত সক্রিয় হয়ে গেছে: মাহফুজ আলম
- ৯০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল
- পররাষ্ট্র উপদেষ্টার চীন সফরে সম্পর্কে যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন মাত্রা
- রাতে সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
- কাজী নজরুলের নাতি বাবুল লাইফ সাপোর্টে
- নতুন বাজারে ৬৩৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি
- বিএফআইইউর সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাস কারাগারে
- মঙ্গলবার থেকে অবৈধ অভিবাসীদের গণগ্রেপ্তার শুরু যুক্তরাষ্ট্রে
- ওষুধের ভ্যাট কমাতে সুপারিশ করা হয়েছে: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
- "যেকোনো উপায়ে সাধারণ মানুষের ভোট প্রদানের অধিকার থাকতে হবে"
- শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করা হবে: শফিকুল আলম
- ফ্যাসিস্ট যেন সংসদে ফিরে আসতে না পারে: বদিউল আলম
- ঋণ খেলাপিদের মনোনয়ন দেবে না বিএনপি, ফখরুলের অঙ্গীকার
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে সংঘর্ষ: দুঃখ প্রকাশ করলো বিএসএফ
- "ব্যাংক খাত পেলেও পুঁজিবাজার পায়নি সংস্কার সহায়তা"
- যশোর জেলা জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের ২৭ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
- এআইবি পিএলসির উদ্যোগে কম্বল বিতরণ
- ইসলামী ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলনের শুরু
- ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের ‘পার্টনার্স টুগেদার-২০২৫’ সমাপ্ত
- অবশেষে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করল ইসরাইল
- যোগ্যকে বাদ দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ বাগিয়ে নেন পুতুল
- "দেশে আসেন, কাশিমপুরে ভালো ব্যবস্থা করা হবে"
- "পয়লা বৈশাখে স্থানীয় নামসহ নদ-নদীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ"
- ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে অভিমত জানাতে পারবেন সাধারণ নাগরিকরা
- শাপলা চত্বরে হেফাজত দমন: হাসিনার নির্দেশে ক্র্যাকডাউন
- আমদানি করায় কমছে চালের দাম
- "রক্তে যখন শরীর ভেসে যাচ্ছিল, তখন সিংহের মতো হাঁটছিলেন সাইফ"
- কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা, অপরিবর্তিত থাকবে রাতের
- বেশি খেলা হয়ে যাচ্ছে? বিশ্রাম নিয়ে যা ভাবছেন নাহিদ রানা
- রোহিত-কোহলিদের পাকিস্তানি আতিথেয়তার লোভ দেখালেন ফখর
- দুর্নীতির মামলায় ইমরান খানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড
- ফেসবুকে নিজের সম্পদের হিসাব দিলেন প্রেসসচিব শফিকুল আলম
- ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ মান নিয়ে বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান শীর্ষে
- এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
- মিয়ানমার থেকে এলো ২২ হাজার মেট্রিক টন চাল
- আগের দামেই পেঁয়াজ, কমেছে সবজির
- অনতিবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে: জয়নুল আবদিন
- ৩ কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর
- নটিংহ্যামের বিপক্ষে লিভারপুলের ড্র
- আইসিসির ডিসেম্বর মাসের সেরা বুমরাহ
- গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা শেষ পর্যায়ে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হতে পারে চুক্তি
- সাড়ে ৫ কোটি লিটার ভোজ্যতেল কিনছে সরকার
- ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মতিউর ও তার স্ত্রী গ্রেপ্তার
- শাপলা চত্বরে হেফাজত দমন: হাসিনার নির্দেশে ক্র্যাকডাউন
- "রক্তে যখন শরীর ভেসে যাচ্ছিল, তখন সিংহের মতো হাঁটছিলেন সাইফ"
- অবশেষে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করল ইসরাইল
- ঢাবিতে আবার ‘কোটা না মেধা’ স্লোগান, বিক্ষোভ
- মঙ্গলবার থেকে অবৈধ অভিবাসীদের গণগ্রেপ্তার শুরু যুক্তরাষ্ট্রে
- আগের দামেই পেঁয়াজ, কমেছে সবজির
- নতুন বাজারে ৬৩৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি
- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে সংঘর্ষ: দুঃখ প্রকাশ করলো বিএসএফ
- মিয়ানমার থেকে এলো ২২ হাজার মেট্রিক টন চাল
- যোগ্যকে বাদ দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ বাগিয়ে নেন পুতুল
- ফেসবুকে নিজের সম্পদের হিসাব দিলেন প্রেসসচিব শফিকুল আলম
- কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা, অপরিবর্তিত থাকবে রাতের
- পুরোনো ভাবাদর্শিক বন্দোবস্ত সক্রিয় হয়ে গেছে: মাহফুজ আলম
- অনতিবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে: জয়নুল আবদিন
- আমদানি করায় কমছে চালের দাম
- বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ‘হিটম্যাপ’ প্রকাশ করল বিডা
- ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের ‘পার্টনার্স টুগেদার-২০২৫’ সমাপ্ত
- দুর্নীতির মামলায় ইমরান খানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড
- ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ মান নিয়ে বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান শীর্ষে
- কাজী নজরুলের নাতি বাবুল লাইফ সাপোর্টে
- এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
- ঋণ খেলাপিদের মনোনয়ন দেবে না বিএনপি, ফখরুলের অঙ্গীকার
- রোহিত-কোহলিদের পাকিস্তানি আতিথেয়তার লোভ দেখালেন ফখর
- বেশি খেলা হয়ে যাচ্ছে? বিশ্রাম নিয়ে যা ভাবছেন নাহিদ রানা
- মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা : জাতীয় মেধা তালিকায় শীর্ষে যারা