জিন্নাহর সঙ্গে এক ষোড়শীর অজানা প্রেমকাহিনী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : মুম্বাইয়ের সবথেকে বড় ধনীদের মধ্যে একজন স্যার দিনশা পেটিট সকালের জলখাবার খেতে বসেছিলেন। খাবার টেবিলে বসেই হাতে তুলে নিয়েছিলেন নিজের প্রিয় খবরের কাগজ 'বম্বে ক্রনিক্যাল'।
খবরের কাগজে আটের পাতায় পৌঁছে একটা খবরে চোখ যেতেই কাগজটা তাঁর হাত থেকে পড়ে গিয়েছিল।
তারিখটা ছিল ২০শে এপ্রিল, ১৯১৮।
সংবাদটা ছিল স্যার দিনশার কন্যা লেডি রতিকে আগের দিন সন্ধ্যায় বিয়ে করেছেন মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
লেডি রতির পুরো নাম ছিল রতনবাই পেটিট।
ঘটনার শুরুটা হয়েছিল আরও বছর দুয়েক আগে।
স্যার দিনশা নিজের বন্ধু আর ব্যারিস্টার মুহম্মদ আলী জিন্নাহকে দার্জিলিংয়ে বেড়াতে আসার জন্য নিমন্ত্রণ করেছিলেন।
সেখানে দিনশার ১৬ বছরের কন্যা লেডি রতিও ছিলেন। সেই সময়ের মুম্বাইয়ে মিস রতির সৌন্দর্য রীতিমতো চর্চার বিষয় ছিল। আর মি: জিন্নাহ তখন ভারতীয় রাজনীতির শিখরের খুব কাছাকাছি পৌঁছেও গিয়েছিলেন।
মি: জিন্নাহর বয়স তখন প্রায় ৪০।
কিন্তু দার্জিলিংয়ের বরফে ঢাকা পাহাড় চূড়া আর নৈ:শব্দ এমনই যাদু দেখালো যে লেডি রতি ও মি: জিন্নাহ একে অন্যের প্রেমে পড়ে গেলেন।
দার্জিলিং ভ্রমণের সময়েই মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ স্যার দিনশা পেটিটের কাছে তাঁর কন্যার পাণি প্রার্থনা করেন, প্রস্তাব দেন তাঁর মেয়েকে বিয়ে করার।
'মিস্টার এন্ড মিসেস জিন্নাহ - দা ম্যারেজ দ্যাট শুক ইন্ডিয়া' [মি: ও মিসেস জিন্নাহ - যে বিবাহ ভারত কাঁপিয়ে দিয়েছিল] বইটির লেখিকা শীলা রেড্ডির কথায়, "দার্জিলিংয়েই একদিন নৈশাহারের সময়ে মি: জিন্নাহ প্রশ্ন করেছিলেন দুই ধর্মের মধ্যে বিবাহ নিয়ে স্যার দিনশার কী মতামত।"
সঙ্গে সঙ্গেই মিস রতি'র বাবা উত্তর দিয়েছিলেন যে দুই ধর্মের মধ্যে বিবাহসূত্রে মেলবন্ধন হলে জাতীয় ঐক্য দৃঢ় করতে সুবিধাই হবে।
এর থেকে পছন্দের উত্তর স্বয়ং মুহাম্মদ আলী জিন্নাহও বোধহয় দিতে পারতেন না।
তাই মুহুর্তের মধ্যে মি: জিন্নাহ ফের মুখ খুললেন, স্যার দিনশাকে জানালেন যে তিনি তাঁর মেয়েকে বিয়ে করতে চান।
তবে এই প্রস্তাবে সাংঘাতিক উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন স্যার দিনশা। উত্তেজনা এতটাই ছিল যে অতিথিকে সেই মুহুর্তে নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন তিনি।
মি: জিন্নাহ অনেক চেষ্টা করেও স্যার দিনশার মত বদলাতে পারেননি।
দুই ধর্মের মধ্যে বিবাহ বন্ধন হলে যে বন্ধুত্ব আর ঐক্য দৃঢ় হবে, স্যার দিনশার ওই তত্ত্ব প্রথম পরীক্ষাতেই ব্যর্থ হয়ে গেল।
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর সঙ্গে কথা বলেননি স্যার দিনশা। আর মেয়ে লেডি রতির ওপরেও নির্দেশ জারি হলো- যতদিন তিনি দিনশার বাড়িতে আছেন, ততদিন জিন্নাহর সঙ্গে কোনোভাবে দেখা করতে পারবেন না।
সেখানেই শেষ নয়। কোর্ট থেকেও আদেশ বের করালেন স্যার দিনশা যেন লেডি রতি প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মি: জিন্নাহ যাতে তার মেয়ের সঙ্গে দেখা না করতে পারেন।
এত কিছু করেও রতি আর জিন্নাহর লুকিয়ে দেখা করা বা একে অন্যকে চিঠি লেখা থামাতে পারেননি স্যার দিনশা পেটিট।
শীলা রেড্ডি তাঁর বইয়ে বলছেন, "একবার রতিকে একটি চিঠি পড়তে দেখে ফেলেন দিনশা। চিৎকার করে ওঠেন তিনি, এটা নিশ্চয়ই জিন্নাহর চিঠি। রতিকে ধরার জন্য খাবার টেবিলের চারদিকে দৌড়াতে থাকেন স্যার দিনশা, যাতে হাতেনাতে ধরে ফেলা যায় জিন্নাহর চিঠিটা। কিন্তু মেয়েকে ধরতে পারেননি তিনি।"
স্যার দিনশা অসম্ভব জেদি ছিলেন, কিন্তু অসমবয়সী এই প্রেমিক যুগলের জেদ যে আরও বেশী, সেটা দিনে দিনে বেশ বুঝা যেতে লাগল।
তবে দুই পক্ষই কিছুটা মাথা ঠান্ডা রেখে চুপচাপ রতির ১৮ বছর বয়স পার হওয়া অবধি অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলো।
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর আরেক জীবনীকার অধ্যাপক শারিফ আল মুজাহিদ বলছেন, "১৯১৮ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি লেডি রতি ১৮-তে পা দিলেন। আর সেদিনই একটা ছাতা আর এক জোড়া পোষাক নিয়ে পিতৃগৃহ ত্যাগ করলেন তিনি।"
রতিকে জামিয়া মসজিদে নিয়ে গেলেন জিন্নাহ। ইসলাম ধর্মান্তরিত করে পরের দিন, ১৮ই এপ্রিল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ আর লেডি রতির নিকাহ সম্পন্ন হলো।
মিস রতি ও মি: জিন্নাহ-কে নিয়ে একটি বইয়ের লেখক খওয়াজা রাজি হায়দার বলছেন, "জিন্নাহ তখন ইম্পিরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করছেন। যদি তিনি সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুযায়ী বিয়ে করতেন, তাহলে সম্ভবত তাঁকে কাউন্সিল থেকে পদত্যাগ করতে হতো। সেজন্যই তিনি ইসলামী মতে বিয়ে করেছিলেন আর রতিও রাজি হয়েছিলেন এতে।"
নিকাহনামায় ১০০১ টাকা মোহরের উল্লেখ ছিল, কিন্তু জিন্নাহ রতিকে উপহার দিলেন এক লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকা। সেসময়ে সেটা বিশাল অঙ্কের টাকা।
২৪ বছরের ছোট একটি মেয়ের সঙ্গে জিন্নাহর বিবাহ সেই সময়ে ভারতীয় সমাজের এক নম্বর গসিপে পরিণত হয়েছিল। সামাজিক আলোড়নও ফেলেছিল সেই ঘটনা।
জওহরলাল নেহরুর বোন, বিজয়লক্ষী পন্ডিত তাঁর আত্মকথা, 'দা স্কোপ অফ হ্যাপিনেস' বইতে লিখছেন, "পার্শি সম্প্রদায়ের বিরাট ধনী ব্যক্তি স্যার দিনশার মেয়ের সাথে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ'র বিয়ের ঘটনা গোটা দেশেই আন্দোলিত হয়েছিল।"
"আমি আর রতি মোটামুটিভাবে একই বয়সী। কিন্তু আমাদের দুজনের বড় হয়ে ওঠা ভিন্ন ঘরানায়। জিন্নাহ তখনকার নামী উকিল আর উঠতি নেতা। এসবকিছুই হয়তো রতির ভাল লেগে গিয়েছিল। সম্ভবত সেই জন্যই পার্শি সম্প্রদায় আর নিজের বাবার প্রবল বিরোধিতা স্বত্ত্বেও জিন্নাহকে তিনি বিয়ে করেছিলেন।"
সরোজিনী নাইডুও ড: সৈয়দ মাহমুদকে পাঠানো একটি চিঠিতে জিন্নাহর বিয়ে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লিখেছিলেন, "শেষ পর্যন্ত জিন্নাহ নিজের বাসনার নীল গোলাপটা তাহলে তুলেই নিলো। আমার মনে হয় মেয়েটি যে কত বড় আত্মত্যাগ করেছে, তা বোধহয় সে কল্পনাও করতে পারছে না। কিন্তু জিন্নাহর এটা কৃতিত্ব, সে রতিকে খুবই ভালবাসে। আত্মকেন্দ্রিক আর চাপা স্বভাবের জিন্নাহর এটা একটা মানবিক চেহারা।"
খওয়াজা রাজি হায়দার বলছেন জিন্নাহর যারা প্রশংসা করে তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সরোজিনী নাইডু। ১৯১৬ সালের কংগ্রেস অধিবেশন চলাকালীন তিনি জিন্নাহকে নিয়ে একটি কবিতাও লিখেছিলেন।
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর আরেক জীবনীকার হেক্টর বোলিথো তাঁর বইতে এক বৃদ্ধা পার্শি মহিলার কথা উল্লেখ করেছেন, যাঁর ধারণা ছিল যে সরোজিনী নাইডুরও জিন্নাহর প্রতি দুর্বলতা ছিল। কিন্তু জিন্নাহ সেটাকে পাত্তাই দেননি। বরং কিছুটা শৈতল্যই দেখিয়েছিলেন সরোজিনীর প্রতি।
যদিও সরোজিনী নাইডু তৎকালীন বম্বের নাইটিঙ্গেল বলেই মনে করা হতো, দারুণ সুরেলা গলা ছিল তাঁর। কিন্তু সেই সুরেলা গলা জিন্নাহর মনে কোনো গান ধরাতে পারেনি।
তবে শীলা রেড্ডি সরাসরিই বলেছেন যে সরোজিনী জিন্নাহর প্রেমে পড়েননি, কিন্তু উনি জিন্নাহকে খুবই শ্রদ্ধা করতেন।
মি: জিন্নাহর আরেক জীবনী লেখক আজিজ বেগ অবশ্য নিজের বইতে লেডি রতি আর সরোজিনী নাইডু - এই দুজনেরই জিন্নাহর প্রতি প্রেম নিয়ে একটা আলাদা পরিচ্ছেদই লিখেছেন। নাম 'টু উইনসাম উইমেন'।
আজিজ বেগ একটি ফরাসী প্রবাদ উল্লেখ করে লিখেছেন, "একজন পুরুষের জন্যই দুই নারী একে অন্যকে অপছন্দ করতে শুরু করেন। কিন্তু সরোজিনীর মনে রতির প্রতি কোনোরকম ঈর্ষা দেখা যেত না। বাস্তব এটাই যে জিন্নাহ আর রতির বিয়েতে তিনি সাহায্যও করেছিলেন।"
১৯১৮সালের সেই বসন্তে জিন্নাহ আর রতির উচ্ছল, খুশীতে ভরপুর চেহারা দেখেই মনে হতো যে এরা একে অন্যের জন্যই যেন তৈরি হয়েছেন, হিন্দিতে যাকে বলে 'এক দুসরে কে লিয়ে হি বনে'!
রতির অপূর্ব সুন্দর শরীরে ঝলমল করতো নীল বা গোলাপি রঙের পোষাক, কখনও তাতে থাকতো সোনালী কারুকাজ।
রূপা আর মার্বেল পাথরের তৈরি সিগারেট হোল্ডারে গোঁজা বিদেশী সিগারেটের ধোঁয়া যখন ছাড়তেন রতি, তখন তাঁর ব্যক্তিত্ব আলাদা মাত্রা পেত।
তাঁর চলাফেরা, আদবকায়দা তো চোখে পড়ার মতোই ছিল, কিন্তু চারপাশের মানুষের কাছে সবথেকে আকর্ষণীয় হয়ে উঠত তাঁর হাসি।
খওয়াজা রাজি হায়দার লিখেছেন, "মেহমুদাবাদের রাজা আমীর আহমদ খাঁয়ের বয়স তখন সাড়ে চার বছরের মতো হবে। যখন জিন্নাহ আর রতি মধুচন্দ্রিমা করতে লখনৌতে খাঁ সাহেবের বাবার প্রাসাদে গিয়েছিলেন।
রতির পড়নে ছিল সাদা শাড়ি, তাতে সোনালী আর কালো রঙের পাড়। যেন ঠিক একটা পরীর মতো লাগছিল তাকে। রাজা আমির খাঁ তারপরে রতিকে দেখেন ১৯২৩ সালে, জিন্নাহ আর রতি সেসময়ে দিল্লির মেন্ডেস হোটেলে ছিলেন।
খেলনা কেনার জন্য আমির খাঁকে পাঁচশো টাকা দিয়েছিলেন তাঁরা।"
রতি আর জিন্নাহর বন্ধু কাঞ্জি দ্বারকা দাসও তাঁর বইতে লিখেছেন, "তাঁর দিক থেকে চোখ ফেরানো যেত না। যতক্ষণ না তিনি আমার নজর দেওয়াটা ধরে ফেলছেন, ততক্ষণ সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতাম।"
খওয়াজা রাজি হায়দার লেডি রতি ও মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর ব্যাপারে একটা মজাদার ঘটনা লিখে গেছেন।
"একবার বম্বের গর্ভনর উইলিংডন জিন্নাহ দম্পতিকে খেতে ডেকেছেন। রতি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন একটা লো-কাট পোষাক পড়ে। খাবার টেবিলে যখন সবাই বসেছেন, তখন লেডি উইলিংডন নিজের সহচরকে বলেন যে রতি জিন্নাহকে একটা শাল এনে দিতে, সম্ভবত তাঁর শীত করছে।"
"এটা শুনেই মি: জিন্নাহ উঠে দাঁড়িয়ে বলেন যদি আমার স্ত্রীর শীত লাগে তাহলে তিনি নিজেই শাল চেয়ে নেবেন।"
স্ত্রীকে নিয়ে ডাইনিং হল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন জিন্নাহ। উইলিংডন গর্ভনর থাকাকালীন আর গর্ভনমেন্ট হাউসে যাননি তিনি।
রতির কথাবার্তা বেশ চাঁছাছোলা ছিল, স্পষ্টবাদী ছিলেন তিনি।
শীলা রেড্ডি লিখেছেন, "১৯১৮ সালে লর্ড চেমসফোর্ড দুজনকে সিমলার ভাইসরয় লজে খেতে ডেকেছেন। হাতজোড় করে ভারতীয় কায়দায় ভাইসরয়কে অভিবাদন জানিয়েছিলেন রতি। ভোজনের শেষে চেমসফোর্ড রতিকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে তিনি যদি চান যে স্বামীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আরও ফুলে ফেঁপে উঠুক, তাহলে সেরকমই করা উচিত যেমনটা রোমে থাকলে রোমের বাসিন্দারা করে থাকেন।"
"রতি সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দিয়েছিলেন, 'এক্সেলেন্সি, আমি তো ঠিক সেটাই করলাম, যেটা আপনি বলছেন! ভারতে আছি, তাই ভারতীয় কায়দায় আপনাকে অভিবাদন জানালাম'!"
আরেকটি মজাদার ঘটনা উল্লেখ করেছেন রাজি হায়দার।
কোনও এক ভোজসভায় ভাইসরয় লর্ড রিডিংয়ের পাশে বসেছিলেন লেডি রতি।
জার্মানির কথা উঠেছিল। লর্ড রিডিং বলছিলেন যে তিনি জার্মানি যেতে চান, কিন্তু যুদ্ধের পরে জার্মানরা ব্রিটেনের লোকদের পছন্দ করবে না, তাই সেখানে যাওয়া যাবে না।
রতি মুখের ওপরেই বলে দিয়েছিলেন, "তো আপনি ভারতে কী করতে এসেছেন?"
ইঙ্গিতটা স্পষ্ট - ভারতীয়রাওতো আপনাদের পছন্দ করে না, তাহলে এদেশে কেন এসেছেন?
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর ব্যস্ততা আর স্ত্রীর সঙ্গে বয়সের ফারাক জিন্নাহ আর রতির মধ্যে ধীরে ধীরে কিছুটা দূরত্ব তৈরি করে দিল। তখন অল্পবয়সী স্ত্রী আর দুধের শিশুকন্যার জন্য দেওয়ার মতো সময় তাঁর হাতে বিশেষ ছিল না।
জিন্নাহর একসময়কার সচিব এম সি চাগলা, যিনি পরে ভারতের বিদেশ মন্ত্রী হয়েছিলেন, তিনি স্মৃতিকথায় লিখেছেন, "আমি আর মি. জিন্নাহ যখন কোনো আইনী বিষয়ে আলোচনা করতাম, তখন কয়েক সময়ে রতি একটু বেশিই সাজগোজ করে চলে আসতেন আর জিন্নাহর টেবিলের ওপরে উঠে বসে পা দোলাতেন। মনে হতো যেন কখন জিন্নাহ কথাবার্তা শেষ করে তাঁকে নিয়ে বাইরে বের হবেন।"
"মি. জিন্নাহর মুখ দিয়ে অবশ্য একটা শব্দও বের হতো না। কোনোরকম বিরক্তি প্রকাশ না করেই তিনি নিজের মতো কাজ করে যেতেন। যেন লেডি রতি যে সেখানে আছে, সেটা তিনি দেখতেই পাননি"- নিজের আত্মকথা 'রোজেজ ইন ডিসেম্বর'-এ লিখেছেন মি. চাগলা।
রাজি হায়দার অবশ্য মনে করেন যে দুজনের মধ্যে একটা হাল্কা দূরত্ব তৈরি হওয়ার কারণটা ছিল রাজনৈতিক।
১৯২৬ সাল নাগাদ ভারতের রাজনীতিতে জিন্নাহর যে অবস্থান ছিল, সেটা ১৯১৬সালে তাঁদের বিয়ের সময়ের থেকে অনেক উঁচুতে। আর এই কতগুলো বছরে মি: জিন্নাহ সাম্প্রদায়িক রাজনীতি শুরু করেছেন। অন্যদিকে লেডি রতিও মাঝেমাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়তেন।
একবার অসুস্থতার পরে ফ্রান্স থেকে এম এস রাজপুতানা নামের জাহাজে চেপে দেশে ফেরার সময়ে স্বামীকে একটা চিঠি লিখেছিলেন রতি।
"আমার জন্য তুমি যা করেছ, তার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমি তোমাকে যতটা চেয়েছিলাম, আর কোনো পুরুষমানুষকেই কোনো নারী বোধহয় অতটা চায় নি কখনও। তুমি আমাকে ওই ফুলটার মতো করেই মনে রেখ যেটা ছিঁড়ে এনেছিলে। যে ফুলটাকে তুমি পা দিয়ে মাড়িয়ে দিয়েছ, সেটাকে মনে রাখার দরকার নেই," লিখেছিলেন রতি জিন্নাহ।
১৯২৯ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারী, মাত্র ২৯ বছর বয়সে রতি জিন্নাহ মারা যান।
শেষ সময়টায় তাঁর সঙ্গী ছিলেন কাঞ্জি দ্বারকা দাস।
শীলা রেড্ডি লিখছেন, "কাঞ্চিই জানিয়েছিলেন যে শেষ দিনগুলোয় রতি খুব মনমরা হয়ে থাকতেন। একবার কাঞ্জি রতিকে বলেছিলেন তাঁর আসতে একটু দেরী হবে। শুকনো মুখে রতি জবাব দিয়েছিলেন, 'ততক্ষণ অবধি যদি বেঁচে থাকি'। পরে কাঞ্জিই এক পাকিস্তানি সাংবাদিককে বলেছিলেন অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন রতি।"
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ সেদিন দিল্লিতে ওয়েস্টার্ন কোর্ট ভবনে ছিলেন। তখনই একটা ট্রাঙ্ক কল আসে তাঁর কাছে। ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন শ্বশুর দিনশা পেটিট।
দশ বছরের মধ্যে সেই প্রথমবার দুজনের কথা হয়।
মেয়ে যে খুব অসুস্থ, সেই খবরটা জিন্নাহকে জানিয়েছিলেন মি: দিনশা।
সঙ্গে সঙ্গেই তিনি ট্রেনে করে মুম্বাইয়ের দিকে রওনা হন।
পথেই ভাইসরয় আর অন্যান্য মান্যগণ্যদের টেলিগ্রাম আসতে থাকে, শোকজ্ঞাপন করা টেলিগ্রাম।
জিন্নাহ বুঝতে পারেন যে রতি আর এই পৃথিবীতে নেই।
স্টেশন থেকে সোজা কবরস্থানে গিয়েছিলেন জিন্নাহ। সেখানে তাঁর জন্যই সকলে অপেক্ষা করছিল।
সবচেয়ে কাছের আত্মীয় হিসেবে যখন জিন্নাহকে অনুরোধ করা হয়েছিল কবরে মাটি দিতে, তখন ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠেছিলেন জিন্নাহ।
সেই প্রথম, আর সেই শেষবার মুহাম্মদ আলী জিন্নাহকে জনসমক্ষে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল।
বিবিসি বাংলার সৌজন্যে
(দ্য রিপোর্ট/জেডটি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৭)
পাঠকের মতামত:

- গাজায় ক্যাফে, স্কুল এবং ত্রাণ কেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৯৫
- আল হিলালের কাছে হেরে ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ম্যানসিটির
- শান্তর ওপর আস্থা রাখছেন অধিনায়ক মিরাজ
- সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করলো সরকার
- আমরা এক থাকলে আমাদের সামনে কিছুই টিকতে পারবে না: ফারুকী
- আগামী বছরের শুরুর দিকে নির্বাচন : রুবিওকে ড. ইউনূস
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ সরাসরি সম্প্রচার
- আন্দোলনের একপর্যায়ে আমরা ‘ডু অর ডাই’ পরিস্থিতিতে চলে যাই: নাহিদ ইসলাম
- ফেসবুকজুড়ে ‘লাল জুলাই’
- ১ জুলাই : আওয়ামী লীগ শাসন পতনের অভূতপূর্ব সূচনা
- ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুর রহমান
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস পালিত
- ইসলামী ব্যাংকের শরী‘আহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত
- আবারো ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ পেল ওয়ালটন হাই-টেক
- ঢাকায় হালকা বৃষ্টির আভাস, দিনভর আকাশ মেঘলা থাকার সম্ভাবনা
- বিএসইসি-অংশীজনের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে ভূমিকা রাখবে সমন্বিত সভা
- মগবাজারের আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু
- সামাজিক ব্যবসা একটি বৈশ্বিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে –প্রধান উপদেষ্টা
- ডিএমপির পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার ৭ কর্মকর্তার বদলি
- ১০ জুলাইয়ের মধ্যে মতামত চেয়েছে ইসি
- "শান্তিপূর্ণ আচরণ করলে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে"
- মুরাদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন একজন উপদেষ্টা: ফখরুল
- ভুলবশত গুলির ম্যাগাজিন ব্যাগেই রয়ে যায়: আসিফ মাহমুদ
- মোট রিজার্ভের নতুন মাইলফলক, অতিক্রম করলো ৩১ বিলিয়ন ডলার
- ঢাকার আকাশ মেঘলা, হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা
- দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের সপ্তম দিনের বৈঠক আজ
- মুরাদনগরের ঘটনায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতারা দায়ী
- এইচএসসি দ্বিতীয় পরীক্ষা আজ : সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ
- কেক পাঠিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান
- মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৫
- ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরো ৮১ ফিলিস্তিনি
- করোনাভাইরাস: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু এক, আক্রান্ত ১০
- বড় হারের শঙ্কা নিয়ে দিন পার করল বাংলাদেশ
- বরখাস্ত হলেন হামজাদের কোচ নিস্টেলরয়
- সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আরও ৪ দিনের রিমান্ডে
- স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি কাপড় ও পাটজাত পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
- বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা চুক্তি সংশোধন চায় ভারত
- কর্মসূচিতে অনড় ঐক্য পরিষদ, কাজে যোগ না দিলে ব্যবস্থা নেবে এনবিআর
- ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ১৫
- চীন সফর 'সফল' হয়েছে: দেশে ফিরে ফখরুল
- যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনার কোনো পরিকল্পনা নেই: ইরান
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সিইসি
- ‘নতুন বাংলাদেশ দিবসের’ তারিখ নিয়ে আখতার-সারজিস-হাসনাতের আপত্তি
- ‘আমরা কোনো জোট করছি না’, বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান বৈঠক নিয়ে উপদেষ্টা
- এনবিআর কর্মকর্তাদের আন্দোলন তুলে নিতে অর্থ উপদেষ্টার আহ্বান
- হাসিনার পালানোর ব্রেকিং নিউজ দিয়ে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন শফিকুল আলম
- "সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান স্বাধীনভাবে কাজ করলে দেশে স্বৈরাচারের উৎপত্তি হবে না"
- আ. লীগ আমলের ৩ সংসদ নির্বাচনের অনিয়ম তদন্তে কমিটি
- কাল থেকে দেবতাখুম ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা
- পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে ভালো কোম্পানি আনতে হবে: আবু আহমেদ
- ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কয়েক দশক পিছিয়েছে, দাবি ট্রাম্পের
- আরো ২৬ জনের করোনা শনাক্ত
- এনবিআরের আন্দোলনের পেছনে ‘ব্যবসায়ীদের’ ইন্ধন: অর্থ উপদেষ্টা
- মাদক নির্মূলে সবার আগে গডফাদারদের ধরতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- শর্তসাপেক্ষে প্রধানমন্ত্রী পদে সর্বোচ্চ ১০ বছরের বিষয়ে একমত বিএনপি
- এনসিসি গঠন থেকে সরে এসেছে ঐকমত্য কমিশন : আলী রীয়াজ
- ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ও ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’ ঘোষণা
- জার্মানি বাংলাদেশের উন্নয়নে নির্ভরযোগ্য অংশীদার: প্রধান উপদেষ্টা
- ‘মব জাস্টিস’ নামে এক হিংস্র উন্মাদনা: তারেক রহমান
- বিবাহ ও মোহর আদায়ে ইসলামী ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব
- সারা দেশে বজ্রবৃষ্টির আভাস
- ‘এখন বলার সময় নয়’—অধিনায়কত্ব নিয়ে গুঞ্জনের জবাবে শান্ত
- সূচকের বড় উত্থানে পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে
- একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় ১৭ প্রকল্প
- ঢাকায় অলিম্পিক ডে র্যালির উদ্বোধনে সেনাপ্রধান
- দোহা-কুয়েত-শারজাহ-দুবাই রুটে ১১ ফ্লাইটের সময়সূচি বিপর্যস্ত
- যুদ্ধবিরতি কার্যকর, ‘দয়া করে, কেউ এটা লঙ্ঘন করবেন না’: ট্রাম্প
- ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর কমেছে তেলের দাম
- ট্রাম্পের ‘যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণার পর নীরব নেতানিয়াহু
- যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে: ইরান
- ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্স পরিদর্শন করলেন স্বতন্ত্র পরিচালক আকতার মতিন চৌধুরী
- ইসলামী ব্যাংকের সাথে ঢাকা কলেজের চুক্তি স্বাক্ষর
- বন্ড ছেড়ে ৮০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে মার্কেন্টাইল ব্যাংক
- ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে মানুষ রাজনীতিকদের ওপর আস্থা হারাবে: সালাহউদ্দিন
- সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশ এখনই বাস্তবায়নের জন্য নয়: আলী রীয়াজ
- ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ ও ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’ ঘোষণা
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সিইসি
- পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে ভালো কোম্পানি আনতে হবে: আবু আহমেদ
- হাসিনার পালানোর ব্রেকিং নিউজ দিয়ে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন শফিকুল আলম
- ‘নতুন বাংলাদেশ দিবসের’ তারিখ নিয়ে আখতার-সারজিস-হাসনাতের আপত্তি
- কাল থেকে দেবতাখুম ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা
- এনবিআরের আন্দোলনের পেছনে ‘ব্যবসায়ীদের’ ইন্ধন: অর্থ উপদেষ্টা
- বিবাহ ও মোহর আদায়ে ইসলামী ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব
- ‘মব জাস্টিস’ নামে এক হিংস্র উন্মাদনা: তারেক রহমান
- ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কয়েক দশক পিছিয়েছে, দাবি ট্রাম্পের
- শর্তসাপেক্ষে প্রধানমন্ত্রী পদে সর্বোচ্চ ১০ বছরের বিষয়ে একমত বিএনপি
- মাদক নির্মূলে সবার আগে গডফাদারদের ধরতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- আ. লীগ আমলের ৩ সংসদ নির্বাচনের অনিয়ম তদন্তে কমিটি
- এনসিসি গঠন থেকে সরে এসেছে ঐকমত্য কমিশন : আলী রীয়াজ
- জার্মানি বাংলাদেশের উন্নয়নে নির্ভরযোগ্য অংশীদার: প্রধান উপদেষ্টা
- আরো ২৬ জনের করোনা শনাক্ত
- এনবিআর কর্মকর্তাদের আন্দোলন তুলে নিতে অর্থ উপদেষ্টার আহ্বান
- ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ১৫
- ‘আমরা কোনো জোট করছি না’, বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান বৈঠক নিয়ে উপদেষ্টা
- বরখাস্ত হলেন হামজাদের কোচ নিস্টেলরয়
- স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি কাপড় ও পাটজাত পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
- চীন সফর 'সফল' হয়েছে: দেশে ফিরে ফখরুল
- কর্মসূচিতে অনড় ঐক্য পরিষদ, কাজে যোগ না দিলে ব্যবস্থা নেবে এনবিআর
- যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনার কোনো পরিকল্পনা নেই: ইরান
- কেক পাঠিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান
ফিচার এর সর্বশেষ খবর
ফিচার - এর সব খবর
