গল্প
প্রত্যাবর্তন

দ্বিতীয়বার হার্ট অ্যাটাকের পর রাহাত তার ওয়ার্ডেন এভিনিউয়ের বাসায় শুয়ে আছেন।শরীর এখনো দুর্বল। ডাক্তার বলে দিয়েছে প্রচুর বিশ্রাম নিতে। শুয়ে বসে, টিভি দেখে আর খবরের কাগজ পড়ে দিন কাটছে। এবারের অ্যাটাকটা আগেরটার চেয়ে ম্যাসিভ। ডাক্তার আটচল্লিশ ঘণ্টার অনিশ্চয়তার সতর্কবার্তা দিয়ে ছিলেন। এখানকার বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবার কল্যাণে পয়সা খরচ হচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু গত দুই মাস ধরে কাজে যেতে না পারায় সংসারের ওপর একটা বড় ধরণের চাপ পড়েছে। স্বাভাবিক কাজ কর্মে কতদিনে ফিরে আসবে তা কেউ বলতে পারছে না। মাথার কাছে টেবিল ফ্যান ঘুরছে। চোখে মোটা লেন্সের চশমা। শোয়ার ঘরের দেয়ালে স্ত্রী ফরিদার বিকিনি পরা ছবি ঝোলানো। একরাশ অসহায়ত্ব নিয়ে সে সময় সময় ছবিটার দিকে তাকায় আবার কাঁচের জানালা দিয়ে বাইরে তাকায়। জানালার পর্দাটা নামানো-দূর দিয়ে লেকঅন্টারিওর বিস্তৃত নীল জলরাশির ওপর শাদা শাদা মেঘ উড়ে যাচ্ছে।
ফরিদা সোফায় বসে গলফ বলের মতো দেখতে একটা বোতল থেকে মদের পেয়ালায় স্কচ হুইস্কি ঢালছে। ছোট ছোট শব্দ ব্যবহার করে বিড় বিড় করে কী যেন বলছে।
ফরিদা আজ ক্লাবে না গেলে হয় না? আমার মন ভাল নেই। তুমি পাশে থাকলে ভাল লাগতো। তা ছাড়া ছেলে মেয়েরা বড় হচ্ছে।এগুলো কি তোমার চোখে পড়ছে?
উইক-এন্ডে ক্লাবে না গেলে, মদ খেয়ে না নাচতে পারলে আমার ঘুম হয় না, পেটের ভাত হজম হয় না, তা তুমি ভাল করেই জান। আজও আমাকে যেতে হবে।
ফরিদাকে বড় অচেনা লাগে আজকাল রাহাতের। অতীতে ফিরে যায় রাহাত। ঢাকার মানিকনগরে থাকত সে। অভাবের সংসার। দশ বছর বয়সে এক রাতে হঠাৎ সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা মাকে হারানোর পর এতিম হয়। পরে চাচারা তাকে ঠেলা গাড়ির কাজে লাগিয়ে দেয়। পুরান ঢাকায় ঠেলা গাড়ি চালাতে চালাতে একসময় ভ্যান চালাতে শুরু করল রাহাত। খ্যাপ নেওয়ার জন্য একদিন লক্ষ্মীবাজারের ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে বসে আছে। পরনে কালো রঙের দোনলা প্যান্ট। প্যাসেঞ্জার না পেয়ে সামনের মতিমিয়ার চায়ের দোকানে চা সিঙ্গাড়া খেতে যায়। সেখানে চা খেতে আসা এক জার্মান নাগরিকের সাথে তার পরিচয় হয়। নাম উলফ গ্যাং ভলম্যান। ইউনেস্কোর ঢাকা অফিসের একজন কর্মকর্তা। পুরান ঢাকার ঐতিহ্য নিয়ে একটা প্রজেক্টের কাজে প্রায়ই এদিকে আসে। সেই ভলম্যান একদিন তাকে জার্মানির বার্লিনে নিয়ে এল। একটি টেনিক্যাল স্কুলে ভর্তি করে দিল। দুবছর পর হঠাৎ একদিন ভলম্যান মারা গেলে রাহাত তার কানাডা অভিবাসী বন্ধু রায়হানের পরামর্শে কানাডার টরন্টোতে পাড়ি জমাল। বেশ একটা গতির জীবন নিয়েছে এখন সে। অথচ ছোটবেলায় পাশের গ্রামে তার বড়বোনের বাড়িতে যেতে বললে কী মন খারাপ করতো। ঘরমুখো টান ছিল বলেই হয়তো আজ যাযাবরের জীবন বেছে নিয়েছে।
রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে ফরিদা। বিক্রমপুরের এক অজ পাড়া গাঁয়ের মেয়ে সে। তার বাবা প্রথমে রাহাতের সঙ্গে ফরিদার বিয়েতে রাজি ছিল না। ফরিদার চাচা নাসেরের জেদা-জেদিতেই শেষ পর্যন্ত বিয়েটা হয়েছে। নাসেরের এক বন্ধুর বড়ভাইয়ের ছেলে রাহাত।
কানাডায় আসার পর ফরিদার আচার আচরণ কেমন যেন? সব সময় বিষণ্ণ ও উদাসীন। সবকিছুতেই যেন আড়ষ্ট, সব সময় মনমরা।ইদানীং টিভি দেখে, শপিংমলে বা মেলায় গিয়েও সে আনন্দ পায় না। রাহাত ভাবে হয়তো এতবড় টরন্টো নগরীতে গাঁয়ের মেয়ে ফরিদার মন বসছে না। ভিনদেশ, অচেনা শহর, অজানাপথঘাট। মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয় স্বজনহীন নতুন পরিবেশে এসে হয়তো তার মন ভেঙে পড়েছে। রাহাতের মনে হল এ পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে হলে ফরিদাকে এখানকার কালচার শেখাতে হবে, বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে।
জুলাই মাসের বিকেল। লংউইকেন্ড। রাহাতের বন্ধু রায়হান ব্রাম্পটন থেকে এসেছে।রায়হান রাহাতের ছোটবেলার বন্ধু।মানিকনগরেরেললাইনের ধারে কাঁচাবাজারের পাশের গলিতেপাশাপাশি বাসায় থাকত। অনেকদিন পর দুইবন্ধু একসাথে হল। মনখুলে অনেক কথা-বার্তা হল।টেবিলে সাজানো কয়েকটি দামি মদ আর বিয়ারের বোতল।
ফরিদা, এদিকে এসো। দেখো কে এসেছে?
ফরিদা এসে হাজির।
ফরিদা এসো, বসো। আমাদের সঙ্গে বসে একটু মদ খাও। রায়হান আমার ছোটবেলার বন্ধু। লজ্জার কিছু নেই।
না এসব ছাইপাশ আমি খাব না। তোমরা খাও। প্লিজ আমাকে মদ খাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি কর না।
ভাবি সাহেব, যেখানে যে নিয়ম, যে কালচার তা মানতে হয়। এখানকার সমাজে মিশতে হলে, অ্যাডজাস্ট করে চলতে হলে একটু-আধটু মদটদ খেতে হয়, বারে যেতে হয়, পার্টিতে যেতে হয়। পুরনো লাইফস্টাইল ভুলে যান, দেশের কথা ভুলে যান। তাছাড়া এই নির্দয় শীতের দেশে একটু আধটু মদটদ, বিয়ার-টিয়ার না খেলে বাঁচবেন কী করে? রায়হান পেয়ালায় মদ ঢালতে ঢালতে কথাগুলো বলে।
না ভাই, মদ খাওয়া, পার্টিতে যাওয়া এসব আমি পারব না। কানাডায় থাকলেও আমি একজন খাঁটি বাঙালি মেয়ে হয়েই থাকব, আমার পারিবারিক মূল্যবোধ নিয়েই থাকব। ভাল না লাগলে দেশে ফিরে যাব, তবু কখনো ওসব খাব না।
এরপর রাহাত তাকে এক রকম জোর করে টেবিলে এনে বসাল। টেবিলে বেশ কয়েক বোতল ইয়েলো লেবেল হুইস্কি, এক প্যাকেট ডানহিল সিগারেট, আর কয়েক প্যাকেট চানাচুর। নিজে দুবোতল ইয়েলো লেবেল হুইস্কি সাবাড় করল। ফরিদার মনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায়। খাবে কি খাবে না। যখনই খেতে চায় তখনই যেন একটি ভয়াবহ অদৃশ্যশক্তি পেছন থেকে টানদিয়ে ধরে। মনের ভিতরের এইদ্বন্দ্বযুদ্ধ-টু ড্রিংক অর নট টু ড্রিংক- তাকে কাহিল করে ফেলে।অবশেষে এক সময় তার রক্ষণশীল মন পরাজিত হয়।
দাও তবে একটু খেয়ে দেখি,দুজনের মুখ চেয়ে ফরিদা বলে।জীবনে প্রথম মদ খেল ফরিদা।তার ভেতরে একটা অপূর্ব আনন্দানুভূতি খেলে গেল।আনন্দে রাহাতের চোখ মুখ উদ্ভাসিত হয়ে গেল। যেন তার অনেকদিনের স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হল।
আর একটু খাবে? রাহাত জিজ্ঞেস করল ফরিদাকে। আর এক বোতল বিয়ার?
আর না। আজ আর খাব না। অন্যদিন। রাহাত ফরিদাকে বোতল থেকে মদ কিভাবে পেয়ালায় ঢালতে হয়, তারপর পেয়ালা কিভাবে ধরে মদ খেতে হয় সব তাকে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রীর মত শিখিয়ে দিল।
রাহাত ও ফরিদা দুজনই চাকরি করে। ফরিদা এগলিন্টন এভিনিউতে একটা কসমেটিক কোম্পানিতে কাজ করে। রাহাত একটা কন্সট্রাকশন কোম্পানিতে সুপারভাইজার পদে কাজ করে।দুজনই দুহাতে কাজ করে আর প্রচুর ডলার হাতে আসতে থাকে। উইক-এন্ডেডাউন্টানের নাইটক্লাবে যায়। দুহাতে পয়সা ওড়ায়। প্রথম প্রথম ফরিদা আড়ষ্ট থাকত। ওর আড়ষ্টতা ভাঙ্গায় রাহাত। তাকে জোর করে ঠেলে দেয়, শাদাদের সঙ্গে নাচতে বলে। ফরিদা নাচে। রাহাত নেশাতুর চোখে তা তাকিয়ে দেখে। ফরিদার পরিবর্তন দেখে অবাক হয় সে। দক্ষ নাচুড়ের মতো সে নাচে এখন। এতটুকু জড়তা নেই।
দিন দিন এসবে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে ফরিদা। এখন রাহাতকে ছাড়াই ক্লাবে,পার্টিতে যায়। রাত করে ঢুলুঢুলু চোখে বাসায় ফেরে। ইদানীং নতুন নতুন বন্ধু নিয়ে বাসায় আসে,রাতে একঘরে থাকে।রাহাত থাকে অন্যঘরে। অসুস্থ রাহাত অসহায় চোখে তা দেখে। কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারে না।অন্য পুরুষের সঙ্গে ফরিদার এরকম অন্তরঙ্গতার দৃশ্য রাহাতের অসহায়ত্বকে বিব্রতকর অবস্থায় নিয়ে যায়, তার ভেতরে রক্তক্ষরণ ঘটে। সে বুঝতে পারে জীবন-যন্ত্রণার এই ফাঁদ থেকে সহজে বের হতে পারবে না।
রাহাত টের পেয়েছে,সংসারের ওপর কাল মেঘের ছায়া ঘনিয়ে এসেছে,ঈশাণ কোনে ঝড় উঠেছে, তুষার ঝড়ের মত তা যে কোন সময় তার এতদিনের গড়া সুখের সংসারকে ছিন্ন ভিন্ন করে দিবে।
ফরিদা,তুমি কিন্তু সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছ। নতুন নতুন বন্ধু নিয়ে আসছো বাসায়। অনেক সহ্য করেছি। আমি তোমার এসব নোংরামি আর সহ্য করব না। তুমি বাসায় বসে খাও,বাইরে খেও না।
বা তুমিতো বেশ ভাল মানুষ হয়ে গেছ। তুমিই তো আমাকে রাস্তা দেখিয়েছো। তবে এখন কেন তোমার এসব সহ্য হয় না? না আমি আমার মত চলবো। আমার ভালমন্দ নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না।
হ্যাঁ, শিখিয়ে ছিলাম। কিন্তু তখন তো জানতাম না তুমি সীমা অতিক্রম করে যাবে।
ফরিদা,কেন বুঝছো না?আগে নেশা তোমার নিয়ন্ত্রণে ছিল,আর এখন তুমি নেশার নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছ। তাই বলি কী নেশা টেশা কমিয়ে দাও। ভোগ-আনন্দই কি জীবনের সব?ঘর-সংসার,সন্তান-সন্ততি কি এসবের চেয়ে মূল্যবান নয়?তাছাড়া আমাদের ছেলে মেয়েরা যদি এই বয়সেই মদ চিনে ফেলে,ওদের ভবিষ্যৎ ওযে পিছলে হয়ে যাবে তাতে সন্দেহ নেই।
ফরিদা রেগে গিয়ে লাল হয়ে বলল,আমাকে জ্ঞান দিয়ো না। তুমি হলে বস্তির ভাঙা ঘরের ছেলে-নিজের জ্ঞান নিজের কাছে রাখো। তোমার সঙ্গে অনেক হয়েছে। তোমার মত আন রোমান্টিক ছেলের সঙ্গে আর ঘর করা নয়। আমি ববের কাছে চলে যাচ্ছি। সবকিছু কোর্টে সেটেল্ড হবে। বলে হন হন করে দোতলায় উঠে গেল। হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে নিচেনামল, প্রচণ্ড শব্দে বাইরের দরজা বন্ধ করে গটগট করে সে বাসা থেকে বের হলো।বব ওর কলিগ ও বন্ধু। একসাথে কস্মেটিক কোম্পানিতে চাকরি করে। বিপত্নিক, মধ্যবয়সী, দেখতে কৃমির মত শাদা ও বিবর্ণ। চোখদুটো তীক্ষ্ণ, বাজপাখির মত চাহনি। উদার ও ফূর্তিবাজমানুষ । শেপারড এন্ড ম্যাকোয়ান এলাকায় বাসা।
রাহাত বসে রইল সদ্যপাওয়া মানসিক ধাক্কা সামলানোর জন্য। কয়েক সেকেন্ড থতমত ভাব কাটিয়ে আবার স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করল। ফরিদার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি যেতে চাচ্ছ যাও। তবে জেনে রাখ আমার মত শুভাকাঙ্ক্ষী ছেলে আর দুনিয়াতে পাবে না। দেখি তোমার ঐ শাদা চামড়া কয়দিন তোমার খরচা দেয়? আমাকে সব সময় আনরোমান্টিক বলে যেগালিগালাজ ও দোষারোপ করেছ-তার ছিটে ফোঁটাও ওকে করতে পারবে না। তোমাদের এই হানিমুন কয়েকদিনেই হাওয়া হয়ে যাবে। শাদা চামড়ার শখ অচিরেই মিটে যাবে। বুঝবে, ফরিদা একদিন বুঝবে।
রায়হানকে ফোন করে রাহাত সব বলল।বুঝলে রায়হান, ফরিদাকে বিয়ে করে ছয় মাসের মাথায় এদেশে নিয়ে এলাম, বাড়ি-গাড়ি, পিয়ারকার্ড, সিটিজেনশিপ, ছেলে-মেয়ে, সমাজে পরিচিতি সবদিলাম, এখানকার রাস্তাঘাট চেনালাম আর আমাকেই লাথি মারলও! ভাবতে পারো? এগুলো ও নিজে নিজে করতে পারত? রায়হান একনাগাড়ে তার কথা শোনে। তারপর বলে, অসুখ-বিসুখে অসহায় হয়ে পড়া তোর মত একজন মানুষের যখন বড়বেশি একটি সুখকর স্পর্শের প্রয়োজন, তখনই তোর বউ দূরে চলে গেল। এটা বড়ই দুঃখজনক। বেশি ফ্রি করতে গিয়ে তোর বউ হাত ছাড়া হয়ে গেল। আরও আগে থেকেই তোর এদিকে নজর রাখা উচিৎ ছিল।
রায়হানের কথার কোন জবাব দেয় না রাহাত। খুব নিঃশব্দে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল শুধু। দেয়ালে টাঙ্গানো ফরিদার ছবির দিকে পুরু লেন্সের ভেতর দিয়ে ঝাপসা চোখে তাকায়, কয়েক ফোটা অশ্রু গাল বেয়ে নিচে গড়িয়ে পড়ে। নানান ভাবনা রাহাতের মাথায় এসে ভর করে। ফরিদা কেন এতদ্রুত বদলে গেল তা রাহাতের ভাবনা চিন্তার মধ্যে আসে না। যেন ফরিদা নয়,ফরিদার ভেতর থেকে এক অন্য ফরিদার জন্ম হয়েছে। খুবই অসহ্য মনে হচ্ছে রাহাতের। কিন্তু সে ফরিদাকে খুব ভালবাসে। ফরিদা তার প্রাণের বন্ধু। ও আগে এতজেদী আর অস্থির প্রকৃতির ছিল না। তাই পরক্ষণেই ভাবে, ফরিদা আসলে বদলায়নি, মানুষ ফরিদা একই আছে। বদলেছে পরিস্থিতি,বদলেছে স্থান,বদলেছে সময়। সময় তাকে বদলে দিয়েছে। সময় আমাদের প্রতিমুহূর্তে,প্রতিদিনএভাবেই বদলে দিয়ে যায়।
রাহাত তার পুরুলেন্সের চশমাটা চোখের ওপর থেকে নামাল, ক্লান্তচোখের পাতায় আঙুল দিয়ে মৃদুস্পর্শ করল, চোখের কোনা বেয়ে জল পড়তে লাগল। ঝুলে থাকা লম্বা পর্দা সরিয়ে জানালার কাঁচ দিয়ে বাইরে তাকাল। আকাশে একখণ্ড শাদা মেঘ ধীরে ধীরে উড়ে যাচ্ছে,শান্তসমুদ্রে একখণ্ড হিমাবহের গড়িয়ে চলার মতো। তার বুকের গভীরে ও যেন এরকম একখন্ড হিমাবহ গড়িয়ে পড়ছে। তলানিতে পড়ে থাকা ফরিদার জন্য তার ভালবাসাটুকু ছায়ামূর্তিতে পরিণত হয়ে তাকে তাড়া করছে।
এমনি করে কয়েক মাস কেটে গেছে।রায়হান রাহাতের খোঁজ খবর নেয়। বন্ধুর বিপদে পাশে এসে দাঁড়ায়। বেশ কিছুদিন ধরে ফেডারেল নির্বাচনের প্রচার চলছে। দেখে শুনে মনে হচ্ছে কনজারভেটিভ পার্টির স্টীফেন হারপার ও লিবারেল পার্টির জাস্টীন ট্রুডোর মধ্যে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই হবে। রায়হান রাহাতকে নির্বাচনের পরের দিন উইক-এন্ডে তার বাসায় দাওয়াত দেয়। রাহাত সে দাওয়াত সানন্দে গ্রহণ করে। নির্বাচনের দিন শেষে রাতে যখন রায়হান বিয়ার নিয়ে সোফায় বসে আছে আর টিভিতে ভোটের ফলাফল দেখে উত্তেজনার আগুন পোয়াচ্ছে, ঠিক সেই সময় রাহাত ফোন করল। ‘কী রে রায়হান, তোরতো এবার কোনও পাত্তাই নেই। কী ব্যাপার বলতো! তুই অন্যদলে চলে গেলি নাকি রে? অবশ্য একটু পয়সা হলে সব কানাডিয়ান বাঙালিই দল পাল্টায়।” রায়হান বলল, ‘‘কী যে বলিস রাহাত! যাক ভোটের টক ঝাল গল্প করা বাদ দে। তুই এই উইক-এন্ডে আমার বাসায় আসছিস তো?
না রে, এই উইক-এন্ডে আমার তোর বাড়ি আসা হবে না। ফরিদা গতকাল আমাকে ফোন করেছিল। দেখা করতে চায়। ওকে বেশ অনুতপ্ত মনে হল। ও বলছে আগামীকাল বাসায় আসবে। ছেলে মেয়েদের খুব দেখতে ইচ্ছে করছে ওর। আমাকে বাসায় থাকতে বলেছে। হাজার হোক নিজের বউ তো- ভাবছি কাল বাসায় থাকব, কোথাও বের হব না। রায়হান দেখল ওর গলার স্বর খুশি- খুশি। রায়হান খুব খুশি খুশি মুখে বলল, দারুণ খবরতো, রাহাত। আগে বলিস নি কেন? রাহাত রায়হানকে বলল, কাল বিকেল পাঁচটার মধ্যে বাসায় আসবি কিন্তু! আমার ছেলে মেয়েরা থাকবে, ফরিদা আসবে, অনেক মজা হবে। কি আসবি তো? রায়হান মাথা নেড়ে বলল, নিশ্চয়!
পরদিন বিকেলে রায়হান রাহাতের বাসায় এল।এলাহিকাণ্ড! ফরিদা রান্না-বান্না করছে, ছেলে মেয়েরা খুশিতে হৈ চৈ করছে। রাহাত ঘরের এক কোনায় সোফায় বসে তা দেখছে, মুখটা খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
পাঠকের মতামত:

- পুশ ইন করতে হলে হাসিনা ও তার দোসরদের পাঠান: নাহিদ
- এনসিপির জুলাই প্রদর্শনী চলার মধ্যে দু’টি ককটেল বিস্ফোরণ
- বনানীর হোটেলে নারীদের ওপর হামলায় অভিযুক্তরা শনাক্ত, গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে
- নির্বাচনের আগে টেলিকম নীতিমালা প্রণয়নে বিএনপির উদ্বেগ
- আদালতকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে হবে: সালাহউদ্দিন আহমদ
- যেকোনো ব্যর্থতার ফল চূড়ান্তভাবে স্বাস্থ্যের ওপর পড়ে: ডা. সায়েদুর রহমান
- বাংলাদেশে জাপানের সহযোগিতা আরও বাড়াতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
- রাজনৈতিক সংকটের অর্থবছরে পোশাক রপ্তানিতে ৮.৮৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
- সতীর্থ জোটার মৃত্যুতে রোনালদোর আবেগঘন বার্তা
- ডাবল সেঞ্চুরিতে যত রেকর্ড গড়লেন গিল
- শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থান, বেড়েছে লেনদেন
- গাজার মানুষ নিরাপদে থাকুক, এটাই চাই : ট্রাম্প
- পাবনায় বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩
- ওয়ালটন ডিজি-টেককে অ্যাডভান্সড ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট সেবা দেবে ব্র্যাক ব্যাংক
- ইসলামী ব্যাংকের সাথে ড্যাফোডিল কম্পিউটারস-এর চুক্তি
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে রেমিট্যান্স ক্যাম্পেইনের পুরস্কার প্রদান
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে খেলাপি বিনিয়োগ আদায়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ ও ‘শহীদ দিবস’ পালন বাধ্যতামূলক
- গণঅভ্যুত্থান শুধু সরকার পরিবর্তনের জন্য নয়: হাসনাত
- জুলাইয়ের বিপ্লবী ছাত্র-জনতা মব নয়: মাহফুজ আলম
- গুমে সেনাসদস্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সেনাসদর
- পুরনো সিস্টেম ও দখলদারিত্ব ফিরে আসার চেষ্টা চলছে: নাহিদ
- ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপন খসড়া পর্যায়ে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- বিভাগীয় শহরেও হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনে ঐকমত্য: আলী রীয়াজ
- গাজায় ক্যাফে, স্কুল এবং ত্রাণ কেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৯৫
- আল হিলালের কাছে হেরে ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ম্যানসিটির
- শান্তর ওপর আস্থা রাখছেন অধিনায়ক মিরাজ
- সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করলো সরকার
- আমরা এক থাকলে আমাদের সামনে কিছুই টিকতে পারবে না: ফারুকী
- আগামী বছরের শুরুর দিকে নির্বাচন : রুবিওকে ড. ইউনূস
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ সরাসরি সম্প্রচার
- আন্দোলনের একপর্যায়ে আমরা ‘ডু অর ডাই’ পরিস্থিতিতে চলে যাই: নাহিদ ইসলাম
- ফেসবুকজুড়ে ‘লাল জুলাই’
- ১ জুলাই : আওয়ামী লীগ শাসন পতনের অভূতপূর্ব সূচনা
- ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুর রহমান
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস পালিত
- ইসলামী ব্যাংকের শরী‘আহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত
- আবারো ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ পেল ওয়ালটন হাই-টেক
- ঢাকায় হালকা বৃষ্টির আভাস, দিনভর আকাশ মেঘলা থাকার সম্ভাবনা
- বিএসইসি-অংশীজনের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে ভূমিকা রাখবে সমন্বিত সভা
- মগবাজারের আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু
- সামাজিক ব্যবসা একটি বৈশ্বিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে –প্রধান উপদেষ্টা
- ডিএমপির পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার ৭ কর্মকর্তার বদলি
- ১০ জুলাইয়ের মধ্যে মতামত চেয়েছে ইসি
- "শান্তিপূর্ণ আচরণ করলে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে"
- মুরাদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন একজন উপদেষ্টা: ফখরুল
- ভুলবশত গুলির ম্যাগাজিন ব্যাগেই রয়ে যায়: আসিফ মাহমুদ
- মোট রিজার্ভের নতুন মাইলফলক, অতিক্রম করলো ৩১ বিলিয়ন ডলার
- ঢাকার আকাশ মেঘলা, হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা
- দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের সপ্তম দিনের বৈঠক আজ
- মুরাদনগরের ঘটনায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতারা দায়ী
- এইচএসসি দ্বিতীয় পরীক্ষা আজ : সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কেন্দ্রে প্রবেশের সুযোগ
- কেক পাঠিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান
- মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৫
- ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরো ৮১ ফিলিস্তিনি
- করোনাভাইরাস: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু এক, আক্রান্ত ১০
- বড় হারের শঙ্কা নিয়ে দিন পার করল বাংলাদেশ
- বরখাস্ত হলেন হামজাদের কোচ নিস্টেলরয়
- সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আরও ৪ দিনের রিমান্ডে
- স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি কাপড় ও পাটজাত পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
- বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা চুক্তি সংশোধন চায় ভারত
- কর্মসূচিতে অনড় ঐক্য পরিষদ, কাজে যোগ না দিলে ব্যবস্থা নেবে এনবিআর
- ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ১৫
- চীন সফর 'সফল' হয়েছে: দেশে ফিরে ফখরুল
- যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনার কোনো পরিকল্পনা নেই: ইরান
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সিইসি
- ‘নতুন বাংলাদেশ দিবসের’ তারিখ নিয়ে আখতার-সারজিস-হাসনাতের আপত্তি
- ‘আমরা কোনো জোট করছি না’, বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান বৈঠক নিয়ে উপদেষ্টা
- এনবিআর কর্মকর্তাদের আন্দোলন তুলে নিতে অর্থ উপদেষ্টার আহ্বান
- হাসিনার পালানোর ব্রেকিং নিউজ দিয়ে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন শফিকুল আলম
- "সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান স্বাধীনভাবে কাজ করলে দেশে স্বৈরাচারের উৎপত্তি হবে না"
- আ. লীগ আমলের ৩ সংসদ নির্বাচনের অনিয়ম তদন্তে কমিটি
- কাল থেকে দেবতাখুম ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা
- পুঁজিবাজার স্থিতিশীল করতে ভালো কোম্পানি আনতে হবে: আবু আহমেদ
- ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কয়েক দশক পিছিয়েছে, দাবি ট্রাম্পের
- বরখাস্ত হলেন হামজাদের কোচ নিস্টেলরয়
- ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ১৫
- স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি কাপড় ও পাটজাত পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা
- যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনার কোনো পরিকল্পনা নেই: ইরান
- কেক পাঠিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান
- চীন সফর 'সফল' হয়েছে: দেশে ফিরে ফখরুল
- কর্মসূচিতে অনড় ঐক্য পরিষদ, কাজে যোগ না দিলে ব্যবস্থা নেবে এনবিআর
- মুরাদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন একজন উপদেষ্টা: ফখরুল
- ঢাকার আকাশ মেঘলা, হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা
- ডিএমপির পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার ৭ কর্মকর্তার বদলি
- সামাজিক ব্যবসা একটি বৈশ্বিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে –প্রধান উপদেষ্টা
- বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা চুক্তি সংশোধন চায় ভারত
- মগবাজারের আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু
- ভুলবশত গুলির ম্যাগাজিন ব্যাগেই রয়ে যায়: আসিফ মাহমুদ
- মুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৫
- দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের সপ্তম দিনের বৈঠক আজ
- মুরাদনগরের ঘটনায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতারা দায়ী
- ফেসবুকজুড়ে ‘লাল জুলাই’
- সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আরও ৪ দিনের রিমান্ডে
- মোট রিজার্ভের নতুন মাইলফলক, অতিক্রম করলো ৩১ বিলিয়ন ডলার
- ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরো ৮১ ফিলিস্তিনি
- ১০ জুলাইয়ের মধ্যে মতামত চেয়েছে ইসি
- বড় হারের শঙ্কা নিয়ে দিন পার করল বাংলাদেশ
- ১ জুলাই : আওয়ামী লীগ শাসন পতনের অভূতপূর্ব সূচনা
- আগামী বছরের শুরুর দিকে নির্বাচন : রুবিওকে ড. ইউনূস
সাহিত্য এর সর্বশেষ খবর
সাহিত্য - এর সব খবর
