thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৪ জমাদিউল আউয়াল 1446

পরিকল্পিতভাবে একরামকে হত্যা করা হয়েছে: একরামের স্ত্রী

২০১৮ মে ৩১ ২২:৩৪:২১
পরিকল্পিতভাবে একরামকে হত্যা করা হয়েছে: একরামের স্ত্রী

কক্সবাজার প্রতিনিধি: বন্দুকযুদ্ধে নয় বরং বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে কাউন্সিলর একরামকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী আয়েশা বেগম। এ সময় বাবা হত্যার বিচার চেয়ে চিৎকার করে কেঁদেছে একরামের দুই মেয়ে।

স্ত্রী আয়েশার দাবি, একরাম মাদক ব্যবসার মতো ঘৃণিত পেশার সঙ্গে কখনো জড়িত ছিলেন না। বরং ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন টেকনাফ পৌরসভার তিন বারের কাউন্সিলর একরামুল হক। বৃহস্পতিবার কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কেঁদে কেঁদে এ দাবি করেন তিনি।

আয়েশা বলেন, ‘২৬ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফে দায়িত্বরত সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা জমি কেনার কথা বলে একরামকে ডেকে নিয়ে যান। কিন্তু রাত ১১টার পরও বাড়ি ফিরে না আসায় স্বামীর মোবাইল নম্বরে কয়েকবার ফোন দিই। প্রতিবারই আমাদের সঙ্গে কেঁদে কেঁদে কথা বলেছেন আমার স্বামী একরাম।’

চোখের পানি মুছতে মুছতে আয়েশা বলেন, ‘সবশেষ রাত ১১টা ৩২ মিনিটে তিনি ফোন রিসিভ করলেও কথা বলেননি। ওই সময় মোবাইলের অপর প্রান্তের সব কথা আমরা শুনতে পেরেছি। আমরা শুনছিলাম কত নির্মম পরিস্থিতি তিনি পার করেছেন। কি নির্দয়ভাবে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমার স্বামীর আর্তনাদ এখনো আমার কানে বাজছে’।

এ সময় মাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে চিৎকার দিয়ে কেঁদেছে একরামের দুই মেয়ে। চিৎকার দিয়ে বলেন, ‘আমার আব্বুকে হত্যা করা হয়েছে। আব্বুর হত্যার বিচার চাই। আব্বু ছাড়া কে আমাদের স্কুলে নিয়ে যাবে। আমরা কাকে আব্বু বলে ডাকব।’

এ সময় অসহায় মেয়ে দুটির কান্নায় সংবাদ সম্মেলনের পরিবেশ ভারি হয়ে যায়। প্রায় ১৫ মিনিট বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন উপস্থিত সবাই।

আয়েশা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মাদক নির্মুল অভিযানকে সমর্থন করি। কিন্তু এ অভিযানে যেন আমার স্বামীর মতো নিরাপরাধ কেউ নির্মম হত্যার শিকার না হয়। কোনো নারী যেন অকালে স্বামীহারা না হয়। কোনো সন্তান যেন পিতৃহারা না হয়। এসব প্রমাণাদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাব। তার কর্মী কখনোই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এটা মরণের পর হলেও প্রমাণ করতে চাই আমরা।

মাদক ব্যবসায়ীরা অপকৌশলে মাদকবিরোধী অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে দাবি করে আয়েশা বলেন, আমার স্বামীর নাম একরামুল হক। তার পিতার নাম আব্দুস সত্তার। টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী পাড়া এলাকার বাসিন্দা। কিন্তু র‌্যাবের পাঠানো বিবৃতিতে যার কথা বলা হয়েছে তিনি একরামুল হক, পিতা মোজাহের মিয়া প্রকাশ আব্দুস সত্তার। সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়া তার ঠিকানা। নাম ও ঠিকানা ভুল করে উদ্দেশ্যমূলক ও রহস্যজনকভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে স্বামী হত্যার বিচার চাই আমি।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নিহত একরামের ভাই নজরুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম, আব্দু রাজ্জাক এবং দুই শিশু কন্যা নাহিয়ান হক (১১) ও তাহিয়া হক (১৩)।

২৬ মে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কাউন্সিলর একরাম নিহত হন। এ সময় ১০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, ৬ রাউন্ড গুলি, ৫ রাউন্ড গুলির খোসা এবং একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করে র‌্যাব।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/মে ৩১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর