thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৪ জমাদিউল আউয়াল 1446

বিদ্যুৎহীন সিলেটে পানির জন্য হাহাকার

২০২০ নভেম্বর ১৮ ১৪:১৩:৪৪
বিদ্যুৎহীন সিলেটে পানির জন্য হাহাকার

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: কুমারগাঁওয়ে বিদ্যুতের ১৩৩/৩২ গ্রিড উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎহীন সিলেট শহর ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা। এ কারণে পুরো শহরের বাসিন্দারা সীমাহীন দুর্ভোগের কবলে পড়েছেন। এর মধ‌্যে পানির সমস‌্যা সবচেয়ে বেশি।

নগরের বাসিন্দারা জানান, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল থেকেই পানি সংকট শুরু হয়েছে নগরজুড়ে। রাতে এই সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। বেশির ভাগ বাসায় খাবার পানিও শেষ হয়ে গেছে।

বুধবার (১৮ নভেম্বর) সকালে নগরের পাড়া-মহল্লায় দেখা গেছে অন্যরকম চিত্র। পানি সংগ্রহের বিকল্প পথ খুঁজতে পথে বেরিয়েছেন অনেকে। যে যেভাবে পারছেন সেভাবেই পানি সংগ্রহের জন্য ছুটছেন।

কেউ রাস্তায় ভ্যান-গাড়িতে করে কলস-বাতলি নিয়ে, আবার কেউ হাতে বাতলি-বোতল নিয়ে ছুটছেন পানির সন্ধান। কেউ আবার খাবারের পানির জন্য দোকানের বোতলজাত পানির ওপর ভরসাও রাখছেন।

পানির জন্য সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শহর এলাকার বাসিন্দারা। এসব এলাকায় নেই কোনো নলকূপ কিংবা সুপেয় জলাধার। ফলে তারা শহরের বাহিরের চা বাগান বা শহরতলীর বিভিন্ন স্থান থেকে খাবারের পানি সংগ্রহ করতে ছুটছেন।

তবে দূরবর্তী নলকূপ থেকে খাওয়ার পানির ব্যবস্থা করতে পারলেও নিজেদের গোসল, থালাবাসন ও কাপড়চোপড় ধোয়াসহ দৈনন্দিন কাজ নিয়ে চরম বিপাকের মুখে পড়েছেন তারা।

কালীবাড়ী এলাকার বাসিন্দা কানন চন্দ জানান, তার বাসায় একটি নলকূপ রয়েছে। সেখান থেকে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন বাসার লোকজনকে পানি সরবরাহ করছেন তিনি।

মদনীবাগের বাসিন্দা শরীফ এহসানুল হক জানান, রাতেই তাদের বাসায় পানি শেষ হয়ে গেছে। তাদের পানি সংগ্রহ হয় সিটি করপোরেশনের লাইন থেকে। বিদ্যুৎ না থাকায় লাইনেও পানি আসছে না।

উপ-শহরের বাসিন্দা তানজিনা জানান, পানি না থাকায় খাবারসহ দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। রাতে তার বাসার ট্যাঙ্কারের পানি শেষ হয়ে যায়। সকালে খাবার পানির মজুতও ফুরিয়ে গেছে। একজন্য সকালে দোকান থেকে কয়েক লিটার পানি কিনে এনেছেন বলেও জানান তিনি।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজ জানান, সিলেট নগরের পানি বিতরণ ব্যবস্থা বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করে। এ কারণে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হলে পানির সরবরাহও স্বাভাবিক করা সম্ভব হচ্ছে না। শুধু পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় বিপর্যয় নয়; বিভিন্ন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সেবা প্রদানেও বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে বিদ্যুৎ না থাকায়। কমে গেছে ইন্টারনেটের গতিও।

পিডিবি সূত্র জানায়, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের পাওয়ার ট্রান্সফরমার মেরামতে গতকাল থেকেই কাজ করছেন ২ শতাধিক কর্মী। রাতেও বিরতীহীনভাবে মেরামত কাজ করেছেন তারা। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে কখন; এ বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি তিনি।

অবশ্য, বিকল্প উপায়ে আজ সন্ধ্যার মধ্যে সিলেট সিটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে বলে জানিয়েছেন সেখানকার কয়েকজন প্রকৌশলী।

উল্লেখ‌্য, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড ১৩২/৩৩ কেভি এর কুমারগাঁও বিদ্যুতকেন্দ্রে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে দুটি ট্রান্সফরমার পুড়ে যায়। এরপর থেকে সিলেট শহর ও আশাপাশের এলাকা এবং সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। অবশ্য সন্ধ্যা ৭টার দিকে সুনামগঞ্জ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, অগ্নিকাণ্ডে দু’টি ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্তের কারণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন ও বিতরণ বিভাগ সিলেটের অধীনে চারটি ডিভিশন ছাড়াও জগন্নাথপুর এলাকার প্রায় ৩ লাখ গ্রাহক এখনও বিদ্যুৎহীন রয়েছেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৮নভেম্বর, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর