thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১৮ মে 24, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ১০ জিলকদ  1445

আলীমের রায়ে জয়পুরহাটে অসন্তোষ

২০১৩ অক্টোবর ০৯ ১৭:১৬:৩৯
আলীমের রায়ে জয়পুরহাটে অসন্তোষ
দিরিপোর্ট২৪ জয়পুরহাট সংবাদদাতা : একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল আলীমের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জয়পুরহাটবাসী। রায় ঘোষণার পর তারা শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। অন্যদিকে, জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

একাত্তরে শহীদ ডা. আবুল কাশেমের মেয়ে লাইলী বেগম দিরিপোর্ট২৪ –কে জানান, রাজাকার আব্দুল আলীমের হুকুমে বাবাকে হত্যা করা হয়। এ রায়ে আমরা খুশী নই।

আবুল কাশেমের নাতি মিলাদুন জানান, ‘এ রায়ে আমরা হতাশ। আমরা সর্বোচ্চ সাজা আশা করেছিলাম। আশা করি আপিলের মাধ্যমে সর্বোচ্চ রায় হবে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জয়পুরহাটের একাধিক মানুষ জানান, ১৯৭১ সালে আব্দুল আলীম ও পাকিস্তানী মেজর আফজাল অনেক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে ছবি তোলেন। পরে তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ওই সময় বিভিন্ন পত্রিকায় সেই ছবি ছাপা হয়।

এরপরও কেন তার ফাঁসির আদেশ না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেন তারা।

জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম হক্কানী, লাইব্রেরি ও ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাজা চৌধুরী এবং মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেনসহ অনেকে বলেন, আমরা এ রায় মানি না। সরকারের কাছে আশা করবো তারা আপিলের মাধ্যমে ঘৃণ্য এ রাজাকারের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ রায় ঘোষণার পর জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। তারা এ সময় আব্দুল আলীমের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

অন্যদিকে, আলীম সমর্থকরা রায় ঘোষণার পর শহরে মিছিল বের করার চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগ সমর্থক তাদের ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেয়।

রায় প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোজাহার আলী প্রধান দিরিপোর্ট২৪ –কে জানান, ‘সংস্কারপন্থী হওয়ায় ২০০৭ সালের আগস্ট মাসে আব্দুল আলীমকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। কাজেই রায় কি হলো, এ বিষয়ে আমাদের কোন মাথাব্যাথা নেই। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে কোন কর্মসূচি দেওয়া হলে তা পালন করা হবে।’

এদিকে, রায়কে ঘিরে বুধবার সকাল থেকে শহরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। প্রতিটি মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও সাদা পোষাকে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়। এছাড়া, তিন প্লাটুন বিজিবি সদস্য সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়।

(দিরিপোর্ট২৪/এবিটি/এমএআর/ এমডি/অক্টোবর ০৯, ২০১৩)

জয়পুরহাট।

মোবা ঃ০১৭১৩-৭৮১৩০৩।

০৯অক্টোবর

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহায়তাকারী জয়পুরহাট শান্তি (পিচ) কমিটির চেয়ারম্যান জিয়া সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও এমপি যুদ্ধাপরাধী রাজাকার আব্দুল আলীম ২০১১ সালের ২৭ মার্চ রবিবার রাত ৯টা ৫মিনিটে জয়পুরহাটের নিজ বাড়ী থেকে গ্রেফতার হন।

৭১ এ নিরিহ মানুষ হত্যা, ধর্ষণ, মুক্তিযোদ্ধা হত্যাসহ একাধিক ঘটনায় তার অংশ গ্রহনের প্রমান পাওয়ায় আর্ন্তজাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে গ্রেফতার করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ট্রাইব্যুনালের নিকট হাজির করার নির্দেশ দিলে জয়পুরহাটের সার্কেল এসপি আল মামুন , সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও সহকারী কমিশনার মুহাম্মদ আলী প্রিন্স এর নেতৃত্বে প্রায় ৩০ জনের পুলিশ , ডিবি সহ গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন তাকে থানা রোডের নিজ বাসভবন থেকে গ্রেফতার করেন। তাকে সবুজ রংয়ের একটি মাইক্রোবাসে ( চট্ট-মেট্রো-চ-১১-২৯৪৪ ) করে প্রথমে সদর থানায় এবং পরে ঢাকার উদ্দ্যেশে নিয়ে যাওয়া হয় । ২০১০ সালের ২৯ মার্চ থেকে আব্দুল আলীমের উপর সাদা পোষাকের পুলিশের নজরদারী থাকলেও দীর্ঘ প্রায় ১ বছর পর ২৭ মার্চ গ্রেফতার হন ।

জানা গেছে , মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যুদ্ধাপরাধী হিসাবে চিহিৃত আব্দুল আলীম এর নানা অপরাধের তদন্ত করতে ২০১১ সালের ৯ মার্চ আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত দল জয়পুরহাটে আসেন । আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দলের প্রধান পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক খান ছাড়াও কমিটির অপর দুই সদস্য ছিলেন পুলিশ পরিদর্শক জেড এম আলতাফুর রহমান ও পুলিশ পরিদর্শক এস এম ঈদ্রিস আলী। তারা জয়পুরহাট সদর উপজেলার কড়ই কাদিপুর বধ্যভূমি এবং পাশ্ববর্তী এলাকা সমূহ, জয়পুরহাট শহরে ৭১ সালে বিভিন্ন হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনা গ্রহনের স্থান এবং টর্চার সেল হিসাবে পরিচিত শান্তি কমিটি কার্যালয়,(বর্তমানে শহনলাল বাজলার ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠান ও বাসভবন) জয়পুরহাট সরকারী কলেজ এবং উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি, আক্কেলপুর উপজেলার রেলগেট এলাকার রাজাকারদের টর্চার সেল, (তৎকালিন দূর্গার গদি ঘর) বেলার মাঠ, আমুট্ট গণকবর পরিদর্শন ও সাক্ষ্যপ্রমান সংগ্রহ করেন। আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দলের প্রধান পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক খান পরিদর্শন শেষে ১১ মার্চ শুক্রবার রাতে জয়পুরহাট সার্কিট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জানান, যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে আব্দুল আলীমের সংশি¬¬ষ্টতা পাওয়া গেছে। ২৩ মার্চ আর্ন্তজাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে আব্দুল আলীমকে গ্রেফতারের জন্য আবেদন করলে তা শুনানীর জন্য ২৭ মার্চ নির্ধারন করা হয়। অবশেষে রবিবার ট্রাইব্যুনাল আব্দুল আলীমকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজিরের নির্দেশ প্রদান করলে রবিবার তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

কে এই আব্দুল আলীম ঃ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলী উপজেলার পানডুয়া গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদের ছেলে আব্দুল আলীম ১৯৫৬ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার জন্য আসেন। স্যার সলিমুল্ল¬াহ্ হলে থেকে তিনি লেখাপড়া করতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাসে এম,এ পাশ করে তিনি ঢাকা ও জয়পুরহাট এই দুই স্থানে বসবাস শুরু করেন। ১ ভাই ও ১ বোনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বসবাস করতে থাকেন। সে সময় তিনি কনভেনশন মুসলিমলীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। আইয়ুব খান সে সময় তাকে বগুড়া জেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। পরে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। পাকিস্তানের পার্লামেন্ট সেক্রেটারীও ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জয়পুরহাটের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান আব্দুল আলীম। সে সময় পাকিস্তানী বাহিনীর মেজর আফজালের নেতৃত্বে তিনি জয়পুরহাটের বিভিন্ন অপকর্মের নেতৃত্ব দেন। সে সময় জামায়াতের প্রয়াত নেতা আব্বাস আলী খান ও আব্দুল আলীমের নেতৃত্বে পাকিস্তানী বাহিনী ও এ দেশীয় রাজাকার, আলবদররা জয়পুরহাটে বিভিষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার প্রত্যক্ষ মদদে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী শহীদ ডাঃ আবুল কাশেমকে ২৪জুলাই গভীর রাতে বাড়ী থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে ২৬ জুলাই মাগরিবের নামাজের আগে হত্যা করা হয়। ২৬ এপ্রিল কড়ই কাদিপুর গ্রামে ৩শ ৭১ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের নর-নারীকে একত্রে দাঁড় করিয়ে সারিবদ্ধভাবে হত্যা করা হয়। বাবুপাড়ার অনেককে জয়পুরহাট কলেজে এনে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে পাগলা দেওয়ান গ্রামে প্রায় ১০ হাজার নারী-পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়া হয়। এছাড়া শত শত বাড়ীঘরে অগ্নিসংযোগ, সুন্দরী নারীদের ধর্ষণ, বাড়ীঘর লুটপাট সহ বহু কুকীর্তি তার ইশারায় সংঘটিত হয়েছে ।

আব্দুল আলীমের নামে মামলা ঃ

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে জয়পুরহাট থানায় দালাল আইনে ২৩টি মামলা দায়ের হয়। ঐ সময় জয়পুরহাট থানার দারোগা ফনীভূষণ বাদী হয়ে ঁ/ং ওও (ধ) ড়ভ ইধহমষধফবংয পড়ষষধনৎধঃড়ৎ (ঝঞ) ড়ৎফবৎ ১৯৭২ ধারায় আব্দুল আলীম, পিতা আব্দুল ওয়াহেদ, সাং- জয়পুরহাট নামে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ১/৭২। সে সময় তদন্ত অন্তে তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলাটি বিচারের জন্য তখন বগুড়া শেসান আদালতে প্রেরণ করা হয় যা বিচারাধীন ছিল। দীর্ঘদিন তিনি পলাতক থাকার পর ৭২ এর শেষ দিকে জয়পুরহাট আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে বগুড়া জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

আব্দুল আলীমের রাজনৈতিক উত্থান ঃ

জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তিনি ১৯৭৫ সালে জয়পুরহাট পৌরসভার চেয়ারম্যান হন। ১৯৭৯ সালে তৎকালীন জিয়া সরকারের বস্ত্র ও যোগাযোগ মন্ত্রী হন। ১৯৮৪ সালে এরশাদ সরকারের সময় উপজেলা চেয়ারম্যান, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে খালেদা জিয়া সরকারের সময় এমপি নির্বাচিত হন। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি সংস্কারপন্থী হিসাবে বিএনপিতে নিজেকে প্রকাশ করেন। বরাবরই তিনি সরকারী দলের সঙ্গে যুক্ত থাকায় এতদিন তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি। বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কার্যক্রম শুরু করলে জয়পুরহাটবাসী তার গ্রেফতারের দাবীতে সোচ্চার হয় ।

রাজনীতি থেকে বিদায় ঃ

দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে আব্দুল আলীম জয়পুরহাট বাসীর নেতৃত্ব দিয়েছেন । কখনও তাকে ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়তে হয়নি । ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনের আগে তিনি সংস্কারপন্থি হিসাবে তৎকালীন সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখতেন । ওই সময় বিএনপিতে দুর্দিন শুরু হলে তিনি দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়াকে কটাক্ষ করে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বক্তব্য দেন । এর পরই বিএনপি নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন । ২০০৭ সালের ৪ আগষ্ট জয়পুরহাট জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় আব্দুল আলীম সহ তার বেশকিছু অনুসারীদের বিএনপি থেকে বহিস্কার করা হয় । পরবর্তিতে ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে জয়পুরহাট-১ আসনের টিকিট পাওয়া থেকে বঞ্চিত হলে তার দীর্ঘ ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটে ।

যুদ্ধাপরাধীদের তালিকায় আব্দুল আলীম ঃ

গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সেক্টর কমান্ডার ফোরাম এর পক্ষ থেকে ৫০ জন যুদ্ধাপরাধীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। ঐ তালিকায় ১৩নং স্থানে ছিলেন জয়পুরহাটের আব্দুল আলীম। এছাড়া বর্তমান মহাজোট সরকারের সময় যেসব রাজনীতিক ও বিভিন্ন পেশাজীবীর দেশত্যাগের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল সে তালিকায়ও আব্দুল আলীমের নাম ছিল। এছাড়া ইতিপূর্বে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে তার লাল পাসপোর্টে পুত্র পরিচয়ে আয়্যারল্যান্ডে মানুষ পাচারের সময় ভারতের বিমান বন্দরে পাসপোর্ট আটক করা হয়েছিল। সে সময় এমপি থাকার কারনে নোট ভারবাল কেসের রায় পরে আর জানা যায়নি। ভারতে লাল পাসপোর্ট আটকের খবর প্রকাশের পর তিনি ঢাকার থানায় পাসপোর্ট হারানোর মামলা দায়ের করেন লোক দেখানোর জন্য।

আব্দুল আলীমের বিচারে অসন্তোষ প্রকাশ জয়পুরহাটবাসীর ঃ

১৯৭১ এর শহীদ ডাঃ আবুল কাশেম এর পরিবারের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, রাজাকার আব্দুল আলীমের হুকুমে আবুল কাশেমকে হত্যা করা হয়েছে। তার বিচারের রায়ে আমরা খুশী নয়। শহীদ ডাঃ আবুল কাশেমের মেয়ে লাইলী বেগম ও নাতী মিলাদুন বলেন, আমরা এ রায়ে হতাশ হয়েছি, আমরা তার সর্বোচ্চ সাজা আশা করেছিলাম কিন্তু সে রায় হলো না। আশা করি আপীলের মাধ্যমে সর্বোচ্চ রায় হবে এবং এ সরকারের আমলেই সে রায় কার্যকর হবে।’

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জয়পুরহাটের একাধিক মানুষ জানান, ১৯৭১ সালে আব্দুল আলীম পাকিস্তানী মেজর আফজালকে সঙ্গে নিয়ে একসঙ্গে অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে সাথে নিয়ে ফটোসেশন করার পরে তাদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। ঐ সময়ে বিভিন্ন পত্রিকায় ছবিটি ছাপানো হয়েছিল। তার রায়ে জয়পুরহাটবাসী সন্তুষ্ট হতে পারেনি ।

জয়পুরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি গোলাম হক্কানী, লাইব্রেরী ও ক্লাবের সাধারন সম্পাদক রাজা চৌধুরী এবং মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন সহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আমরা আলীমের এ রায় মানিনা, তার রায়ের আপীলের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

রায় প্রত্যাখান করে বিক্ষোভ মিছিল

আব্দুল আলীমের আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায় দেওয়ার পর রায় প্রত্যাখান করে তার ফাঁসির দাবীতে জয়পুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামীলীগ, মুক্তিযোদ্ধা ও জেলার সাধারন মানুষ। তাদের দাবী মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হোক।

এ দিকে আব্দুল আলীম সমর্থকরা তার রায় ঘোষনার পর শহরে মিছিল বের করার চেষ্টা করলে আওয়ামীলীগ কর্মীরা তাদেরকে ধাওয়া করে। এসময় আব্দুল আলীম সমর্থকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

আব্দুল আলীমের বিচারে বিএনপি’র প্রতিক্রিয়া ঃ

এ রায়ে জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোজাহার আলী প্রধান বলেছেন, ‘আব্দুল আলীম সংস্কারপন্থী হওয়ায় বিএনপি থেকে ২০০৭ সালের আগষ্ট মাসে বহিস্কৃত হন। কাজেই তার রায় কি হলো এ বিষয়ে কোন প্রতিক্রিয়া তাদের নেই। তবে কেন্দ্রীয় ভাবে কোন কর্মসুচী দেওয়া হলে তা পালন করা হবে।’

রায়কে কেন্দ্র করে শহরের নিরাপত্তা ব্যাবস্থাঃ

পুলিশ সুপার হামিদুল আলম জানান, এ রায়কে ঘিরে সকাল থেকেই শহরের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা ছিল জোড়দার। যে কোন ধরনের নাশকতা এড়াতে শহরের মোড়ে মোড়ে টহল ছিল অতিরিক্ত পুলিশের। এছাড়া র‌্যাব এবং সাদা পোষাকে পুলিশও ছিল শহরে। এদিকে র‌্যাব পুলিশের পাশাপাশি সার্বক্ষনিক প্রস্তুত রাখা হয়েছিল তিন প্লাটুন বিজিবি।

এরশাদুল বারী তুষার

জয়পুরহাট।

মোবা ঃ০১৭১৩-৭৮১৩০৩।

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

সারাদেশ এর সর্বশেষ খবর

সারাদেশ - এর সব খবর