thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১৩ আষাঢ় ১৪৩১,  ১৯ জিলহজ ১৪৪৫

সিলেটে ৪০ হাজার পরিবারসহ তলিয়ে গেছে সুনামগঞ্জের দেড় শতাধিক গ্রাম

২০২৪ জুন ১৮ ১৪:০০:৪৩
সিলেটে ৪০ হাজার পরিবারসহ তলিয়ে গেছে সুনামগঞ্জের দেড় শতাধিক গ্রাম

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক:প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে টিকতে না পেরে আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে সিলেটের সীমান্তবর্তী তিন উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষ। সরকারি হিসেবে, বন্যার কবলে পড়েছে এসব উপজেলার অন্তত ৪০ হাজার পরিবার। পানি কমার প্রত্যাশায় কেউ কেউ ভোগান্তি সহ্য করে এখনও টিকে আছেন বাড়িতে। কিন্তু পূর্বাভাস বলছে, আগামী দুই-তিন দিনে আরও অবনতি হতে পারে পরিস্থিতি।

বাড়ছে পানি, বাড়ছে ভোগান্তি। তবুও যেন মায়া কাটছে না আপন ভিটেমাটির। এদিকে উজানের ঢলে সিলেটের সবকটি নদীর পানি বেড়েই চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ১২ ঘণ্টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বেড়েছে ৪৩ সেন্টিমিটার। এতে বিপদসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া কুশিয়ারা, সার, গোয়াইনসহ সব কটি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, আজও সিলেটে অব্যাহত থাকবে বৃষ্টিপাত।

অন্যদিকে সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগর, দিরাইসহ প্রায় সব কয়টি উপজেলা। জেলার সবকটি পয়েন্টেই বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা নদীর পানি। ফলে নদী উপচে শহরেও ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি।

ছাতক পৌর এলাকার বাসিন্দা মাসুদ আমান বলেন, ২২ এর বন্যার চেয়ে ভয়ানক রূপ নিচ্ছে এবারের বন্যা। আমরা ছেলে-মেয়ে নিয়ে বিপাকে আছি। আমার ২ মেয়ের কেউ সাঁতার জানে না। কী হবে এখনও জানি না।

আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে বন্যার কবলে পড়া সাধারণ মানুষের চোখ এভাবেই তাকিয়ে থাকে সরকারি সহায়তার দিকে। তবে, যারা আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন তারাও পড়ছেন ব্যাপক ভোগান্তিতে। আশ্রয়কেন্দ্রের চারপাশে পানি, অর্থাৎ যেদিকে চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। তাই সরকারি সহায়তার দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই তাদের।

সরেজমিন দেখা যায়, দফায় দফায় আসা পাহাড়ি ঢল ভোগান্তি বাড়িয়েই যাচ্ছে এসব নিম্নাঞ্চলের এলাকার মানুষের। নতুন করে আবারও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা।

এক সপ্তাহ ধরেই এসব এলাকার পরিবারগুলোর ঘরে ঢুকছে পানি। আশপাশের অনেকেই ছেড়েছেন ঘর। কিন্তু ভিটেমাটি আর আসবাব ছেড়ে যেতে চাচ্ছেন না অনেকেই। তাই, ভোগান্তি নিয়েই টিকে থাকার চেষ্টা করছেন তারা।

খাটের নিচেও পানি, নেই পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থাও। এমন পরিস্থিতিতে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে দুই শিশু। হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সুনামগঞ্জবাসী। ঘরবাড়ি ছাড়তে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। প্লাবিত হয়েছে জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর ও তাহিরপুরের অন্তত দেড় শতাধিক গ্রাম। খোলা হয়েছে ৫১৬টি আশ্রয় কেন্দ্র। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, ভোগান্তিতে থাকা মানুষের পাশে আছেন তারা। সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, আমাদের নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। আমরাও নিয়মিত অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর