thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২ জুন 25, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২,  ৫ জিলহজ 1446

যে শর্তে মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মতি দিল হামাস

২০২৫ জুন ০১ ০১:২০:৪১
যে শর্তে মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মতি দিল হামাস

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক:মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবিত সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবে আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দিয়েছে হামাস।তবে বেঁধে দিয়েছে একটিমাত্র শর্ত।সেটি হলো- একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি— যা এতদিন ইসরাইলের জন্য ‘রেড লাইন’ ছিল।

শনিবার এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি জানায়, প্রস্তাব অনুযায়ী তারা ১০ জন জীবিত জিম্মি ও ১৮টি মৃতদেহ ফেরত দেবে। বিনিময়ে ইসরাইল একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে।

উইটকফের প্রস্তাবের সঙ্গে মিল রেখেই হামাসের পক্ষ থেকে এ বক্তব্য দেওয়া হয়েছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

হামাসের ভাষ্য, ‘আমরা মনে করি, এ প্রস্তাবের লক্ষ্য একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা, গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলি সেনা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং আমাদের জনগণের জন্য মানবিক সহায়তার প্রবাহ নিশ্চিত করা।’

সেই সঙ্গে, ফিলিস্তিনি জনগণের স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবে হামাস ‘একটি জাতীয় পরামর্শ প্রক্রিয়া শেষে’ সাড়া দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।

বিবৃতিতে সরাসরি কোনো পরিবর্তনের দাবি উল্লেখ না থাকলেও আলোচনার সঙ্গে জড়িত এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, হামাস কিছু সংশোধনী চাইলেও তাদের প্রতিক্রিয়া ছিল মোটের ওপর ইতিবাচক।

এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে নেতানিয়াহু গাজায় আটক জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছেন যে, তার সরকার উইটকফের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।

বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসও এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এর আগের বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ গাজায় গত মার্চ মাসে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থমকে যায়। মূল দ্বন্দ্বটা রয়ে গেছে- মূলত ইসরাইল চায় হামাস যেন পুরোপুরি নিরস্ত্র হয়, তাদের সামরিক ও প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে দেয় এবং এখনো গাজায় আটকে থাকা ৫৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয় — তারপরই কেবল যুদ্ধ শেষ করার কথা ভাবা হবে।

অন্যদিকে, হামাস বলে আসছে, তারা অস্ত্র ত্যাগ করবে না এবং ইসরাইলকে অবশ্যই গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে এবং যুদ্ধ স্থায়ীভাবে শেষ করতে হবে।

ইসরাইলের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় দক্ষিণ ইসরাইলে প্রায় ১,২০০ ইসরাইলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।

জবাবে গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযান শুরু হয়।অব্যাহত এই আগ্রাসনে ইসরাইল এখন পর্যন্ত ৫৪,৪০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।সেইসঙ্গে পুরো উপত্যকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।

পাশাপাশি গত মার্চ থেকে গাজায় পুরোপুরি অবরোধ আরোপ করে গোটা উপত্যকাকে দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিয়েছে দখলদার ইসরাইল।

এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক মহলের চাপ ও ক্রমাগত মানবিক সংকটের মুখে উভয় পক্ষকে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে, যাতে রক্তপাতের অবসান ঘটিয়ে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতার পথ খুলে যায়।

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর