thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৩ জমাদিউল আউয়াল 1446

বদলে গেছে পিকেটিং

সহিংস হয়ে উঠছে রাজনীতি

২০১৩ ডিসেম্বর ০১ ২২:০০:৫২
সহিংস হয়ে উঠছে রাজনীতি

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বদলে যাচ্ছে হরতাল, অবরোধের পিকেটিংয়ের ধরন। দিন দিন সহিংস হয়ে উঠছে পিকেটিং ও রাজনীতি। রাজনৈতিক ও অপরাধ বিশ্লেষকেরা এজন্য বিরোধী দলের প্রতি সরকারের কঠোর মনোভাব ও পুলিশের মারমুখী আচরণকেও দায়ী করছেন।

তাদের অভিযোগ, সরকার নিজেদের স্বার্থে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্যদের দলীয় ক্যাডার বাহিনীর মতো ব্যবহার করছে। এ জন্য বিরোধী দলের কর্মীরা বাধ্য হয়েই চোরাগোপ্তা পথে পিকেটিংয়ে বাধ্য হচ্ছে।

বিষয়টি দেশের রাজনীতির জন্য কোনোক্রমেই মঙ্গলজনক নয়। আবার কেউ কেউ বলছেন, বর্তমানে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা পিকেটিংয়ের নামে পুলিশকে তাদের প্রতিপক্ষ বানাচ্ছে। মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেলসহ নানা বিস্ফোরক নিক্ষেপ করা হচ্ছে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে বাধ্য হয়েই পুলিশ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি মারমুখী হয়ে উঠছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা মাত্র গুলির মতো চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগে হরতালের আগের দিন সন্ধ্যায় হরতাল আহ্বানকারী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা মশাল নিয়ে হরতালের স্বপক্ষে মিছিল বের করতেন। আগের দিনই মাইকযোগে শহরময় প্রচারণা চালাতেন, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতেন হরতাল পালনের। পরদিন হরতাল আহ্বানকারী দলের নেতাকর্মীরা দল বেধে রাস্তায় নেমে আসতেন। পিকেটিং করতেন। কোন রিকশা বা অন্য যানবাহন চলাচল করলে নেতাকর্মীরা বড়জোড় রিকশার চাকার হাওয়া ছেড়ে দিতেন। যাত্রীদের নেমে যেতে অনুরোধ করতেন। পুড়িয়ে মারতেন না। কিন্তু বর্তমানে হরতালকারী নেতাকর্মীরা পিকেটিংয়ের জন্য রাস্তায় নামতে না পেরে দলীয় নির্দেশ ও আনুগত্য দেখাতে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে হতাহত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

তাদের পিকেটিংয়ের ধরন দেখে মনে হয়, এসব কর্মকাণ্ড যেন দেশীয় আইনে কোনো নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারি এ বিষয়ে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘পুলিশের মারমুখী আচরণ ও সরকারের অতিমাত্রায় দমননীতিই মূলত এর কারণ।’

তিনি বলেন, ‘অতীতে হরতালের আগে পুলিশের প্রহরায় হরতাল সমর্থকরা মিছিল বের করতো। জান-মালের নিরাপত্তার স্বার্থে মিছিলের শেষ পর্যন্ত পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে সহযোগিতা করতো। কিন্তু বর্তমানে পুলিশ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের রাস্তায় নামতে দিচ্ছে না। ফলে তারা বাধ্য হয়েই চোরাগোপ্তা পথ বেছে নিচ্ছে। সেজন্য হরতালের পিকেটিংও আগের চেয়ে অনেক সহিংস হয়ে উঠছে। যা দেশের রাজনীতির জন্য অশুভ।

তবে, এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে পুলিশের মহা পরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘বর্তমানে রাজনৈতিক দলের পিকেটাররা হরতালের পিকেটিংয়ের নামে যা করছে, তা রীতিমত ফৌজদারী অপরাধ। এক সময় রাজনৈতিক দলগুলো হরতালে মিছিল করেছে। রাজপথে অবস্থান নিয়ে যানবাহনও ভাঙচুর করেছে, কিন্তু যাত্রী ও চালকদের কোনো ক্ষতি করেনি। কিন্তু বর্তমানে পিকেটাররা যাত্রীসহ চালককে পুড়িয়ে মারতেও দ্বিধা করে না।’

দেখামাত্র পিকেটারদের গুলি করার বিষয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘আগের দিনে হরতাল সমর্থনকারীরা মিছিল করলে, মিছিলের সামনে কিংবা পেছনে পুলিশের কর্ডন থাকতো। বর্তমানে হরতাল সমর্থনকারীরা প্রতিপক্ষ হিসেবে সরাসরি পুলিশের প্রতি হামলা করছে। ককটেল নিক্ষেপ করছে। পুলিশকে একা পেয়ে মারধর করছে। পিটিয়ে মেরে ফেলছে।’

পুলিশের আইজি বলেন, পুলিশ নয়, রাজনৈতিক দলগুলোকে এ সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তাদের মনে রাখতে হবে পুলিশ তাদের প্রতিপক্ষ নয়। রাজনৈতিক বিরোধ বা সমস্যা রাজনৈতিক দলগুলোকেই মীমাংসা করতে হবে আলোচনার মাধ্যমে। ।

(দ্য রিপোর্ট/টিএস/কেজেএন/এমসি/এমডি/ডিসেম্বর ০১, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর