thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৩ জমাদিউল আউয়াল 1446

‘আগুন নিয়ে যারা খেলছে, তাদের প্রতিহত করতে হবে’

২০১৩ ডিসেম্বর ০৩ ১৬:২০:৫০
‘আগুন নিয়ে যারা খেলছে, তাদের প্রতিহত করতে হবে’

গাজীপুর সংবাদদাতা : আগুন নিয়ে যারা খেলছে, দেশের গরীব মানুষকে আগুন দিয়ে, বোমা মেরে যারা হত্যা করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গাজীপুরের কোণাবাড়িতে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের পুড়ে যাওয়া কারখানা ভবন মঙ্গলবার পরিদর্শনে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে স্ট্যান্ডার্ড কারখানার সামনে এক আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাত্রীবাহী বাসে চড়ে যারা যাতায়াত করেন তারা-তো নিম্ম আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। বাসের ভিতর পেট্রোল বোমা মেরে ওইসব গরীব মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে কেন? তাদের কাছে আমার প্রশ্ন কি অপরাধ ওইসব গরীব মানুষের? তাদের কেন পুড়িয়ে মারা হচ্ছে? কারা এসব ধ্বংসাত্মক কাজগুলো করছে সেটা খুঁজে বের করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধী দলের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কত মানুষ মারা যাচ্ছে, ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে কত পরিবার।

সম্প্রতি বিরোধী দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোন আলাপের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, যতটুকু নমনীয় হওয়া যায়, ততটুকু নমনীয় হয়ে তাকে আমি অনুরোধ জানালাম। ৭/৮ ঘন্টা চেষ্টা করে টেলিফোনে কথা বললাম। তিনি আমার অনুরোধ রাখলেন না। তিনি মানুষ হত্যা করবেন। তিনি ধ্বংসাত্মক কাজ চালিয়ে যাবেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি স্ট্যান্ডার্ড গার্মেন্টসের অগ্নিসংযোগ সম্পর্কে বলেন, এটা সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা। এটা ধ্বংসযজ্ঞ। এই ধ্বংসযজ্ঞ যারা করে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৪১ জনকে আটক করা হয়েছে। এর পিছনে যারা জড়িত তাদেরও খুঁজে বের করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তার অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার সময় শ্রমিকদের নিম্মতম বেতন ছিল মাত্র এক হাজার ছয়শত টাকা। আমি মালিকদের অনুরোধ করে তাদের ন্যূনতম বেতন ৩ হাজার টাকা করে দিয়েছি। এর মাত্র তিন বছরের মাথায় মজুরি বোর্ড গঠন করে, আবার কারখানা মালিকদের অনুরোধ করে পাঁচ হাজার তিনশত টাকায় ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ করে দিয়েছি। কারখানা মালিকরা সেটা মেনেও নিয়েছেন। তাহলে কেন শ্রমিকরা কারখানা পোড়াবে?

এ ছাড়া বিজিএমই’র সভাপতি আতিকুল ইসলাম, গাজীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের এমডি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বক্তব্য দেন।

শেখ হাসিনা বেলা ২টার কিছু সময় পর স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের কারখানা ভবনে যান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুড়ে যাওয়া ১০তলা বিশিষ্ট কারখানা প্রাঙ্গণে পৌঁছালে এফবিসিসিআই’র সভাপতি আকরাম হোসেন, বিজিএমই’র নেতৃবৃন্দ, কারখানার কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান।

প্রধানমন্ত্রী কারখানার পুড়ে যাওয়া বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন। এ সময় পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা জিয়াউদ্দিন বাবলু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশে করে বিজিএমইএ’র সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, আপনার নির্দেশে আমরা শ্রমিকদেরকে ৫ হাজার তিনশত টাকা ন্যূনতম বেতন মেনে নিয়েছি। অথচ আমাদের কারখানার নিরাপত্তা নাই। আমরা আমাদের কারখানার নিরাপত্তা চায়।

স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমি সিরাজগঞ্জের মানুষ। কাজীপাড়ার নদী ভাঙ্গা এলাকার মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখে তাদের জন্য কিছু করার উদ্দেশ্যেই এ কারখানা গড়ে তুলেছিলাম। এখানে ২৬ হাজার শ্রমিক কাজ করেন, তারা এখানে আগুন দিয়েছে এটা আমি বিশ্বাস করি না।

তিনি দায়ি ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার দাবি জানান। এই ক্ষতি যাতে পুষিয়ে নিতে পারেন সেই ধরনের সহায়তা চান প্রদানমন্ত্রীর কাছে মোশাররফ হোসেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএফ/এসবি/ডিসেম্বর ০৩, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর