thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৫ জমাদিউল আউয়াল 1446

ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়, পুলিশ প্রহরায় দূরপাল্লার বাস

২০১৩ ডিসেম্বর ২১ ১৪:৩৮:১৩
ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়, পুলিশ প্রহরায় দূরপাল্লার বাস

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৮৩ ঘণ্টা অবরোধের প্রথম দিন শনিবার ট্রেনের শিডিউলে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তবে ঢাকা থেকে পুলিশ প্রহরায় দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হয়েছে।

দুপুর পৌনে ১২টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও আসছে না ট্রেন। আবার ট্রেন এলেও কখন ছাড়বে সেটাও তারা জানেন না। এমনকি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও জানে না কখন ট্রেন আসবে আবার কখন ছাড়বে।

মহসীন আলী নামে এক যাত্রী বলেন, আমি ধূমকেতু এক্সপ্রেসে রাজশাহী যাব। ট্রেন ছাড়ার সময় ছিল সকাল ৬টা। কিন্তু এখনো ট্রেনই আসেনি। কখন যেতে পারবেন সেটাও জানেন না। এমনকি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও কিছু জানাতে পারছেন না।

রেলওয়ে তথ্য অফিসার মোঃ সফিক জানান, আমরা এখন কোন তথ্যই ঠিকমতো দিতে পারছি না। ট্রেন কখন আসবে কখন যাবে সে বিষয়ে যাত্রীদের কোন সহায়তা করতে পারছি না। কেননা সকালের ট্রেন রাতে, আবার রাতের ট্রেন সকালে আসছে।

তিনি আরো জানান, ট্রেনের অস্বাভাবিক বিলম্বের কারণে যাত্রীরা আমাদের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করছে।

এদিকে অবরোধে প্রথমবারের মতো রাজধানী ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়া হয়েছে। আজ সকাল পৌনে ১০টার দিকে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে এনা পরিবহনের একটি বাস পুলিশ পাহারায় টাঙ্গাইলের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

মহাখালী বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ভোরে বাস ছাড়ার কথা থাকলেও যাত্রী স্বল্পতার কারণে তা ছেড়ে যেতে বিলম্ব হয়েছে।

বাস টার্মিনালে উপস্থিত যাত্রী আবু বকর জানান, তিনি টাঙ্গাইল যাবেন। ভাই অসুস্থ থাকার কারণে তাকে অবরোধের মধ্যে যেতে হচ্ছে। তিনি জানান, পুলিশ প্রহরা দিচ্ছে বলে একটু স্বস্তি পাচ্ছেন। তবে ভয় এখনো কাটছে না। জীবনের ঝুঁকিতো থেকেই যাচ্ছে।

মহাখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা আর পারছি না। আমাদের ব্যবসার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। পরিবহন শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাই আমরা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে বাস চলাচলের। এটি সফল হলে আর অবরোধ মানা হবে না।

এদিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে অল্প সংখ্যক বাস ছেড়ে যাচ্ছে। সিলেটের উদ্দেশেও কিছুসংখ্যক বাস ছেড়ে যাচ্ছে। সায়েদাবাদ পরিবহন শ্রমিক সমিতির সভাপতি হাজী নূর মোহাম্মদ বলেন, যাত্রী থাকলে আমরা বাস ছাড়ছি। যাত্রীরা ভয় পায় সেজন্য দূরপাল্লার বাস ছাড়তে সমস্যা হচ্ছে।

সকাল ৯টার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বাস সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। এছাড়া বাস কাউন্টারগুলোতে কেউ নেই। তেমন কোন যাত্রী লক্ষ্য করা যায়নি।

আসাদ নামের এক যাত্রী জানান, তিনি পাবনা যাবেন। ভোর থেকে এখানে বসে আছেন, কোনো বাস পাচ্ছেন না। আদৌ পাবেন কিনা, সে বিষয়টিও জানেন না।

সাতক্ষীরা এক্সপ্রেসের কাউন্টার ম্যানেজার মোঃ মোস্তাক বলেন, যাত্রী নেই বলে আমরা বাস ছাড়ছি না। তবে যাত্রী হলে আমরা বাস ছাড়ব কিনা সিদ্ধান্ত নেব।

দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ রুস্তম আলী বলেন, অবরোধে বাস ছাড়তে আমরা ভয় পাই। কেননা যাত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করি। এ কারণে দূরপাল্লার বাস ছাড়ার সময় আমরা বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় এনে তারপর সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।

এদিকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে লঞ্চ ছেড়ে গেছে। তবে সেখানে অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের চেয়ে যাত্রীর উপস্থিতি অনেক কম ছিল।

(দ্য রিপোর্ট/এএইচএ/শাহ/এমডি/নূরুল/ডিসেম্বর ২১, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

অবরোধ এর সর্বশেষ খবর

অবরোধ - এর সব খবর