thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৪ জমাদিউল আউয়াল 1446

৯ অথবা ১১ জানুয়ারি হতে পারে নতুন সরকারের শপথ

২০১৩ ডিসেম্বর ২২ ০১:০২:৪৭
৯ অথবা ১১ জানুয়ারি হতে পারে নতুন সরকারের শপথ

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নতুন বছরের ৯ অথবা ১১ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীদের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে গঠিত হতে পরে নতুন সরকার। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা দ্য রিপোর্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরবর্তী সরকারের কাঠামো কী হবে, কিভাবে আরো এক মেয়াদ সরকারে থাকা যাবে তা নিয়ে ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন।


দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে গেছেন। বেশির ভাগ আসনে ভোট ছাড়াই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় ভোট কেন্দ্রগুলোতে নাশকতার আশঙ্কাও দূর হয়ে গেছে।


নির্বাচন অনুষ্ঠান ভণ্ডুল হয়ে যাওয়ার দুর্ভাবনাও এখন আর আওয়ামী লীগের নেই। তাই এখন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলতে শুরু করেছেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয়, এখন সংলাপ হতে পারে একাদশতম নির্বাচন নিয়ে।


আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারণী নেতা দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘সরকার গঠন এবং প্রয়োজনে পরের সংসদ নির্বাচন নিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে ইতোমধ্যে কথা বলতে শুরু করেছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের কৌশল হচ্ছে অবস্থা সামাল দিতে পারলে আগামী পাঁচ বছরই ক্ষমতায় থাকবে, না পারলে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেওয়া হবে।’


দলটির সিনিয়র কয়েকজন নেতা বলেছেন, ‘যত প্রতিকূলতাই আসুক, আপাতত ক্ষমতা ছাড়ছে না আওয়ামী লীগ।’
অন্যদিকে শনিবার এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত বলেছেন, ‘৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুযায়ী, বিরোধী দল যদি জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন, হরতাল-অবরোধ ও নাশকতা বন্ধ করে তাহলে আলোচনার মাধ্যমে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’


নির্বাচনের বিষয়ে বিরোধী দলীয় নেতার উদ্দেশে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে প্রস্তাব দিয়েছেন, সেটা মেনে অগণতান্ত্রিক কর্মসূচি বন্ধ করুন। নির্বাচনের পরে একাদশ সংসদ হবে, নতুন মন্ত্রিসভা হবে। আমরা আশা করি, আলোচনায় বসে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ফর্মুলায় নির্বাচন করতে পারবো।’


সরকার ও আওয়ামী লীগ সূত্রে আরও জানা গেছে, দশম জাতীয় সংসদ গঠনের পর বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবিলা ও আন্তর্জাতিক চাপ সামাল দিতে পারলে পুরো পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবে, না পারলে আলোচনার মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেওয়ার পথ খোঁজা হবে। ইতোমধ্যেই এই সরকারের তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমন ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, ‘সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য নয়, আগামী পাঁচ বছর মেয়াদের সরকার গঠনের জন্যই ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা হচ্ছে।নির্বাচন কেউ শর্ট টাইমের জন্য করে না, নির্বাচন ৫ বছরের জন্য, ২০১৯ সাল পর্যন্ত।’


৫ জানুয়ারির পর সরকার গঠনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐক্যমত্যের একটি সরকারের প্রস্তাব করতে পারেন। এতে নির্বাচিত সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারলে দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সরকারের পাঁচ বছর পাড়ি দেওয়ার পথ সুগম হবে বলে ধারণা করছে আওয়ামী লীগ।


এ ক্ষেত্রে টেকনোক্রেট কোটায় কয়েকজন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও পেশাজীবীদের অন্তর্ভুক্তি করার বিষয়েও একটি কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকলেও বেশিসংখ্যক মন্ত্রী দিয়ে তাদের সরকারে রাখার কৌশলও নেওয়া আছে।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক নেতা বলেন, ‘সবকিছুই ৫ জানুয়ারির পর পরিস্কার হবে।’ এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য মন্তব্য করেন, ‘৫ জানুয়ারির পর সরকার গঠন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি চমকপ্রদ প্রস্তাব দেবেন। আপাতত এটুকু বলতে পারি।’


নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, সম্প্রতি জাতিসংঘের রাজনীতি বিষয়ক সহকারী জেনারেল অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাদের মধ্যে যেসব বৈঠক হয় সেখানেও একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে কথা হয়।


বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, ‘এ নির্বাচনের পথ থেকে সরে আসার কোনো সুযোগ নেই, এটা বিএনপির নেতাদের কাছে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তাদের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে, আগামী নির্বাচনের পদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে প্রস্তাব দেওয়া-নেওয়া হতে পারে।


আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এক রকম হয়েই গেছে। ইতোমধ্যে ১৫৪ জন প্রতিনিধি সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী ৫ জানুয়ারি বাকি আসনগুলোর নির্বাচনের পরই দশম সংসদ গঠিত হবে। বিএনপি আন্দোলন করেও এ নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না।


আওয়ামী লীগ নেতারা আরও জানান, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর সরকারের প্রথম সংসদ অধিবেশনেই দেওয়া হতে পারে 'সর্বদলীয় সরকারের' গঠন প্রক্রিয়াসহ এ আমলের গৃহীত নানা পদক্ষেপের বৈধতা।


এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘নির্বাচন হয়ে গেলে সংসদ বসলে নতুন সরকার শপথ তো নিতেই পারে। তবে এ সকল বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই জানেন। আমি এই বিষয়ে এর বেশি কিছু জানি না।’


আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত করে জানি না। তবে আমাদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন হওয়ার পর যে কোন সময় নির্বাচিত সরকার শপথ নিতে পারে।


(দ্য রিপোর্ট/এইউএ/এমসি/ডিসেম্বর ২২, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর