thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল 24, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৭ শাওয়াল 1445

দোয়া কবুল হওয়ার কতিপয় শর্ত

২০১৭ জানুয়ারি ০৭ ১৮:৪১:৪৫
দোয়া কবুল হওয়ার কতিপয় শর্ত

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : পৃথিবীতে বিভিন্ন সময়ে আমরা নানা রকম সমস্যায় পরে থাকি । এ সময় আমাদের মন বিচলিত হয়। কি করলে আমাদের মনে শান্তি আসবে, কিভাবে আমাদের দোয়া কবুল হবে, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের মেহেরবানির ছায়া পাব- এমন অনেক প্রশ্ন আমাদেরকে অস্থির করে। এ সময় আল্লাহর জিকির ও তার রাসূল(সাঃ) এর উপর দরুদ পাঠে উত্তম ফল পাওয়া যায়।

নিচের আমলগুলো নিয়মিত সঠিকভাবে পালন করলে আল্লাহ নিশ্চই আমাদের দোয়া কবুল করবেন। দুঃসময়ে মনের প্রশান্তি ফিরিয়ে দেবেন। আল্লাহর প্রতি অবিচল বিশ্বাস ও আস্থা রেখে, তার প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করে নিচের আমলগুলো নিয়মিত করলে দোয়া কবুল হবে ইনশা আল্লাহ ।

কিছু সময় আছে যে সময়গুলোতে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর। তারমধ্যে একটি সময় হলো রাতের শেষ তৃতীয়াংশ। কারণ এ সময় আল্লাহ সপ্ত-আকাশের নিচেরটিতে চলে আসেন এবং বান্দার প্রতি আহ্বান জানাতে থাকেন "তোমরা কেউ কি আছ যে আমার কাছে কিছু চাইবে আর আমি তাকে তা দিবো?" দোয়া কবুল হওয়ার আরও একটি সময় হলো আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়টুকু।

রাতের শেষ তৃতীয়াংশে ওযু করে পবিত্র হয়ে দুই রাকাত সালাতুত তওবার নামাজ পড়ে ও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে সমস্যাগুলোর সমাধান, দোয়া কবুল হওয়ার জন্য ও আখিরাতে উত্তম ফল লাভের জন্য যেসকল আমল করা উচিত সেগুলো হচ্ছে-

* ১০০ বার সুবাহানাল্লা (আল্লাহ পবিত্র)

* ১০০ বার আলহামদুলিল্লাহ(সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য)

* ১০০ বার আল্লাহু আকবার (আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ)

* ১০০ বার ইয়া ওয়াহহাব (আল্লাহ সবকিছু দানকারী)

* ১০০ বার আসতাগফিরুল্লাহ (আমি আমার আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি)

* ১০০ বার দোয়া ইউনুছ তথা লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুন-তু মিনাজ জোয়ালেমিন (আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, আল্লাহ পবিত্র, মহান, আমি তো সীমা লঙ্ঘনকারী )

মহান আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর উপর ১০০ বার দরুদ পড়ে দোয়া করলে ইনশাআল্লাহ দোয়া কবুল হবে। আল্লাহ আপনার সমস্যা সমাধান করে দিবেন।

এই আমলগুলো নিয়মিত করলে, নিয়মিত নামাজ পড়লে ও প্রতিদিন অন্তত কোরান থেকে ৫টি আয়াত অর্থসহ তেলোয়াত করলে আল্লাহ আপনার ঈমান মজবুত করে দিবেন। ঈমানকে বাড়াতে বাড়াতে আল্লাহ এমন পর্যায়ে আপনাকে নিয়ে যাবেন যে, দুনিয়ার কাউকে আপনি পরওয়া করবেন না। সবকিছুতেই একমাত্র আল্লাহর উপরেই ভরসা করবেন।

আল হামদুলিল্লাহ : আল হামদুলিল্লাহ শব্দের অর্থ, সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য। যে কোন সুখবর বা ভালো অবস্থা সম্পর্কিত সংবাদের বিপরীতে সাধারণত এটি বলা হয়ে থাকে। যেমন ভাই আপনি কেমন আছেন? জবাবে বলা উচিত, আল হামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।

ইনশাআল্লাহ : ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ, মহান আল্লাহ যদি চান তাহলে। ভবিষ্যতের হবে, করবো বা ঘটবে এমন কোন বিষয়ে ইনশাআল্লাহ বলা সুন্নত। যেমন ইনশাআল্লাহ আমি আগামী কাল আপনার কাজটি করে দিবো। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ মুমিনদেরকে এর চর্চা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

মাশা আল্লাহ : মাশা আল্লাহ শব্দের অর্থ, আল্লাহ যেমন চেয়েছেন। এটি আল হামদুলিল্লাহ শব্দের মতোই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অর্থাৎ যে কোনো সুন্দর এবং ভালো ব্যাপারে এটি বলা হয়। যেমন, মাশা আল্লাহ তুমি তো অনেক বড় হয়ে গেছো।

সুবহানাল্লাহ : সুবহানাল্লাহ শব্দের অর্থ আল্লাহ পবিত্র ও সুমহান। আশ্চর্য জনক ভালো কোন কাজ হতে দেখলে সাধারণত এটি বলা হয়ে থাকে। যেমন সুবহানাল্লাহ আগুনে পুরো ঘর পুরে গেলেও কুরআন শরীফ অক্ষত আছে।

নাউযুবিল্লাহ : নাউযুবিল্লাহ শব্দের অর্থ, আমরা মহান আল্লাহর কাছে এ থেকে আশ্রয় চাই। যে কোনো মন্দ ও গুনাহের কাজ দেখলে তার থেকে নিজেকে আত্মরক্ষার্থে এটি বলা হয়ে থাকে।

আসতাগফিরুল্লাহ : আসতাগফিরুল্লাহ শব্দের অর্থ আমি মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। অনাকাঙ্ক্ষিত কোন অন্যায় বা গুনাহ হয়ে গেলে আমরা এটি বলবো।

ইন্নালিল্লাহ বা ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন : অর্থ, নিশ্চয়ই আমরা মহান আল্লাহর জন্য এবং আমরা তার দিকেই ফিরে যাবো। যে কোনো দুঃসংবাদ বা বিপদের সময় আমরা এটি বলবো।

লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ : অর্থ মহান আল্লাহর সাহায্য ও সহায়তা ছাড়া আর কোন আশ্রয় ও সাহায্য নেই। শয়তানের কোন ওয়াসওয়াসা বা দুরভিসন্ধিমূলক কোন প্রতারণা থেকে বাঁচার জন্য এটি পড়া উচিত।

কারো সাথে দেখা হলে- হাই, হ্যালো না বলে বলুন- আস সালামু আলাইকুম (আপনার উপর মহান আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হোক)

কেউ আপনার কোন উপকার করলে- তাকে থ্যাংক ইউ না বলে বলুন- জাযাকাল্লাহ খায়রান (মহান আল্লাহ আপনাকে সর্বোত্তম প্রতিদান দান করুন।

কারো কাছ থেকে বিদায় নেয়ার সময়- টা টা না বলে বলুন- আল্লাহ হাফেজ (মহান আল্লাহ সর্বোত্তম হিফাজতকারী) অথবা ফি আমানিল্লাহ।

দোয়া কবুল হওয়ার জন্য যেসব আদব আছে সেগুলো থেকে গুরুত্বপূর্ণ দুটি আদব হলো-দোয়ার শুরুতে প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করা এরপর দরুদ শরীফ পড়া এরপর দোয়া করা এবং শেষে আমীন বলা। দোয়ার মাঝে ও শেষেও দরুদ পড়লে বেশি ভাল।

(দ্য রিপোর্ট/একেএ/এনআই/০৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর