thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল 24, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৭ শাওয়াল 1445

পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতায় শাস্তি বাড়ছে

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ২০ ১৯:৫৫:০২
পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতায় শাস্তি বাড়ছে

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতায় শাস্তির বিধানসহ প্রায় শত বছরের পুরনো একটি আইন রয়েছে। সেই আইনের বাস্তবায়ন না থাকলেও নিষ্ঠুরতায় শাস্তি বাড়িয়ে যুগোপযোগী করা হচ্ছে সেই আইনটি।

‘প্রাণী কল্যাণ আইন, ২০১৭’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সচিবালয়ে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ অনুমোদনের কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি আইন আছে, দি ক্রুয়েলটি টু এনিমেলস্ এ্যাক্ট-১৯২০। ব্যাকডেটেড আইন। এটিকে আপডেট করে নতুনভাবে আনা হয়েছে। অনেক জিনিস বাদ দেওয়া হয়েছে। শাস্তি কিছু বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটা প্রাণী বান্ধব আইন।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রাণীর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে মানুষ ছাড়া মেরুদণ্ডী প্রাণীদের প্রাণী বলা হবে। গৃহপালিত প্রাণীদের বোঝানো হবে যারা মানুষের সেবা দেওয়ার জন্য প্রতিপালিত।’

‘নিষ্ঠুরতা বা ক্লেশের সংজ্ঞা দৈহিক, রাসায়নিক বা পরিবেশগত পীড়ন যা প্রাণীর জন্য শরীরিক বা মানসিক যন্ত্রণার কারণ। আইনে এটাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা করলে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।’

খসড়া আইন অনুযায়ী প্রাণীকে অপ্রয়োজনীয় কষ্ট দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। যেমন প্রাণীকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করানো, নিষ্ঠুরভাবে বা অপ্রয়োজনীয় প্রহার করা, অন্য কোনোভাবে প্রাণীর প্রতি নির্দয় আচরণ করা- এগুলো হচ্ছে নিষ্ঠুর আচরণ।’

তিনি বলেন, ‘বেওয়ারিশ প্রাণী হত্যা করা যাবে না। জনস্বার্থে জলাতঙ্ক বা অন্য কোনো সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলে ব্যথাহীন কোনো মানবিক উপায়ে প্রাণী হত্যা। অসুস্থ হওয়ার রোগের উৎস সৃষ্টিকারী প্রাণী হত্যা সম্পর্কিত সরকারি বা সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম এই আইনের আওতায় পড়বে না।’

‘অর্থাৎ সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা কুকুর নিধন করে সেটা এই আইনের আওতায় পড়বে না।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কোনো পশুর অঙ্গহানী ও বিষ প্রয়োগ করলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে আইনে।’

তিনি জানান, খসড়া আইন অনুযায়ী পশুর প্রতি অপ্রয়োজনীয় নিষ্ঠুরতাসহ বিভিন্ন ধরনের পীড়নের শাস্তি সর্বোচ্চ ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড। আগের আইনে এ শাস্তি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা জরিমানা বা তিন মাসের কারাদণ্ড বা উভয়দণ্ড।

শফিউল আলম বলেন, ‘পশুর অঙ্গহানী বা বিষ প্রয়োগ করলে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।’

আগে এ শাস্তি ছিল ২০০ টাকা অর্থদণ্ড বা ছয় মাসের কারাদণ্ড বা উভয়দণ্ড। পুরনো আইনে পশুকে ফুকা (বেশি দুধ বের করার জন্য পশুর যোনীতে ফু দেওয়া) করা শাস্তি ও গোয়াল ঘরের লাইসেন্স নেওয়া বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে।

নতুন আইনে ‘পোষা প্রাণীর বাণিজ্যিক উৎপাদন, প্রজনন ব্যবস্থা নিবন্ধিকরণ’ নামে নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলে, ‘বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পোষা প্রাণীর প্রজনন, উৎপাদন ও বিক্রয় ব্যবস্থাপনা প্রাণীবান্ধব হতে হবে। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিবন্ধিত হতে হবে।’

‘প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক বা তার দেওয়া ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি মামলা করতে পারবেন। পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরের নিচে নয় এমন কোনো কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগ করে মামলা দায়ের করতে পারবেন। মামলা ভ্রাম্যমাণ আদালতেও বিচার নিষ্পত্তিযোগ্য হবে।’

শফিউল আলম জানান, খসড়া আইনে বলা হয়েছে কোনো প্রাণী বেওয়ারিশ হলেও মারা যাবে না। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা বন্ধ্যাত্বকরণ করতে পারবে। পশু চিকিৎসকের মতামত অনুসারে মৃতপ্রায় প্রাণীগুলোকে ব্যথাহীনভাবে মৃত্যু ঘটানো যাবে।

সংশোধিত শিশু আইন অনুমোদন

বৈঠকে ‘শিশু (সংশোধন) আইন, ২০১৭’ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এ আইনটি ২০১৩ সালের। এ আইন অনুযায়ী যেসব শিশু বিচারের মুখোমুখি হয় অর্থাৎ যারা অপরাধী আর যারা সাক্ষী এক হয়ে গেছে। এটাকে আলাদা করার জন্য এ সংশোধনী আনা হয়েছে।’

তিনি জানান, আগের আইন অনুযায়ী অপরাধের সঙ্গে জড়িত শিশু ও সাক্ষী হিসেবে থাকা শিশু মামলা যে কোনো আইনের অধীনেই হোক না কেন তা বিচারের এখতিয়ার কেবল শিশু আদালতের।

সংশোধিত আইন অনুযায়ী শুধু অপরাধের সঙ্গে জড়িত শিশুর (আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশু) বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আমলে নেওয়াসহ বিচারিক এখতিয়ার কেবল শিশু আদালতের থাকবে। যারা সাক্ষী তারা আসবে না, তাদের বিচার হবে না বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এপি/ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর