thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল 24, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৮ শাওয়াল 1445

নিরাপত্তা পেতেই সরকারি বাড়িতে বিচারপতি মানিক

২০১৭ মার্চ ১৬ ১৯:৪৪:৪৯
নিরাপত্তা পেতেই সরকারি বাড়িতে বিচারপতি মানিক

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : নিরাপত্তা পেতেই বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বরাদ্দ বাতিল হওয়ার পরও সরকারি বাড়িতে থাকছেন। নিজস্ব ফ্ল্যাট প্রস্তুতিতে আরও তিন মাস সময় চেয়ে তিনি আবেদনও করেছেন। বাড়ি বরাদ্দ বাতিলের বিষয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আবাসন অধিদফতরের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করে সাবেক এই বিচারপতি দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, তিনি সময় চেয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন।

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের সেই লিখিত আবেদন থেকে জানা গেছে, নিজ বাসা ছাড়া বাইরে থাকাটাকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন তিনি।

বিচারপতি মানিক আবাসন অধিদফতরের যে বাড়িটিতে রয়েছেন সেটি রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত। বাড়িটির বিষয়ে অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মাসুদুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ে নির্দেশক্রমে জানানো যাচ্ছে যে, মাননীয় বিচারপতি জনাব এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী এর ০৩-১০-২০১৫ ইং তারিখে অবসর জনিত কারণে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশ অনুযায়ী অবসর গ্রহণের তারিখ ০৩-১০-২০১৫ হতে ০২-০৪-২০১৬ ইং তারিখ পর্যন্ত ৬ (ছয়) মাস বসবাসের সময় প্রদান পূর্বক তার নাম হতে বিবেচ্য বাড়ির বরাদ্দ বাতিল করা হয় এবং প্রদত্ত সময়ে স্থানীয় গণপূর্ত রক্ষণাবেক্ষণ অফিসের বরাবরে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য পত্রের মাধ্যমে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি বাড়িটির খালি দখলভার স্থানীয় গণপূর্ত অফিস বরাবর হস্তান্তর না করে ০৩-০৪-২০১৬ তারিখ হতে অদ্যাবধি বিধিবহির্ভূতভাবে বসবাস করছেন বিধায় তার নিকট হতে বাংলাদেশ বরাদ্দ বিধিমালা ১৯৮২ এর ১৯(২) উপবিধির আওতায় প্রামাণিক ভাড়া আদায়যোগ্য।’

এ চিঠির বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, ‘আমি জুন পর্যন্ত এক্সটেনশনের (বাড়ানোর) আবেদন করেছি। তার আগে সময় চেয়েছিলাম। কমুনিকেশন (যোগাযোগ) চলছে প্রথম থেকেই। এর মধ্যে ওরা বলছে ভাড়া দিতে হবে। আমি বললাম কোথায় ভাড়া দিতে হবে বলেন, ভাড়া দিয়ে দেব। যেহেতু আমি সময় চেয়েছি, এজন্য ভাড়া দিতে হবে এটা স্বাভাবিক।’

এদিকে, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী তার আবেদনে বলেছেন, ‘উপরোক্ত বিষয়ে আপনার অফিসের চিঠির প্রেক্ষিতে আমার নিবেদন এই যে, আমার নিজস্ব নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট বসবাসযোগ্য হতে আরও তিন মাস সময় লাগবে। যেহেতু আমি কয়েকটি আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধী এবং গুরুত্বপূর্ণ বিচারের বিষয়ে রায় দিয়েছি ও অবসর গ্রহণের পর পরই ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম এর সঙ্গে কাজ করছি এবং যুদ্ধাপরাধী ও ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে সদা-সোচ্চার সেহেতু, প্রায়ই হুমকির সম্মুখীন এবং একজন টার্গেট হিসেবে চিহ্নিত, সেজন্য আমার জীবনের নিরাপত্তা বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় আমার নিজ ফ্ল্যাটে যাওয়া ছাড়া আমার কোনো বিকল্প নাই, সেখানে আমার রক্ষী পুলিশ সদস্যগণও থাকতে পারবে। এমতাবস্থায়, আমি বিশেষ নিরাপত্তা ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় এ বাড়িতে আমার অবস্থান আরও তিন মাস বাড়িয়ে দেওয়ার নিবেদন করছি।’

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এলএলবি, এলএলএম পাস করার পর বার এট ল' (ব্যারিস্টার) ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৭৮ সালে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে পেশা শুরু করেন। বিচারপতি মানিক ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। পরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের আমলে তাকে স্থায়ী নিয়োগ দেয়া হয়নি।

এই স্থায়ী নিয়োগ না দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের হয়। এ রিট আবেদনের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ ২০০৯ সালের ২ মার্চ তাদের স্থায়ী নিয়োগ দিতে বলেন।

আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী ২০০৯ সালের ২৫ মার্চ হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ তাকে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ৬৭ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ায় সংবিধান অনুযায়ী তিনি ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর অবসরে যান।

(দ্য রিপোর্ট/কেআই/জেডটি/মার্চ ১৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর