thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল 24, ১২ বৈশাখ ১৪৩১,  ১৭ শাওয়াল 1445

সহায়তা দিবে ডিএফআইডি-ইউএনডিপি

নগর দারিদ্র্য কমাতে ৭৭৫.৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প

২০১৭ এপ্রিল ২৪ ১৪:২৯:১০
নগর দারিদ্র্য কমাতে ৭৭৫.৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প

জোসনা জামান, দ্য রিপোর্ট : নগর কেন্দ্রিক দারিদ্র্য কমাতে ৭৭৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ কর্মসূচিতে ৬৬৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ডিএফআইডি) ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১০৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।

এছাড়া এ প্রকল্পের অনুকুলে ৮৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রাপ্তির বিষয়ে ইতোমধ্যে কনসেপ্ট নোট স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানা গেছে।

প্রস্তাবিত প্রকল্প ৫টি নির্দিষ্ট কম্পোনেন্ট (আউটপুট) এর মাধ্যমে নগর দরিদ্র মানুষের জীবন-জীবিকার টেকসই উন্নয়নে কাজ করবে। কম্পোনেন্টগুলো হচ্ছে, দারিদ্রবান্ধব নগর ব্যবস্থাপনা, নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রক্রিয়া শক্তিশালীকরণ, নগর দারিদ্রদের সংগঠন তৈরি করা ও এর মাধ্যমে তাদের নিজস্ব সমস্যা সমাধান, নগর দারিদ্রের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নতিকরণ, অধিকতর নিরাপদ ভুমি ব্যবহার এবং আবাসন খাতে সহজলভ্য অর্থায়নে সহায়তার উন্নত করা হবে।

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো, বিদেশি ও স্থানীয় পরামর্শক, ষ্টাইপেন্ড ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম, ৪টি জিপ, ২টি মাইক্রোবাস, ১০০টি মোটরসাইকেল, ৩৬টি ডেস্কটপ কম্পিউটার, ১৮০টি ল্যাপটপ, ৪০টি স্কানার, ৪০টি প্রিন্টার ৪০টি ডিজিটাল ক্রামেরা, ৩৭টি মাল্টিমিডিয়া, ৩৬টি জিআইএস, ৯১টি ক্লাষ্টার সেন্টার উন্নয়ন, ৯ হাজার বস্তির জন্য নলকূপ স্থাপন, ১ হাজার ২০০টি বস্তিতে বাথরুম নির্মাণ, ৩৪ হাজার ২০টি বস্তিতে স্যানিটারি ল্যাট্রিন, ১ হাজার ২৫০ কিলোমিটার বস্তিতে ড্রেন নির্মাণ এবং ১ হাজার ২৫০ কিলোমিটার বস্তিতে ফুটপাত নির্মাণ করা হবে।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রকল্পটির বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুবিধা বঞ্চিত নগর দরিদ্র মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি সম্ভব হবে। ফলে নগরে বসবাসরত দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে। তাছাড়া, উপকারভোগীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আয় বৈষম্য হ্রাস, কর্মসংস্থান ও দারিদ্র পরিস্থিতির উন্নতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে তাই প্রকল্পটি অনুমোদনযোগ্য।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে নগরায়ন দ্রুত বেড়ে চলছে। আগামীতে দেশে শহরের জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি বৃদ্ধি হবে মাঝারি ও ছোট আকারের শহরগুলোতে। জলবায়ু প্রভাব, মৌসুমী কর্মসংস্থান এমন সব বিভিন্ন কারণে আসা মানুষের কারণে শহুরে পরিকাঠামোর উপরে চাপ পড়বে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণের উপকূলীয় শহরগুলো ব্যাপক ঝুঁকিতে থাকে। অনেক শহরের বিদ্যমান ড্রেনেজ সিস্টেমে সমস্যার কারণে লবনাক্ত পানি অনুপ্রবেশের ফলে নগরবাসীর জন্য বাড়তি সমস্যা তৈরি হয়েছে। পরিবেশগত সমস্যার জন্য মানুষ ইতোমধ্যে অভিবাসনের চিন্তা করছে, মৌসুমি বন্যা এড়াতে তারা কাজের জন্য সেই সময়ে অন্য শহরে যাচ্ছে। ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই বিষয়গুলো অভিবাসন এর প্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে, সম্পদের উপর অতিরিক্ত চাপ ফেলবে। যার ফলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

জাতীয় নগর দারিদ্র দূরীকরণ কর্মসূচী বাংলাদেশে সুষম, টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করে শহুরে দারিদ্র্য নিরসন কাজ করবে। ২০২২ সাল পর্যন্ত দুই পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৩৬টি শহর বসবাসরত ৬ মিলিয়ন জনগণের দারিদ্র নিরসনে এ সহায়তা প্রদান করবে। দেশের বিভিন্ন নগরে বসবাসরত ৬০ লাখ দরিদ্র ও অসহায় মানুষ এই প্রকল্পের মূল সুবিধাভোগী। সম্প্রতি বাংলাদেশে সফলভাবে সমাপ্ত আরবান পার্টনারশীপ ফর পোভার্টি রিডাকশন প্রজেক্ট (ইউপিপিআর) সহ পূর্ববর্তী অন্যান্য প্রকল্পের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আশা করা যায় যে ‘ন্যাশনাল আরবান প্রোভার্টি রিডাকশন প্রোগ্রাম' (এনইউপিআরপি) এর কার্যক্রমগুলোর ফলাফল জাতীয়ভাবে বাংলাদেশে নগর দারিদ্র দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে। প্রকল্প এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত নগর দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এতে উপকারভোগীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আয় বৈষম্য, কর্মসংস্থান ও দারিদ্র পরিস্থিতির উন্নতির ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

(দ্য রিপোর্ট/জেজে/এস/এআরই/এপ্রিল ২৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর